প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer
প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer : প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই West Bengal WBCHSE HS Class 12th Bengali Prarthona Question and Answer, Suggestion, Notes | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) থেকে রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal HS Class 12th Twelve XII Bengali 4th Semest Examination – পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষা তে এই সাজেশন বা কোশ্চেন প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।
তোমরা যারা প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা এই প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়ো এবং নীচে দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নাও।
রাজ্য (State) | পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) |
বোর্ড (Board) | WBCHSE, West Bengal |
শ্রেণী (Class) | দ্বাদশ শ্রেণী (WB HS Class 12th) |
বিষয় (Subject) | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা (HS Class 12 Bengali) |
কবিতা (Kobita) | প্রার্থনা (Prarthona) |
লেখক (Writer) | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) |
[দ্বাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]
প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE HS Class 12th Bengali Prarthona Kobita Question and Answer
রচনাধর্মী | প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 Bengali Prarthona Kobita Descriptive Question and Answer:
1. প্রার্থনা’ কবিতায় প্রকাশিত বিশ্ববোধের পরিচয় দাও।
Ans: কবির বিশ্ববোধ: ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্যান্য কবিতার মতো পাঠ্য ‘প্রার্থনা’ কবিতাটিতেও রবীন্দ্রনাথের বিশ্ববোধের পরিচয় পাওয়া যায়। উপনিষদের মন্ত্রে দীক্ষিত পূর্ণতাসন্ধানী রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন ব্যক্তিসত্তা হোক বা জাতিসত্তা, খণ্ডিত ক্ষুদ্রতার মধ্যে তার পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। এই বিশ্ববোধ থেকেই ‘প্রার্থনা’ কবিতায় বিশ্বপিতার কাছে তিনি সমগ্র মানবজাতির হৃদয় ও সত্তার পূর্ণ বিকাশের প্রার্থনা করেছেন, প্রগতিশীল ভারতবর্ষ গঠনের প্রত্যাশা করেছেন স্বদেশবাসীর কাছেই।
আলোচ্য কবিতায় কবি ইঙ্গিত দিয়েছেন এই বিরাট বসুন্ধরার সর্বত্রগামী সম্ভাবনাকে ক্ষুদ্র গৃহসীমায় আবদ্ধ করে রাখলে মানুষের প্রাপ্তির পরিসরও সংকুচিত হয়ে যায়। তাই যাবতীয় বিচ্ছিন্নতাকে দূরে সরিয়ে, সমস্ত খণ্ডতাকে পরিহার করে আমাদের দেশকে পূর্ণতার মধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন কবি। বিশ্বপিতার কাছে এমন এক স্বপ্নের স্বদেশ প্রার্থনা করেছেন বিশ্বকবি যেখানে কোনো হীনতা-নীচতা-সংকীর্ণতা থাকবে না, প্রধান হয়ে উঠবে মনুষ্যত্ব। কবির কাঙ্ক্ষিত স্বদেশ কেমন হবে তা ব্যাখা করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন-“… যেথা গৃহের প্রাচীর/আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী। বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি,”। আসলে দেশের সংকীর্ণ সীমায় নয়, রবীন্দ্রনাথ চান তাঁর দেশের মানুষ নিজেকে আবিষ্কার করবে পরিব্যাপ্ত বিশ্বে। সমগ্র বিশ্বের মাঝে নিজের অবস্থানটি খুঁজে নেওয়ার, নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার শক্তি ও সাহস থাকবে তাঁর সহনাগরিকদের। আলোচ্য কবিতায় তিনি লিখেছেন-“… যেথা নির্বারিত স্রোতে। দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায় । অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়-” অর্থাৎ পৃথিবীর বৃহত্তর কর্মযজ্ঞে ভারতবাসীর অংশগ্রহণ এবং সাফল্যলাভের স্বপ্ন দেখেছিলেন কবি। সারা পৃথিবীর মানচিত্রে ভারতবর্ষকে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হতে দেখাই ছিল বিশ্বকবির আকাঙ্ক্ষা। এই চিন্তার মধ্য দিয়েই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বিশ্ববোধ।
2. প্রার্থনা’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথের স্বদেশচিন্তার পরিচয় দাও।
Ans: সূচনা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নৈবেদ্য’ কাব্যের ৭২ সংখ্যক কবিতা হল ‘প্রার্থনা’। পরে কবিতাটি ‘সঞ্চয়িতা’-র অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের স্বদেশপ্রেমের নির্দশন ‘প্রার্থনা’ কবিতার ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে। এই কবিতায় তাঁর স্বপ্নের ভারতবর্ষের ছবি এঁকেছেন কবি। সেই ভারতবর্ষই যে এক আদর্শ স্বদেশের প্রতিচ্ছবিরূপে ধরা দিয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
সুমহান ভারতবর্ষের ছবি: ভারতবর্ষ একদিন জগতের দরবারে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে আসীন হবে- এটাই কবির বিশ্বাস। কবি এই কবিতায় এমন এক অখন্ড ভারতবর্ষের ছবি এঁকেছেন যেখানে কোনো সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ থাকবে না। মানুষ ভয়শূন্য হৃদয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচবে। জ্ঞান যেখানে সংকীর্ণ কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকবে না, যেখানে খণ্ড ক্ষুদ্র ভৌগোলিক সীমা নয়; বিরাট পৃথিবীর এক গুরুত্বপূর্ণ অংশরূপে ভারতবর্ষ বিরাজমান হবে। সে দেশের মানুষ নিজের গৃহাঙ্গনে আবদ্ধ থাকবে না। কারণ ভারতবাসী যদি সংকীর্ণ গণ্ডির মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখে তাহলে তাদের হৃদয়েও সংকীর্ণতা দেখা দেবে, তাতে চিত্তের উৎকর্ষসাধন হবে না। বরং ভারতবাসী অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে যে আবেগময় কথাগুলি মুক্তকণ্ঠে উচ্চারণ করে সেখানে ছলনার কোনো স্থান থাকে না। আর স্বদেশবাসীর এই স্বতঃস্ফূর্ত কথা বা বাল্বাধীনতাকেই প্রত্যক্ষ করতে চেয়েছেন কবি। কারণ কবির দৃষ্টিতে ভারতবর্ষের মতো মহান দেশ সমগ্র বিশ্বে আর একটিও নেই।
কর্মের বৃহত্তর যজ্ঞে ভারতবাসী: মানুষ তার জীবনধারণের জন্য কর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়। পৃথিবীতে কর্মের কত না ধারা বহমান আর সেই কর্মধারার সঠিক রূপায়ণের মধ্য দিয়েই স্বপ্নের দেশের ভিত্তি রচিত হতে পারে বলে কবি মনে করেছেন। কর্মপ্রবাহের মধ্য দিয়েই সফলতা আসে, জীবনধারাকে চলমান রাখে এই কর্মধারা। ভারতবাসীও সারা পৃথিবীতে তার কর্মের কৃতিত্ব দ্বারা পরিচিত হবে এবং বিশ্বের কাছে স্বদেশের নাম উজ্জ্বল করবে- এটাই কবির স্বপ্ন।
কুসংস্কারমুক্ত মন: মানুষের জীবনের নানা কুসংস্কার, তুচ্ছ আচারগুলি মরুভূমির শুকনো বালির মতোই- যা জীবনের গতিকে স্তব্ধ করে দেয়। এই তুচ্ছ আচারের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হলে ভারতবাসী স্বর্গের ন্যায় স্বদেশভূমি গঠন করতে পারবে যেখানে ভারতবাসী শৌর্য, বীর্য, পরাক্রমের দ্বারা একজন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিশ্ববাসীতে পরিণত হবে- এমনটাই কবির আশা জীবনদেবতার আশীর্বাদপ্রাপ্ত স্বদেশ: আমাদের সকল কাজকর্ম এক অদৃশ্য শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সেই শক্তিকেই কবি ‘জগৎপিতা’ বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি যেমন সর্ব কর্ম, চিন্তা, আনন্দের নেতা আবার তিনিই দেশের মঙ্গলের জন্য মানুষের সুপ্ত চেতনার মূলে নিষ্ঠুর আঘাত করতেও দ্বিধাবোধ করেন না। তাঁর নির্দয় আঘাতেই চূর্ণ হয় সমস্ত অন সংস্কারের শৃঙ্খল। তাই তাঁর আশীর্বাদকে পাথেয় করেই সমস্ত চিন্তাশক্তি, বোধবুদ্ধির শুভ জাগরণ ঘটিয়ে ভারতবর্ষকে এক স্বর্গীয় মহিমায় উন্নীত করতে চেয়েছেন কবি। সমগ্র কবিতাজুড়ে এভাবেই বিশ্বপিতার কাছে ধ্বনিত হয়েছে কবির প্রার্থনার বিশ্বজনীন সুর। অশুভ, কলুষিত পুরাতনকে বিশ্বপিতার আশীর্বাদী আঘাতে ধ্বংস করে নতুন ‘স্বর্গরাজ্য’ তথা স্বদেশ গঠনের আকাঙ্ক্ষাই স্বদেশপ্রেমী রবীন্দ্রনাথের একমাত্র প্রার্থনা।
3. প্রার্থনা কবিতায় রবীন্দ্রনাথের স্বদেশপ্রীতি এবং ঈশ্বরভক্তি কীভাবে ৫ প্রকাশিত হয়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখো।
Ans: স্বদেশপ্রীতি ও ঈশ্বরভক্তি: ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের ৭২ সংখ্যক কবিতায় তথা পাঠ্য ‘প্রার্থনা’ কবিতায় সনেটের সংক্ষিপ্ত পরিসরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের স্বদেশপ্রীতি এবং ঈশ্বরভক্তি। উপনিষদের মন্ত্রে দীক্ষিত, পূর্ণতাসন্ধানী, সত্য-সুন্দর-মঙ্গলের পূজারী, মানবকল্যাণকামী
রবীন্দ্রনাথ পরাধীন ভারতবাসীর সবরকমের অধঃপতন প্রত্যক্ষ করে পীড়িত হয়েছিলেন। বুঝেছিলেন স্বদেশবাসীর এই অধঃপতনের মূল কারণ হল মানব মহত্ত্বের পূর্ণ আদর্শ থেকে ভ্রষ্ট হওয়া এবং সংস্কারমুক্ত সত্যধর্মকে গ্রহণ না করা। স্বদেশবাসীকে উদ্ধারের জন্য বিশ্বপিতার কাছে কবির যে আত্মনিবেদন, যে প্রার্থনা আলোচ্য কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে তা যেমন তাঁর নিবিড় স্বদেশপ্রীতির পরিচয় বহন করেছে তেমনই তাঁর ঈশ্বরভক্তির অনন্য নিদর্শন হয়ে উঠেছে।
‘প্রার্থনা’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ মাতৃভূমি ভারতবর্ষকে উন্নতির শীর্ষে পৌঁছে দেওয়ার পথ অনুসন্ধানের সময় উপলব্ধি করেছিলেন, বর্তমানে ভারতকে তার অতীত ঐতিহ্য থেকে শিক্ষা নিয়ে আধ্যত্মিকভাবে পুনরায় জাগরিত হতে হবে আর সেই শুভবোধ পরাধীন ভারতবাসীর মনে জ্বালবে দৃঢ় প্রত্যয়ের আলো। তার জন্য কবি ভগবানের কাছে, বিশ্ববিধাতার কাছে আত্মনিবেদন করেছেন। এখানে কবির ঈশ্বরভক্তির মূলে রয়েছে দেশপ্রেম।
আসলে স্বদেশপ্রেমী রবীন্দ্রনাথ উপলব্ধি করেছেন যে কর্মের কৃতিত্ব দ্বারাই ভারতবাসীকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা পেতে হবে, কর্মই হবে তার প্রকৃত ধর্ম আর এই শাশ্বত সত্যের বোধ ভারত পাবে তার নিজের ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস থেকেই। ভারতবর্ষের ইতিহাস এমনই মহার্ঘ যে, তাকে অন্য কোথাও থেকে অনুপ্রেরণা সন্ধান করতে হয় না। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অন্ধ সংস্কারকে পরিত্যাগ করে, এক হয়ে বাঁচাই হবে ভারতবাসীর আদর্শ আর খণ্ডতাবোধের সমূলে বিনাশ ঘটিয়ে ভারতবাসীকে পূর্ণতার এই তত্ত্বে দীক্ষিত করবেন বিশ্বপিতা, জগদীশ্বর। অর্থাৎ স্বদেশের সংকটকালে দিশাহীন হয়ে রবীন্দ্রনাথ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরেরই দ্বারস্থ হয়েছেন। ফলত, ‘প্রার্থনা’ কবিতায় একই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের স্বদেশপ্রীতি এবং ঈশ্বরভক্তির সম্মিলিত প্রকাশ ঘটেছে।
4. “যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি…”- ‘তুচ্ছ আচার’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? এখানে তুচ্ছ আচারের সঙ্গে মরুবালুরাশির তুলনা করা হয়েছে কেন?
Ans: ভূমিকা: বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথের ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘প্রার্থনা’ কবিতায় কবি ‘তুচ্ছ আচার’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন। ‘তুচ্ছ আচার’ আসলে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়, মানুষকে সংকীর্ণতার বেড়াজালে আবদ্ধ করে হীনতায় পর্যবসিত করে।
তুচ্ছ আচারের স্বরূপ: কাব্যাংশে যে-সমস্ত আচরণ বিজ্ঞানসম্মত নয়, যে সংস্কারগুলি আমাদের কর্মপথে বাধার সৃষ্টি করে, অন্ধ সংস্কার পরিপূর্ণ। সেই আচার-আচরণগুলিকেই ‘তুচ্ছ আচার’ বলেছেন কবি। মানুষ যুগ যুগ ধরে নানারূপ অধ সংস্কারে আবদ্ধ এবং সেগুলির দ্বারা পরিচালিত। সেই অবৈজ্ঞানিক জীবনযাত্রার নিয়ন্ত্রক শক্তিকেই এখানে ‘তুচ্ছ আচার’ বলা হয়েছে।
তুচ্ছ আচারের সঙ্গে মরুবালুরাশির তুলনা: ‘প্রার্থনা’ কবিতায় কথিত তুচ্ছ আচারের সঙ্গে কবি মরুবালুরাশির তুলনা করেছেন। মরুভূমির বালুকারাশি শুষ্ক, নীরস। তার ভিতরে জলস্রোত প্রবাহিত হতে পারে না। জলীয় সরসতাকে সে নিমেষে গ্রাস করে ফ্যালে। সামাজিক মানুষের পক্ষে ‘তুচ্ছ আচার’ গুলোও যেন মরুভূমির বালুরাশির মতোই। বিচারের পথে, ন্যায়ের পথে, কল্যাণের পথে মানুষ যখন অগ্রসর হয়; তখন মানবজীবনের সেই মঙ্গলময় ধারাকে আটকে দেয় তুচ্ছ আচার ও অন্ধ সংস্কারগুলি।
সুতরাং আলোচ্য অংশে তুচ্ছ আচারের সঙ্গে বিশুষ্ক মরুবালুরাশির তুলনাটি যথার্থ হয়েছে। জীবনে যা কিছু অকল্যাণকর তাকে দূরে সরিয়ে মঙ্গল ও কল্যাণের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন উপনিষদে আস্থাশীল কবি রবীন্দ্রনাথ। মানবতাবাদে বিশ্বাসী কবি তাই আস্থা রেখেছেন যে, মানুষ একদিন তুচ্ছ আচার পরিত্যাগ করে বৃহত্তর চেতনায় এমন এক স্বদেশ গঠন করবে যেখানে অন্ধ কুসংস্কারের কোনো স্থান থাকবে না। মানুষের হৃদয় হবে মুক্ত।
5. সনেট কী? সনেট হিসেবে ‘প্রার্থনা’ কবিতাটির সার্থকতা বিচার করো।
Ans: সনেট: সাধারণত, প্রতিটি পঙ্ক্তিতে চোদ্দোটি অক্ষর এবং চোদ্দো পঙক্তি সমন্বিত ভাবগম্ভীর গীতিকবিতাকে ‘সনেট’ বা চতুর্দশপদী কবিতা বলা হয়। ইতালীয় ‘সনেটো’ (অর্থ মৃদুধ্বনি) শব্দ থেকেই এসেছে ‘সনেট’। – কবি তাঁর অভিব্যক্তি সনেটের চোদ্দো চরণের সীমিত পরিসরে সুনির্দিষ্ট নিয়মে প্রকাশ করে থাকেন। ইতালিতে কবি পেত্রার্কের হাতে সনেট রচনার – সূত্রপাত হলেও কবিতা লেখার এই আকর্ষণীয় রীতিটিতে অল্প সময়েই – আকৃষ্ট হয়ে পড়েন ইউরোপের বিভিন্ন কবিরা। পেত্রার্ক সনেট রচনার যে আদর্শ রীতি নির্মাণ করেছিলেন, সেখানে চোদ্দোটি পক্তি বিভক্ত ছিল অষ্টক বা Octave (প্রথম আটটি চরণ) এবং যটক বা Sestet (শেষ ছটি চরণ)-এ। অষ্টকের ক্ষেত্রে অন্ত্যমিল থাকত সাধারণত ‘কখখক’, ‘কখখক’ এবং ষটকের ক্ষেত্রে ‘গঘঙ’ ‘গঘঙ’ অথবা ‘গঘ’ ‘গঘ’ ‘গঘ’। জন মিলটন, উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ এই রীতিকে মান্যতা দিলেও সরে এসেছিলেন শেকসপিয়র। শেকসপিয়র চোদ্দো চরণকে কখনও আট-ছয়, কখনও আট-তিন-তিন আবার কখনও বারো-দুইতে ভাগ করেছেন। অন্ত্যমিলের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই- ‘কখকখ-গঘ-গঘ-ঙচঙচ-ছ’ রীতিকে মেনে চলতেন শেকসপিয়র। মিলটন, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, শেকসপিয়রের হাতে সনেট বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর বাংলায় এই রীতিতে প্রথম কবিতা রচনা করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। পরবর্তী সময়ে বাংলা ভাষায় দেবেন্দ্রনাথ সেন, অক্ষয়কুমার বড়াল, মোহিতলাল মজুমদার, প্রমথ চৌধুরী এবং আরও পরে জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে প্রমুখ কবিরা সার্থক সনেট রচনা করলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই এই রীতির শ্রেষ্ঠ কবি।
সনেট হিসেবে প্রার্থনা কবিতার সার্থকতা: সনেট তথা চতুর্দশপদী কবিতা রচনায় রবীন্দ্রনাথের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায় ‘চৈতালি’ এবং ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলিতে। ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত অন্যান্য কবিতার মতোই পাঠ্য ‘প্রার্থনা’ কবিতাটিতে তিনি সনেটের বাহ্যিক গঠনকে গুরুত্ব দেননি। পেত্রার্ক বা শেকসপিয়র কারোর সনেট রচনার রীতিকেই হুবহু অনুসরণ করেননি কবি, তবে তাঁর চোদ্দো চরণ সবংলিত ‘প্রার্থনা’ কবিতাটি সনেটের ভাবগভীরতাকে সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরতে পেরেছে। সনেটের প্রচলিত চরণাস্তিক মিল অনুসরণ না করে রবীন্দ্রনাথ ‘প্রার্থনা’ সনেটটি রচনা করেছেন অন্ত্যানুপ্রাস রীতিতে।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর সমগ্র সৃষ্টিজীবনে মৌলিকতাকে বরাবর প্রাধান্য দিয়েছেন। বিদেশে কিংবা এদেশে সনেট রচনার যে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যটি নির্মিত হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথ তাতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন কিন্তু সনেট রচনার ক্ষেত্রে কোনো রীতিকেই সরাসরি অনুসরণ না করে নিজস্বতা বজায় রেখেছিলেন। আলোচ্য ‘প্রার্থনা’ কবিতাটিতে তিনি মানবজাতিকে উৎকৃষ্ট জীবনযাপনের সন্ধান দিতে চেয়েছেন, আত্মনির্মাণের পাশাপাশি গুরুত্ব দিতে চেয়েছেন সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনের আদর্শায়িত মৌলিক ধারণাকে। এ কবিতায় তিনি এমন এক ভূ-পরিসর বিশ্বপিতার কাছে প্রার্থনা করেছেন, যেখানে মানুষ তার স্বাধীন চেতনা এবং বৃহত্তর জীবনবোধকে স্বমর্যাদায় ধারণ করতে পারবে। ‘প্রার্থনা’ কবিতার প্রথম বারোটি চরণে রবীন্দ্রনাথ তাঁর কাঙ্ক্ষিত ভারতভূমির ছবি এঁকেছেন এবং কবিতার শেষ দুটি চরণে মানবজাতির মঙ্গলকামনায় জগৎস্রষ্টা বিশ্বপিতার কাছে পরিপূর্ণরূপে আত্মনিবেদন করেছেন।
উপসংহার: দেশকাল নিরপেক্ষ মানবজাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন-সম্ভাবনাকে ধারণ করে রেখেছে এই কবিতা। কবিতাটির নির্মাণের মধ্যে রয়েছে বিস্ময়কর শৃঙ্খলা এবং গাম্ভীর্য। এককথায়, একটি বৃহত্তর রবীন্দ্রদর্শনের অনায়াস প্রকাশ ঘটেছে সনেটের সংক্ষিপ্ত পরিসরে। তাই সবদিক থেকে বিচার করে বলা যায়, সনেটের যে রীতিটি রবীন্দ্রনাথ ‘প্রার্থনা’ কবিতায় নির্মাণ করেছেন তা যথাযথ এবং সার্থক।
6. “যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি…”- ‘তুচ্ছ আচার’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? এখানে তুচ্ছ আচারের সঙ্গে মরুবালুরাশির তুলনা করা হয়েছে কেন?
Ans: ভূমিকা: বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথের ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘প্রার্থনা’ কবিতায় কবি ‘তুচ্ছ আচার’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন। ‘তুচ্ছ আচার’ আসলে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়, মানুষকে সংকীর্ণতার বেড়াজালে আবদ্ধ করে হীনতায় পর্যবসিত করে।
তুচ্ছ আচারের স্বরূপ: কাব্যাংশে যে-সমস্ত আচরণ বিজ্ঞানসম্মত নয়, যে সংস্কারগুলি আমাদের কর্মপথে বাধার সৃষ্টি করে, অন্ধ সংস্কার পরিপূর্ণ। সেই আচার-আচরণগুলিকেই ‘তুচ্ছ আচার’ বলেছেন কবি। মানুষ যুগ যুগ ধরে নানারূপ অধ সংস্কারে আবদ্ধ এবং সেগুলির দ্বারা পরিচালিত। সেই অবৈজ্ঞানিক জীবনযাত্রার নিয়ন্ত্রক শক্তিকেই এখানে ‘তুচ্ছ আচার’ বলা হয়েছে।
তুচ্ছ আচারের সঙ্গে মরুবালুরাশির তুলনা: ‘প্রার্থনা’ কবিতায় কথিত তুচ্ছ আচারের সঙ্গে কবি মরুবালুরাশির তুলনা করেছেন। মরুভূমির বালুকারাশি শুষ্ক, নীরস। তার ভিতরে জলস্রোত প্রবাহিত হতে পারে না। জলীয় সরসতাকে সে নিমেষে গ্রাস করে ফ্যালে। সামাজিক মানুষের পক্ষে ‘তুচ্ছ আচার’ গুলোও যেন মরুভূমির বালুরাশির মতোই। বিচারের পথে, ন্যায়ের পথে, কল্যাণের পথে মানুষ যখন অগ্রসর হয়; তখন মানবজীবনের সেই মঙ্গলময় ধারাকে আটকে দেয় তুচ্ছ আচার ও অন্ধ সংস্কারগুলি।
সুতরাং আলোচ্য অংশে তুচ্ছ আচারের সঙ্গে বিশুষ্ক মরুবালুরাশির তুলনাটি যথার্থ হয়েছে। জীবনে যা কিছু অকল্যাণকর তাকে দূরে সরিয়ে মঙ্গল ও কল্যাণের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন উপনিষদে আস্থাশীল কবি রবীন্দ্রনাথ। মানবতাবাদে বিশ্বাসী কবি তাই আস্থা রেখেছেন যে, মানুষ একদিন তুচ্ছ আচার পরিত্যাগ করে বৃহত্তর চেতনায় এমন এক স্বদেশ গঠন করবে যেখানে অন্ধ কুসংস্কারের কোনো স্থান থাকবে না। মানুষের হৃদয় হবে মুক্ত।
7. “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি,”- এটি কার লেখা, কোন্ কবিতার অংশ এবং মূল কাব্যগ্রন্থের নাম কী? চরণগুলির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
Ans: রচনাকার এবং মূলগ্রন্থ: প্রশ্নোধৃত চরণগুলি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আমাদের পাঠ্য ‘প্রার্থনা’ কবিতার অংশ।
‘প্রার্থনা’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ৭২ সংখ্যক কবিতা।
তাৎপর্য: ‘প্রার্থনা’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ বিশ্বপিতার কাছে এমন এক স্বদেশভূমি প্রার্থনা করেছেন, যেখানে দেশবাসীর স্বাধীন চেতনা এবং জীবনবোধ মর্যাদার সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। আলোচ্য কবিতায় রবীন্দ্রনাথ এমন এক ভারতবর্ষের কথা ভেবেছেন, যেখানে মানুষের মন সমস্ত রকমের আশঙ্কা থেকে মুক্ত হয়ে সসম্মানে মাথা উঁচু করে আত্ম-পরিচয় খুঁজে নিতে পারবে।
আসলে আজীবন রবীন্দ্রনাথ পূর্ণতার প্রত্যাশী। কবি জানেন নতুন ভারতবর্ষের উদ্বোধনের জন্য প্রয়োজন পরিপূর্ণ মনুষ্যত্ব। দীর্ঘ দিনের পরাধীনতায় ভারতবাসী হারিয়ে ফেলেছে আত্মবিশ্বাস। আত্মবিস্মৃত দেশবাসীকে তাই তিনি স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন ভারতের আধ্যাত্মিক আদর্শের সুমহান ঐতিহ্য। তিনি এমন এক ভারতবর্ষ কামনা করেছেন যেখানে দেশবাসী ভয়শূন্য হৃদয়ে উন্নত মস্তকে জ্ঞানচর্চার উন্মুক্ত ক্ষেত্রে বিচরণ করতে পারবে। কবি জানেন এই বিরাট পৃথিবীতে কর্মের বিচিত্র সম্ভাবনাকে ক্ষুদ্র গৃহসীমায় আবদ্ধ করলে মানুষের প্রাপ্তির ভাণ্ডার সংকুচিত হয়ে যায়। ব্যক্তিসত্তা হোক বা জাতিসত্তা, খণ্ডিত ক্ষুদ্রতার মধ্যে তার পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। তাই কবি এমন এক স্বদেশের স্বপ্ন দেখেছেন যেখানে ব্যক্তি-বিশেষের মানসিক সংকীর্ণতার গৃহপ্রাচীর দ্বারা এই বিশ্বভুবন দ্বিখন্ডিত হবে না। বরং সেই দেশের নাগরিকদের মুক্ত চিন্তা ও সম্প্রীতিবোধের দ্বারা – সমগ্র বিশ্বই ‘এক’ রূপে প্রতিভাত হবে। অর্থাৎ ভারতের আধ্যাত্মিক আদর্শের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রেখেই কবি প্রশ্নোধৃত চরণগুলি রচনা করেছেন।
8. “জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর / আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী, বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি,” – মুক্ত জ্ঞান কী? কীসের দ্বারা বসুধা খন্ড ক্ষুদ্র হয়ে যায়?
অথবা, “জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর / আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী/বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি”- ‘গৃহের প্রাচীর বলতে কী বোঝো? বসুধাকে তা কীভাবে খন্ড ক্ষুদ্র করে?
Ans: মুক্তজ্ঞান: উপনিষদে আস্থাশীল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, বিশুদ্ধ জ্ঞানই পরম ব্রহ্ম। মুক্ত জ্ঞান সর্বদাই সকল সংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে পূর্ণ জীবনবোধের সন্ধান দেয়। সাম্প্রদায়িকতা, কুসংস্কার আমাদের সত্যধর্ম থেকে দূরে সরে থাকা চেতনাকে সংকীর্ণতায় খন্ডিত করে দেয়। কিন্তু মানবহিতৈষী রবীন্দ্রনাথ পূর্ণতার প্রার্থী, তিনি চেয়েছেন সমস্ত সংকীর্ণতার অপসারণ ঘটে মানুষের মনে জাগবে জ্ঞানের আলো, নবচেতনার আলোয় সে বুঝতে পারবে আত্মপ্রতিষ্ঠার একটাই পন্থা, সেটা হল সৎ কর্ম। এই কর্মের দ্বারাই সে তার গৃহসীমার আগল ঘুচিয়ে দাঁড়াবে বিশ্বের আঙিনায়। কবির মতে, নিজের হৃদয়ের উদারতা এবং বিশ্বদেবতার সঙ্গে এক হয়ে যাওয়ার এই বোধ জাগরিত হবে মুক্ত জ্ঞানের মাধ্যমেই।
গৃহের প্রাচীর: গৃহ হল মানুষের নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং গৃহের প্রাচীর মানুষের জীবনকে সীমাবদ্ধ করে বাইরের বিশাল, পরিব্যাপ্ত জগতের সঙ্গে মানবাত্মার মিলনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কবি চেয়েছেন স্বদেশবাসী নির্ভীকভাবে নিজের সংকীর্ণ গৃহপরিসরকে অতিক্রম করে বাইরের জগতের সম্মুখীন হবে। লাভ করবে বিশ্বজ্ঞান। কেবল দেশের নয়, সমগ্র বিশ্বের একজন দায়িত্বশীল অধিবাসী হিসেবে সে আত্মপ্রকাশ করবে। এই বিশাল পৃথিবীতে যে নিরন্তর কর্মযজ্ঞ চলছে, তার অংশীদার হিসেবে সে খুঁজে পাবে আত্মপরিচয়।
বসুধা যেভাবে খণ্ডিত হয়: কবিগুরু অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে প্রত্যক্ষ করেছেন, আমরা কীভাবে ভৌগোলিক সীমারেখা এবং নিজেদের মনের সংকীর্ণ সংস্কার দিয়ে এই বৃহৎ পৃথিবীর অখণ্ডতাকে বিনষ্ট করে তাকে দ্বিখণ্ডিত করি। কবি জানেন এই বিরাট বসুন্ধরায় যে অনন্ত সম্ভাবনা রয়েছে তাকে ক্ষুদ্র গৃহসীমায় আবদ্ধ করলে মানবজাতিরই ক্ষতি, কারণ এতে তার প্রাপ্তির পরিসর সংকুচিত হয়ে যায় এবং তার ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ বিকাশও হয় না। কাজেই কবি সাম্প্রদায়িক, ব্যক্তিকেন্দ্রিক বা ভৌগোলিক বিভাজনমুক্ত এমন এক দেশ তথা পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছেন যেখানে সমস্ত সংস্কারের বেড়াজাল ছিন্ন হয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে কেবল মানবধর্ম। মানবজাতির সার্বিক বিকাশের মাধ্যমে কবির স্বদেশ তথা পৃথিবীর কল্যাণসাধন হবে।
9. “যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্ধারিত স্রোতে দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায় অজস্র সহস্রবিধ চরিতার্থতায়-“- কবির বক্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝিয়ে দাও।
Ans: অন্তর্নিহিত অর্থ: উদ্ধৃত কবিতাংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ৭২ সংখ্যক কবিতা তথা আমাদের পাঠ্য ‘প্রার্থনা’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য কবিতায় কবি বিশ্বপিতার চরণে আত্মনিবেদন করে উন্নত স্বদেশ নির্মাণের প্রার্থনা করেছেন। প্রশ্নোধৃত চরণগুলিতে কবির আকাঙ্ক্ষিত স্বদেশের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে।
কবি বুঝেছিলেন প্রাচীন ভারতের উদার-উন্মুক্ত আধ্যাত্মিক আদর্শ বিশ্ববন্দিত যা মূলত ভারতকে পুণ্যতীর্থে পরিণত করেছিল এবং বহু সংস্কৃতি হৃদয়ের বাঁধনে আবদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভারতীয় সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিল যা রাষ্ট্রের সবথেকে বড়ো শক্তি। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন অনাদিকাল থেকে দেশে দেশে দিকে দিকে বিবিধ কর্মযজ্ঞে ভারতবাসীর যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, তা তিলে তিলে তৈরি করেছিল সমৃদ্ধ কর্মসংস্কৃতি। এই কর্মময়তাই পরাধীন ভারতবাসীকে গতিময় করে তুলতে পারে। তাই যে পৃথিবীর স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, বিশ্বপিতার আশীর্বাদে যে স্বদেশ তিনি নির্মাণ করতে চেয়েছেন, তা কর্মের মধ্য দিয়ে পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাক এটাই তাঁর কামনা।
এ ছাড়াও পরাধীন ভারতবর্ষ এবং সমকালীন বিশ্বপরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন রবীন্দ্রনাথের রাষ্ট্রচিন্তায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল নাগরিকের বাকস্বাধীনতার অধিকার। সকল প্রকার মানবাধিকারের কথা মনে রেখেই পৃথিবীর বৃহত্তর কর্মযজ্ঞে ভারতবাসীর অংশগ্রহণ এবং সাফল্যলাভের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। তাই প্রশ্নোদ্ভূত পঙ্ক্তিগুলিতে ভারতবর্ষের গৌরবান্বিত কর্মসংস্কৃতি এবং উদার হৃদয়ের কথা স্মরণ করে নতুন ভারতবর্ষকে তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
10. “যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি বিচারের স্রোতঃপথ ফেলে নাই গ্রাসি, পৌরুষেরে করে নি শতধা;”-‘যেথা’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? কথাগুলি কবি কবিতায় কোন্ তাৎপর্যে ব্যবহার করেছেন?
Ans: যেথা-র অর্থ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘প্রার্থনা’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত পঙ্ক্তিগুলিতে ‘যেথা’ বলতে কবির কল্পিত তথা আকাঙ্ক্ষিত স্বদেশের কথা বোঝানো হয়েছে। বিশ্ববিধাতার কাছে যে সমুন্নত ভারতবর্ষের প্রার্থনা করেছেন কবি, ‘যেথা’ শব্দটি সেই প্রার্থিত স্বদেশকেই। নির্দেশ করেছে।
তাৎপর্য: রবীন্দ্রনাথ বুঝেছিলেন যুগ যুগ ধরে চলে আসা অল্ব কুসংস্কার আর আচারসর্বস্বতায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে আমাদের মনের জগৎ। তিনি চেয়েছিলেন আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থায় একজন নাগরিকের বিচার-বিবেচনা-মূল্যবোধ যেন আবহমান কালের অন্ধ সংস্কারের দাসত্ব না করে। তাই তিনি লিখেছেন-
“যেথা তুচ্ছ আচারের মরুবালুরাশি বিচারের স্রোতঃপথ ফেলে নাই গ্রাসি,”-
রবীন্দ্রনাথ চেয়েছেন মুক্ত চিন্তাশক্তির দ্বারা পরিচালিত হোক মানুষ। তিনি আরও বলেন-‘পৌরুষেরে করে নি শতধা;’ অর্থাৎ তিনি চান রাষ্ট্রক্ষমতার স্পর্ধিত আস্ফালন যেন সাধারণের সাহস এবং সততাকে শত ভাগে বিভক্ত না করে। কবি জীবনদেবতার কাছে প্রার্থনা জানান আচারসর্বস্বতা যেন মরুভূমির বালুরাশির মতো উন্নত ভারতবর্ষের আকাঙ্ক্ষিত জীবন এবং সমাজের গতিকে রুদ্ধ করতে না পারে। কবি চান দেশবাসীর আত্মপ্রত্যয়, পূর্ণজ্ঞানের আলো, মানবিক বিচারবুদ্ধি, কর্মসাধনা যেন স্বদেশকে বিশ্বের দরবারে গৌরবময় প্রতিষ্ঠা এনে দেয়। সুতরাং ‘প্রার্থনা’ কবিতার আলোচ্য পঙক্তিগুলিতে বিশ্বকবির মানবকল্যাণের ভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে।
11. … নিত্য যেথা/তুমি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা-” এখানে ‘তুমি’ বলে কবি কাকে সম্বোধন করেছেন? তাঁকে ‘সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা’ বলে কবি মনে করেছেন কেন?
Ans: প্রার্থনা কবিতার তুমি সম্বোধন: ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রণের অন্তর্গত ‘প্রার্থনা’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত চরণে রবীন্দ্রনাথ ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করেছেন তাঁর আরাধ্য ঈশ্বর তথা জীবনদেবতা অর্থাৎ বিশ্ববিধাতাকে। আলোচ্য কবিতায় যাঁর কাছে তিনি উন্নত, স্বনির্ভর স্বদেশের প্রার্থনা করেছেন।
আনন্দের নেতা’ বলার কারণ: উপনিষদের মন্ত্রে দীক্ষিত, মানবকল্যাণকামী রবীন্দ্রনাথ পরাধীন ভারতবর্ষের মানুষের সবরকমের অধঃপতন প্রত্যক্ষ করে পীড়িত হয়েছিলেন। বুঝেছিলেন স্বদেশবাসীর এই অধঃপতনের মূলে রয়েছে মনুষ্যত্বের আদর্শ থেকে ভ্রষ্ট হওয়া এবং উদার, সংস্কারমুক্ত মানবধর্মকে গ্রহণ না করা। গভীর দুঃখবোধ থেকে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বপিতার কাছে স্বদেশবাসীকে উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেছেন। কেননা রবীন্দ্রনাথ জানতেন আত্মবিস্মৃত আত্মবিশ্বাসহীন ভারতবাসীর সুপ্ত চেতনার জাগরণ ঘটাতে পারেন একমাত্র বিশ্বস্রষ্টা যাঁকে তিনি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের অধিনায়ক বলে উপলব্ধি করেছেন। বিশ্বজগৎ এবং মানবজীবনের চালিকাশক্তি অপার রহস্যময় সেই জগৎস্রষ্টাকেই তিনি জীবনদেবতারূপে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি অনুভব করেছিলেন একমাত্র তিনিই পারেন আপন সৃষ্টির হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফিরিয়ে দিতে। মঙ্গলময় ঈশ্বর জগতের আনন্দের মধ্যে নিজেকে প্রকাশ করেন। ভারতবর্ষের অন্ধকার অধ্যায়ে তাই কবি অসীম আলোর উৎস, আনন্দের আধার বিশ্বপিতার আশীর্বাদকে অনিবার্য মনে করেছেন। সমস্ত অন্ধ সংস্কারের মূলে জগৎপিতার নিষ্ঠুর আঘাত কবির ভারতবর্ষকে নতুনরূপে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। নিজের জীবনদেবতার হাত ধরেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছোতে পারবেন বিশ্বকবি। এই ছিল তাঁর পূর্ণ বিশ্বাস।
12. “তুমি সর্ব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা”- এই ‘তুমি’ কীভাবে আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?
Ans: ভূমিকা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের ‘প্রার্থনা’ কবিতায় তাঁর নিজের ‘প্রার্থনা’ অর্থাৎ অন্তরের ঐকান্তিক ইচ্ছা নিবেদন করেছেন পরমপিতার কাছে। আর তিনিই ‘প্রার্থনা’ কবিতার এই ‘তুমি’।
তুমি-র পরিচয়: উদ্ধৃত অংশে ‘তুমি’- এই সর্বনামটি বিশেষ অর্থ বহন করেছে। ‘নৈবেদ্য’ কাব্যের অন্যান্য কবিতাতেও অনুরূপ ‘তুমি’ শব্দটি আছে। এই ‘তুমি’-ই হলেন কবিকল্পিত পরমেশ্বর তথা বিশ্বপিতা। তিনি পৃথিবীর মানুষের দুঃখভার বহন করেন, পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান। তাদের হাতে ন্যায়দণ্ড তুলে দেন। অর্পণ করেন শাসনভার। প্রয়োজনে কঠোর আঘাত করে যা কিছু অশুভ, অকল্যাণকর তার অবসান ঘটান- সেই বিশ্বপিতাকেই কবি ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করেছেন আমাদের নিয়ন্ত্রকশক্তি বিশ্বপিতা: এই ‘তুমি’ বা বিশ্বপিতা আমাদের নিয়ন্ত্রক শক্তি। আমাদের সকল কাজের মধ্যে তাঁর নিয়ন্ত্রণ বলবৎ থাকে। আমাদের মনের মধ্যে উদ্ভূত চিন্তা রূপলাভ করে কর্মের দ্বারা। চিন্তা ও কর্মের মধ্যে সাযুজ্য থাকলে তবেই কল্যাণকর, গঠনমূলক কার্যে সাফল্য লাভ করা যায়। এই সাফল্যের ফলেই জীবনে আনন্দ ও সার্থকতার সন্ধান পায় মানুষ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কবি এই সর্বশক্তিমান বিশ্বপিতাকে ‘আপনি’ সম্বোধন করে দূরে সরিয়ে রাখেননি। জগৎপিতা হলেন ‘সব কর্ম চিন্তা আনন্দের নেতা’ অর্থাৎ এ জগতের কোনো কিছুই তাঁর অজানা নয়। মানুষের মধ্যেই তিনি বিরাজমান। তাই বিশ্বস্রষ্টা ঈশ্বরকে রবীন্দ্রনাথ ‘তুমি’ সম্বোধনে আমাদেরই মধ্যে উপস্থাপন করে, তাঁর হাতেই তুলে দিয়েছেন সমগ্র বিশ্বের ভার।
13. “নিজ হস্তে নির্দয় আঘাত করি, পিতঃ, / ভারতেবে সেই স্বর্গে করো জাগরিত।”- কবি কাকে ‘পিতঃ’ সম্বোধন করেছেন? তাঁর কাছে কবি কী প্রার্থনা করেছেন?
অথবা, “নিজ হস্তে নির্দয় আঘাত করি, পিতঃ,”- ‘পিতঃ’ বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন? কবি নির্দয় আঘাত কামনা করেছেন কেন?
Ans: যাকে পিতঃ সম্বোধন: ‘প্রার্থনা’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত চরণে রবীন্দ্রনাথ ‘পিতঃ’ বলে সম্বোধন করেছেন তাঁর জীবনদেবতা তথা বিশ্ববিধাতাকে- যাঁর আশীর্বাদে তিনি কাঙ্ক্ষিত স্বদেশ গঠনের প্রত্যাশা করেছেন।
কবির প্রার্থনা: ‘নৈবেদ্য’ কাব্যের অন্যান্য কবিতার মতোই পাঠ্য ‘প্রার্থনা’ কবিতাটিতেও জগৎপিতার প্রতি বিশ্বকবির আত্মনিবেদনের পরিচয় পাওয়া যায়। উপনিষদের মন্ত্রে দীক্ষিত, সত্য-সুন্দর-মঙ্গলের পূজারী রবীন্দ্রনাথ পরাধীন ভারতবর্ষের সামগ্রিক অবক্ষয় প্রত্যক্ষ করে ব্যথিত হয়েছিলেন। তাই স্বদেশবাসীর শুভচেতনার উন্মেষের জন্য বিশ্বপিতার কাছে প্রার্থনা করেছেন কবি।
মানবাত্মার পূর্ণ বিকাশের জন্য কবি বারবার ফিরে তাকিয়েছেন প্রাচীন ভারতবর্ষের আধ্যাত্মিক আদর্শের দিকে যেখানে রয়েছে জ্ঞানের – গরিমা, কর্মের সাধনা, প্রেম-প্রীতি-ত্যাগ-ভক্তির মহৎ উদারতা। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আর পরাধীনতার অপমানে ভারতবর্ষের ঐতিহ্য সংকটের মুখে। কবি উপলব্ধি করেছেন দেশবাসী ক্রমে জ্ঞানবিমুখ, কর্মবিমুখ হয়ে পড়েছে। ভারতবর্ষের এই পরিস্থিতি কবিকে মর্মাহত করেছে। তিনি চেয়েছেন স্বদেশবাসী আবার উন্নত মস্তকে নির্ভয় হয়ে দাঁড়াক, জ্ঞানের গরিমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠুক, যাবতীয় ক্ষুদ্রতা-খণ্ডতাকে দূরে সরিয়ে কর্মচঞ্চল জীবনে যোগদান করুক। সমস্ত অন্ধতা, আচারসর্বস্বতাকে পরিত্যাগ করে পূর্ণতা, মহত্ত্ব, পবিত্রতার আদর্শে দীক্ষিত হোক তাঁর সহনাগরিকরা। তিনি প্রার্থনা করেছেন, তাঁর প্রিয় জন্মভূমিকে যেন কাঙ্ক্ষিত সমুন্নতির শীর্ষে বিশ্ববিধাতা পৌঁছে দেন। আর বিশ্বপিতার নিষ্ঠুর আঘাতেই আত্মবিশ্বাসহীন আত্মবিস্মৃত পরাধীন ভারতবাসীর সংবিৎ ফেরানো এবং স্বমর্যাদায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারা সম্ভব এই বিশ্বাসেই কবির এরূপ প্রার্থনা।
14. নিজ হস্তে নির্দয় আঘাতে করি, পিতঃ– নির্দয় আঘাতকারী পিতার স্বরূপ ব্যাখ্যা করো।
Ans: বিশ্বপিতার ধারণা: বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘প্রার্থনা’ কবিতায় তাঁর নিজস্ব ধর্মজিজ্ঞাসা এবং এই জিজ্ঞাসা সংক্রান্ত অনুভবগুলি ব্যক্ত করেছেন। কবিতার ১৩ তম পঙ্ক্তিতে ‘পিতঃ’-র উল্লেখ করেছেন কবি। এ কথা আমরা সকলেই জানি, ব্রাহ্মধর্মীরা ঈশ্বরকে ‘পিতা’ নামে অভিহিত করেন। তাই এই পিতা হলেন জগৎপিতা বা ঈশ্বর যিনি তাঁর শক্তির দ্বারা সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করেন।
বিশ্বপিতার স্বরূপ: সর্বশক্তিমান ঈশ্বর: কবিকল্পিত বিশ্বপিতা হলেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। তিনি আপন অন্তরে যেমন কোমল তেমনই প্রয়োজনে অত্যন্ত কঠোর। পরিস্থিতি অনুযায়ী যুগবদলের জন্য, মানবজাতির উদ্ধারের অভিপ্রায়ে নির্দয় আঘাত করতেও তিনি পিছপা হন না।
যা কিছু শুভ তার সূচনাকার: ঈশ্বর অজ্ঞানতার অন্ধকারের বিরুদ্ধে বাধাদানে সদাতৎপর। যদি আমরা ভয় পাই যদি আমরা আমাদের পৌরুষকে জাগরিত করতে না পারি- তাহলে সেই অসহায় অবস্থা থেকে আমাদের মুক্ত করতে যিনি এগিয়ে আসেন তিনি আমাদের অন্তরের ঈশ্বর। আমাদের – অন্তরের শুভশক্তিকে জাগরিত করেন তিনিই।
প্রয়োজনে কঠিন আঘাতকারী: নির্দয় শাসন ও আঘাতের দ্বারা যিনি আমাদের ভুল পথ থেকে সরিয়ে এনে সঠিক পথের দিশা দেখান তিনি সর্বশক্তিমান জগদীশ্বর। অর্থাৎ প্রয়োজনে তাঁর কাছ থেকে কঠিন আঘাত আমাদের প্রাপ্য হবে। সেই নিষ্ঠুর আঘাতেই সংবিৎ ফিরবে পরাধীন হতোদ্যম ভারতবাসীর। সমস্ত আত্মগ্লানিকে দূরে ঠেলে দিয়ে তারা পূর্ণ উদ্যমে ঝাঁপিয়ে – পড়বে পৃথিবীর বৃহৎ কর্মযজ্ঞে, স্বদেশবাসী তাদের হারানো আত্মমর্যাদা ফিরে পাবে এবং তার চেতনার এই নবজাগরণের জন্য প্রয়োজন জগৎপিতার – নিষ্ঠুর আঘাত। কারণ আদর্শ পিতা যেমন স্নেহশীল তেমনই প্রয়োজনে তিনি – কঠোর। কাজেই স্বদেশবাসীর আত্মপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশ্বপিতার নির্দয় – অনুশাসনের প্রয়োজন অনুভব করেছেন কবি।
15. প্রার্থনা কবিতায় কবি কীভাবে ভারতবর্ষকে স্বর্গে জাগরিত করার কথা বলেছেন, তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।
অথবা, “ভারতেরে সেই স্বর্গে করো জাগরিত।”- ‘স্বর্গ বলতে কবি এখানে কী বোঝাতে চেয়েছেন? ব্যাখ্যা করো।
অথবা, “ভারতেরে সেই স্বর্গে করো জাগরিত।”- রবীন্দ্রনাথের স্বর্গচিন্তার স্বরূপটি নির্ণয় করো।
Ans: স্বর্গের স্বরূপ: ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্রন্থের ৭২ সংখ্যক কবিতা তথা ‘প্রার্থনা’ থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত চরণে ‘স্বর্গ’ বলতে রবীন্দ্রনাথের কাঙ্ক্ষিত স্বদেশভূমিকে বোঝানো হয়েছে। আলোচ্য কবিতায় বিশ্বপিতার চরণে আত্মনিবেদন করে মানবকল্যাণের স্বার্থে তিনি যে ভারতভূমি কল্পনা করেছেন, তাকেই স্বর্গের মর্যাদা দিতে চেয়েছেন কবি।
রবীন্দ্রনাথের স্বর্গ ভাবনা: আমাদের প্রচলিত সংস্কারে স্বর্গ-মর্ত্যের ধারণাটি হল- যারা পুণ্যবান তারা মৃত্যুর পর স্বর্গে গমন করে আর যারা পূণ্যলাভে ব্যর্থ তারা নরকে যায়। তবে ‘প্রার্থনা’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ এই প্রচলিত ধারণা থেকে সরে এসেছেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে স্বর্গ হল কবির স্বদেশ- আমাদের ভারতবর্ষ।
এখানে রবীন্দ্রনাথ স্বদেশবাসীর দৃঢ়প্রত্যয়ী মনোভাব এবং সেই সূত্রে ভারতবর্ষের সার্বিক উন্নতিসাধন প্রত্যশা করেছেন। যাবতীয় বিচ্ছিন্নতাকে দূরে সরিয়ে, সমস্ত খণ্ডতাকে পরিহার করে পূর্ণতার মধ্যে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন আমাদের রাষ্ট্রকে। সব ধরনের হীনতা, সংকীর্ণতা পরিত্যাগ করে বিশ্বপিতার কাছে এমন এক স্বপ্নের স্বদেশ প্রার্থনা করেছেন বিশ্বকবি, যেখানে প্রধান হয়ে উঠবে মনুষ্যত্ব। কবির প্রার্থনা বিশ্বপিতা তাঁর নির্দয় আঘাতে যেন প্রিয় জন্মভূমিকে পৌঁছে দেন কাঙ্ক্ষিত উন্নতির শীর্ষবিন্দুতে। তিনি বিশ্বাস করেন জগদীশ্বরের নিষ্ঠুর আঘাতে আত্মবিশ্বাসহীন, আত্মবিস্মৃত পরাধীন ভারতবাসীর সংবিৎ ফিরবে এবং নিজেকে বিশ্বদরবারে স্বমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে সে। সুতরাং ‘স্বর্গ’ বলতে রবীন্দ্রনাথ সেই কাঙ্ক্ষিত স্বদেশভূমিকে বুঝিয়েছেন, যেখানে মানুষের স্বাধীন চেতনা দ্বারাই তার নিজের জীবন পরিচালিত হবে- রাষ্ট্রের নির্দেশে নয়। বলা বাহুল্য, কবির এই স্বপ্ন শুধুমাত্র ভারতবর্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, যে-কোনো রাষ্ট্র তথা কাঙ্ক্ষিত পৃথিবীর বৈশিষ্ট্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। অর্থাৎ কবি ভারতকে উন্নীত করতে চেয়েছেন সেই স্বর্গে- যে স্বর্গভূমি সংস্কার-বিদ্বেষহীন, যে ভূমিতে স্বদেশের হারানো গৌরব ফিরে পাওয়া যাবে, যেখানে মানুষে-মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। ঈশ্বরের কৃপামিশ্রিত আঘাতে স্বৰ্গৰূপে প্রতিষ্ঠিত হবে যে দেশ সেই দেশই ভারতবর্ষ, সমগ্র বিশ্বের কাছে কবির স্বদেশ উপমাস্বরূপ- তাই সে দেশ স্বর্গেরই নামান্তর।
HS Class 12 3rd Semester (Third Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 English 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 History 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects First Semester Question Click here
HS Class 12 4th Semester (Forth Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 English 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 History 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects 4th Semester Question Click here
HS All Subject Suggestion – উচ্চমাধ্যমিক সমস্ত বিষয়ের সাজেশন
আরোও দেখুন:-
HS Bengali Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 English Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Geography Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 History Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Political Science Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Education Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Philosophy Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sociology Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sanskrit Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 All Subjects Suggestion Click here
◆ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি, বিনামূল্যে নোটস, সাজেশন, PDF ও সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp Group এ Join হয়ে যাও।
Class 12 WhatsApp Groups | Click Here to Join |
দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th Bengali Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
FILE INFO : প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer with FREE PDF Download Link
PDF File Name | প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer PDF |
Prepared by | Experienced Teachers |
Price | FREE |
Download Link | Click Here To Download |
Download PDF | Click Here To Download |
প্রার্থনা (কবিতা) অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
Info : প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Bengali Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Twelve XII (HS Class 12th) Bengali Question and Answer Suggestion
” প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Twelve XII / WB HS Class 12 / WBCHSE / HS Class 12 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB HS Class 12 Exam / HS Class 12th / WB HS Class 12 / HS Class 12 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সাজেশন / দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ও উত্তর । Class-11 Bengali Suggestion / HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer / HS Class 12 Bengali Suggestion / Class-11 Pariksha Bengali Suggestion / Bengali HS Class 12 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / HS Class 12 Bengali Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (HS Class 12 Bengali Suggestion / West Bengal Twelve XII Question and Answer, Suggestion / WBCHSE HS Class 12th Bengali Suggestion / HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer / HS Class 12 Bengali Suggestion / HS Class 12 Pariksha Suggestion / HS Class 12 Bengali Exam Guide / HS Class 12 Bengali Suggestion 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / HS Class 12 Bengali Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 Bengali Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
প্রার্থনা (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
প্রার্থনা (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | প্রার্থনা (কবিতা) HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
প্রার্থনা (কবিতা) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
প্রার্থনা (কবিতা) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | প্রার্থনা (কবিতা) HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Question and Answer, Suggestion
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) | পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সহায়ক – প্রার্থনা (কবিতা) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer, Suggestion | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Suggestion | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Notes | West Bengal HS Class 12th Bengali Question and Answer Suggestion.
দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর | WBCHSE HS Class 12 Bengali Question and Answer, Suggestion
দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | প্রার্থনা (কবিতা) । HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Suggestion.
WBCHSE HS Class 12th Bengali Prarthona Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা)
WBCHSE HS Class 12 Bengali Prarthona Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । প্রার্থনা (কবিতা) | HS Class 12 Bengali Prarthona Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
HS Class 12 Bengali Prarthona 4th Semester Question and Answer Suggestions | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Bengali Prarthona 4th Semester Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB HS Class 12 Bengali Prarthona Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) সাজেশন
HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – প্রার্থনা (কবিতা) সাজেশন । HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal HS Class 12 Bengali Suggestion Download WBCHSE HS Class 12th Bengali short question suggestion . HS Class 12 Bengali Prarthona Suggestion download HS Class 12th Question Paper Bengali. WB HS Class 12 Bengali suggestion and important question and answer. HS Class 12 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB HS Class 12 Bengali Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Twelve XII Bengali Prarthona Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Exam
HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Twelve XII Bengali Suggestion is provided here. HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.
প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” প্রার্থনা (কবিতা) দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Bengali Prarthona Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।