Madhyamik History Question Paper 2019
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯
Madhyamik History Question Paper 2019 | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ : Madhyamik History Question Paper 2019 | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো। এই Madhyamik History Question Paper 2019 – মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ MCQ, SAQ, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন গুলি West Bengal Madhyamik History Examination 2019 – পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস 2019 সালের পরীক্ষার হয়েছে। আপনারা যারা Madhyamik History Question Paper 2019 | পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ খুঁজে চলেছেন, তারা নিচে দেওয়া Madhyamik History Question Paper 2019 – মাধ্যমিক ইতিহাস ২০১৯ প্রশ্নপত্র গুলো ভালো করে পড়তে পারেন।
মাধ্যমিক ইতিহাস 2019 পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ডাউনলোড। পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম প্রশ্নপত্র বা মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ – Madhyamik History Question Paper 2019 নিচে দেওয়া রয়েছে।
West Bengal Madhyamik (WBBSE Class 10th) History Question Paper 2019 | মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯
সময় : ৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ( প্রথম ১৫ মিনিট শুধু প্রশ্নপত্র পড়ার জন্য এবং বাকি ৩ ঘন্টা উত্তর লেখার জন্য )
Full Marks : ৯০ (90)
বিভাগ – ‘ক’
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো : ২০x১= ২০
১.১ মোহনবাগান ক্লাব আই.এফ.এ. শিল্ড জয় করেছিল—
(ক) ১৮৯০ খ্রিঃ
(খ) ১৯০৫ খ্রিঃ
(গ) ১৯১১ খ্রিঃ
(ঘ) ১৯১৭ খ্রিঃ
Ans: (গ) ১৯১১ খ্রিঃ
১.২ দাদাসাহেব ফালকে যুক্ত ছিলেন—
(ক) চলচ্চিত্রের সঙ্গে
(খ) ক্রীড়া জগতের সঙ্গে
(গ) স্থানীয় ইতিহাসচর্চার সঙ্গে
(ঘ) পরিবেশের ইতিহাস চর্চার সঙ্গে
Ans: (ক) চলচ্চিত্রের সঙ্গে
১.৩ ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ প্রকাশিত হত—
(ক) যশোর থেকে
(খ) রানাঘাট থেকে
(গ) কুষ্ঠিয়া থেকে
(ঘ) বারাসাত থেকে
Ans: (গ) কুষ্ঠিয়া থেকে
১.৪ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বি.এ. পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়—
(ক) ১৮৫৭ খ্রিঃ
(খ) ১৮৫৮ খ্রিঃ
(গ) ১৮৫৯ খ্রিঃ
(ঘ) ১৮৬০ খ্রিঃ
Ans: (ঘ) ১৮৬০ খ্রিঃ
১.৫ কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন—
(ক) ড. এম. জে. ব্রামলি
(খ) ড. এইচ. এইচ. গুডিভ
(গ) ড. এন. ওয়ালিশ
(ঘ) ড. জে. গ্রান্ট
Ans: (ক) ড. এম. জে. ব্রামলি
১.৬ তিতুমিরের প্রকৃত নাম ছিল—
(ক) চিরাগ আলি
(খ) হায়দর আলি
(গ) মির নিসার আলি
(ঘ) তোরাপ আলি
Ans: (গ) মির নিসার আলি
১.৭ সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের অন্যতম নেতা ছিলেন—
(ক) রানি কর্ণাবতী
(খ) রানি শিরোমণি
(গ) দেবী চৌধুরানী
(ঘ) রানী দুর্গাবতী
Ans: (গ) দেবী চৌধুরানী
১.৮ “বন্দেমাতরম” সংগীতটি রচিত হয় —
(ক) ১৮৭০ খ্রিঃ
(খ) ১৮৭২ খ্রিঃ
(গ) ১৮৭৫ খ্রিঃ
(ঘ) ১৮৭৬ খ্রিঃ
Ans: (গ) ১৮৭৫ খ্রিঃ
১.৯ ‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থটি রচনা করেন —
(ক) অক্ষয় কুমার দত্ত
(খ) রাজনারায়ণ বসু
(গ) স্বামী বিবেকানন্দ
(ঘ) রমেশচন্দ্র মজুমদার
Ans: (গ) স্বামী বিবেকানন্দ
১.১০ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন—
(ক) সঙ্গীত শিল্পী
(খ) নাট্যকার
(গ) কবি
(ঘ) ব্যঙ্গ চিত্রশিল্পী
Ans: (ঘ) ব্যঙ্গ চিত্রশিল্পী
১.১১ ‘বর্ণপরিচয়’ প্রকাশিত হয়েছিল—
(ক) ১৮৪৫ খ্রিঃ
(খ) ১৮৫০ খ্রিঃ
(গ) ১৮৫৫ খ্রিঃ
(ঘ) ১৮৬০ খ্রিঃ
Ans: (গ) ১৮৫৫ খ্রিঃ
১.১২ বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়—
(ক) ১৯০৫ খ্রিঃ
(খ) ১৯০৬ খ্রিঃ
(গ) ১৯১১ খ্রিঃ
(ঘ) ১৯১২ খ্রিঃ
Ans: (খ) ১৯০৬ খ্রিঃ
১.১৩ সর্বভারতীয় কিষাণ সভার প্রথম সভাপতি ছিলেন—
(ক) এন. জি. রঙ্গ
(খ) স্বামী সহজানন্দ
(গ) বাবা রামচন্দ্র
(ঘ) লালা লাজপত রায়
Ans: (খ) স্বামী সহজানন্দ
১.১৪ কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল—
(ক) কলকাতায়
(খ) দিল্লিতে
(গ) বোম্বাইতে
(ঘ) মাদ্রাজে
Ans: (ঘ) মাদ্রাজে
১.১৫ ‘ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’ যুক্ত ছিল—
(ক) রাওলাট সত্যাগ্রহে
(খ) অসহযোগ আন্দোলনে
(গ) বারদৌলি সত্যাগ্রহে
(ঘ) সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে
Ans: (গ) বারদৌলি সত্যাগ্রহে
১.১৬ বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে হত্যা করার চেষ্টা করেন—
(ক) বীণা দাস
(খ) কল্পনা দত্ত
(গ) প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
(গ) সুনীতি চৌধুরি
Ans: (ক) বীণা দাস
১.১৭ অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটির সম্পাদক ছিলেন—
(ক) শচীন্দ্র প্রসাদ বসু
(খ) কৃষ্ণ কুমার মিত্র
(গ) চিত্তরঞ্জন দাস
(ঘ) আনন্দমোহন বসু
Ans: (ক) শচীন্দ্র প্রসাদ বসু
১.১৮ ভাইকম সত্যাগ্রহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল—
(ক) মালাবারে
(খ) মাদ্রাজে
(গ) মহারাষ্ট্রে
(ঘ) গোদাবরী উপত্যকায়
Ans: গোদাবরী উপত্যকায়
১.১৯ যে দেশীয় রাজ্যটি গণভোটের মাধ্যমে ভারতীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয় —
(ক) কাশ্মীর
(খ) হায়দ্রাবাদ
(গ) জুনাগড়
(ঘ) জয়পুর
Ans: (গ) জুনাগড়
১.২০ ভাষাভিত্তিক গুজরাট রাজ্যটি গঠিত হয় —
(ক) ১৯৫৩ খ্রিঃ
(খ) ১৯৫৬ খ্রিঃ
(গ) ১৯৬০ খ্রিঃ
(ঘ) ১৯৬৫ খ্রিঃ
Ans: (গ) ১৯৬০ খ্রিঃ
বিভাগ – ‘খ’
২। যে-কোনো ষোলোটি প্রশ্নের উত্তর দাও (প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্ততঃ একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে) : ১৬x১ = ১৬
উপবিভাগ – ২.১
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
(২.১.১) ‘গোরা’ উপন্যাসটি কে রচনা করেন ?
Ans: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(২.১.২) বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম চিত্রিত গ্রন্থের নাম লেখো।
Ans: আনন্দ মঙ্গল।
(২.১.৩) কোন বছর শ্রীরামপুর মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে
(২.১.৪) ঊষা মেহতা কোন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ?
Ans: ভারত ছাড় আন্দোলনের সাথে
উপবিভাগ – ২.২
ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো :
(২.২.১) ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ।
Ans: ঠিক
(২.২.২) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় -এর প্রথম মহিলা এম.এ. ছিলেন কাদম্বিনী বসু (গাঙ্গুলি)।
Ans: ঠিক
(২.২.৩) বাংলা সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী ছিলেন বাসন্তী দেবী।
Ans: ভুল
(২.২.৪) দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন কল্পনা দত্ত।
Ans: ভূল
উপবিভাগ – ২.৩
২.৩ ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও :
‘ক’ স্তম্ভ | ‘খ’ স্তম্ভ |
(২.৩.১) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | (১) হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় |
(২.৩.২) নবগোপাল মিত্র | (২) কৃষক আন্দোলন |
(২.৩.৩) বীরেন্দ্রনাথ শাসমল | (৩) হিন্দু মেলা |
(২.৩.৪) ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন | (৪) বঙ্গদর্শন |
Ans:
(২.৩.১) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় -(৪) বঙ্গদর্শন
(২.৩.২) নবগোপাল মিত্র – (৩) হিন্দু মেলা
(২.৩.৩) বীরেন্দ্রনাথ শাসমল – (২) কৃষক আন্দোলন
(২.৩.৪) ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন – (১) হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়
উপবিভাগ – ২.৪
প্রদত্ত ভারতবর্ষের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত ও নামাঙ্কিত কর :
(২.৪.১) সাঁওতাল বিদ্রোহের (১৮৫৫) এলাকা।
(২.৪.২) বারাসাত বিদ্রোহের এলাকা।
(২.৪.৩) নীলবিদ্রোহের অন্যতম কেন্দ্র : যশোর।
(২.৪.৪) দেশীয় রাজ্য হায়দ্রাবাদ।
অথবা,
(কেবলমাত্র দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের জন্য)
(২.৪.১) সরলাদেবী চৌধুরানী আত্মজীবনী গ্রন্থের নাম _______।
Ans: জীবনের ঝরাপাতা
(২.৪.২) কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় _______ খ্রিস্টাব্দে।
Ans: ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(২.৪.৩) সুই মুণ্ডা ছিলেন _______ বিদ্রোহের অন্যতম নেতা।
Ans: কোল।
(২.৪.৪) ভারতসভা প্রতিষ্ঠিত হয় _______ খ্রিস্টাব্দে।
Ans: ১৮৭৬ খিস্টাব্দে।
উপবিভাগ – ২.৫
নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক বাক্যটি নির্বাচন করো।
(২.৫.১) বিবৃতি : রামমোহন রায় লর্ড আমহার্স্টকে চিঠি লিখেছিলেন (১৮২৩ খ্রিঃ)।
ব্যাখ্যা ১ : সতীদাহ প্রথা বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে।
ব্যাখ্যা ২ : ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের আবেদন জানিয়ে।
ব্যাখ্যা ৩ : ভারতে সংস্কৃত শিক্ষাবিস্তারের আবেদন জানিয়ে।
Ans: ব্যাখ্যা ২ : ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের আবেদন জানিয়ে।
(২.৫.২) বিবৃতি : স্বামী বিবেকানন্দ ‘বর্তমান ভারত’ গ্রন্থটি রচনা করেন।
ব্যাখ্যা ১ : তাঁর উদ্দেশ্য ছিল আধুনিক ভারতের ইতিহাস প্রণয়ন করা।
ব্যাখ্যা ২ : তাঁর উদ্দেশ্য ছিল নব্য হিন্দুধর্ম প্রচার করা।
ব্যাখ্যা ৩ : তাঁর উদ্দেশ্য ছিল স্বদেশিকতা প্রচার করা।
Ans: ব্যাখ্যা ২ : তাঁর উদ্দেশ্য ছিল নব্য হিন্দুধর্ম প্রচার করা।
(২.৫.৩) বিবৃতি : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক-কৃষকদের জন্য কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি।
ব্যাখ্যা ১ : শ্রমিক-কৃষকরা এই আন্দোলনের বিরোধী ছিল।
ব্যাখ্যা ২ : ব্রিটিশ সরকার শ্রমিক-কৃষকদের আন্দোলনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
ব্যাখ্যা ৩ : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন ছিল মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণির আন্দোলন।
Ans: ব্যাখ্যা ৩ : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন ছিল মূলত মধ্যবিত্ত শ্রেণির আন্দোলন।
(২.৫.৪) বিবৃতি : গান্ধিজি জমিদারদের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন সমর্থন করেননি।
ব্যাখ্যা ১ : গান্ধিজি ছিলেন জমিদার শ্রেণির প্রতিনিধি।
ব্যাখ্যা ২ : গান্ধিজি হিংসাত্মক আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন।
ব্যাখ্যা ৩ : গান্ধিজি শ্রেণিসংগ্রামের পরিবর্তে শ্রেণি সমন্বয়ে বিশ্বাসী ছিলেন।
Ans: ব্যাখ্যা ২ : গান্ধিজি হিংসাত্মক আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন।
বিভাগ – ‘গ’
৩। দু’টি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে-কোনো এগারোট) : ১১x২=২২
৩.১. আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন ?
Ans: স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চার দ্বারা স্থানীয় অঞ্চলের সমাজ, অর্থনীতি, শিল্পকলা প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। জাতীয় ইতিহাসচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান পাওয়া যায়৷ আঞ্চলিক ইতিহাসের মাধ্যমেই জাতীয় ইতিহাস পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে পারে।
৩.২. ‘সরকারি নথিপত্র’ বলতে কী বোঝায় ?
Ans: বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী, সেনাপতি, সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা সমকালীন বিভিন্ন প্রত্যক্ষ ঘটনা সম্পর্কে যে তথ্যাদি লিখে গিয়েছেন সেই সবই সরকারি নথিপত্রের বিবরণ নামে পরিচিত।
৩.৩. সংবাদপত্র এবং সাময়িক-পত্রের মধ্যে পার্থক্য কী ?
Ans: (ক) সাধারণত সংবাদপত্র প্রতিদিন প্রকাশিত হয়। কিন্তু সাময়িকপত্র একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত হয়।
(খ) সংবাদপত্রের মুদ্রণে রোজকার খবরাখবর গুরুত্ব পায়। সাময়িকপত্রে রোজকার খবরের পরিবর্তে সমকালীন বাছাই করা বিষয় গুরুত্ব পায়।
(গ) সংবাদপত্রের পৃষ্ঠা আকারে বড়ো হয় এবং সেগুলো বাঁধানো থাকে না। অন্যদিকে, সাময়িকপত্রের পৃষ্ঠাগুলো অপেক্ষাকৃত ছোটো হয় এবং সাধারণত তা বইয়ের মতো বাঁধাই করা হয়।
৩.৪. মধুসূদন গুপ্ত কে ছিলেন ?
Ans: মধুসূদন গুপ্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্র । এদেশে তিনিই প্রথম শব বা মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ করে এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটান। তিনি ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ডাক্তারি পাস করেন এবং পরে মেডিকেল কলেজের চাকরিতে যোগ দেন৷
৩.৫. সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হল কেন ?
Ans: সমসী ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার প্রধান কারণগুলি হল—
(ক) এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকেই বাংলার বাইরে থেকে এসেছিলেন। তাই বাংলায় তাদের জনভিত্তি ছিল দুর্বল।
(খ) এই বিদ্রোহ শুরু থেকেই ক্ষুদ্র অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল।
(গ) সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে এই বিদ্রোহ জনপ্রিয় হতে পারে নি৷
৩.৬. নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের ভূমিকা কিরূপ ছিল ?
Ans: বাংলায় সংঘটিত নীল বিদ্রোহে ইউরোপ থেকে ভারতে আগত খ্রিস্টান মিশনারিদের বিশেষ ভূমিকা ছিল। (১) এই বিদ্রোহের সময় তারা নীলচাষিদের প্রতি সমর্থন ও সহানুভূতি জানায়। (২) তারা নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও শোষণের চিত্র স্থানীয় সংবাদপত্রগুলিতে তুলে ধরে। (৩) তারা উপলব্ধি করে যে, নীলচাষিদের দুর্দশা দূর করার জন্য তাদের মধ্যে উন্নত ‘খ্রিস্টান শিক্ষা’ ও গণশিক্ষার প্রসার ঘটানো প্রয়োজন। এখানে উল্লেখ্য, মিশনারি জেমস লঙ নীলকরদের তীব্র সমালোচক ছিলেন।
৩.৭. জমিদারসভা ও ভারতসভার মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
Ans: জমিদার সভা ও ভারতসভার মধ্যে দুটি মৌলিক পার্থক্য হল (১) জমিদার সভা ছিল মূলত জমিদার ও ধনী ব্যবসায়ীদের সংগঠন। অন্যদিকে, ভারতসভা সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে গণসংগঠন গড়ে তুলেছিল। (২) জমিদার সভার প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা। অন্যদিকে, ভারতসভার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের সার্বিক কল্যাণসাধন ও স্বার্থরক্ষা।
৩.৮. উনিশ শতকে জাতীয়তাবাদের উন্মেষে ‘ভারতমাতা’ চিত্রটির কীরূপ ভূমিকা ছিল ?
Ans: অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর আঁকা ‘ভারতমাতা’র চার হাতে বেদ, ধানের শিষ, জপের মালা, ও শ্বেতবস্ত্র দেখিয়েছেন। এগুলির দ্বারা তিনি ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের যুগে ভারতীয়দের মধ্যে স্বদেশিয়ানা ও জাতীয়তাবাদী অনুভূতি জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
৩.৯. চার্লস উইলকিনস কে ছিলেন ?
Ans: প্রাচ্যবাদী পণ্ডিত চার্লস উইলকিনস পঞ্চানন কর্মকারের সাহায্যে বাংলা মুদ্রাক্ষর খোদাই এবং অক্ষর ঢালাইয়ের কাজ করেন। তার তৈরি বাংলা মুদ্রাক্ষরের সাহায্যেই হ্যালহেড তার বাংলা গ্রামার বইটিতে উদাহরণরূপে বাংলা মুদ্রণের ব্যবস্থা করেন। তাই তিনি বাংলার গুটেনবার্গ’ নামে পরিচিত।
৩.১০ বাংলা লাইনোটাইপ প্রবর্তনের গুরুত্ব কী ?
Ans: লাইনোটাইপ আদতে একটি কম্পোজিং মেশিন। এর সাহায্যে হাতের বদলে মেশিনে অত্যন্ত দ্রুত ও সুচারুরূপে চলমান ধাতব হরফ স্থাপন করা যেত। বাংলায় ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ সুরেশচন্দ্ৰ মজুমদার, রাজশেখর বসু প্রমুখের উদ্যোগে এই প্রযুক্তিতে সংবাদপত্র ছাপা শুরু হয়।
৩.১১ কৃষক আন্দোলনের বাবা রামচন্দ্রের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?
Ans: অসহযোগ আন্দোলনের সময় কৃষক আন্দোলনে বাবা রামচন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি যুক্তপ্রদেশে গঠিত কিষান সভার নেতৃত্বে কৃষকদের নিয়ে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁর নেতৃত্বে কিষান সভার আন্দোলন কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলনের সাথে মিশে গিয়ে জোরালো হয়ে ওঠে।
৩.১২. মাদারি পাশি কে ছিলেন ?
Ans: অসহযোগ আন্দোলনকালে যুক্ত প্রদেশের বিশিষ্ট কৃষক নেতা ছিলেন মাদারি পাশি। তিনি যুক্তপ্রদেশের হরদই, বারাবাকি, সীতাপুর, বারাইচ প্রভৃতি জেলার কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে অতিরিক্ত কর আদায়ের ক্ষেত্রে অত্যাচার, বেগারশ্রম প্রভৃতির বিরুদ্ধে ‘একা বা একতা আন্দোলন শুরু করেন।
৩.১৩ মাতঙ্গিনী হাজরা স্মরণীয় কেন ?
Ans: ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় একজন গান্ধিবাদী নেত্রী ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। ৭৩ বছরের মাতঙ্গিনী হাজরা তমলুক থানা অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ‘গান্ধিবুড়ি’ নামে পরিচিত।
৩.১৪ দলিত কাদের বলা হয় ?
Ans: হিন্দু বর্ণব্যবস্থায় জন্ম ও পেশাগত পরিচিতির বিচারে যে সব মানুষ সমাজের নিম্নস্তরে অবস্থান করে এবং বিভিন্ন সময়ে উচ্চবর্ণের দ্বারা সামাজিক বঞ্ছনার শিকার হয়, তারা সাধারণভাবে দলিত নামে পরিচিত।
৩.১৫. দার কমিশন (১৯৪৮) কেন গঠিত হয়েছিল ?
Ans: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা লাভের পর ভারতীয় অঙ্গরাজ্য এবং ভারতে যোগ দেওয়া বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যগুলির সীমানা জাতি না ভাষার ভিত্তিতে নির্ধারিত হওয়া উচিত তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। এই প্রশ্নের মীমাংসার উদ্দেশ্যে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে দার কমিশন গঠিত হয়।
৩.১৬. পত্তি শ্রীরামুলু কে ছিলেন ?
Ans: পত্তি শ্রীরামুলু ছিলেন দক্ষিণ ভারতের একজন গান্ধিবাদী নেতা। মাদ্ৰাজ প্রদেশের তেলুগু ভাষাভাষী অঞ্চল নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিতে তিনি ৫৮দিন অনশন করে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
বিভাগ – ‘ঘ’
৪। সাত বা আটটি বাক্যে যে-কোনো ছ’টি প্রশ্নের উত্তর দাও (প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি করে প্রশ্নের উত্তর দাও) : ৬x৪ = ২৪
উপবিভাগ : ঘ.১
৪.১ ‘নীলদর্পণ’ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায় ?
Ans: ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দীনবন্ধু মিত্রের নাটক ‘নীল দর্পণ’ -এ সে সময়ের নীলচাষ এবং নীলকরদের অত্যাচারে বাংলার সমাজ জীবনে যে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তার মর্মান্তিক ছবি ফুটে উঠেছ। অষ্টাদশ শতকের শিল্প বিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডের বস্ত্রশিল্পে নীলের চাহিদা প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পেলে মুনাফালোভী ইংরেজরা দাদনের জালে আবদ্ধ করে ছলে, বলে, কৌশলে দিল্লি থেকে ঢাকা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কৃষকদের নীলচাষে বাধ্য করে, অন্যথায় চলে অকথ্য অত্যাচার, গৃহে আগুন, লুটপাট, শারীরিক নির্যাতন, চাবুক-শ্যামাচাঁদের ব্যবহার, স্ত্রী-কন্যার অপহরণ, লাঞ্ছনা, পুলিশি নির্যাতন, খাদ্যাভাব— যার প্রতিবাদে ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয় নীলবিদ্রোহ।
নীলবিদ্রোহ ছিল কৃষকদের মানসিক দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত, সম্পূর্ণ ধর্ম নিরপেক্ষ ঐকবদ্ধ সংগ্রাম যা এ নাটকে সুন্দরভাবে ব্যক্ত হয়েছে। অসহায়, অত্যাচারিত কৃষকদের দুঃখদুর্দশা, নীলকরদের অত্যাচার, জমিদারদের এবং শিক্ষিত মধ্যবিত্তের সামাজিক মানসিকতা, পারস্পরিক কর্তব্যবোধ, পিতৃভক্তি, অপত্যস্নেহ, সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক মেলবন্ধন সবই প্রতিফলিত হয়েছে ‘নীলদর্পণ’ নাটকে।
অক্ষয়কুমার দত্তের ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকা, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ প্রভৃতি পত্রিকায় কৃষকদের প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। এছাড়াও শিশিরকুমার ঘোষ, হরিনাথ মজুমদার, মাথুরানাথ মৈত্র সোচ্চার হলেও সাহিত্যে প্রতিবাদের চরম প্রকাশ ঘটেছিল দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকে, যার ইংরেজি অনুবাদ করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও প্রকাশ করেছিলেন নিজ নামে রেভারেন্ড জেমস লঙ। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘নীলদর্পণ’ কে হ্যারিয়েট বিচার স্টো -র নাটক ‘আংকেল টমস কেবিন’ -এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। নীলকরদের অকথ্য অত্যাচার ও নদীয়ার গুয়াতলির মিত্র পরিবারের বিপর্যয়ের কাহিনীকে ভিত্তি করে লেখা এই নাটকে তৎকালীন সমাজজীবনের অবস্থা, অনুভূতি, শাসন-শোষণ সংগ্রাম ও সম্প্রীতির চিত্র সুন্দরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
৪.২. উনিশ শতকে নারীশিক্ষা বিস্তারে ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন কী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন ?
Ans: উনিশ শতকের শুরুর দিকে মেরি অ্যান কুবা, রাধাকান্ত দেব প্রমুখের উদ্যোগে নারীশিক্ষার সূচনা হলেও ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে বড়লাটের শাসন পরিষদের আইনসদস্য ও বাংলার শিক্ষা কাউন্সিলের সভাপতি ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন কর্তৃক ‘হিন্দু ফিমেল স্কুল’ বা ‘নেটিভ ফিমেল স্কুল’ প্রতিষ্ঠা এই উপমহাদেশে নারীশিক্ষায় নতুন যুগের সূত্রপাত ঘটিয়েছিল। জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন বেথুন সাহেব নামে পরিচিত ছিলেন। বেথুন সাহেবের স্মৃতিতে পরে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম হয় ‘বেথুন স্কুল’ এবং ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে এটি মহাবিদ্যালয় বা কলেজের মর্যাদা লাভ করে। বেথুন সাহেব নিজেই রাধাকান্ত দেবের ‘স্ত্রীশিক্ষা বিষয়ক’ নামক বইটির সংস্করণ প্রকাশ ও প্রচার করেন। বেথুন কলেজ হল ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মহিলা কলেজ।
বহুভাষাবিদ, ইংরেজি সাহিত্যে সুপণ্ডিত এবং আইনজ্ঞ বেথুন সাহেব অনুভব করেছিলেন এদেশে নারীদের সামগ্রিক উন্নতির জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আধুনিক শিক্ষা এবং উন্নত মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাঁকে এ কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, মদনমোহন তর্কালঙ্কার, রামগোপাল ঘোষের মতো অগ্রগণ্য ব্যক্তিরা। বেথুন সাহেব তার মাসিক আয়ের অধিকাংশ এবং বিষয় আশয় এই বিদ্যালয়ের জন্য ব্যয় ও দান করে যান। মেয়েদের ধর্মনিরপেক্ষ ও আধুনিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি সূচিশিল্প, এমব্রয়ডারি, অঙ্কনবিদ্যায় পারদর্শিনী করে তোলাই ছিল বেথুন সাহেবের উদ্দেশ্য । তিনি শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে মাতৃভাষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বেথুন সাহেব ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি ও কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরি গঠনে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। বঙ্গভাষানুবাদ সমাজ গঠনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
উপবিভাগ : ঘ.২
৪.৩ হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ?
Ans: উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে নব্যহিন্দুবাদ এবং বাংলা তথা ভারতে সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতীয় চেতনার জাগরণ ঘটানো এবং জাতীয় গৌরব বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ শাসনকালে গঠিত সংগঠনগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ‘হিন্দুমেলা’। রাজনারায়ণ বসুর সহযোগিতায় নবগোপাল মিত্র ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে চৈত্র সংক্রান্তির দিন ‘হিন্দুমেলা’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাই এটি ‘চৈত্রমেলা’ নামেও পরিচিত ছিল। এর প্রথম সম্পাদক হন জ্ঞানেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ‘হিন্দুমেলা’ প্রতিষ্ঠার পিছনে উদ্যোক্তাদের বেশ কিছু আদর্শ ও উদ্দেশ্য ছিল যা হল—
(i) সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে হিন্দুধর্মের অতীত গৌরবগাথা ছড়িয়ে দেওয়া।
(ii) দেশীয় ভাষাচর্চা করা ও জাতীয় প্রতীকগুলিকে মর্যাদা দেওয়া।
(iii) প্রাচীন হিন্দুধর্মের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আদর্শে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা।
(iv) গোপনে হিন্দু যুবকদের মধ্যে বৈপ্লবিক ভাবধারা জাগিয়ে তোলা।
(v) হিন্দু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং আত্মনির্ভর ভারতবর্ষ প্রতিষ্ঠা করা।
হিন্দুমেলা শরীরচর্চা, অশ্বচালনা প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা, সাহিত্য, শিল্প, সঙ্গীত ও স্বাস্থ্য প্রভৃতির উন্নতি ঘটিয়ে আত্মনির্ভরতা ও ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে যুবসমাজকে ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা অর্জনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে চেয়েছিল। তবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে প্রবেশ না করে ‘হিন্দুমেলা’ শুধু দেশাত্মবোধ প্রচারের উদ্যোগ নেয়। সর্বোপরি দেশি জিনিসের প্রদর্শনী, জাতীয় সংগীত, বক্তৃতাদি সহ দেশীয় ভাষা মূলত বাংলা ভাষার উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে হিন্দুমেলার সদস্যরা সচেষ্ট ছিলেন, যেমন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর তাদের রচিত গান, কবিতা পরিবেশন করেন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাঁর কবিতা ‘হিন্দুমেলার উপহার’ পাঠ করেন। ‘হিন্দুমেলা’ দেশীয় বিদ্যাশিক্ষার উন্নতি ও প্রসারে নিয়োজিত স্বদেশীদের সম্মান জানান এবং তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলিকে জনসমক্ষে প্রচারের জন্য ‘ন্যাশনাল পেপার’ নামে পত্রিকা প্রকাশ করেন।
৪.৪ ‘বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা’-কে প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলা হয় কেন ?
Ans: ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের রেগুলেশন অ্যাক্ট প্রবর্তন করে ব্রিটিশ শাসক বাংলার জমিদারদের অধিকৃত জমি পুনঃগ্রহণের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে টাকির জমিদার কালিনাথ রায়চৌধুরী, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রমুখের উদ্যোগে ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা’ গড়ে ওঠে। এই সভার সভাপতিত্ব করেন গৌরীশংকর তর্কবাগীশ এবং সম্পাদক হয়েছিলেন পণ্ডিত দুর্গাপ্রসাদ তর্কপঞ্চানন। এই সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতবাসীর মঙ্গল-অমঙ্গলকারী বিষয়গুলির আলোচনা ও পর্যালোচনা করা, যেমন— কোম্পানি কর্তৃক নিষ্করভূমির ওপর কর নেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জনগণের স্বার্থরক্ষার ব্যাপারে সরকারের ত্রুটিগুলি সংশোধনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানায়।
লর্ড বেন্টিঙ্কের পাশ্চাত্য ভাষানীতির প্রতিক্রিয়া স্বরূপ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য প্রসারের জন্য এই সভার উদ্ভব হলেও সভার আলোচনা ও বিতর্কে স্বদেশ ভাবনা বা রাজনৈতিক চেতনার পরিচয় পাওয়া যায়। ধর্মীয় বিষয়ে আলোচনা এই সভায় নিষিদ্ধ ছিল । ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ‘সংবাদ প্রভাকর’-এ লিখেছিলেন- ‘রাজকীয় বিষয়ের বিবেচনার জন্য অপর যে সভা হইয়াছিল, তন্মধ্যে বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভাকে প্রথম বলিতে হইবেক’ এবং গবেষক যোগেশচন্দ্র বাগল এটিকে ‘বাঙালি তথা ভারতবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান’ বলেছেন। এটি বেশিদিন স্থায়ী না হলেও ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সংগঠন ‘জমিদার সভা’ -র অগ্রদূত ছিল। তাই বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভাকে ভারতের প্রথম জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানরূপে চিহ্নিত করা হয়।
উপবিভাগ : ঘ.৩
৪.৫ ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।
ভূমিকা : ঔপনিবেশিক আমলে বাংলা তথা ভারতে আধুনিক মুদ্রণ ব্যবস্থার প্রচলন হলে মানুষের হাতে প্রচুর ছাপা বই আসতে থাকে। এইসব ছাপা বই একদিকে যেমন শিক্ষার অগ্রগতি ঘটায় অন্যদিকে ক্রম বৃদ্ধিমান শিক্ষার অগ্ৰগতি ছাপা বইয়ের চাহিদা বৃদ্ধি করে।
গণশিক্ষার দিকে যাত্রা : ইতিপূর্বে হাতে লেখা বইয়ের মূল্য খুববেশি হত। তাই এইসব বই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল এবং শিক্ষাদান ব্যবস্থা ছিল উচ্চবিত্তদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু ছাপা বই দামে সস্তা হওয়ায় তা সাধারণ মানুষ কেনার ও পড়ার সুযোগ পায়। এই ভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ঘটে যা গণশিক্ষার প্রসারের পটভূমি তৈরি করে।
পাঠ্য বইয়ের সহজলভ্যতা : ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রচুর পরিমাণ মুদ্রিত ও দামে সস্তা পাঠ্য বই বাজারে আসতে থাকে। ফলে বইয়ের অভাব দূর হয় এবং শিক্ষাবিস্তারের পথ মসৃন হয়।
মাতৃভাষায় শিক্ষা : ছাপাখানার মাধ্যমে বাংলা ভাষায় ভাষাশিক্ষা, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান ইত্যাদি বই, বোধিনী বা সহায়িকা বই বাংলা ভাষায় ছাপা হতে থাকে। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষায় শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পায়।
শিশুশিক্ষা : ছাপা বই শিশুশিক্ষার অগ্রগতি ঘটাতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে। ছাপাখানায় মুদ্রিত মদনমোহন তর্কালংকারের ‘শিশুশিক্ষা’, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’, রামসুন্দর বসাকের ‘বাল্যশিক্ষা’র মতো বইগুলি শিশুশিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
উচ্চশিক্ষা : আশিস খাস্তগীর উল্লেখ করেছেন যে, উনিশ শতকের মধ্যভাগে ব্যাপক পরিমাণে পাঠ্যবই প্রকাশ হতে থাকলে তা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হয়ে ওঠে। ফলেবাঙালির উচ্চ শিক্ষার অগ্ৰগতি অনেক সহজ হয়।
নারীশিক্ষার অগ্রগতি : উনিশ শতকের শেষার্ধে নারীশিক্ষার দাবি ক্রমশ জোরদার হতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে সুলভে ছাপা বই নারীদের হাতে পৌঁছালে নারীশিক্ষার গতি ত্বরান্বিত হয়।
উপসংহার : ছাপা বই একদিকে শিক্ষার বিস্তারে ভূমিকা নিয়েছিল, অন্যদিকে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
৪.৬ বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার বিকাশে ড.মহেন্দ্রলাল সরকারের কীরূপ অবদান ছিল ?
ভূমিকা : বিশুদ্ধ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণা ও চর্চার উদ্দেশ্যে উনিশ শতকে ভারতে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠে সেগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল মহেন্দ্রলাল সরকার প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স বা আই এ সি এস।
যুক্তিবাদের প্রচার : পেশায় চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার মানুষের অন্ধবিশ্বাস দূর করে তাদের যুক্তিবাদের সমর্থক হতে বলেন।
আই. এ. সি. এস-এর প্রতিষ্ঠা : পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় নিয়মিত মৌলিক গবেষণা, বিজ্ঞান বিষয়ক বক্তৃতার আয়োজন প্রভৃতি উদ্দেশ্যে মহেন্দ্রলাল ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার বৌবাজার স্ট্রিটে ‘ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞান সভা’ (ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স’ বা আই এ সি এস) প্রতিষ্ঠা করেন। বিজ্ঞানের অধ্যাপক ফাদার ইউজিন লাঁফো তাঁকে এ কাজে বিশেষ সহায়তা করেন।
আই. এ. সি. এস-এর পরিচালনা : ডক্টর মহেন্দ্রলাল সরকার আমৃত্যু এই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠান পরিচালন সমিতির সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশব চন্দ্র সেন প্রমুখ। প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষকতা করেন গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমূখ।
বিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশ : মহেন্দ্রলাল সরকারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আই. এ. সি. এস তার নিজস্ব পত্রিকা প্রকাশ করে। ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ফিজিক্স নামক এই পত্রিকাতে প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রকাশিত হত।
উপসংহার : বিজ্ঞানচর্চার প্রসারে মহেন্দ্রলালসরকারের উদ্যোগ বাংলা তথ্য ভারতের বিজ্ঞানচর্চাকে অনেক ধাপ এগিয়ে দেয়। জগদীশচন্দ্র বসু, চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন, মেঘনাদ সাহা প্রমুখ বিখ্যাত বিজ্ঞানী তাঁর প্রতিষ্ঠানে গবেষণা করেছেন। এখানে গবেষণা করেই চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন ‘রমন ক্রিয়া’ (রমন এফেক্ট) আবিষ্কার করেন, যার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান।
উপবিভাগ : ঘ.৪
৪.৭ ভারত সরকার কীভাবে দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতীয় ইউনিয়নে সংযুক্ত করার প্রশ্নটি সমাধান করেছিল ?
ভূমিকা : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা লাভের প্রাক-মুহূর্তে ভারতীয় ভূখণ্ডে দেশীয় শাসকদের শাসনাধীনে ৫০০ বেশি দেশীয় রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। তাছাড়া পোর্তুগাল, ফ্রান্স প্রভৃতি কয়েকটি রাষ্ট্রের উপনিবেশও ভারতে ছিল। স্বাধীনতা লাভের পর এইসব স্থানকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
কংগ্রেসের ঘোষণা : স্বাধীনতা লাভের আগেই ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। ১৫ জুন ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তারা ঘোষণা করে যে, ব্রিটিশ শক্তি ভারত ছেড়ে যাওয়ার পর দেশীয় রাজ্যগুলির স্বাধীন অস্তিত্ব কংগ্রেস স্বীকার করবে না।
বল্লভভাই প্যাটেলের সক্রিয়তা : স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব ভি পি মেনন দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। প্যাটেল ভারতভুক্তির বিনিময়ে দেশীয় রাজ্যের শাসকদের বিপুল ভাতা, খেতাব ও অন্যান্য সুবিধা দানের প্রলোভন দেখান।
ভারতভুক্তি : বল্লভভাই প্যাটেলের কূটনৈতিক চাপ ও হুমকির ফলে স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী ৩ সপ্তাহের মধ্যেই অধিকাংশ দেশীয় রাজ্য ‘ভারতভুক্তির দলিল’-এ স্বাক্ষর করে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রথমদিকে, জুনাগড়, হায়দ্রাবাদ এবং কাশ্মীর ভারতে যোগদানে অস্বীকার করলেও শেষপর্যন্ত ভারতের চাপে তারা যোগদানে বাধ্য হয়। সিকিমও ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতে যোগ দেয়।
উপসংহার : ভারতের চাপে চন্দননগর, মাহে, কারিকল, পন্ডিচেরী, ইয়ানাম প্রভৃতি ফরাসি উপনিবেশ এবং গোয়া, দমন, দিউ, দাদরা ও নগর হাভেলি প্রভৃতি পোর্তুগিজ উপনিবেশও ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়।
৪.৮ কীভাবে কাশ্মীর সমস্যার সৃষ্টি হয় ?
ভূমিকা : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় ভারতীয় ভূখণ্ডের উল্লেখযোগ্য দেশীয় রাজ্য ছিল কাশ্মীর। ব্রিটিশরা ভারত ত্যাগের পর কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং কাশ্মীরের স্বাধীন অস্তিত্ব বজায় রাখতে উদ্যোগী হন।
জটিলতা : কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং হিন্দু হলেও এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দা ছিল মুসলিম। এই অবস্থায় মহারাজা হরি সিং কাশ্মীরের স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করলে পাকিস্তান ও ভারত উভয় রাষ্ট্রই কাশ্মীরকে নিজ রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করে।এর ফলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে।
পাক হানা : ২২ অক্টোবর, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে পাক মদতপুষ্ট হানাদারবাহিনী ও পাক সেনাদল কাশ্মীরে প্রবেশ করে ব্যাপক হত্যালীলা, লুণ্ঠন ও নির্যাতন শুরু করে। ফলে মহারাজা হরি সিং ভারত সরকারের কাছে সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করেন।
ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর : কাশ্মীরের সামরিক সাহায্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার ঘোষণা করে যে, মহারাজা ‘ভারতভুক্তির দলিল’-এ স্বাক্ষর করলে তবেই তারা কাশ্মীরে সেনা পাঠাবে। এদিকে পাকবাহিনী কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থান দ্রুত দখল করতে থাকলে মহারাজা হরি সিং ভারতভুক্তির ‘দলিল’-এ স্বাক্ষর করেন।
ভারতের অভিযান : মহারাজা হরি সিং ভারতভুক্তির দলিল’-এ স্বাক্ষর করার পরের দিন ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরে অভিযান শুরু করে দ্রুত কাশ্মীরের ২/৩ অংশ ভূখণ্ড দখল করে নেয়।
শেখ আব্দুল্লাহর ক্ষমতা দখল : ভারতের সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা শেখ আবদুল্লাহ কাশ্মীরের শাসনক্ষমতা দখল করেন।
যুদ্ধ বিরতি : জাতিপুঞ্জ ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ৩১ ডিসেম্বর কাশ্মীরে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করে এবং ‘যুদ্ধ বিরতি সীমারেখা’ বা ‘নিয়ন্ত্রণরেখায়’ (Line of Controlet LOC) জাতি পুঞ্জের পরিদর্শক নিয়োগ করে।
আজাদ কাশ্মীর : পাকিস্তানকে হটিয়ে ভারত কাশ্মীর দখল করলেও কাশ্মীরের কিছু অংশ পাকিস্তানের দখলে থেকে যায়, যা ‘আজাদ কাশ্মীর’ নামে পরিচিত।
উপসংহার : পাকিস্তান মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরকে নিজেদের দখলে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভারতের রক্ত ও লৌহ’ নীতি এবং কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং-এর উদ্যোগের ফলে কাশ্মীর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু কাশ্মীর না পাওয়ার হতাশা থেকে পাকিস্তান আজও ভারতে বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
বিভাগ – ‘ঙ’
৫। পনেরো বা ষোলোটি বাক্যে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ১x৮=৮
৫.১ বিদ্যাসাগরের নেতৃত্বে বিধবা বিবাহ আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। বিদ্যাসাগর কতটা সাফল্য অর্জন করেছিলেন ? ৫ + ৩
Ans: রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগ ও আন্দোলনের ফলে ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা ডিসেম্বর সতীদাহ প্রথা আইনত নিষিদ্ধ হলেও বিধবাদের ভবিষ্যৎ কী এ সম্পর্কে তেমন কোন উদ্যোগ তাঁর পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
(i) বিধবা বিবাহের পক্ষে জনমনে চেতনার প্রসারে বিদ্যাসাগর ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকায় প্রথম বিধবা বিবাহের পক্ষে প্রবন্ধ লেখেন, পরের বছর ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে “বিধবা বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব” নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। পরাশর সংহিতা থেকে উদ্ধৃতি তুলে বিদ্যাসাগর বলেন— বিধবা বিবাহ সম্পূর্ণভাবে শাস্ত্রসম্মত।
(ii) বিদ্যাসাগর বিধবার পুনর্বিবাহ নিয়ে আন্দোলন শুরু করলে তাঁর বিরোধিতায় নেমে পড়েন শোভাবাজার রাজবাড়ির রাধাকান্ত দেব ও তাঁর ধর্মসভা। বিদ্যাসাগরের বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে এসময় কমপক্ষে তাঁরা ৩০টি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত এই বিরোধ নিয়ে ছড়া লিখলেন—
“বাঁধিয়াছে দলাদলি লাগিয়াছে গোল
বিধবার বিয়ে হবে বাজিয়াছে ঢোল ।”
(iii) সমালোচনার ও বিদ্রুপের জবাব দিতে বিদ্যাসাগরও পিছপা হলেন না। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে প্রকাশ করলেন ‘বিধবা বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব’ নামে দ্বিতীয় পুস্তিকা। শুধু তাই নয় বিধবা বিবাহকে আইন সিদ্ধ করার জন্য ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে ৯৮৭ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত এক আবেদন পত্র ভারতীয় আইন সভায় পেশ করেন।
(iv) রাধাকান্তদেবও চুপচাপ বসে রইলেন না, তিনি বিদ্যাসাগরের বিরোধিতা করে বিধবা বিবাহের বিরুদ্ধে ৩৬,৭৬৩ জনের স্বাক্ষরিত এক দরখাস্ত সরকারের কাছে পাঠালেন। শান্তিপুরের তাঁতিরা এ সময় বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কাপড়ে লিখলেন—
“সুখে থাকুক বিদ্যাসাগর চিরজীবী হয়ে,
সদরে করেছে রিপোর্ট বিধবাদের হবে বিয়ে।”
(v) রাধাকান্তদেব ও রক্ষণশীলদের শত বিরোধিতা সত্ত্বেও বড়লাট ক্যানিং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জুলাই ১৫ নং রেগুলেশন জারি করে বিধবা বিবাহকে আইন সিদ্ধ করেন।
বিদ্যাসাগরের নেতৃত্বে বিধবাবিবাহের সাফল্য—
বিধবা বিবাহ সংক্রান্ত আন্দোলন এবং এ বিষয়ে সরকারের আইন পাশ বিদ্যাসাগরের এক বড় সাফল্য । তবে কেবল আইন পাশ করে নয়, বিধবা বিবাহকে বাস্তবে কার্যকরী করতেও তিনি উদ্যোগী হন।
(i) রক্ষণশীলদের শত বিরোধিতা সত্ত্বেও বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে প্রথম বিধবা বিবাহ সংঘটিত হয় সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নের সঙ্গে বিধবা পাত্রী কালীমতি দেবীর। এছাড়াও বিদ্যাসাগর নিজ উদ্যোগে ৬০টি বিধবা বিবাহ দেন, এমনকি নিজ পুত্র নারায়ণ চন্দ্রকেও ভবসুন্দরী নামে এক বিধবার সঙ্গে বিবাহ দেন । বিধবাদের বিবাহের জন্য বিদ্যাসাগর ১৮৭২ সালের ১৫ই জুন ‘হিন্দু ফ্যামিলি অ্যানুইটি ফান্ড’ তৈরি করেন।
(ii) বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ আন্দোলনে প্রভাবিত হয়ে দক্ষিণ ভারতের সমাজ সংস্কারক বীরশালিঙ্গম পানতুলু বিধবা বিবাহকে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষ্যে ‘বিধবা বিবাহ সমিতি’ গড়ে তোলেন। এই কাজের জন্য তাঁকে ‘দক্ষিণ ভারতের বিদ্যাসাগর’ বলা হয়।
(iii) রক্ষণশীলদের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যায়নি। বিদ্যাসাগরের শুরু করা বিধবাবিবাহ পরবর্তীকালে স্বাভাবিক নিয়মেই সমাজে নিজের স্থান করে নিয়েছে।
উপসংহার : বিধবাবিবাহ আন্দোলন ও তার প্রবর্তন ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তাঁর এই উদ্যোগের ফলে হিন্দু বিধবা নারীরা নতুন দিশার সন্ধান পায়।
৫.২ বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। ৮
Ans: বিকল্প শিক্ষানীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলায় উনিশ শতক থেকে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। গণমুখী এই শিক্ষাব্যবস্থার ঝোঁক ছিল বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ওপর। কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে যোগেশচন্দ্র ঘোষ একটি অর্থ ভাণ্ডার গড়ে তোলেন, লক্ষ্য বিদেশে গিয়ে কারিগরি বিষয়ে জ্ঞানার্জনকারী ছাত্রদের আর্থিক সাহায্য করা।
(i) বাঙালির কারগরি কল্পনার ইতিহাস ঘাঁটলে যে নামটি প্রথম উঠে আসে তিনি হলেন গোলকচন্দ্র, যিনি ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে বিলেত থেকে শ্রীরামপুর কাগজ কলে আনা বাষ্পীয় ইঞ্জিন সযত্নে পর্যবেক্ষণ করতে করতে কোনো বিদেশী সাহায্য ছাড়া নিজে একটি বাষ্পীয় ইঞ্জিন নির্মাণ করে ফেলেন।
(ii) ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে সরকার এদেশে টেলিগ্রাফ লাইন পাতার কাজ শুরু করলে এই বিভাগে প্রথম ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার শিবচন্দ্র নন্দী দুর্বার গতিতে পদ্মার বুকে সাবমেরিন কেবল পাতার কাজ খুব অল্পব্যয়ে শেষ করেন।
(iii) বাংলায় কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠা ও প্রসারে পি. এম. বাগচি অ্যান্ড কোম্পানির অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এই কোম্পানি প্রাচ্যে প্রথম কালি, সুগন্ধি প্রসাধন, রাবার স্ট্যাম্প, পঞ্জিকা তৈরি করে।
(iv) কারিগরি শিক্ষা ও শিল্প প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন অনুভূত হয়। কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে সরকার ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে ‘কলকাতা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করে, পরে এর নাম হয় বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে কলেজটি হাওড়ায় স্থানান্তরিত করা হয়।
(v) বাংলায় স্বদেশী আন্দোলনকালে জাতীয় নেতৃবৃন্দ সরকারি শিক্ষার বিকল্প হিসেবে জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অনুভব করেন, যার মাধ্যমে তাঁরা জাতীয়তাবাদী ও বাস্তবমুখী শিক্ষাদানের কথা বলেন। এই ভাবনা থেকে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই নভেম্বর পার্ক স্ট্রিটে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত মত ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ই মার্চ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় । যার অন্যতম একটি লক্ষ্য ছিল বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটানো। জাতীয় শিক্ষা পরিষদের অধীনে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অরবিন্দ ঘোষকে অধ্যক্ষ করে বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতীয় শিক্ষা পরিষদের অধীনে অসংখ্য বিদ্যালয় তৈরি হয়।
(vi) জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উল্লেখযোগ্য সদস্যদের মধ্যে তারকনাথ পালিত, নীলরতন সরকার, রাসবিহারী ঘোষ কারিগরি ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক শিক্ষাদানের পক্ষে ছিলেন। এই উদ্দেশ্যে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে তারকনাথ পালিত ‘সোসাইটি ফর প্রমোশন অব টেকনিক্যাল এডুকেশন ইন বেঙ্গল’ গঠন করেন। ওই বছরই আবার কলকাতার আপার সার্কুলার রোডে ‘বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট’ নামে একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। কারিগরি ও প্রযুক্তিবিদ্যা শিক্ষার উন্নতি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এর প্রসার ঘটাতে এই প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
(vii) আর্থিক ও অন্যান্য কারণে বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এর সঙ্গে মিশে যায়। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠান প্রথম কেমিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর পাঠ দেওয়া শুরু করে। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে এটি যাদবপুরে স্থানান্তরিত হয়। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে এর নামকরণ হয় ‘কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’। ১৯৫৫ তে এটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
৫.৩ বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে নারীসমাজ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিল ? তাদের আন্দোলনের সীমাবদ্ধতা কী ? ৫+৩
ভূমিকা : সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসক লর্ড কার্জন ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ করলে বাংলা তথা ভারতে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত হয়। এই আন্দোলনে নারীরাও বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণ করেন।
রাখী বন্ধন : ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই অক্টোবর বঙ্গভঙ্গের দিন প্রভাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে হিন্দু মুসলিম ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হিসেবে যে রাখী বন্ধন উৎসব অনুষ্ঠিত হয় তাতে মেয়েরা প্রবল উৎসাহে অংশ নেয় এবং কলকাতা সহ গ্রামে-গঞ্জের মন্দিরে, স্নানের ঘাটে সর্বত্র এই উৎসব ছড়িয়ে দেয়।
বিলিতি পণ্য বর্জন : বহু নারী বিলিতি পণ্য যেমন বিলাতি শাড়ি, কাচের চুড়ি, লবণ, ওষুধপত্র প্রভৃতির ব্যবহার বন্ধ করে দেন এবং দেশীয় মোটা কাপড়ের ব্যবহার শুরু করেন। গৃহকোণ ছেড়ে বেরিয়ে তাঁরা মিছিল-মিটিং ও পিকেটিং-এ অংশ নেন।
স্বদেশি পণ্যের প্রচার : বিদেশী দ্রব্য বর্জনের পাশাপাশি নারীরা স্বদেশী দ্রব্য তৈরি ও ব্যবহারের আহ্বান জানায়। স্বদেশি পণ্যের প্রচারে বিভিন্ন নারী এগিয়ে এসে প্রচারকার্য চালান। এই সময় সরলাদেবী চৌধুরানি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ স্থাপন করেন।
ব্রিটিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বয়কট : বহু ছাত্রী ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে আসে। তারা দেশীয় নিয়ন্ত্রণে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে ভরতি হয় ।
অরন্ধন : ব্রিটিশ সরকার ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করলে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর আহ্বানে যে ‘অরন্ধন উপবাস দিবস’ পালিত হয় তাতেও মেয়েরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। বাংলার নারীরা ঘরে ঘরে অরন্ধন ও উপবাস পালন করেন।
আন্দোলনে নারী নেতৃত্ব : বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে মুরশিদাবাদের গিরিজা সুন্দরী, ফরিদপুরের সৌদামিনী দেবী, বরিশালের সরোজিনী দেবী ও মনোরমা বসু, ঢাকার ব্রাহ্মময়ী সেন, বীরভূমের দুকড়িবালা দেবী, খুলনার লাবণ্যপ্রভা দত্ত প্রমুখ নারী স্থানীয়ভাবে এবং সরলাদেবী চৌধুরানি, হেমাঙ্গিনী দাস, কুমুদিনী মিত্র, লীলাবতী মিত্র, কুমুদিনী বসু, সুবালা আচার্য, নির্মলা সরকার প্রমুখ নারী জাতীয় স্তরে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দেন।
বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে নারীদের সীমাবদ্ধতা—
বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে নারীদের আন্দোলনের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন—
(১) সীমিত অংশগ্রহণ : বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী স্বদেশি আন্দোলনে নারীরা অংশগ্রহণ করলেও তা কখনোই খুব ব্যাপক আকার ধারণ করেনি। নারীসমাজের সীমিত অংশই এই আন্দোলনে অংশ নেয়।
(২) উচ্চবর্ণের আন্দোলন : বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে মূলত তথাকথিত উচ্চবর্ণের কিছু হিন্দু পরিবারের নারী অংশগ্রহণ করেন। নিম্নবর্ণের হিন্দু ও মুসলিম নারীদের অংশগ্রহণ প্রায় ছিল না বললেই চলে।
(৩) পুরুষের প্রাধান্য : এই আন্দোলনে নারীরা অংশগ্রহণ করলেও আন্দোলনের নীতি-পদ্ধতি নারীরা স্থির করতে পারতেন না। তা মূলত পুরুষ আন্দোলনকারীরাই স্থির করতেন।
উপসংহার : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন মূলতঃ সমাজের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীরা।নিম্নবিত্ত হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মহিলাদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়নি। তা সত্ত্বেও ভারতের প্রথম জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নারী সমাজের এই স্বল্পতম ভূমিকা চোখে পড়ার মতাে।
(কেবলমাত্র বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের জন্য)
বিভাগ – ‘চ’
৬। ৬.১ একটি সম্পূর্ণ বাক্যে উত্তর দাও (যে কোনো চারটি ) : ৪ x ১ = ৪
৬.১.১ ‘নীলদর্পণ’ নাটকটির রচয়িতা কে ?
৬.১.২ হিন্দু কলেজ কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়?
৬.১.৩ ‘আনন্দ মঠ’ কে রচনা করেন ?
৬.১.৪ কত খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়?
৬.১.৫ ‘মাস্টারদা’ নামে কে পরিচিত ছিলেন ?
৬.১.৬ নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস -এর প্রথম সভাপতি কে ছিলেন ?
৬.২ দুটি বা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও। (যে কোনো তিনটি) : ৩x২=৬
৬.২.১ ডেভিড হেয়ার স্মরণীয় কেন ?
৬.২.২ ‘বিপ্লব’ বলতে কী বোঝায় ?
৬.২.৩ ‘রশিদ আলি দিবস’ কেন পালিত হয়েছিল ?
৬.২.৪ ‘ভারতভুক্তির দলিল’ বলতে কী বোঝায় ?
◆ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি, বিনামূল্যে নোটস, সাজেশন, PDF ও সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp Group এ Join হয়ে যাও।
Madhyamik WhatsApp Groups | Click Here to Join |
Madhyamik Question Paper 2019 | মাধ্যমিক প্রশ্নপত্র ২০১৯
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Bengali Question Paper 2019 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik English Question Paper 2019 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Geography Question Paper 2019 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik History Question Paper 2019 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Mathematics Question Paper 2019 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Physical Science Question Paper 2019 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Life Science Question Paper 2019 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik All Subject Question 2019 Click here
Madhyamik Suggestion 2025 | মাধ্যমিক সাজেশন ২০২৫
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Bengali Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik English Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Geography Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik History Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Life Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Mathematics Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Physical Science Suggestion 2025 Click here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik All Subjects Suggestion 2025 Click here
Madhyamik History Question Paper 2019 | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯
File Details:
PDF File Name | WB Madhyamik History Question Paper 2019 | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ |
Board | WBBSE |
Download Link | Click Here To Download |
Download PDF | Click Here To Download |
Info : West Bengal Madhyamik History Question Paper 2019 | WBBSE Class 10th Madhyamik History Question Paper 2019
Madhyamik History Question Paper 2019 download with Sure Common in Examination. West Bengal Madhyamik 2019 History Question Paper and new question pattern. WBBSE 10th Class Board Exam suggestive questions. Madhyamik History Question Paper PDF Download. Important questions for WB Madhyamik 2019 History Subject. West Bengal Board of Secondary Education Madhyamik 2019 Model Question Paper Download.
West Bengal Madhyamik History Question Paper 2019 Download. WBBSE Madhyamik History short question Question Paper 2019 . Madhyamik History Question Paper 2019 download. Madhyamik Question Paper History. WB Madhyamik 2019 History Question Paper and important questions. Madhyamik Question Paper 2019 pdf.পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্ন উত্তর ও শেষ মুহূর্তের প্রশ্নপত্র ডাউনলোড। মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
Get the Madhyamik History Question Paper 2019 by BhugolShiksha.com
West Bengal Madhyamik History Question Paper 2019 prepared by expert subject teachers. WB Madhyamik History Question Paper with 100% Common in the Examination 2019.
Madhyamik History Question Paper 2019 – মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯
Madhyamik History Question Paper 2019 Download good quality Question Papers for Madhyamik 2019 History Subject prepared by Expert History subject teachers. Get the WBBSE Madhyamik 2019 History Question Paper. মাধ্যমিক 2019 ইতিহাস প্রশ্নপত্র. his Madhyamik History Question Paper 2019 will help you to find out your Madhyamik 2019 preparation.
West Bengal class 10th History Board Exam 2019 details info
West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) Madhyamik 2019 Exam Question Paper download for History subject. West Bengal Madhyamik 2019 Examination will be started from February. Students who are currently studying in Class 10th, will seat for their first Board Exam Madhyamik. West Bengal Board of Secondary Education will organize this Examination all over West Bengal. WBBSE Madhyamik 2019 History Question Paper download.
West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) History Exam 2019
West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) will organize Madhyamik (10th) Board Examination 2019. Students who are currently studying in Class 10 standard, will have to seat for their first Board Exam Madhyamik 2019. History is the first language for many students in the exam.
Madhyamik History Syllabus 2019
West Bengal Board of Secondary Education (WBBSE) Madhyamik History Syllabus with all the important chapters and marks distribution. Download the Madhyamik 2019 History Syllabus and Question Paper.
Questions on the History exam will come from these chapters. All the chapters are equally important, so read them carefully.
Madhyamik 2019 History Question Paper Marks Details
The total marks for this Examination will be 100, out of which 90 marks for the written exam and 10 marks for viva voce. The question pattern and Marks distribution of Madhyamik History Question Paper are given below.
West Bengal Madhyamik History Question Paper 2019 FREE PDF
West Bengal Madhyamik 2019 History Question Paper Download in History version. WBBSE Madhyamik History Question Paper 2019 pdf version. Get the complete Madhayamik History Question Paper 2019 with 100% Common in Examination. Madhyamik 2019 History Question Paper pdf download. Madhyamik Scientific Question Paper. WBBSE Class 10th History exam 2019 notes and Important questions.
Madhyamik History Question Paper 2019
This Madhyamik 2019 History Question Paper prepared by expert subject teachers. Hope this will help you on your first Board Examination. First, read your textbooks carefully and then practice this Question Paper. In this Question Paper, all the questions are mentioned, which are important for the Madhyamik 2019 History exam.
Madhyamik History Question Paper 2019 FREE PDF Download
Madhyamik History Question Paper 2019 PDF Download : This Question Paper prepared on the basis of all the important questions for this year’s Examination. This is not a complete study material, never depends upon only this Question Paper. Read your textbooks carefully first.
This is the complete list of Question Papers and other information of West Bengal Madhyamik 2019 Examination. Share this page to help your friends.
West Bengal Madhyamik History Question Paper 2019 | WB Madhyamik History Question Paper 2019 | পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯
মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষা 2019 (Madhyamik 2019 / WB Madhyamik 2019 / MP Exam 2019 / West Bengal Board of Secondary Education – WBBSE Madhyamik Exam 2019 / Madhyamik Class 10th / Class X / Madhyamik Pariksha 2019 ) এবং বিভিন্ন চাকরির (WBCS, WBSSC, RAIL, PSC, DEFENCE) পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে BhugolShiksha.com এর পক্ষ থেকে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ইতিহাস পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নোত্তর এবং প্রশ্নপত্র (Madhyamik History Question Paper / West Bengal Board of Secondary Education – WBBSE History Question Paper / Madhyamik Class 10th History Question Paper 2019 / Class X History Question Paper / Madhyamik Pariksha History Question Paper / History Madhyamik Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question Paper / Madhyamik History Question Paper 2019 FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারেলাগলে, আমাদের প্রয়াস মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষা 2019 / দশম শ্রেণী ইতিহাস পরীক্ষা 2019 প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নোত্তর এবং মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ / পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ / দশম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ (Madhyamik History Question Paper 2019 / West Bengal Board of Secondary Education – WBBSE History Question Paper 2019 / Madhyamik Class 10th History Question Paper 2019 / Class X History Question Paper 2019 / Madhyamik Pariksha History Question Paper 2019 / Madhyamik History Exam Guide 2019 / Madhyamik History MCQ , Short , Descriptive Type Question Paper 2019 / Madhyamik History Question Paper 2019 FREE PDF Download) সফল হবে।
Madhyamik History Question Paper 2019 | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” Madhyamik History Question Paper 2019 | পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র ২০১৯ ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করুন এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন , ধন্যবাদ।