শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer
শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer : শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer নিয়ে আলোচনা করা হলো। এই শিখন (Sikhon) থেকে যে SAQ ও রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর গুলি স্টার মার্ক করা হয়েছে সেগুলো আগামী West Bengal HS Class 12th Twelve XII Education 4th Semester Examination – পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষার জন্য (VVI) খুব ইম্পর্টেন্ট। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান পরীক্ষাতে এই সাজেশন বা কোশ্চেন শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।
তোমরা যারা শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা এই প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়ো এবং নীচে দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নাও।
| রাজ্য (State) | পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) |
| বোর্ড (Board) | WBCHSE, West Bengal |
| শ্রেণী (Class) | উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণী (WB HS Class 12th) |
| বিষয় (Subject) | দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান (HS Class 12 Education) |
| প্রথম অধ্যায় (1st Chapter) | শিখন (Sikhon) |
[দ্বাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]
শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE HS Class 12th Education Sikhon 1st Chapter Question and Answer
সংক্ষিত | শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 Education Sikhon SAQ Question and Answer:
- স্মৃতি ককে বলে ? স্মৃতির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো । **
Ans: বিষয়বস্তুকে মনে রাখা এবং প্রয়োজনমতো স্মরণ করাকেই স্মৃতি বলে। অর্থাৎ অতীত অভিজ্ঞতাকে যথাসম্ভব অবিকল পুনরুদ্রেক করার ক্ষমতাকেই স্মৃতি বলে।
স্মৃতির দুটি বৈশিষ্ট্য হল- (ক) স্মৃতি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার দুই ক্ষমতা গড়ে ওঠে। (খ) অনুশীলন, মনোযোগ, প্রেষণা প্রভৃতি স্মৃতিতে প্রভাব মিলে বিস্তার করে।
- মনোবিদ উডওয়ার্থ (Woodworth)-এর দেওয়া স্মৃতির সংজ্ঞাটি কী ? ***
Ans: মনোবিদ উডওয়ার্থ-এর মতে, “যে প্রক্রিয়ার দ্বারা আমরা পূর্বে শেখা কোনো কাজকে একইভাবে পরবর্তীকালে সম্পাদন করতে পারি, তাই হল স্মৃতি (doing what one has learned to do) I”
- মনোবিদ রস (Ross)-এর মতে, স্মৃতি কী ?
Ans: মনোবিদ রস বলেছেন- অভিজ্ঞতার সঞ্চয়ন, সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্রেক যে জটিল মানসিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়, তাই হল স্মৃতি (Memory) বা স্মরণ ক্রিয়া (Process of memory)।
- স্মৃতি প্রক্রিয়ার ধাপ বা পর্যায়গুলি লেখো ।
Ans: স্মৃতি প্রক্রিয়ার স্তর বা ধাপগুলি হল – শিখন (Learning), সংরক্ষণ (Retention), পুনরুদ্রেক (Recall), প্রত্যভিজ্ঞা (Recognition) ইত্যাদি।
- সংরক্ষণ বা ধারণ কাকে বলে ? **
Ans: কোনো বিষয় যদি আমাদের স্মৃতিতে সংরক্ষণ না হয়, তাহলে তাকে পুনরুদ্রেক করা যায় না। যে মানসিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে দীর্ঘ সময় স্মৃতিতে ধরে রাখা যায়, তাকে সংরক্ষণ বলে।
- ধারণ বা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয় ?
Ans: সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেগুলি হল-যে-কোনো জিনিসকে ভালোভাবে বোঝা ও তার ক্রমাগত অনুশীলন করা। বিষয়গুলি যত বেশি সাম্প্রতিক হবে, তত বেশি স্মৃতিতে থাকবে। বিষয়ের প্রতি অনুরাগ বেশি হলে, তা স্মৃতিতে দীর্ঘস্থায়ী হয়।
- সংরক্ষণের শর্তগুলি লেখো ।
Ans: সংরক্ষণের শর্তগুলি হল – দেহ ও মস্তিষ্কের সুস্থতা, উদ্দীপকের তীব্রতা, সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট উদ্দীপক, ইত্যাদি।
- বিস্মৃতি কাকে বলে ?
Ans: স্মৃতির অভাব হল বিস্মৃতি। এটি স্মৃতি প্রক্রিয়ার বিপরীত প্রক্রিয়া যার সাধারণ অর্থ হল ভুলে যাওয়া। মনোবিদ রিবোঁ (Ribot) বলেছেন যে, “স্মৃতির অপরিহার্য শর্ত হল বিস্মৃতি” এটি হল স্মৃতির ক্ষয়প্রাপ্তি, এখানে যতটুকু অংশ মনে থাকে না, সেটি হল বিস্মৃতির পরিমাণ।
- বিস্মৃতির কারণগুলি লেখো ।
Ans: বিস্মৃতির কারণগুলি হল- বিষয়বস্তুর অর্থ, ছন্দ ইত্যাদি কঠিন হলে আমরা ভুলে যাই, আঘাত, ঘুমের অভাব। আলোচনার অভাব, মস্তিষ্কের মনোযোগ ও আগ্রহের অভাব ইত্যাদি।
- মানসিক ইচ্ছা অনুযায়ী, স্মৃতি কয়প্রকার ও কী কী ? চাঙ্কিং কী ?
Ans: মানসিক ইচ্ছা অনুযায়ী, স্মৃতি দুপ্রকার। যথা- সক্রিয় স্মৃতি এবং নিষ্ক্রিয় স্মৃতি।
চাঙ্কিং (Chunking): ক্ষণস্থায়ী স্মৃতিতে তথ্যকে দলবদ্ধ করার পদ্ধতিকে বলে চাঙ্কিং (Chunking)। ব্যক্তি বা শিক্ষার্থী ক্ষণস্থায়ী স্মৃতিতে তথ্যসমূহকে কী পরিমাণে, কেমনভাবে সুবিন্যস্ত করবে, তার উপর নির্ভর করে দলবদ্ধকরণ।
- শিখনের সংজ্ঞা দাও। অথবা, শিখন কাকে বলে ? ***
Ans: শিখন: অনুশীলন প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রাণীর কোনো আচরণের সৃষ্টি বা পরিবর্তনের ঘটনাই হল শিখন। অর্থাৎ সক্রিয় অনুশীলন, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের প্রভাবে প্রাণীর মানসিক ও বাহ্যিক আচরণের পরিবর্তন সাধিত হয় যে প্রক্রিয়ায়, তাকে শিখন বলে। এই শিখন প্রক্রিয়া ব্যক্তির জন্মের পর থেকে শুরু হয় এবং আমৃত্যু পর্যন্ত চলতে থাকে। এটি একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া।
- আধুনিক অর্থে শিখন বলতে কী বোঝায় ?
Ans: যে শিক্ষালব্ধ পদ্ধতিতে অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কর্ম সম্পাদনের ক্ষমতালাভের মাধ্যমে প্রাণীর মানসিক ও দৈহিক আচরণে উৎকৃষ্টতা আসে, সেই পদ্ধতিই শিখন নামে পরিচিত।
13 কো, এবং ক্রো ও হিলগার্ড-এর মতে, শিখন কী ?
Ans: কো এবং কো: ক্রো এবং ক্রো-এর মতে, শিখন হল অভ্যাস, মনোভাব গঠন ও জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া।
হিলগার্ড: শিখন হল একধরনের চেষ্টিত আচরণ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া, যাতে ব্যাক্তি পূর্ব অভিজ্ঞতার দ্বারা লাভবান বা সংশয়াতীত হয়।
- শিখনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো । ***
Ans: শিখনের প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
(i) উদ্দেশ্যমুখী ও ক্রমবিকাশমান: শিখন প্রক্রিয়া উদ্দেশ্যমুখী ও ক্রমবিকাশমান।
(ii) অভিযোজনে সহায়ক: শিখন পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজন করতে সহায়তা করে।
- গ্যানের কোন গ্রন্থে শিখনের আটটি প্রকারের উল্লেখ পাওয়া যায় ? গ্যানের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী, সবথেকে উচ্চ পর্যায়ের শিখন কোনটি ?
Ans: রবার্ট এম গ্যানে তাঁর ‘The Conditions of Learning’ গ্রন্থে আট প্রকারের শিখনের উল্লেখ করেছেন।
গ্যানের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী, সবথেকে উচ্চ পর্যায়ের শিখন হল সমস্যাসমাধানমূলক শিখন।
- সমস্যা সমাধানমূলক পদ্ধতি কাকে বলে ? **
Ans: শিক্ষার্থী তার নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য অর্জনের সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। আর এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য সে বিভিন্ন নিয়মকানুনের সাহায্য নেয়। এই নিয়মগুলির দ্বারা শিক্ষার্থী বারবার সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে। এই চেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভুল প্রচেষ্টাগুলিকে বাতিল করে সঠিক প্রচেষ্টাগুলিকে গ্রহণ করে সমস্যাটির সমাধান করে। এইভাবে যে পদ্ধতির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়, সেটিকেই বলা হয় সমস্যাসমাধানমূলক পদ্ধতি।
- প্রোগ্রাম শিখন কাকে বলে ? ***
Ans: প্রোগ্রাম শিখন (Programmed learning) হল একটি গবেষণাভিত্তিক শিখন পদ্ধতি। এখানে শিখন উপাদান হিসেবে পাঠ্যবই, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে পাঠ্যবিষয়গুলিকে কয়েকটি ছোটো ছোটো ধাপে শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিটি ধাপ বা স্তর সম্পূর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীকে ওই স্তরের বিষয়বস্তুর মধ্য থেকে কিছু প্রশ্ন করা হয় এবং দেখা হয় তাদের ওই বিষয়ে কতটা জ্ঞান বা ধারণা হয়েছে। এরপর সঠিক উত্তরটি শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়। এইভাবে প্রতিটি স্তরেই শিক্ষার্থীরা প্রশ্নের উত্তরগুলি দেওয়ার চেষ্টা করে। এর ফলে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কতটা জ্ঞান হয়েছে, সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। একে বলা হয় প্রোগ্রাম শিখন।
- শিখনের পর্যায় বা স্তরগুলি কী কী ?
Ans: শিখনের স্তর বা পর্যায়গুলি হল তিন প্রকার। যথা- অভিজ্ঞতা অর্জন, সংরক্ষণ এবং পুনরুত্থাপন। এই শেষ পর্যায়টিকে অর্থাৎ পুনরুত্থাপনকে আবার দুটি স্তরে বিন্যস্ত করা হয়। যথা- পুনরুদ্রেক ও প্রত্যভিজ্ঞা।
- সংরক্ষণ বা ধারণ বলতে কী বোঝো ? **
Ans: ‘সংরক্ষণ’ বা ‘ধারণ’ হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বাইরে থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে দীর্ঘকাল স্মৃতিতে ধরে রাখা যায় বা মনে রাখা যায়।
- পূনরুদ্রেক এবং প্রত্যভিজ্ঞা কী ? [ অথবা ] পূনরুদ্রেক কাকে বলে ? প্রত্যভিজ্ঞা কাকে বলে ? ***
Ans: পুনরুদ্রেক: স্মরণের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তর হল পুনরুদ্রেক বা Recall। যার অর্থ হল মনে করা। অর্থাৎ অভিজ্ঞতাকে সঠিক সময় ও পরিস্থিতির সাপেক্ষে মনে করাই হল ‘পুনরুদ্রেক’।
প্রত্যভিক্ষা: প্রত্যভিজ্ঞা বা Recognition হল স্মরণের সর্বশেষ পর্যায়, যার অর্থ চিনে নেওয়া, পূর্বে প্রত্যক্ষণ করা কোনো অভিজ্ঞতাকে বর্তমানে চিনে নেওয়ার পদ্ধতিকে বলে প্রত্যভিজ্ঞা।
- পুনরুদ্রেক ও প্রত্যভিজ্ঞার মধ্যে পার্থক্য লেখো।
Ans: যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা পূর্বে অর্জিত অভিজ্ঞতা সংরক্ষণের স্তর থেকে মানুষের চেতনায় আসে অর্থাৎ কোনো পুরোনো কথা মানুষের মনে পড়ে, তাকেই পুনরুদ্রেক বলা হয়। অন্যদিকে, পূর্বে অর্জিত অভিজ্ঞতা যখন মানুষের সামনে কোনো মূর্ত প্রতিরূপের সাহায্যে পুনরুত্থাপিত হয়, তখন তাকে প্রত্যভিজ্ঞা বলা হয়। ‘প্রত্যভিজ্ঞা’ কথার অর্থ হল পূর্ব অভিজ্ঞতাকে প্রত্যক্ষ করা বা চিনে নেওয়া।
- ‘Survey-Q-3R’ কী ? ***
Ans: কোনো পাঠ্য বিষয়বস্তু মুখস্থ করার ক্ষেত্রে অধ্যাপক ফ্যান্সিস পি রবিনসন যে নিয়ম উদ্ভাবন করেছেন, তাকে ‘Survey-Q-3R’ বলা হয়। এর সম্পূর্ণ কথাটি হল- Survey, Question, Read, Recite, Review অর্থাৎ কোনো বিষয়কে সহজে আয়ত্ত করার জন্য পর্যবেক্ষণ, প্রশ্নকরণ, পঠনপাঠন, আবৃত্তি পাঠ ও পর্যালোচনার প্রয়োজন।
- বিস্মৃতি কমানোর যে-কোনো চারটি উপায় লেখো ।
Ans: বিস্মৃতি কমানোর উপায়: বিস্মৃতি কমানোর কিছু উপায় রয়েছে। যেমন- বিষয়টি পাঠের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে, নতুন বিষয়টিকে পূর্বার্জিত অভিজ্ঞতার সঙ্গে অনুষঙ্গ স্থাপন করতে হবে, বিষয়টিকে অর্থপূর্ণ করে তুলতে হবে, দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে সমন্বিত করতে পারলে বিস্মরণ হ্রাস পাবে।
- কল্পনা (Imagination) কী ? **
Ans: কল্পনা হল এমন এক মানসিক প্রক্রিয়া, যার দ্বারা আমরা অতীত অভিজ্ঞতা ও ধারণার যথেষ্ট সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন ধারণার বা অভিজ্ঞতার কল্প সৃষ্টি করি। যেমন- সিংহমানব আমরা কখনও দেখিনি, কিন্তু নরসিংহের গল্প যখন আমরা পড়ি, তখন মানুষ ও সিংহ সম্বন্ধে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা নরসিংহের একটি কল্প গড়ে তুলি। যদিও সেটিকে বিকৃত কল্প বলা যায়।
- কল্পনার উপাদানগুলি কী কী ?
Ans: কল্পনা হল বিশেষ একধরনের মানসিক ভাবমূর্তি, এর উপাদানগুলি হল- যে বস্তুকে কল্পনা করা হবে, তার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা বা বিশ্বাস, সংরক্ষিত বিভিন্ন ধরনের পূর্ব অভিজ্ঞতা, অতীত অভিজ্ঞতাকে বিশ্লেষণ করে, তাদের আংশিক উপাদানগুলির সমন্বয়ে নতুন মানসিক প্রক্রিয়া গড়ে তোলা।
- কল্পনার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
Ans: কল্পনার বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
(ক) কল্পনা যুক্তি বা বিচার-বিবেচনার ভিত্তিতে হয় না। (খ) কল্পনা প্রক্রিয়ার নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য থাকে না। (গ) কল্পনার উপাদান পূর্ব অভিজ্ঞতা হওয়ায়, কল্পগুলিকে আপাতভাবে বস্তুধর্মী মনে হয়। (ঘ) কল্পনা চেতন মনে নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
- স্মৃতি এবং কল্পনার মধ্যে পার্থক্য লেখো । **
Ans: স্মৃতি ও কল্পনার মধ্যে পার্থক্যগুলি হল- স্মৃতিতে আমাদের অতীত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় মাত্র। তার কোনো পরিবর্তন হয় না কিন্তু কল্পনা প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার বিকৃতি হয়। একজন মানুষকে আমরা যেভাবে দেখেছিলাম, ঠিক সেইভাবে স্মরণ করতে পারি। স্মৃতির ক্ষেত্রে পুনরুদ্রেক (Recall) এবং প্রত্যভিজ্ঞা উভয়ই বর্তমান থাকে। কিন্তু কল্পনা প্রক্রিয়ায় পুনরুদ্রেকের প্রয়োজন হলেও প্রত্যভিজ্ঞা প্রয়োজন হয় না। কারণ আমরা কোনোদিনও দেখিনি।
- স্মৃতি ও কল্পনার সম্পর্ক লেখো ।
Ans: স্মৃতি ও কল্পনার মধ্যে সম্পর্কগুলি হল- স্মৃতি এবং কল্পনা উভয়ই মানসিক প্রক্রিয়া (Mental Process)। মানসিক সক্রিয়তার মধ্য দিয়েই এই দুই প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। এই দুই প্রক্রিয়ার জন্য ব্যক্তিকে মানসিক কল্প রচনা করতে হয়। স্মৃতি এবং কল্পনা উভয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অতীত অভিজ্ঞতাকে বর্তমানে টেনে আনা যায়। স্মৃতি ও কল্পনা উভয় প্রক্রিয়াই স্থান, কাল, কার্যকারণ এই তিনটি মাত্রার মধ্যেই সংঘটিত হয়।
- Dr. Murray Hunter কল্পনাকে কটি ভাগে ভাগ করেছেন ? সেগুলি কী কী ?
Ans: Dr. Murray Hunter কল্পনাকে ৪টি ভাগে ভাগ করেছেন । সেগুলি হল – (ক) কার্যকরী কল্পনা, (খ) বৌদ্ধিক কল্পনা, (গ) কাল্পনিক কল্পনা, (ঘ) সমানুভূতিমূলক কল্পনা, (ঙ) কৌশলগত কল্পনা, (চ) প্রাক্ষোভিক কল্পনা, (এ) স্মৃতির পুনর্গঠনজনিত কল্পনা এবং (জ) স্বপ্ন ।
- শিক্ষাক্ষেত্রে কল্পনার যে–কোনো দুটি গুরুত্ব সম্পর্কে লেখো ।
Ans: শিক্ষাক্ষেত্রে কল্পনার গুরুত্বগুলি হল – (ক) বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার বিকাশ: বর্তমানে বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতি ঘটেছে। তাই যুক্তিভিত্তিক ও বিশ্বাসযোগ্য কল্পনা শিক্ষার্থীদের বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার বিকাশে সাহায্য করে। (খ) প্রেষণা সৃষ্টি: শিখনকে সার্থক রূপ দিতে গেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রেষণা সৃষ্টি করা দরকার। এই প্রেষণা সৃষ্টি করা দরকার। এই প্রেষণা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন মানসিক সক্রিয়তা। কল্পনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক সক্রিয়তা সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
- কল্পনার বিকাশে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা আলোচনা করো ।
Ans: কল্পনার বিকাশে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা হল –
(ক) পাঠ্যবিষয় ও বস্তুর বিশ্লেষণী ক্ষমতা: শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ্য বিষয়ের বিশ্লেষণী ক্ষমতা সৃষ্টি করা, যা তাদের সামগ্রিক জ্ঞান আহরণে সাহায্য করে। এই জ্ঞানকে অতীত অভিজ্ঞতার সঙ্গে যথাযথ সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কল্পনা বিকাশে শিক্ষক সাহায্য করবেন।
(খ) বিভিন্ন বিষয় পাঠ: বিভিন্ন ভৌগোলিক বিবরণ, ভ্রমণ কাহিনী, ঐতিহাসিক বিবরণ পাঠে উৎসাহিত করা শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এই পাঠের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কল্পনাশক্তির বিকাশ ঘটে।
- কল্পনা ও স্মৃতির মধ্যে পার্থক্যগুলি হল- **
Ans:
| কল্পনা | স্মৃতি |
| প্রতিরূপগুলিকে সাজিয়ে নিয়ে অতীত অভিজ্ঞতার নতুন অভিজ্ঞতার সৃষ্টি হল কল্পনা। | অতীত অভিজ্ঞতার যথাযথ পুনরাবৃত্তিই হল স্মৃতি। |
| কল্পনাকে সৃজনমূলক বলা হয়। | স্মৃতিকে পুনরুৎপাদক কল্পনা বলা হয়। |
- মনোযোগ কী ? মনোযোগের একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো । ***
Ans: মনোযোগ: যে মানসিক প্রক্রিয়া ব্যক্তির চেতনার পরিধিকে সংকীর্ণ করে তাকে কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কেন্দ্রীভূত করে, সেই মানসিক প্রক্রিয়াকে মনোযোগ বলে।
মনোযোগের বৈশিষ্ট্য: মনোযোগ একটি নির্বাচনধর্মী মানসিক প্রক্রিয়া। মনোযোগের বিষয়টি চেতনার কেন্দ্রে থাকে।
- মনোবিদ রসের মতে মনোযোগ কী ?
Ans: মনোবিদ রসের (Ross 1951) মতে, মনোযোগ হল একটি প্রতিক্রিয়া, যা কোনো চিন্তাভাবনার বিষয়কে স্পষ্টভাবে মনের দরজায় উপস্থিত করে (Attention is a process of gettingg object of thought clearly before the mind)|
- মনোবিদ স্টাউট ও ম্যাকডুগালের মতে, মনোযোগ কী ?
Ans: মনোবিদ স্টাউটের মতে, “মানুষের জ্ঞানমূলক প্রক্রিয়ার পিছনে যে মানসিক সক্রিয়তা কাজ করে, তাই হল মনোযোগ।
মনোযোগ সম্পর্কে ম্যাকডুগাল-এর মতামত হল- “যে মানসিক সক্রিয়তা আমাদের প্রত্যক্ষণের উপর প্রভাব বিস্তার করে, তাই হল মনোযোগ।
36 মনোযোগের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো । ***
Ans: মনোযোগের দুটি বৈশিষ্ট্য হল – (ক) মনোযোগ হল কেন্দ্রানুগ প্রক্রিয়া, (খ) মনোযোগ পরিবর্তনশীল।
- মনোযোগের মূল শর্ত বা নির্ধারকগুলি লেখো । ***
Ans: মনোযোগের মূল শর্ত বা নির্ধারকগুলি হল – বস্তুগত শর্ত, মনোগত বা ব্যক্তিগত শর্ত এবং বিষয়কেন্দ্রিক বা দৈহিক বা বাহ্যিক শর্ত ।
- মনোযোগের দুটি বস্তুগত নির্ধারকের নাম লেখো । [ অথবা ] মনোযোগের ব্যক্তিগত শর্তগুলি কী কী ? [ অথবা ], মনোযোগের একটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের নাম লেখো। ***
Ans: মনোযোগের বস্তুগত শর্ত: মনোযোগের বিষয়কেন্দ্রিক বা বস্তুগত শর্তগুলি হল – তীব্রতা, বিস্তৃতি, পুনরাবৃত্তি, নতুনত্ব, গতিশীলতা, বৈপরীত্য ইত্যাদি।
মনোযোগের ব্যক্তিগত শর্ত – মনোযোগের ব্যক্তিগত বা অভ্যন্তরীণ শর্তগুলি হল – আবেগ, অভ্যাস, আগ্রহ, প্রক্ষোভ, মানসিক প্রবণতা, আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি।
- মনোযোগের পরিসর বলতে কী বোঝায় ? ***
Ans: ব্যক্তি তার চেতনার স্তরে কয়েকটি মাত্র বস্তুকে কেন্দ্রস্থ করতে পারে। ফলে ব্যক্তি কোনো বস্তুর উপর যত খুশি মনোযোগ দিতে পারে না।মনোযোগের এই সীমাকেই মনোযোগের পরিসর (Span of Attention) বলা হয়।
- মনোযোগের বিস্তার বলতে কী বোঝায় ? মনোযোগের বিস্তারমাপক যন্ত্রটির নাম কী ? ***
Ans: মনোযোগের বিস্তার: কোনো উদ্দীপকের প্রভাব বিস্তৃত বা বেশি হলে, তার প্রতি মনোযোগও দীর্ঘস্থায়ী হয়। একেই মনোযোগের বিস্তার বলা হয়।
মনোযোগের বিস্তারমাপক যন্ত্রটির নাম- ট্যাচিস্টোস্কোপ (Tachistoscope)।
- শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের দুটি ভূমিকা লেখো । ***
Ans: শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের দুটি ভূমিকা হল-
(ক) ব্যক্তিগত বৈষম্য: মনোযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়, তাই ব্যক্তিগত বৈষম্যের নীতি অনুসরণে শিক্ষাক্ষেত্রে বিষয়বস্তু নির্বাচন করা হয়।
(খ) মনোযোগের ক্ষেত্রসীমা: শিশুর মনোযোগের পরিসীমা যেহেতু সীমিত, তাই শিক্ষক-শিক্ষিকা লক্ষ রাখবেন যাতে পাঠক্রম দীর্ঘ না হয় এবং বিষয়বস্তুকে খন্ডীকরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন।
- মনোযোগ আকর্ষণে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা লেখো ।
Ans: মনোযোগ আকর্ষণে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা হল –
(ক) চাহিদা ও আগ্রহ: শিক্ষক শিশুদের চাহিদা, আগ্রহ, সামর্থ্য বিচার করে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগী করবেন।
(খ) শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষকেরা যথাযথভাবে ওয়াকিবহাল হবেন এবং সেই অনুযায়ী শিক্ষাদান শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণে সহায়ক হবে।
- আগ্রহের সংজ্ঞা দাও । অথবা, আগ্রহ কাকে বলে ? ***
Ans: আগ্রহ বা অনুরাগ হল বাস্তব বা কাল্পনিক কোনো বস্তু, ঘটনা বা অবস্থার প্রতি এক বিশেষ কৌতূহলপূর্ণ অনুভূতি, যা ব্যক্তিকে ওই বিষয়টি সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করে ও তাকে মনোযোগী করে তোলে।
মনোবিদ ক্রো অ্যান্ড ক্রো বলেছেন, “আগ্রহ বলতে ব্যক্তির কোনো বিশেষ বস্তুর ক্রিয়া বা অন্য ব্যক্তির প্রতি মানসিক আকর্ষণকে বোঝায়।”
- আগ্রহ বা Interest শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে ? কোন মনোবিদ আগ্রহকে ‘সুপ্ত মনোযোগ’ বলেছেন ?
Ans: আগ্রহ-এর ইংরেজি প্রতিশব্দ Interest। এটি একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ হল ‘it cocerns’ or ‘it matters’।
মনোবিদ ম্যাকডুগাল আগ্রহকে ‘সুপ্ত মনোযোগ’ বলেছেন ।
- আগ্রহের একটি বা দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো । ***
Ans: আগ্রহের দুটি বৈশিষ্ট্য হল- আগ্রহ একটি অনুভূতিনির্ভর প্রক্রিয়া এবং মনোযোগের পূর্বশর্ত বা প্রাথমিক শর্তই হল আগ্রহ।
- শিক্ষাক্ষেত্রে আগ্রহের ভূমিকা লেখো । ***
Ans: শিক্ষাক্ষেত্রে আগ্রহের দুটি ভূমিকা হল – আগ্রহের কারণে মনোযোগ বৃদ্ধি ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। শিক্ষার্থীর আগ্রহের দিকে গুরুত্ব দিয়ে নির্দেশনা দান করলে সফলতা প্রাপ্তির সম্ভাবনা অনেক বেশি।
- মনোবিদ ড্রিভার-এর মতে, আগ্রহ কী ? আগ্রহ সৃষ্টিকারী উপাদানগুলি কী কী ?
Ans: মনোবিদ ড্রিভার-এর মতে, “An interest is a disposition in its dynamic aspect.” অর্থাৎ আগ্রহ এমন একধরনের মানসিক প্রবণতা, – যে প্রবণতাকে আমরা মানসিক সংগঠনও বলতে পারি। এটিকে আমরা অনুরাগের সংগঠনগত অর্থ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি।
আগ্রহ সৃষ্টিকারী উপাদানগুলি হল – লিঙ্গ, দৈহিক স্বাস্থ্য ও দৈহিক বিকাশ, পরিবারের আর্থসামাজিক, মানসিক স্বাস্থ্য, প্রবৃত্তি, মর্যদা ইত্যাদি।
- আগ্রহের যে-কোনো 4টি প্রকৃতি বা স্বরূপ লেখো ।
Ans: আগ্রহের প্রকৃতি বা স্বরূপগুলি হল- আগ্রহ একটি স্থায়ী মানসিক সংগঠন, আগ্রহ বা অনুরাগ বিভিন্ন চাহিদা সৃষ্টিতে সহায়ক, এটি একটি বিকাশমূলক প্রক্রিয়া, আগ্রহ ব্যক্তিগত ও বস্তুগত উভয় ধরনেরই হতে পারে।
- পুনরুদ্রেক প্রক্রিয়াটির সঙ্গে কোন তিনটি বিষয় বিশেষভাবে যুক্ত ? সান্নিধ্যের সূত্রটি কী ?
Ans: পুনরুদ্রেক প্রক্রিয়াটির সঙ্গে তিনটি বিষয় বিশেষভাবে যুক্ত, সেগুলি হল-সান্নিধ্যের সূত্র, সাদৃশ্যের সূত্র এবং বৈসাদৃশ্যের সূত্র।
সান্নিধ্যের সূত্র: যে সূত্রের কারণে পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে একটি ঘটনা আর-একটি ঘটনাকে মনে করিয়ে দেয়, তাকে সান্নিধ্যের সূত্র বলা হয়।
- পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে সাদৃশ্যের সূত্রটি কী ?
Ans: পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য থাকলে, একটি মনে করলে অপরটিও মনে পড়ে যায়। একেই সাদৃশ্যের সূত্র হিসেবে ধরা হয়।
- বৈসাদৃশ্যের সূত্রটি কী?
Ans: পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে বৈসাদৃশ্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুটি বিষয়ের মধ্যে বৈসাদৃশ্য থাকলে, একটি মনে করলে অপরটিও মনে – পড়ে যায়। একেই বৈসাদৃশ্যের সূত্র হিসেবে ধরা হয়।
- শিখন ও শিক্ষণ-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো । ***
Ans: শিখন হল ব্যক্তির নিজের ও সমাজের কল্যাণসাধনের উদ্দেশ্যে কোনো বিষয়কে আয়ত্ত করা বা শেখা। আর শিক্ষণ হল ব্যক্তির সহজাত সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে জ্ঞান প্রদান করা অর্থাৎ শিক্ষাদান করা।
- পরিণমন কাকে বলে ? ***
Ans: পরিণমন হল এমন একটি স্বাভাবিক জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে প্রাণীর জন্মগত সম্ভাবনাগুলির স্বতঃস্ফূর্ত বিকাশ ঘটে এবং সেইসঙ্গে তার আচরণের গুণগত ও পরিমাণগত উভয় ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়। মনোবিদ গেসেল-এর মতে, “স্বকীয় ও অন্তর্জাত বৃদ্ধি হল পরিণমন।” এটি কোনো শর্তসাপেক্ষ প্রক্রিয়া নয়, স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া।
- মনোবিদ ম্যাকগিয়ক পরিণমন-এর সংজ্ঞায় কী বলেছেন? পরিণমনের একটি বা দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো। ***
Ans: ম্যাকগিয়ক: মনোবিদ ম্যাকগিয়ক-এর মতে, অনুশীলন ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জৈবিক কারণে শিশুর আচরণ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া হল পরিণমন।
পরিণমনের বৈশিষ্ট্য: পরিণমনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
(i) পরিণমন একটি স্বাভাবিক বিকাশ প্রক্রিয়া। (ii) এর ফলে ব্যক্তির দৈহিক আচরণের পরিবর্তন পরিণমন ব্যক্তি বা সমাজের চাহিদার উপর নির্ভরশীল নয়।
- শিখন ও পরিণমনের দুটি সাদৃশ্য লেখো ।
Ans: শিখন ও পরিণমনের দুটি উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য হল – পরিণমন উভয়ই ব্যক্তিনির্ভর প্রক্রিয়া, শিখন ও পরিণমন উভয়ই ব্যক্তির আচরণে পরিবর্তন ঘটায়।
- মনোবিদ কোলেসনিকের মতে, পরিণমন কী ? শিখন ও পরিণমনের মধ্যে একটি পার্থক্য লেখো । ***
Ans: কোলেসনিক: জন্মগত সম্ভাবনাগুলি স্বাভাবিকভাবে বিকশিত হওয়ার ফলে শিশুর আচরণের গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তনের প্রক্রিয়াই হল পরিণমন।
শিখন ও পরিণমনের মধ্যে পার্থক্য: শিখন ও পরিণমনের একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হল- শিখন একটি অনুশীলননির্ভর কৃত্রিম প্রক্রিয়া; কিন্তু পরিণমন একটি স্বাভাবিক জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া।
- শিখন ও পরিণমনের মধ্যে পার্থক্য লেখো । ***
Ans: শিখন ও পরিণমনের মধ্যে পার্থক্য হল- (i) শিখন অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আচরণধারার পরিবর্তন কিন্তু পরিণমনে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। (ii) শিখন শর্তসাপেক্ষ, কৃত্রিম প্রক্রিয়া কিন্তু পরিণমন শর্তহীন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। (iii) শিখন চাহিদার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কিন্তু পরিণমন চাহিদার তাড়নায় হয় না।
- শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের যে-কোনো দুটি ভূমিকা লেখো । **
Ans: শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের দুটি ভূমিকা হল- দৈহিক ও মানসিক প্রক্রিয়া: শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশের দ্বারা তার পরিণমনের প্রকাশ ঘটে। এর ফলে শিশু পাঠগ্রহণে সক্ষম হয়। ভাষাবিকাশ: শিক্ষার্থীর ভাষাবিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পরিণমন। উপযুক্ত পরিণমন ছাড়া কখনোই শিক্ষার্থীর ভাষাবিকাশ সম্ভব নয়।
- প্রেষণা শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে ? প্রেষণা কাকে বলে ? **
Ans: প্রেষণা শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘Motivation’। এই শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘Movere’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘to move’ অর্থাৎ ‘চলনক্রিয়া’।
প্রেষণা : প্রেষণা হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ কর্ম উদ্দীপনাকে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য তার মধ্যে একটি তাগিদ সৃষ্টি করে এবং তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।
60 প্রেষণাচক্র বলতে কী বোঝায় ? **
Ans: যে স্তরগুলি অতিক্রম করলে বা যে স্তরগুলি চক্রাকারে আবর্তিত হলে প্রেষণা সৃষ্টি হয়, সেই স্তরগুলির এই আবর্তনকে প্রেষণাচক্র বলা হয়। প্রেষণাচক্রের মূল চারটি স্তর হল- চাহিদা, তাড়না, উদ্দেশ্যমুখী আচরণ এবং উদ্দেশ্যপূরণ ।
- প্রেষণার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো । ***
Ans: প্রেষণার দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
(i) তাড়না সৃষ্টিকারী: ব্যক্তি বা তাকে উদ্দেশ্যমুখী আচরণে উদ্বুদ্ধ করে।
(ii) নির্বাচনমূলক প্রক্রিয়া: যে প্রাণীর কোনো কিছুর অভাববোধ থেকেই তাড়নার সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তীকালে কোনো প্রাণী বা ব্যক্তি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে কেন্দ্র করে প্রয়োজনীয় আচরণ সম্পাদন করে। তাই লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন প্রেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
- প্রেষণার নির্ধারকগুলি লেখো ।
Ans: প্রেষণার নির্ধারকগুলি হল –
(ক) আগ্রহ: কোনো ব্যক্তির বিশেষ বিষয়ে প্রেষণা তার সুপ্ত আগ্রহের দ্বারা নির্বাচিত হয়। (খ) জীবনার্দশ : ব্যক্তির জীবনাদর্শ তার উদ্দেশ্যমুখী আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। (গ) অভ্যাস : অভ্যাসের মধ্যে দিয়ে ব্যক্তির মধ্যে জীবনাদর্শ গড়ে ওঠে।
- প্রেষণার যে-কোনো দুটি শর্ত বা নির্ধারক সম্পর্কে আলোচনা করো ।
Ans: প্রেষণার দুটি নির্ধারক হল –
(ক) অনুরাগ: কোনো চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য চাহিদা তৃপ্তিকারক বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ব্যক্তির যেটির প্রতি অনুরাগ আছে, সেটিকে নির্বাচন করে।
উদ্বেগ: কোনো বিষয়ে উদ্বেগ প্রেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বেশি উদ্বেগ প্রেষণা কমায়। তবে কাজটি কঠিন বা সহজের মাঝামাঝি হলে প্রেষণা বৃদ্ধি পায়।
রচনাধর্মী | শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 Education Sikhon Descriptive Question and Answer:
1. শিখনের ক্ষেত্রে প্রেষণার ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো । **
Ans: শিখনে প্রেষণার ভূমিকা: শিখন হল ব্যক্তির আচরণ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া। ব্যক্তিকে পরিবর্তনশীল পরিবেশে সার্থকভাবে মানিয়ে নেওয়ার জন্য যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়, যা আচরণধারায় পরিবর্তন ঘটায়, তাই হল শিখন। শিখনে প্রেষণার ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। এই ভূমিকাগুলি হল-
(ক) উদ্যম সৃষ্টি: প্রেষণার মাধ্যমে ব্যক্তি বা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্যম সৃষ্টি করা প্রয়োজন। এই উদ্যম শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার শিক্ষা দেয়।
(খ) আচরণের প্রবণতা নির্ধারণ: শিক্ষার্থীদের আচরণের প্রকৃতি নির্বাচনধর্মী। সকল শিক্ষার্থীদের বিষয় বা বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আচরণের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রেষণা সৃষ্টি এমন হওয়া দরকার, যাতে শিক্ষার্থী তাদের প্রবণতা অনুযায়ী শিখতে পারে।
(গ) আগ্রহ সৃষ্টি: শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিষয়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিতে প্রেষণার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
(ঘ) মানাযোগী করে ভোলা: প্রেষণা শিক্ষার্থীকে শিখনে মনোযোগী করে তোলে এবং এর ফলে শিক্ষার্থীর বিষয় সম্পর্কে শিখন নিখুঁত হয়।
(ঙ) লক্ষ্যাভিমুখী: শিক্ষার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোতে গেলে শিখনকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিমুখী করা প্রয়োজন এবং এই কাজে প্রেষণার গুরুত্ব রয়েছে।
(চ) ব্যক্তিত্বের উন্মেষ: প্রেষণা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যক্তিত্বের উন্মেষ ঘটাতে পারে। শিক্ষার্থীর শিখন ব্যক্তিত্বের উন্মেষ ঘটানোর উপযোগী হওয়া প্রয়োজন।
(ছ) শিখন কৌশল: প্রেষণা শিক্ষার্থীর শিখন কৌশলকে প্রভাবিত করে। শিখনের ক্ষেত্রে শিক্ষার প্রতিটি অভিজ্ঞতা যাতে অর্থপূর্ণ হয়, সেইদিকে লক্ষ রেখে শিখন কৌশল তৈরি হওয়া দরকার।
(জ) যথাযথভাবে কর্ম সম্পাদন: প্রেষণার ফলে ব্যক্তি কেবলমাত্র কোনো কাজে অগ্রসর হয় তাই নয়, বরং কাজটিকে যাতে সঠিকভাবে সম্পাদন করা যায়, সেই বিষয়ে যথাযোগ্য শিখনের চেষ্টা করে। যথাযোগ্য শিখনের জন্য প্রয়োজন প্রেষণার।
(ঝ) আচরণের গতিপথ নির্ণয় : শিক্ষার লক্ষ্যে পৌঁছোতে গেলে উপযুক্ত আচরণের গতিপথ অনুযায়ী শিখন সঞ্চালিত হওয়া প্রয়োজন। শিখনের আচরণের সঠিক গতিপথ নির্ণয়ে প্রেষণার ভূমিকা রয়েছে।
(ঞ) দক্ষতা সম্বন্ধে আত্মবিশ্বাস: দক্ষতা সম্বন্ধে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে প্রয়োজন যথাযথ শিখনের। আবার আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে প্রেষণার প্রয়োজন হয়। তাই দক্ষতাজনিত শিখনে প্রেষণার ভূমিকা রয়েছে।
2. প্রেষণা কাকে বলে ? সংক্ষেপে প্রেষণাচক্র বর্ণনা করো । ***
Ans: প্রেষণা: প্রেষণা কথাটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘Motivation’। এটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Movere’ থেকে, যার অর্থ হল ‘To Move’ বা ‘চলা’। অর্থাৎ মনের অভ্যন্তরীণ যে চালিকাশক্তি আমাদের কর্মোদ্যম সৃষ্টি করে, তাকে বলে প্রেষণা। মনোবিদ উডওয়ার্থ (Woodworth)-এর মতে, প্রেষণা হল ব্যক্তির এমন একটি প্রক্রিয়া, যা কোনো লক্ষ্যপূরণ ও আচরণ সম্পন্ন করার জন্য ব্যক্তিকে উদ্বুদ্ধ করে। প্লেটোর (Plato) মতে, প্রেষণা হল এমন একটি অভ্যন্তরীণ শক্তি, যার মূলে মানুষের স্বাধীন চিন্তা থাকে।
প্রেষণাচক্র: প্রেষণাকে বিশ্লেষণ করলে চারটি পর্যায়ের সন্ধান পাওয়া যায়। এই চারটি স্তর পর্যায়ক্রমে চক্রাকার পথে আবর্তন করতে থাকে, একেই বলে প্রেষণাচক্র।
(ক) চাহিদা : এটি প্রেষণাচক্রের প্রথম পর্যায়। কোনো বস্তুর অভাব বা চাহিদাকে কেন্দ্র করে ব্যক্তির মধ্যে প্রেষণা জাগ্রত হয়। যেমন-ক্ষুধা, তৃয়া, অভ্যন্তরীণ স্পৃহা, স্বীকৃতি, আত্মপ্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা ইত্যাদি।
(খ) ভাড়না : কোনো বস্তুর অভাব থেকে ব্যক্তি বা প্রাণীর মধ্যে একধরনের অস্বস্তিকর অনুভূতির সৃষ্টি হয়। একে তাড়না বলে। এই অস্বস্তিকর অনুভূতি ব্যক্তি বা প্রাণীকে উদ্দেশ্যমুখী আচরণে উদ্বুদ্ধ করে। এই তাড়না হল প্রেষণাচক্রের দ্বিতীয় পর্যায়।
(গ) সহায়ক বা যান্ত্রিক আচরণ : এটি হল প্রেষণাচক্রের তৃতীয় পর্যায়। চাহিদাকে কেন্দ্র করে ব্যক্তি বা প্রাণীর মধ্যে যে অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয় তা নিবারণের জন্য ব্যক্তি উদ্দেশ্যমুখী যে আচরণ করে, তাকে সহায়ক আচরণ বলে, যা যান্ত্রিক প্রকৃতির হয়।
(ঘ) লক্ষ্যপ্রাপ্তি : প্রেষণাচক্রের সর্বশেষ স্তর হল লক্ষ্যপ্রাপ্তি বা উদ্দেশ্যপূরণ বা ফলপ্রাপ্তি। দেখা যায় যে, অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোতে পারলে ব্যক্তির অস্বস্তিকর অনুভূতি দূরীভূত হয় এবং সে পরিতৃপ্তি লাভ করে।
3. প্রেষণার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো । *
Ans: প্রেষণার বৈশিষ্ট্য:
(ক) চাহিদানির্ভর প্রক্রিয়া: বিশেষ চাহিদাকে কেন্দ্র করে ব্যক্তির মধ্যে প্রেষণা সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ বস্তুর চাহিদা বা অভাববোধ হল প্রেষণা সৃষ্টির মূল উৎস।
(খ) আচরণের গতিপথ নির্ধারক: প্রেষণা আচরণের গতিপথ নির্দেশ করে। প্রেষণা আচরণের জন্য শক্তি, সামর্থ্য, দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে, যা শিখনের জন্য একান্তভাবে প্রয়োজনীয়।
(গ) অভ্যন্তরীণ মানসিক প্রক্রিয়া: প্রেষণা হল একটি অভ্যন্তরীণ মানসিক প্রক্রিয়া। দেহের অভ্যন্তরীণ কারণে প্রেষণা সৃষ্টি হয়, যার ফলে ব্যক্তির আচরণের উদ্দেশ্যমুখী পরিবর্তন ঘটে।
(ঘ) লক্ষ্যমুখী প্রক্রিয়া: প্রেষণাকে আশ্রয় করে শিক্ষার্থী তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোতে সমর্থ হয়। অর্থাৎ প্রেষণার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল লক্ষ্যবস্তু প্রাপ্তি। প্রত্যেক প্রেষণা শিক্ষার্থীকে লক্ষ্য সম্পর্কে সজাগ করে।
(ঙ) ধারাবাহিক প্রক্রিয়া: প্রেষণা একটি ধারাবাহিক নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। অর্থাৎ এটি জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত চলতে থাকে। ব্যক্তির একটি প্রেষণা পূরণ হলে পরমুহূর্তে অপর একটি প্রেষণার সৃষ্টি হয়।
(চ) ভারসাম্য রক্ষা : প্রেষণা ব্যক্তিজীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক চাহিদাকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিজীবনে যে দৈহিক বা মানসিক পরিবর্তন ঘটে, চাহিদা পরিতৃপ্তির মাধ্যমে তার ভারসাম্য ফিরে আসে। অর্থাৎ ব্যক্তিজীবনে অস্থিরতা দূর করার জন্য প্রেষণার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
(ছ) নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া : প্রেষণা একটি নির্বাচনধর্মী মানসিক প্রক্রিয়া। নির্দিষ্ট বস্তুকে কেন্দ্র করে প্রেষণা জাগ্রত হয়। যেমন- গৃহহীন ব্যক্তি আশ্রয়ের অন্বেষণ করে।
(জ) মানসিক শস্ত্রির সমন্বিত রূপ: প্রেষণার সঙ্গে কতকগুলি মানসিক শক্তি যুক্ত থাকে, সেগুলি হল- চাহিদা, তাড়না, আগ্রহ, পুরস্কার ইত্যাদি।
(ঝ) কর্মের মানোন্নয়ন: প্রেষণা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীকে কর্মে নিয়োজিত করে না, কর্মের মানোন্নয়ন ঘটায়।
(ঞ) আগ্রহবর্ধক: সবশেষে বলা যায়, প্রেষণা শিক্ষায় শিক্ষার্থীর আগ্রহ সৃষ্টি করতে এবং আগ্রহ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
(ট) শিখানর মূল শক্তি: মনোবিদ ক্রো এবং ক্রো (Crow and Crow)-এর মতে, প্রেষণা হল এমন এক শক্তি, যা শিখনের প্রতি আগ্রহ জাগায়। তাই প্রেষণা হল শিখনের মূল শক্তি।
4. শিখনের উপাদান বিষয়ে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো । **
Ans: শিখনের উপাদান: শিশুর জীবনের বিকাশসাধনে শিখন গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তির মানসিক প্রক্রিয়া এবং ক্ষমতা শিখন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। শিখনের উপাদানগুলি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল-
(ক) পরিণমন : পরিণমন হল এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জন্মগত সম্ভাবনাগুলির স্বতঃস্ফূর্ত বিকাশের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির আচরণের গুণগত ও পরিমাণগত পরিবর্তন সাধিত হয়। পরিণমন হল এক ধরনের বৃদ্ধি, যা নির্দিষ্ট সীমায় না পৌঁছোনো পর্যন্ত নিজস্ব নিয়মে চলতে থাকে। আর এই প্রক্রিয়াটি হল সর্বজনীন এবং ব্যক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করে না।
(খ) প্রেষণা : ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ ইচ্ছা হল প্রেষণা। প্রেষণা শিখন প্রক্রিয়ার একটি অন্যতম অংশ, যা সৃষ্টি হয় অভাববোধ থেকে। প্রেষণা একপ্রকার তাড়নার অনুভূতি বা উদ্দীপক, যা আমাদের কাজ করতে বাধ্য করে। তাই বলা যায়, ব্যক্তির সব আচরণের পশ্চাতেই প্রেষণার ভূমিকা আছে।
(গ) আগ্রহ বা অনুরাগ : শিখনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আগ্রহ বা অনুরাগ। আগ্রহ হল মনের এমন একটি স্থায়ী প্রবণতা, যা ব্যক্তির সুপ্ত মনোযোগকে গতিশীল করার মাধ্যমে তাকে বস্তুধর্মী কর্মসম্পাদনের দিকে অগ্রসর হতে উদ্বুদ্ধ করে। আগ্রহ থাকে বলেই কোনো বিশেষ উদ্দীপকের প্রতি আমরা প্রতিক্রিয়া করে থাকি।
(ঘ) মনোযোগ : কোনো বিষয় বা বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে মনকে নিবিষ্ট করার জৈব-মানসিক প্রক্রিয়াকে মনোযোগ বলে। মনোযোগ হল মনের যোগ। উদ্দেশ্যসাধনের জন্য কোনো বস্তুকে চেতনার কেন্দ্রস্থলে হাজির করাই হল মনোযোগ। মনোবিদ ম্যাকডুগাল (McDougall)-এর মতে, “যে মানসিক সক্রিয়তা আমাদের প্রত্যক্ষণের উপর প্রভাব বিস্তার করে, তাই হল মনোযোগ”।
(ঙ) প্রদতা বা সামর্থ্য : মানুষের যাবতীয় কর্মসম্পাদনের পিছনে যে বিশেষ উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তা হল ক্ষমতা বা সামর্থ্য। অর্থাৎ ক্ষমতা হল কোনো কর্মসম্পাদনের সামর্থ্য। মনোবিদ ম্যাকডুগালের মতে, ‘Ability is essentially the capacity of making new adjustment,’ অর্থাৎ ক্ষমতা হল নতুন পরিস্থিতিতে সংগতিবিধানের প্রক্রিয়া
5. বিস্মৃতি বা বিস্মরণ কী ? কয়েকজন মনোবিদ প্রদত্ত বিস্মরণের সংজ্ঞা দাও । বিস্মৃতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্যে এবং কারণগুলি লেখো । **
Ans: বিস্মৃতি বা বিস্মরণ: বিস্মৃতি বা বিস্মরণ (Forgetting)-এর সাধারণ অর্থ হল কোনো জিনিস ভুলে যাওয়া, মনে করতে না পারা। পূর্বে শেখা বিষয়কে আমরা অনেকসময় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে মনে করতে পারি না, একে বলে বিস্মৃতি। এটি হল স্মৃতির ক্ষয়প্রাপ্তি, এখানে যতটুকু মনে থাকে না, সেটি হল ক্ষয়প্রাপ্তি বা বিস্মৃতির পরিমাণ।
মনোবিদদের প্রদত্ত সংজ্ঞা: মনোবিদ রিবোঁ (Ribot) বলেছেন যে, স্মৃতির অপরিহার্য শর্ত হল বিস্মৃতি। মান (Munn) বলেছেন, পূর্বার্জিত কোনো বিষয়কে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে স্মরণ করার অক্ষমতাকেই বিস্মরণ বলে। মনোবিদ ড্রেভার (Drever) বলেছেন, কোনো সময়ে পূর্বার্জিত কোনো কাজ পুনরায় সম্পন্ন করার ব্যর্থতাকে বিস্মৃতি বলে। মনোবিদ ভাটিয়া (Bhatia)-র মতে, মূল উদ্দীপকের সাহায্যে কোনো ভাবনা বা ভাবনাগুলিকে চেতনমনে নিয়ে আসার ব্যর্থতাই হল ভুলে যাওয়া। মনোবিজ্ঞানী রস বলেন, অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক, বেদনাদায়ক যাইহোক-না-কেন তাতে যদি আমাদের প্রক্ষোভ বা অনুভূতির স্পর্শ লেগে থাকে, তবে তা বেশিদিন মনে থাকবে।
বিস্মৃতির বৈশিষ্ট্য:
(১) বিস্মৃতির কারণে সময়ের ব্যবধানে কোনো শিখনলব্ধ অভিজ্ঞতা চেতনা থেকে অপসৃত হয়।
(২) আমাদের জীবনে বিস্মৃতির প্রয়োজন আছে। তা না হলে ছোটোবেলা থেকে যে অসংখ্য অভিজ্ঞতা আমাদের হয়, সেগুলি সব মনে থাকলে জীবন অসহ্য হয়ে উঠত এবং নতুন জিনিস আমরা শিখতে পারতাম না।
(৩) ধারণাকে যে অবস্থাগুলি ব্যাহত করে, বিস্মৃতিতে সেগুলি সহায়ক হয়।
বিস্মৃতির কারণ: এবিংহস-এর পরীক্ষার মধ্য দিয়েই আমরা বিস্তৃতি বা ভুলে যাওয়ার কারণগুলির ব্যাখ্যা দিতে পারি, কারণগুলি নিম্নরূপ-
চর্চার অভাব: ‘অনভ্যাসে বিদ্যাহ্রাস’- কথাটি আমরা প্রায় সকলেই জানি। সাধারণত যে বিষয়গুলি শেখার পর আমরা মাঝে মাঝে চর্চা করে থাকি, সেগুলি আমরা মনে রাখতে পারি। কিন্তু কোনোকিছু শেখার পর দীর্ঘদিন যদি তার চর্চা না করা হয়, তাহলে তার বিস্মরণ ঘটে।
বিষয়বস্তুর প্রকৃতি: বিষয়বস্তুর প্রকৃতির উপর মনে রাখা বা ভুলে যাওয়া অনেকাংশে নির্ভর করে। এবিংহসের পরীক্ষা থেকে জানা যায়-অর্থহীন শব্দ তালিকা, গদ্য, কবিতা ও অন্তর্দৃষ্টির সাহায্যে শেখা বিষয়বস্তুর মধ্যে অর্থহীন শব্দতালিকার ক্ষেত্রে বিস্মরণের হার সবচেয়ে বেশি।
শিখনের মাত্রা: প্রত্যেকটি বিষয় শেখার একটি মাত্রা থাকে, যেখানে পৌঁছালে শিখন সম্পূর্ণ হয়। কিন্তু বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে শেখার পরেও যদি চর্চা করা হয়, তাহলে তাকে অতিশিখন বলে। অতিশিখনের ফলে বিস্মরণ কম ঘটে। আবার বিষয়টির শিখন যদি সম্পূর্ণ না হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে বিস্মরণ বেশি পরিমাণে ঘটে থাকে।
অবদমন: ‘ফ্রয়েড’-এর মতে, অবদমন হল বিস্মরণের মূল কারণ। যা আমরা চাই না, যা অসামাজিক বা আমাদের কাছে অপ্রিয় তাকে আমরা তাড়াতাড়ি ভুলে যেতে চাই। শিক্ষাবিদ নান বলেছেন, আমরা সুখকর ঘটনা মনে রাখি, অপ্রিয় ঘটনা ভুলে যাই। কিন্তু আবার মেল্টজার, রস, স্ট্যাগনার প্রমুখ মনোবিজ্ঞানী বলেন- অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক বা বেদনাদায়ক যাই হোক না কেন, তাতে যদি আমাদের প্রক্ষোভ বা অনুভূতির স্পর্শ লেগে থাকে, তা হলে তা আমাদের ভুলতে অনেক সময় লাগে।
নেশাকারক বন্ধু: দীর্ঘদিন ধরে নেশার বস্তু ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোশগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। স্মরণক্রিয়া হল মস্তিষ্কজনিত প্রক্রিয়া। তাই নেশাকারক বস্তু গ্রহণে মস্তিষ্কের স্মরণ চিহ্ন অস্পষ্ট হয়ে যায় এবং বিস্মৃতি ঘটে।
6. কল্পনা সম্পর্কে লেখো । এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। **
Ans: কল্পনা: কল্পনা হল সেই মানসিক প্রক্রিয়া, যা আমাদের মনের মধ্যে অবস্থিত প্রতিরূপগুলিকে ইচ্ছামতো সাজিয়ে নিয়ে নব-নব মানসিক অভিজ্ঞতা বা ভাবমূর্তি সৃষ্টি করে। অর্থাৎ যে অতীত অভিজ্ঞতা বিবর্জিত কল্প আমাদের মনে সৃষ্টি হচ্ছে, তাকে বলা হয় কল্পনার কল্প (Image of Imagination), আর এই কল্পনাগত কল্প সৃষ্টির জন্য যে মানসিক প্রক্রিয়া কাজ করে, তাকে বলা হয় কল্পনা বা কল্পন প্রক্রিয়া (Imagination)।
এই অর্থে কল্পনা হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যার দ্বারা আমরা অতীত অভিজ্ঞতা ও ধারণার যথেচ্ছ সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন ধারণা বা অভিজ্ঞতার কল্প সৃষ্টি করি।
এই কল্পনা গঠন করতে সাধারণত তিনটি উপাদানের প্রয়োজন হয়। যেমন –
(১) যে বস্তুকে কল্পনা করা হবে, সেই সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা বা বিশ্বাস গঠন।
(২) সংরক্ষিত বিভিন্ন ধরনের পূর্ণ অভিজ্ঞতা লাভ।
(৩) অতীত অভিজ্ঞতাগুলিকে বিশ্লেষণ করে, তাদের আংশিক উপাদানগুলির সমন্বয়ে নতুন কিছু গড়ে তোলার মানসিক প্রচেষ্টা।
কল্পনা প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহ:
(১) আমরা কোনো বস্তুর কল্পনা করি ভাবমূর্তির মাধ্যমে।
(২) কল্পনা প্রক্রিয়ার কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে না। মনের খুব দুর্বল অবস্থায় কল্পনা সৃষ্টি হয়।
(৩) এই প্রক্রিয়া কোনো যুক্তি বা বিচার-বিবেচনাভিত্তিক হয় না।
(৪) এই প্রক্রিয়ায় যে কল্পগুলি সৃষ্টি হয়, তার মধ্যে কোনো সামঞ্জস্য থাকে ।
(৫) কল্পনার উপাদান পূর্ব অভিজ্ঞতা হওয়ায়, কল্পগুলিকে আপাতভাবে বস্তুধর্মী মনে হয়।
(৬) কল্পনা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি ইন্দ্রিয়াতীত বস্তুর অভিজ্ঞতা অর্জন করে ।
7. মনোবিদ স্টাউটের মতে, মনোযোগ কী ? মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারকগুলি কী কী লেখো ।
Ans: মনোবিদ স্টাউট (Stout): স্টাউট-এর মতে, ‘মানুষের জ্ঞান প্রক্রিয়ার পেছনে যে মানসিক সক্রিয়তা কাজ করে, তাকে মনোযোগ বলে।‘ মানুষের সক্রিয়তা যত বেশি হবে, মনোযোগ তত বেশি হবে।
বস্তুগত নির্ধারক: কোনা বস্তুর যেসব গুণ অন্যান্য বস্তুর থেকে পৃথক হয়ে আমাদের চেতনার কেন্দ্রস্থলে উপস্থিত হয়, তাদের বস্তুগত নির্ধারক বলে। এই বস্তুগত নির্ধারকগুলি হল-
(১) ভীব্রতা (Intensity): উদ্দীপকগুলির মধ্যে যে উদ্দীপকটির তীব্রতা সবথেকে বেশি, তার প্রতি আমাদের মনোযোগ নিজে থেকেই চলে যায়। যেমন- উজ্জ্বল রং বা তীব্র শব্দ সহজেই আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। একইভাবে বিজ্ঞাপনের আলোয় উজ্জ্বল জিনিস আমাদের চোখে পড়ে।
(২) বিস্তৃতি (Extensity): উদ্দীপক বিশালাকৃতির হলে খুব সহজেই তা আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে থাকে। বিশাল হিমালয়, অসীম মহাকাশ বা অনন্ত সাগরের প্রতি আমরা তাই সহজেই আকর্ষণ অনুভব করি।
(৩) অভিনবত্ব (Novelty): অভিনব কোনো বস্তুর প্রতি আমাদের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়। যেমন- নতুন ধরনের পোশাক পরা ব্যক্তি সহজেই আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
(৪) গতিশীলতা (Movement): স্থির বস্তুর তুলনায় গতিশীল বস্তু আমাদের মনোযোগ সহজেই আকর্ষণ করে। চলমান আলোর বিজ্ঞাপনের প্রতি আমরা সহজেই আকৃষ্ট হই। কোনো ভরা জনসভায় বসে থাকা মানুষজনের মধ্যে যারা উঠে চলে যাচ্ছে, তাদের দিকে মনোযোগ যায়।
(৫) বৈপরীত্য (Contrasting): একজন দীর্ঘকায় ব্যক্তির পাশে একজন খর্বকায় ব্যক্তি বা একটি স্থূলকায় ব্যক্তির পাশে যদি একটি শীর্ণকায় ব্যক্তি থাকে, সহজেই সেই দিকে আমাদের মনোযোগ চলে যায়।
(৬) আকস্মিকতা (Suddenness): উদ্দীপকের আকস্মিক উপস্থাপন অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে থাকে। এটি একধরনের পরিবর্তন।
(৭) স্পষ্টতা (Clarity): অস্পষ্ট জিনিসের চেয়ে স্পষ্ট জিনিস আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। তাই অস্পষ্ট হাতের লেখার চেয়ে স্পষ্ট হাতের লেখার প্রতি আমরা বেশি মনোযোগী হই। যেসব জিনিসের স্পষ্ট আকার আছে, তা অধিক পরিমাণে মনোযোগ সৃষ্টি করে। যেমন- রাস্তার ব্যানারে লেখা বড়ো কোনো শব্দ, ছবি ইত্যাদি।
(৮) মথায়িত্ব (Duration): কোনো উদ্দীপক দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হলে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে, যেমন- দীর্ঘ সময় ধরে টিভিতে চলতে থাকা অনুষ্ঠান।
(৯) পুনরাবৃত্তি (Repetition): শুধু তীব্র উত্তেজক নয়, খুব ক্ষীণ উত্তেজকের বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটালে আমাদের মনোযোগকে আকৃষ্ট করে। যেমন- দূরে বাজানো ঢাকের শব্দ।
8. মনোবিদ রস-এর মতে, মনোযোগ কী ? মনোযোগের ব্যক্তিগত নির্ধারকগুলি লেখো ।
Ans: মনোবিদ রস (Ross): রস-এর মতে, ‘কোনো চিন্তার স্পষ্ট চেতনাই হল মনোযোগ।‘
ব্যক্তিগত নির্ধারক: ব্যক্তির মধ্যে নিহিত মনোযোগের কারণকেই মনোযোগের ব্যক্তিগত নির্ধারক বলা হয়। ব্যক্তিগত নির্ধারকগুলি হল-
(১) প্রবৃত্তি (Instinct): সহজাত প্রবৃত্তি আমাদের মনোযোগকে অনেকসময় আকর্ষণ করতে বাধ্য করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, ক্ষুধা হল একপ্রকার প্রবৃত্তি। তাই যখন আমাদের খিদে পায়, তখন আমরা খাওয়ার সামগ্রীর প্রতি মনোযোগী হই।
(২) প্রক্ষোভ (Emotion): প্রবৃত্তিমূলক ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত মানসিক অবস্থাকে প্রক্ষোভ বলা হয়। প্রক্ষোভ দ্বারাও আমাদের মনোযোগ নির্ধারতি হয়। যেমন- পথের মধ্যে সাপ দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা যখন আমরা করি, তখন কোনো নিরাপদ জায়গা দেখলে তা মনোযোগ আকর্ষণ করে।
(৩) অভ্যাস (Habit): অভ্যাস মনোযোগের অন্যতম ব্যক্তিগত নির্ধারক। ঘুম থেকে উঠে যাদের খবরের কাগজ পড়া অভ্যাস, তারা যতক্ষণ না খবরের কাগজ পড়তে পারে ততক্ষণ অন্য কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারে না।
(৪) আগ্রহ (Interest): মনোযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে আগ্রহের যথেষ্ট ভূমিকা আছে। যে বস্তুর প্রতি আমাদের আগ্রহ আছে, তার প্রতি আমরা সহজেই মনোযোগী হই। যেমন- যার খেলার প্রতি আগ্রহ আছে, সে স্বভাবতই সংবাদপত্রের খেলার পৃষ্ঠায় মনোযোগী হয়।
(৫) মেজাজ (Temperament): মেজাজগত বৈশিষ্ট্যের জন্য আমরা বস্তুর প্রতি মনোযোগ দিই। যেসব ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য হল কাজের ত্রুটি ধরা, তারা যে-কোনো কাজের ত্রুটির প্রতি মনোযোগ দান করেন। একইভাবে যারা ধার্মিক, তারা ধর্মীয় পুস্তকের প্রতি মনোযোগী হয়।
(৬) চাহিদাপূরণ (Fulfilment of demand): খাদ্যের চাহিদাপূরণের জন্য খাদ্যবস্তুর প্রতি আমরা মনোযোগ দিই। কোনো বিশেষ বিষয়ের জ্ঞানের চাহিদাপূরণের জন্য আমরা সেই বিষয়ের বইতে মনোযোগী হই।
(৭) প্রবণতা (Tendency): ব্যক্তিভেদে প্রবণতার পার্থক্য দেখা যায়। ব্যক্তির নির্দিষ্ট দিকে প্রবণতা মনোযোগের অন্যতম ব্যক্তিগত নির্ধারক। যার সংগীতে প্রবণতা আছে, সে সংগীতের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
(৮) সেন্টিমেন্ট (Sentiment) এবং আকাঙ্ক্ষা (Desire): সেন্টিমেন্ট হল জৈব মানসিক প্রবণতা, যা বিশেষ বিষয়বস্তুর প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে। আবার কোনো বিষয়ের প্রতি আকাঙ্ক্ষা থাকলে তার প্রতি মনোযোগ যায়। যেমন- ভালো চাকরি পেতে চাইলে তার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।
9. মনোযোগ কাকে বলে ? এর প্রকৃতি বা স্বরূপ সম্পর্কে আলোচনা করো ।
Ans: মনোযোগ: কোনো বিষয়ের সঙ্গে মনের যোগকে মনোযোগ বলে। উদ্দেশ্যপূরণের জন্য যখন কোনো বস্তুকে আমরা চেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে হাজির করি, তখন তাকে মনোযোগ বলে। অর্থাৎ কোনো বিষয় বা বস্তু সম্পর্কে সুষ্পষ্ট জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে মনকে নিবিষ্ট করার দৈহিক-মানসিক প্রক্রিয়াকে মনোযোগ বলে।
মালাবিদ ম্যাকডুগাল (McDougall): ম্যাকডুগাল-এর মতে, যে মানসিক সক্রিয়তা আমাদের প্রত্যক্ষণের উপর প্রভাব বিস্তার করে, তাকে মনোযোগ বলে।
মনোযোগের প্রকৃতি: মনোযোগ হল নির্বাচনধর্মী মানসিক প্রক্রিয়া, সংরক্ষণ বা ধারণ ক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এর প্রকৃতি নিম্নে আলোচিত হল-
(১) জ্ঞানমূলক প্রক্রিয়া: মনোযোগের মাধ্যমে আমরা জ্ঞানলাভ করে থাকি। তাই এটি জ্ঞানমূলক প্রক্রিয়া।
(২) কর্মমূলক প্রক্রিয়া: মনোযোগের সাহায্যে কোনো বস্তু বা ব্যক্তির প্রতি আমাদের চেতনাকে নিবদ্ধ করি এবং সক্রিয় হই। তাই এটি কর্মমূলক প্রক্রিয়া।
(৩) সংরক্ষাণর শর্ত: সংরক্ষণের বা ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হল মনোযোগ। যেসকল বিষয়ে আমরা মনোযোগ দিই, সেই সকল বিষয় আমরা ধারণ করতে পারি, তবে যেসকল বিষয়ে আমরা মনোযোগ দিই না, সেই সকল বিষয় আমরা সংরক্ষণ করতে পারি না।
(৪) অনুভূতিমূলক: মনোযোগ কোনো বিষয় বা বস্তু সম্পর্কে মানবমনে বিশেষ অনুভূতি সৃষ্টি করে, আত্মসচেষ্ট হতে সাহায্য করে, তাকে বলে অনুভূতিমূলক প্রক্রিয়া।
(৫) নির্বাচনধর্মী: মনোযোগ একপ্রকার নির্বাচনধর্মী মানসিক প্রক্রিয়া। মনোযোগের বিষয়টি থাকে চেতনার কেন্দ্রে।
(৬) নির্ধারক : মনোযোগের বস্তুগত ও ব্যক্তিগত এই দু-ধরনের নির্ধারক রয়েছে।
(৭) জ্ঞানার্জনের কৌশল: মনোযোগ এমন একটি প্রক্রিয়া, যার সাহায্যে আমরা জ্ঞান অর্জন করে থাকি।
(৮) ইচ্ছাধীন মানসিক প্রক্রিয়া: মনোযোগ ব্যক্তির ইচ্ছাধীন একটি মানসিক প্রক্রিয়া। ব্যক্তি ইচ্ছা করলে তবেই বিশেষ দিকে তার মনোযোগকে চালিত করতে পারে।
(৯) অস্থির প্রকৃতির: মনোযোগ সর্বদা অস্থির প্রকৃতির হয়। অর্থাৎ এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হয়।
10. পরিণমন কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো । ***
Ans: পরিণমনের সংজ্ঞা: যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ বিকাশ প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয়, তাকে অন্তর্জাত বৃদ্ধি হল পরিণমন। কোলেসনিক-এর মতে, ‘জন্মগত সম্ভাবনাগুলি স্বাভাবিকভাবে প্রস্ফুটিত হওয়ার ফলে শিশুর আচরণের গুণগত এবং পরিমাণগত পরিবর্তনের প্রক্রিয়াই হল পরিণমন।’ থম্পসনের মতে, পরিণমন প্রক্রিয়া হল একটি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে শিশু একজন পরিণত মানুষরূপে গড়ে ওঠে। মনোবিদ স্কিনারের মতে, পরিণমন হল একধরনের বিকাশ, যা পরিবেশগত অবস্থার ব্যাপক তারতম্য থাকলেও মোটামুটিভাবে নিয়মমাফিক সংঘটিত হয়।
পরিণমনের বৈশিষ্ট্য:
(ক) বিকাশের প্রক্রিয়া: পরিণমন বলতে কোনো বিশেষ আচরণ সম্পাদনের ক্ষমতাকে বোঝায় না। পরিণমন হল ব্যক্তি বা শিশুর এমন এক বিকাশ প্রক্রিয়া, যার দ্বারা তার আচরণগত পরিবর্তন আসে এবং নতুন নতুন কর্মদক্ষতা সৃষ্টি হয়।
(খ) স্বাভাবিক প্রক্রিয়া: পরিণমন কোনো শর্তসাপেক্ষ প্রক্রিয়া নয়। উদ্দীপক পরিস্থিতির বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই পরিণমন শিশুর মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মে সংঘটিত হয়। তাই পরিণমনকে স্বাভাবিক বিকাশের প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
(গ) বিনা প্রচেষ্টা: পরিণমনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যক্তির চেষ্টার কোনো প্রয়োজন হয় না। পরিণমন ব্যক্তির অজান্তেই ঘটে থাকে। যেমন- কাঁচা আম গাছে থাকতে থাকতে স্বাভাবিক নিয়মে পেকে যায়। পাকানোর জন্য আম পেড়ে ঘরে গরমের মধ্যে না রাখলেও চলে। একইভাবে স্বাভাবিক নিয়মে ব্যক্তিজীবনেও পরিপক্কতা আসে।
(ঘ) প্রশিক্ষণনির্ভর নয়: পরিণমনের জন্য কোনোপ্রকার প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। এমনকি এই প্রক্রিয়া ব্যক্তি বা সমাজের ইচ্ছা, অবস্থা কোনাকিছুর উপর নির্ভরশীল নয়।
(ঙ) চাহিদানির্ভর নয়: পরিণমন ব্যক্তি বা সমাজের চাহিদার উপর নির্ভরশীল প্রক্রিয়া নয়। অর্থাৎ ব্যক্তির চাহিদা না থাকলেও পরিণমন সংঘটিত হয়। তবে পরিণমন বা পরিণমনজনিত বিভিন্ন পরিবর্তন ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের চাহিদাকে পরিতৃপ্ত করতে সাহায্য করে।
(চ) সহজাত প্রবণতার উপর নির্ভরশীল: জন্মসূত্রে প্রাপ্ত সম্ভাবনাগুলির বিকাশের উপর পরিণমন নির্ভরশীল। কারণ বহিঃপরিবেশ ব্যক্তির পরিণমনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
(ছ) স্বাভাবিক দক্ষতা অর্জনে সহায়ক: পরিণমনের ফলে ব্যক্তির শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ব্যক্তি সহজেই কোনো বিশেষ দক্ষতা অর্জনে সমর্থ হয়।
(জ) নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক প্রক্রিয়া: পরিণমন জীবনের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে শুরু হয় এবং একটি বিশেষ পর্যায়ে শেষ হয়। তাই পরিণমনকে জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া বলা যায় না। বিভিন্ন ব্যক্তির পরিণমন বিভিন্ন পর্যায়ে শুরু হয় এবং বিভিন্ন পর্যায়ে শেষ হয়।
(ঝ) জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া: পরিণমন নির্ভর করে ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ জৈবিক কেন্দ্রগুলির বিকাশের উপর। তাই জৈবিক কেন্দ্রের বিকাশ ব্যাহত হলে পরিণমন ব্যাহত হয়।
(ঞ) বৃদ্ধির সঙ্গে সমার্থক: পরিণমন বৃদ্ধির সঙ্গে সমার্থক হয়।
11. শিখন ও পরিণমনের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা করো । শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের ভূমিকা আলোচনা করো । **
Ans: শিখন ও পরিণমনের সম্পর্ক:
(ক) পারস্পরিক সম্পর্ক: শিখন ও পরিণমন দুটি আলাদা প্রক্রিয়া। পরিণমনের অর্থ স্বতঃস্ফূর্ত বিকাশ, যা শিখনের উপর নির্ভর করে না, কিন্তু শিখন পরিণমনের উপর নির্ভরশীল। শিখন তখনই হয়, যখন পরিণমনের উপযোগী বয়সে শিশু পৌঁছোয়।
(খ) বিকাশমূলক প্রক্রিয়া: পরিণমন ও শিখন উভয়ই বিকাশমূলক প্রক্রিয়া। পরিণমন শিখন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, কিন্তু শিখন পরিণমন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে শিশুর বিকাশে সহায়তা করে।
শিক্ষাবিদদের মতে, শিশুর শিক্ষাদানে নতুন শিখনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিণমনের দরকার।
শিক্ষাক্ষেত্রে পরিণমনের ভূমিকা:
(ক) দৈহিক ও মানসিক প্রক্রিয়া: শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশের দ্বারা তার পরিণমনের প্রকাশ ঘটে। এর ফলে শিশুর ভাষার বিকাশ, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিকাশ ঘটে। শিশু পাঠগ্রহণে সক্ষম হয়।
(খ) শিখনের গতি ও সীমা নির্ধারণ: শিখনের গতি ও সীমা নির্ধারণে পরিণমনের ভূমিকা লক্ষ করা যায়। নির্দিষ্ট পরিণমনের পর শিশুর শিখন শুরু হয় এবং তা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলতে থাকে। পরিণমনই ঠিক করে দেয় কোন সময়ে কোন্ ধরনের শিখন সার্থক ও সফল হবে।
(গ) ভাষাবিকাশ: শিক্ষার্থীর ভাষাবিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পরিণমন। উপযুক্ত পরিণমন ছাড়া কখনোই শিক্ষার্থীর ভাষাবিকাশ সম্ভব নয়।
(ঘ) জ্ঞানেন্দ্রিয় ও কর্মেন্দ্রিয়ের সমন্বয়: শিক্ষার্থীর সার্থক বিকাশের উপর নির্ভর করে জ্ঞানেন্দ্রিয় ও কর্মেন্দ্রিয়ের সমন্বয়সাধন, যা শিক্ষার্থীকে যে-কোনো বিষয় শিখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
(ঙ) পরিণমনের ধরন নির্ধারণ: অনেকক্ষেত্রে শিখন পরিণমনের ধরন নির্ধারণ করে। যেমন- কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঠ্যের বিষয় অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিশুদের ইন্দ্রিয়সমূহকে পরিমার্জনের শিক্ষা দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে পরিণমন শিখন দ্বারা নির্ধারিত হয়।
(চ) জীবনবিকাশ: শিক্ষার্থীদের জীবনবিকাশে শিখন গুরুত্বপূর্ণ। আর শিখনকে ফলপ্রসূ করতে পরিণমনের বিকাশ আবশ্যক।
(ছ) পরিকল্পনামাফিক পাঠ ও শিক্ষা পরিকল্পনা: সঠিক পরিণমন না হলে শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণে সমস্যা হয়। তাই উপযুক্ত পরিণমনের উপর নির্ভর করে পাঠক্রম রচনা ও শিক্ষা পরিকল্পনা করা হয়।
(জ) পরিণমনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা: শৈশব, বয়ঃসন্ধি এইসব পর্যায়ে সঠিক পাঠক্রম রচনার জন্য পরিণমনভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজন।
(ঝ) শিখন স্বরান্বিতকরণ: পরিণমন শিখনকে ত্বরান্বিত করে। শিক্ষার্থীর উপযুক্ত পরিণমন হলে যে-কোনো বিষয় অতি দ্রুত আয়ত্ত করতে পারে।
(ঞ) আত্মপ্রত্যয় ও শিখন প্রাচস্টার কার্যকারিতা বৃদ্ধি: পরিণমনের পর্যায়ের প্রতি লক্ষ রেখে শিখন পরিকল্পনা করলে শিখন ফলপ্রসূ হয় ও আত্মপ্রত্যয় বাড়ে। অন্যদিকে শিখন প্রচেষ্টাকে কার্যকরী করতে পরিণমনজনিত ফল পরবর্তী শিখনে শিক্ষার্থীকে আগ্রহী করে।
(ট) অধিক সুফল ও উন্নত আচরণ: নির্দিষ্ট বয়সে শিক্ষারম্ভ হলে অল্প শ্রমে অধিক সুফল মেলে ও শিক্ষার্থীরা জটিল সম্যসার সমাধান করে উন্নত আচরণ করে।
12. মনোযোগের বিভাজন কাকে বলে ? শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের ভূমিকার মূল্যায়ন করো । **
Ans: মনোযোগের বিভাজন: একই সময়ে অনেকগুলি উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগ দেওয়াকে মনোযোগের বিভাজন বলে। যেমন- কোনো ছাত্র বা ছাত্রী অঙ্ক করছে আবার গানও শুনছে বা কোনো বাসের চালক গান শুনছে আবার বাসও চালাচ্ছে। তবে, মনোযোগের বিভাজন ও তার প্রভাব বিষয়ে অনেক পরীক্ষা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কমবেশি নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে মনোযোগের ভূমিকা ও শিক্ষকের দায়িত্ব:
(ক) ব্যক্তিগত বৈষম্য: মনোযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়, তাই ব্যক্তিগত বৈষম্যের নীতি অনুসরণে শিক্ষাক্ষেত্রে বিষয়বস্তু নির্বাচন করা হয়।
(খ) মনোযোগের নির্ধারকের ব্যবহার: মনোযোগের বিভিন্ন নির্ধারকসমূহকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকা কাজে লাগান। যেমন-রঙিন পাঠ্যপুস্তকের ব্যবহার, শিক্ষাসহায়ক চার্ট ব্যবহার ইত্যাদি।
(গ) উন্নত বিদ্যালয় পরিবেশ: শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়া ফলপ্রসূ করতে উন্নত বিদ্যালয় পরিবেশ গড়ে তোলা হয়। মনোরম পরিবেশ মনোনিবেশের অন্যতম হাতিয়ার।
(ঘ) ইচ্ছাসাপেক্ষ মানাযোগ ও শিক্ষা: শিক্ষককে শিখনের উদ্দেশ্য ও ব্যাবহারিক প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করে, সেন্টিমেন্ট সৃষ্টি করে, উপদেশ দিয়ে, প্রয়োজন হলে লঘু শাসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মনোযোগ আকর্ষণে সচেষ্ট হতে হবে। তার পাশ
(ঙ) বিষয় বৈচিত্য: শিক্ষাদানের সময় পাঠ্যসূচির বিষয়টি নীরস হওয়ার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মনোযোগের ঘাটতি দেখা যায়। তাই নিরবচ্ছিন্নভাবে কোনো কিছু দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা না করে, মাঝে মাঝে শিক্ষক অন্য বিষয়ে চলে যাবেন। কঠিন ও নীরস পাঠে মনোযোগ আসে না।
(চ) প্রক্ষোভ অনুসরণ: মনোযোগের ব্যক্তিগত নির্ধারক, যেমন-শিক্ষার্থীর প্রক্ষোভ, প্রবণতা, কৌতূহল প্রভৃতির দিকে লক্ষ রেখে শিক্ষাদান করা হলে শিক্ষার্থীরা মনোযোগী হয়, ফলে শিক্ষার ইতিবাচক দিকগুলির বিকাশ ঘটে এবং শিক্ষা ফলপ্রসূ হয়।
(ছ) বয়স বৃদ্ধির সাঙ্গা মালাযোগ: বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাপ্রণোদিত মনোযোগ সৃষ্টি হয়। এই অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের বিমূর্ত ভাবনার প্রতি আগ্রহী করে তুলবেন। এই ইচ্ছাপ্রণোদিত মনোযোগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবেন।
(জ) মনোযোগের ক্ষেত্রসীমা: শিশুর মনোযোগের পরিসীমা যেহেতু সীমিত, তাই শিক্ষক-শিক্ষিকা লক্ষ রাখবেন যাতে পাঠক্রম দীর্ঘ না হয় এবং বিষয়বস্তুকে খন্ডীকরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন।
পরিশেষে বলা যায়, মনোযোগ পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান শর্ত, শিক্ষার্থীর জৈব-মানসিক সংগঠনের উপর শিক্ষককে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুর প্রতি তাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক মনোযোগ সৃষ্টি হয়।
13. বিভিন্ন মনোবিদের মতানুযায়ী, আগ্রহ বা অনুরাগের সংজ্ঞা দাও । আগ্রহের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো । **
Ans: বিভিন্ন মনোবিদের মতানুযায়ী, আগ্রহ বা অনুরাগের সংজ্ঞা : মনোবিদ ড্রিভার বলেছেন, ‘An interest is a disposition in its dynamic aspect।‘ অর্থাৎ আগ্রহ হল একপ্রকার গতিশীল মানসিক প্রবণতা।
মনোবিদ রসের মতে, ‘Interest is conative rather than cognitive, the emotions must be organised round the objects of interest।‘ অর্থাৎ অনুরাগ অভিজ্ঞতা অপেক্ষা প্রেষণামূলক হয়, অনুরাগের বিষয়বস্তুসমূহকে কেন্দ্র করে প্রক্ষোভ সংগঠিত হয়।
মনোবিদ টেলফোর্ড (Telford) বলেছেন, যেসব বস্তুর মধ্যে আমাদের চাহিদা পরিতৃপ্তির সম্ভাবনা থাকে, তাদের প্রতি আমরা অনুরক্ত হই।
মনোবিদ লভেল (Lovell) বলেছেন, বিশেষ ধরনের কাজের প্রতি মানুষের প্রবণতা হল আগ্রহ।
মনোবিদ স্টাউট (Stout) অনুরাগ বলতে বস্তুকে লাভ করার একটি সক্রিয়তাকে বুঝিয়েছেন। যেমন- খেলার প্রতি অনুরাগ থাকাই হল খেলার প্রতি প্রতিটি ব্যক্তির বিশেষ মানসিক অনুভূতি। অর্থাৎ অনুরাগ হল ব্যক্তির অভিজ্ঞতার মানসিক অনুভূতি বা অনুরাগ হল ব্যক্তির অভিজ্ঞতার প্রক্ষোভ-প্রতিক্রিয়ামূলক দিক (Cognitive affective aspect) |
অনুরাগ বা আগ্রহের বৈশিষ্ট্য: আগ্রহের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
(ক) বিকাশধর্মী: শিশুর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আগ্রহের বিকাশ ঘটতে থাকে। শিশুকালে যেসব বিষয় বা বস্তুর প্রতি আগ্রহ থাকে, বয়সকালে তা বাড়তে পারে বা নাও থাকতে পারে। বংশগত ও অর্জিত শিশুর আগ্রহে বংশগত প্রভাব যেমন থাকে, তেমনই অর্জিত প্রভাবও রয়েছে।
(খ) সামাজিক পরিবেশ : নির্ভর শিশু যে সামাজিক পরিবেশে বাস করে, সেই পরিবেশ শিশুর আচরণকে প্রভাবিত করে, যা আগ্রহের পরিবর্তনে সাহায্য করে।
(গ) চাহিদানির্ভর: যেসব বিষয় বা বস্তু বা ঘটনা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে চাহিদা সৃষ্টি হয়, সেগুলিকে কেন্দ্র করে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
(ঘ) প্রেষণানির্ভর: প্রেষণা শিশুর আগ্রহকে বাড়িয়ে তোলে এবং বাস্তব রূপ দিতে পারে।
(ঙ) অনুভূতিমূলক দিক: আগ্রহ সবসময় তৃপ্তিদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি করে।
(চ) ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য: একই পরিবেশে ব্যক্তিগত পার্থক্য হলে, আগ্রহের পাথক্য পরিলক্ষিত হয়।
(ছ) পরিমাপযোগ্য: আগ্রহ পরিমাপ করা যায়। এই পরিমাপ শিশুর বৃত্তিমূলক বিকাশের দিক নির্ধারণ করে।
(জ) পরিবর্তনশীল: ব্যক্তির মধ্যে কোনো বিষয় সম্পর্কে সবসময় একইরকম আগ্রহ থাকে না। আগ্রহের পরিবর্তন দেখা যায়। আগ্রহ এমন একটি অভ্যন্তরীণ মানসিক প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের কাজে প্রেরণা জাগায়।
(ঝ) সেন্টিমেন্টনির্ভর: যে ব্যক্তি বা বিষয় বা বস্তু ইত্যাদির প্রতি সেন্টিমেন্ট জাগ্রত হয়, সেই বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
14. আগ্রহ কাকে বলে ? শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর আগ্রহের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করো। **
Ans: আগ্রহের সংজ্ঞা : আগ্রহ হল একপ্রকার গতিশীল মানসিক প্রবণতা। অর্থাৎ যেসব বস্তুর মধ্যে আমাদের চাহিদা পরিতৃপ্তির সম্ভাবনা থাকে, তাদের প্রতি আমরা অনুরক্ত হই।বিশেষ ধরনের কাজের প্রতি মানুষের প্রবণতা হল আগ্রহ।মনোবিদ স্টাউট (Stout) অনুরাগ বলতে বস্তুকে লাভ করার একটি সক্রিয়তাকে বুঝিয়েছেন। যেমন- খেলার প্রতি অনুরাগ থাকাই হল খেলার প্রতি প্রতিটি ব্যক্তির বিশেষ মানসিক অনুভূতি।
শিক্ষাক্ষেত্রে আগ্রহের ভূমিকা: আধুনিক শিক্ষায় শিশুর সামগ্রিক জীবনবিকাশে আগ্রহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলি হল-
(ক) সক্রিয়তা বৃদ্ধি: আগ্রহ শিক্ষার্থীকে শিক্ষাগ্রহণে সক্রিয় করে তোলে, যে সক্রিয়তা জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
(খ) নতুন কার্ম অনুপ্রেরণা: আগ্রহ শিক্ষার্থীকে নতুন নতুন কর্মে অনুপ্রেরণা জোগায়, নতুন সৃষ্টির প্রতি শিক্ষার্থীকে উৎসাহিত করে।
(গ) প্রেষণা সঞ্চার: আগ্রহ শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষাভিমুখী প্রেষণা সঞ্চার করে শিখন প্রক্রিয়াকে অধিক ফলপ্রসূ করে।
(ঘ) নির্দেশনা প্রদান: শিক্ষার্থীর আগ্রহ অনুশীলন করে তার ভবিষ্যৎ বৃত্তি নির্বাচনে নির্দেশনা প্রদান করা হয়, যার ফলস্বরূপ শিক্ষার্থীর পরবর্তী জীবনপথ সুগম হয়।
(ঙ) অনুশীলনে সহায়তা: শিশুর আগ্রহ বৃদ্ধি পেলে অনুশীলনে সহায়ক হয়, এই অনুশীলন তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
(চ) দক্ষতা বৃদ্ধি: আগ্রহের মাধ্যমে শেখা বিষয় শিক্ষার্থীর বিষয়জ্ঞান নিখুঁত করে এবং তার কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে। ব্যক্তির কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পেলে সে যে-কোনো কাজ সাবলীলভাবে করতে পারে।
(ছ) সৃজনশীলতার বিকাশ: অনুরাগ শিশুর অন্তর্নিহিত সৃজনাত্মক ক্ষমতার বিকাশ ঘটিয়ে অনুসন্ধানমূলক কাজে অনুপ্রেরণা জোগায়।
(জ) নির্ভুল বিষায় জ্ঞান অর্জন: আগ্রহ শিক্ষার্থীকে তার শিক্ষণীয় বিষয়ে নিখুঁত বা নির্ভুল জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে। ফলে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীর – আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে।
(ঝ) শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক নির্দেশনা: শিক্ষার্থীর অনুরাগকে গুরুত্ব দিয়ে তাকে শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক নির্দেশনা দেওয়া উচিত। তবেই তার জীবনে সাফল্য আসে।
এককথায় বলা যায় যে, মনোযোগ বৃদ্ধি আগ্রহকে আশ্রয় করে শিক্ষার্থী শিক্ষণীয় বিষয়ে অধিক মনোযোগী হয়ে ওঠে। কোনো বিষয়ে সুষ্ঠু আয়ত্তীকরণ এবং জ্ঞানার্জন মনোযোগেরই ফসল।
15. স্মৃতি বলতে কী বোঝো ? স্মৃতির চারটি স্তরের বর্ণনা করো ।
Ans: স্মৃতি: “পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়। ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়।” চোখের দেখা, আমাদের জানা পুরানো জিনিসকে আমাদের মনের ঝুলি থেকে বের করে আনতে পারাই হল না ভোলা তথা স্মৃতি। অর্থাৎ অতীত বিষয়কে মনে করতে পারা। মনোবিদ Woodworth-এর মতে, অতীতে শেখা কোনো কাজকে অনুরূপভাবে সমাধান করতে পারার প্রক্রিয়াই হল স্মৃতি। স্মৃতি বলতে জীবের তথ্য অর্জন, সঞ্চয়, ধরে রাখা এবং প্রয়োজনে পুনরুদ্ধার করার ক্ষমতাকে বোঝায়।
স্মৃতির পর্যায় : স্মৃতির পর্যায়গুলি হল- (ক) শিখন (Learning), (খ) সংরক্ষণ (Retention) এবং (গ) পুনরুত্থাপন (Reproduction) I
শিখন : স্মরণের প্রথম স্তর হল শিখন। কোনো বিষয় বা বস্তু স্মরণ করতে হলে প্রথমে তার শিখন হওয়া প্রয়োজন। এই শিখন হল পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আচরণধারার পরিবর্তন। আর এই অভিজ্ঞতাকে মনের মধ্যে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতে হলে তাকে বারবার উপস্থাপন করতে হয় এবং প্রত্যেক উপস্থাপনে অভিজ্ঞতাটি একটু একটু করে সংরক্ষিত হয়। এইভাবে পুনরাবৃত্তি ঘটলে একসময় সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতাটি মনে স্থান পায়। কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন উপস্থাপনের শিখনের পরিমাপকে ছক কাগজে স্থাপন করলে যে লেখচিত্র পাওয়া যায়, তাকে শিখনের লেখচিত্র বলে।
(খ) সংরক্ষণ : এটি এমন এক প্রক্রিয়া, যার দ্বারা মনের নানাপ্রকার অভিজ্ঞতা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিবর্তিত হয়। বাস্তবে মানুষ শিখন প্রচেষ্টার দ্বারা যে-সমস্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করে, নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে অনেকাংশই তা স্মৃতি থেকে মুছে যায়। কিছু অংশ স্মৃতিতে থেকে যায়- যাকে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় সংরক্ষণ বলে।
(গ) পুনরুত্থাপন : অর্জিত অভিজ্ঞতাকে বা সংরক্ষিত ধারণাকে পুনরায় স্মরণের মাধ্যমে উপস্থাপনকে বলে পুনরুত্থাপন। এটি দু-প্রকার- (a) পুনরুদ্রেক ও (b) প্রত্যভিজ্ঞা ।
(a) পূনরুদ্রেক : স্মরণের তৃতীয় স্তর হল পুনরুদ্রেক। এর অর্থ হল মনে করা। সংরক্ষণের ভাণ্ডার থেকে শিখনলব্ধ অভিজ্ঞতাকে সক্রিয় চেতনমনে পুনরুত্থাপিত করার প্রক্রিয়াই হল পুনরুদ্রেক। এটি দু-প্রকার, যথাক্রমে- প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পুনরুদ্রেক। পুনরুদ্রেক প্রক্রিয়ার তিনটি সূত্র হল-
(i) সান্নিধ্যের সূত্র: পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে যখন একটি ঘটনা অপর একটি ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, তখন তাকে সান্নিধ্যের সূত্র বলে।
(ii) সাদৃশ্যের সূত্র: দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য থাকলে প্রথম বিষয়টি মনে পড়তেই দ্বিতীয় বিষয়টিও সহজে মনে পড়ে যায়।
(iii) বৈসাদৃশ্যের সূত্র: এক্ষেত্রে অনেকসময় দুটি বিষয়ের মধ্যে অমিল থাকলেও তা সহজেই মনে পড়ে।
(b) প্রত্যভিজ্ঞা : স্মরণের সর্বশেষ স্তর হল প্রত্যভিজ্ঞা। প্রত্যভিজ্ঞা সংরক্ষণ ও পুনরুদ্রেকের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যভিজ্ঞা কথার অর্থ হল চিনে নেওয়া। পূর্বে প্রত্যক্ষণ করা কোনো অভিজ্ঞতাকে বর্তমানে চিনে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে বলে প্রত্যভিজ্ঞা। এটি ছাড়া স্মরণক্রিয়া অসফল হয়।
HS Class 12 3rd Semester (Third Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 English 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 History 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects First Semester Question Click here
HS Class 12 4th Semester (Forth Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 English 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 History 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects 4th Semester Question Click here
Higher Secondary All Subject Suggestion – উচ্চমাধ্যমিক সমস্ত বিষয়ের সাজেশন
আরোও দেখুন:-
HS Bengali Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 English Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Geography Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 History Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Political Science Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Education Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Philosophy Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sociology Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sanskrit Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 All Subjects Suggestion Click here
◆ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি: বিনামূল্যে নোটস, সাজেশন, PDF ও সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp Group এ Join হয়ে যাও।
| Class 12 WhatsApp Groups | Click Here to Join |
দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th Education Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
FILE INFO : শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer with FREE PDF Download Link
| PDF File Name | শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer PDF |
| Prepared by | Experienced Teachers |
| Price | FREE |
| Download Link | Click Here To Download |
| Download PDF | Click Here To Download |
শিখন (প্রথম অধ্যায়) অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
Info : শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Education Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Twelve XII (HS Class 12th) Education Question and Answer Suggestion
” শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Twelve XII / WB HS Class 12 / WBCHSE / HS Class 12 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB HS Class 12 Exam / HS Class 12th / WB HS Class 12 / HS Class 12 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান সাজেশন / দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান প্রশ্ও উত্তর । Class-11 Education Suggestion / HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer / HS Class 12 Education Suggestion / Class-11 Pariksha Education Suggestion / Education HS Class 12 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / HS Class 12 Education Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (HS Class 12 Education Suggestion / West Bengal Twelve XII Question and Answer, Suggestion / WBCHSE HS Class 12th Education Suggestion / HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer / HS Class 12 Education Suggestion / HS Class 12 Pariksha Suggestion / HS Class 12 Education Exam Guide / HS Class 12 Education Suggestion 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / HS Class 12 Education Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 Education Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
শিখন (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
শিখন (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | শিখন (প্রথম অধ্যায়) HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
শিখন (প্রথম অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান
শিখন (প্রথম অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | শিখন (প্রথম অধ্যায়) HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Question and Answer, Suggestion
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) | পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান সহায়ক – শিখন (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer, Suggestion | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Suggestion | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Notes | West Bengal HS Class 12th Education Question and Answer Suggestion.
উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | Higher Secondary Class 12 Education Question and Answer, Suggestion
দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | শিখন (প্রথম অধ্যায়) । HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Suggestion.
WBCHSE HS Class 12th Education Sikhon Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়)
WBCHSE HS Class 12 Education Sikhon Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । শিখন (প্রথম অধ্যায়) | HS Class 12 Education Sikhon Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
HS Class 12 Education Sikhon 4th Semester Question and Answer Suggestions | দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Education Sikhon 4th Semester Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB HS Class 12 Education Sikhon Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) সাজেশন
HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – শিখন (প্রথম অধ্যায়) সাজেশন । HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal HS Class 12 Education Suggestion Download WBCHSE HS Class 12th Education short question suggestion . HS Class 12 Education Sikhon Suggestion download HS Class 12th Question Paper Education. WB HS Class 12 Education suggestion and important question and answer. HS Class 12 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB HS Class 12 Education Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Twelve XII Education Sikhon Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Exam
HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Twelve XII Education Suggestion is provided here. HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.
শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” শিখন (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Education Sikhon Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।






















