ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা (আঞ্চলিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়)

1. ভারতে কী কী পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয়?
উত্তরঃ তিনটি পদ্ধতিতে। যথা কূপ ও নলকূপ, জলাশয় এবং সেচখাল।
2. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত ভাগে জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উত্তরঃ ১৫ ভাগ।
3. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির শতকরা কত শতাংশে কূল ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উত্তরঃ ৩৮ ভাগ।
4. ভারতের সেচ-সেবিত কৃষিজমির কত ভাগে সেচখালের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়?
উত্তরঃ ৪০ ভাগ।
5. সেচখাল কত ধরণের ও কী কী?
উত্তরঃ দুই ধরণের। যথা প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল।
6. প্লাবন খাল বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ যেসব নদী কেবল বর্ষার প্লাবনে জলপূর্ণ হয় এবং বছরের অন্য সময় ক্ষীণকায়া সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে প্লাবন খাল।
7. নিত্যবহ খাল কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব নদীতে সাআবছর জল থাকে সেসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে বলে নিত্যবহ খাল।
8. দুটি নিত্যবহ খালের উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ উত্তরপ্রদেশের উচ্চগঙ্গা খাল এবং পূর্ব সমুনা খাল।
9. ভারতের কোন অঞ্চলে নিত্যবহ খাল দ্বারা জলসেচ বেশি প্রচলিত?
উত্তরঃ গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে ও পাঞ্জাব ও হরিয়ানায়।
10. বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উত্তরঃ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলসেচ ব্যবস্থার প্রসার, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জলপথে পরিবহন, মাছচাষ, পানীয় জল সরবরাহ।
11. একটি বহুমুখী নদী-উপত্যকা পরিকল্পনার নাম লেখ।
উত্তরঃ দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা।
12. দামোদর নদ অন্য কী নামে পরিচিত?
উত্তরঃ দুঃখের নদ।
13. কত সালে দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়?
উত্তরঃ ১৯৪৮ সালে।
14. ভারতে কোন রাজ্যের কৃষিজমিতে জলসেচের সর্বাধিক সুবিধা আছে?
উত্তরঃ পাঞ্জাব রাজ্যের।
15. ভারতের বৃহত্তম নদী-উপত্যকা পরিকল্পনাটির নাম কী?
উত্তরঃ ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা।
16. উত্তর ভারতের একটি জলসেচ প্রকল্পের নাম কর।
উত্তরঃ ভাকরা-নাঙ্গাল বা কংসাবতী প্রকল্প।
17. পশ্চিমবঙ্গের একটি নিত্যবহ খালের নাম কর।
উত্তরঃ মেদিনীপুর খাল।
18. ভারতের কোন রাজ্যে সেচ-সেবিত কৃষিজমির পরিমাণ সর্বনিম্ন?
উত্তরঃ ত্রিপুরা রাজ্যে।
19. বিঘাপ্রতি ফলন কোন রাজ্যের সর্বোচ্চ?
উত্তরঃ তামিলনাড়ুতে।
20. ভারতে কটি শস্য-ঋতু দেখা যায় ও কী কী?
উত্তরঃ দুটি। খারিফ শস্য এবং রবি শস্য।
21. দুটি খারিফ শস্যের নাম লেখ।
উত্তরঃ ধান, তুলো।
22. দুটি রবি শস্যের নাম লেখ।
উত্তরঃ গম, যব।
23. খারিফ শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উত্তরঃ দকশিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আসার সময় অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে।
24. রবি শস্য কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উত্তরঃ শীতের শুরুতে।
25. কয়েকটি বাগিচা ফসলের নাম লেখ।
উত্তরঃ চা, কফি, রবার।
26. ভারতের প্রধান খাদ্যশস্য কী?
উত্তরঃ ধান।
27. ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কী?
উত্তরঃ দ্বিতীয়।
28. কী ধরণের মাটি ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উত্তরঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি এবং নদী উপত্যকার পলিমাটি।
29. ধান চাষের জন্য কত সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উত্তরঃ ১০০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
30. কত ডিগ্রী তাপমাত্রা ধান চাষের পক্ষে উপযোগী?
উত্তরঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
31. আমন ধান কোন সময়ে ভারতে চাষ হয়?
উত্তরঃ বর্ষাকালে লাগানো হয় ও শীতকালে কাটা হয়।
32. আমন ধানকে ‘আঘায়নি’ বলা হয় কেন?
উত্তরঃ অগ্রহায়ণ মাসে কাটা হয় বলে।
33. আউশ ধান ভারতে কোন সময়ে চাষ করা হয়?
উত্তরঃ শ্রীষ্মকালে কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে লাগানো হয় এবং ভাদ্র-আশ্বিন মাসে কাটা হয়।
34. বোরো ধান কোন সময়ে কাটা হয়?
উত্তরঃ গ্রীষ্মকালে।
35. ধান উৎপাদনে কোন রাজ্য ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গ।
36. ভারতে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন কত?
উত্তরঃ হেক্টর প্রতি ১,৯২১ কিগ্রা।
37. ভারতে ধান গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ উড়িষ্যার কটকে।
38. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল বীজের নাম লেখ।
উত্তরঃ জয়া, রত্না, তাইচুং, বিজয়া, গোবিন্দ প্রভৃতি।
39. গম উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উত্তরঃ উত্তরপ্রদেশ।
40. ভারতের গম গবেষণাগার কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ দিল্লীর কাছে পুষায়।
41. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল গম বীজের নাম লেখ।
উত্তরঃ সোনালিকা, সোনা-২২৭, কল্যাণ-সোনা, লারমা রাজো ইত্যাদি। ।
42. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ উত্তাপ প্রয়োজন?
উত্তরঃ গড়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
43. গম উৎপাদনের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উত্তরঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
44. কী ধরণের মাটিতে গম চাষ ভাল হয়?
উত্তরঃ উর্বর দোঁয়াশ মাটি।
45. মিলেটস কী?
উত্তরঃ জোয়ার, বাজরা, রাগী প্রভৃতি দানা শস্যকে মিলেটস বলে।
46. জোয়ার উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উত্তরঃ মহারাষ্ট্র।
47. বাজরা উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উত্তরঃ রাজস্থান।
48. রাগী উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে?
উত্তরঃ কর্নাটক।
49. ভারতের দুটি প্রধান তন্তুশস্যের নাম লেখ।
উত্তরঃ তুলো, পাট।
50. সোনালী আঁশ কাকে বলে?
উত্তরঃ পাটকে।
51. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা প্রয়োজন?
উত্তরঃ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
52. পাট চাষের জন্য কী পরিমাণ বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন?
উত্তরঃ ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি।
53. পৃথিবীর মধ্যে কোথায় সবচেয়ে ভাল পাট চাষ হয়?
উত্তরঃ গঙ্গা ব্রহ্মপুত্রের ব-দ্বীপ অঞ্চলে।
54. ভারতের কোন রাজ্য পাট উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে?
উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গ।
55. কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল পাট বীজের নাম লেখ।
উত্তরঃ জে আর সি -২১২, জে আর সি -৩২১, জে আর ও – ৬২০।
56. চা উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতে স্থান কত?
উত্তরঃ প্রথম
57. চা চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতার প্রয়োজন?
উত্তরঃ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
58. কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত চা চাষের উপযোগী?
উত্তরঃ ১৫০সেমি থেকে ২৫০ সেমি।
59. কোন রাজ্য ভারতে চা উৎপাদন করে?
উত্তরঃ অসম।
60. ভারত কোন কোন দেশে চা রপ্তানি করে?
উত্তরঃ রাশিয়া, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরাণ প্রভৃতি দেশে।
61. ভারতের কোন বন্দরের মাধ্যমে সর্বাধিক চা রপ্তানি হয়?
উত্তরঃ কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে।
62. কফি চাষের জন্য কী পরিমাণ উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উত্তরঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা এবং ১৫০ সেমি থেকে ২০০ সেমি বৃষ্টিপাত।
63. কফি চাষের জন্য কোন ধরণের মাটি আদর্শ?
উত্তরঃ লাভা সৃষ্ট উর্বর মাটি বা লাল মাটি বা ল্যাটেরাইট মাটি।
64. ভারতে কত ধরণের কফি উৎপন্ন হয় ও কী কী?
উত্তরঃ দুই ধরণের। যথা আরবীয় কফি ও রোবাস্ট্রা কফি।
65. ভারতের কোন রাজ্য কফি উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করেছে?
উত্তরঃ কর্ণাটক।
66. ভারত কোন কোন দেশে কফি রপ্তানি করে?
উত্তরঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে।
67. কী ধরণের বৃষ্টিপাত এবং উষ্ণতা আখ চাষের উপযোগী?
উত্তরঃ গড়ে ১৫০ সেমি বৃষ্টিপাত এবং ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা প্রয়োজন।
68. কী ধরণের ভূমিতে আখ চাষ ভাল হয়?
উত্তরঃ উত্তম জলনিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত সমতলভূমিতে।
69. ভারতে কেন্দ্রীয় আখ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ উত্তরপ্রদেশের লক্ষনৌতে।
70. কোন জাতীয় মাটিতে তুল চাষ ভাল হয়?
উত্তরঃ চুন মেশানো উর্বর দোঁয়াশ মাটি বা কৃষ্ণ মৃত্তিকায়।
71. কী পরিমাণ উত্তাপ তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ?
উত্তরঃ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
72. তুলো চাষের জন্য কত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন?
উত্তরঃ ৫০ সেমি থেকে ১০০ সেমি।
73. ভারত কোন কোন দেশে তুলো রপ্তানি করে?
উত্তরঃ জাপান, জার্মানি প্রভৃতি দেশে।
74. কয়েকটি উচ্চ-ফলনশীল তুলোবীজের নাম লেখ?
উত্তরঃ সুজাতা, এম সি ইউ -৫, এম সি ইউ -৪।
75. তেলবীজ কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব বীজ থেকে তেল নিষ্কাষণ করা হয় সেগুলিকে বলে তেলবীজ
76. তেলবীজ কত ধরণের ও কী কী?
উত্তরঃ দুই ধরণের। যথা –ভক্ষ্য তেলবীজ এবং অভক্ষ্য তেলবীজ।
77. কয়েকটি ভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ সরষে, তিল, চিনাবাদাম, নারিকেল।
78. দুটি অভক্ষ্য তেলবীজের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ তিসি এবং রেড়ি।
79. খারিফ শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ গ্রীষ্মকালে, বর্ষার শুরুতেই অর্থাৎ দক্ষি-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আগমণের সময় যেসব ফসলের চাষ আরম্ভ হয় এবং হেমন্তকালে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলিকে বলে খারিফ শস্য। যেমন ধান, তুলো, পাট, আখ, ভুট্টা, জোয়ার ,বাজরা, রাগী প্রভৃতি।
80. রবি শস্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ শীতের শুরুতেই যেসব ফসলের চাষ শুরু হয় এবং গ্রীষ্মের প্রারম্ভেই সংগ্রহ করা হয় তাদের বলে রবি শস্য। গম, যব।
81. অর্থকরী ফসল বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ যেসব ফসল বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জুন করা হয় তাদের অর্থকরী ফসল বলে। যেমন পাট, তুলো, আখ, তামাক।
82. ভারতের দুটি প্রধান অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উত্তরঃ তুলো, পাট।
83. দক্ষিণ ভারতের একটি অর্থকরী ফসলের নাম লেখ।
উত্তরঃ আখ।
84. ভারতের সর্বোচ্চ বাঁধ কোনটি?
উত্তরঃ হিমাচল প্রদেশের শতদ্রু নদীর ওপর নির্মিত ভাকরা বাঁধ। (২২৬ মিটার)।
85. বাণিজ্য ফসল কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রধানত রপ্তানি বা বাণিজ্যের জন্য যেসব ফসল উৎপাদন করা হয় সেগুলিকে বাণিজ্য ফসল বলে।