
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer : স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer নিয়ে আলোচনা করা হলো। এই West Bengal WBCHSE HS Class 12th History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer, Suggestion, Notes | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) থেকে রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal HS Class 12th Twelve XII History 4th Semester Examination – পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষা তে এই সাজেশন বা কোশ্চেন স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।
তোমরা যারা স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা এই প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়ো এবং নীচে দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নাও।
| রাজ্য (State) | পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) |
| বোর্ড (Board) | WBCHSE, West Bengal |
| শ্রেণী (Class) | উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণী (WB HS Class 12th) |
| বিষয় (Subject) | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস (HS Class 12 History) |
| ষষ্ঠ অধ্যায় (6th Chapter) | স্বাধীনতা উত্তর ভারত (Swadhinata Uttar Bharat) |
[দ্বাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE HS Class 12th History Swadhinata Uttar Bharat 6th Chapter Question and Answer
সংক্ষিত | স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat SAQ Question and Answer:
- ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ কী? ভারতীয় প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করো।
Ans: ধর্মনিরপেক্ষতা (Secularism) বলতে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সব ধর্মের প্রতি সমান আচরণ বোঝায়। রাষ্ট্র কোনও ধর্মকে বিশেষ মর্যাদা দেয় না এবং ব্যক্তিকে নিজের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেয়।
১৯৭৬ সালের ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘Secular’ শব্দটি সংযোজন করা হয়। ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্ম ও রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণ পৃথক করে না, বরং ধর্মীয় স্বাধীনতা, সমানাধিকার এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
- ভারতীয় সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
Ans:
- বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান:
প্রণয়নের সময় এতে ৩৯৫টি অনুচ্ছেদ ও ৮টি তফসিল ছিল। সংশোধনের ফলে বর্তমানে ৪৪৮টি অনুচ্ছেদ ও ১২টি তফসিল রয়েছে। - যুক্তরাষ্ট্রীয় কিন্তু কেন্দ্রাভিমুখী:
ভারতে কেন্দ্র ও রাজ্যের ক্ষমতা তিন তালিকার মাধ্যমে বিভক্ত হলেও কেন্দ্রকে অধিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাই ভারতকে Quasi-Federal রাষ্ট্র বলা হয়।
- ভারতীয় সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
Ans: ভারতীয় সংবিধানে যুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্য দেখা যায়—
- কেন্দ্র–রাজ্য ক্ষমতাবণ্টন (তিন তালিকা)
- লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান
- স্বাধীন বিচারব্যবস্থা (Supreme Court)
- দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ (Parliament)
তবে জরুরি অবস্থায় কেন্দ্রের ক্ষমতা বাড়ে, তাই ভারত Quasi-Federal।
- গণপরিষদ কীভাবে গঠিত হয়েছিল?
Ans: ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ সরকারের প্রেরিত মন্ত্রী মিশন (Cabinet Mission) এর পরিকল্পনা অনুযায়ী গণপরিষদ গঠন হয়।
- প্রতি ১০ লক্ষে ১ প্রতিনিধি
- মোট সদস্য ছিল ৩৮৯ জন
- সাধারণ, মুসলিম ও শিখ সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে আসন বণ্টন
- প্রাদেশিক আইনসভার সদস্যরা প্রতিনিধিদের নির্বাচন করেন
সংবিধান রচনার কাজ শুরু হয় ৯ ডিসেম্বর ১৯৪৬।
- ২৬ জানুয়ারি ১৯৫০-এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।
Ans: ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হয় এবং ভারত গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র (Republic) হয়।
এদিনকে সাধারণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
১৯৩০ সালে কংগ্রেস প্রথম ২৬ জানুয়ারি ‘পূর্ণ স্বাধীনতা দিবস’ হিসাবে পালন করেছিল, সেই কারণে এই দিনটি বেছে নেওয়া হয়।
- ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার গুরুত্ব লিখো।
Ans: প্রস্তাবনা সংবিধানের দার্শনিক ভূমিকা ব্যাখ্যা করে।
এতে ভারতের মূল আদর্শ উল্লেখ —
সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র।
এছাড়া ন্যায়, স্বাধীনতা, সমতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
তাই একে সংবিধানের মুখবন্ধ/আত্মা/বিবেক বলা হয়।
- মন্ত্রী মিশনের (Cabinet Mission) প্রধান সুপারিশ উল্লেখ করো।
Ans:
- সংবিধান রচনার জন্য গণপরিষদ গঠন
- কেন্দ্র, প্রদেশ ও রাজ্যসমূহে ক্ষমতার বণ্টন
- দেশের বিভক্তি রোধ
- সম্প্রদায় অনুযায়ী প্রতিনিধিত্ব
- দেশীয় রাজ্যগুলোকে গণপরিষদে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ
- ভারতীয় সংবিধানকে কেন Quasi-Federal বলা হয়?
Ans: ভারতে কেন্দ্র–রাজ্যের ক্ষমতা বিভক্ত হলেও—
- জরুরি অবস্থায় কেন্দ্র অধিক ক্ষমতা পায়
- রাজ্যের পৃথক সংবিধান নেই
- নাগরিকত্ব একক
- কেন্দ্র রাজ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে
তাই ভারত পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রীয় নয়, বরং আধা–যুক্তরাষ্ট্রীয় (Quasi-Federal).
রচনাধর্মী | স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Descriptive Question and Answer:
1. ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ/ধারণা বলতে কী বোঝো?
Ans: ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ/ধারণা:
ভারতবর্ষ একটি বহু ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির দেশ। ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ধর্মনিরপেক্ষ বা Secular শব্দের উল্লেখ রয়েছে। ল্যাটিন শব্দ Saeculum থেকে ইংরেজি Secular শব্দটি এসেছে।
প্রস্তাবনায় ধর্মনিরপেক্ষ শব্দের সংযোজন: ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ৪২ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রস্তাবনায় ধর্মনিরপেক্ষ বা Secular শব্দটি সংযোজিত হয়েছে।
সংকীর্ণ অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতা : সংকীর্ণ অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কহীনতা বা সাধারণ জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র থেকে ধর্মকে পৃথক রাখাকে বোঝায়। ভারতে এমন সংকীর্ণ অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ গ্রহণ করা হয়নি।
ব্যাপক অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতা : ব্যাপক অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হল ধর্মের বিষয়ে নিরপেক্ষতা। এখানে বিশেষ কোনও ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্মের মর্যাদা দেওয়া হয় না। এক্ষেত্রে ধর্মীয় বিষয়ে রাষ্ট্রের দিক থেকে কোনও বিশেষ আচরণ কাম্য নয়।
ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়ে অধ্যাপক জোহরি-র মত: অধ্যাপক জোহরি-র মতে, ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। যথা-ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতা উদার প্রকৃতির। এখানে ধর্ম বিষয়ে সমানাধিকারের পাশাপাশি সংখ্যালঘু ধর্মসম্প্রদায়গুলির কিছু বিশেষ অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা প্রকৃতিগতভাবে গতিশীল। এখানে রাষ্ট্রের জনগণের বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে প্রয়োজন অনুসারে ধর্মীয় রীতি লঙ্ঘন করে আইনও তৈরি করা যেতে পারে।
ভারতীয় সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মনিরপেক্ষতা: প্রাচীন ভারতে যে পরধর্মসহিষ্ণুতার আদর্শের উপস্থিতি ছিল, তারই পরিবর্তিত রূপ হল ধর্মনিরপেক্ষতা। ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় মূলত ধর্মনিরপেক্ষতার ইতিবাচক আদর্শকে গ্রহণ করা হয়েছে। সংবিধানের ২৫ থেকে ২৮ নং ধারায় প্রকাশিত আদর্শে বলা হয়েছে যে- ভারত রাষ্ট্রের কোনও বিশেষ ধর্ম বা নিজস্ব ধর্ম থাকবে না। রাষ্ট্র কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করবে না, রাষ্ট্রের কাছে সব ধর্মই সমান। রাষ্ট্রের সকল নাগরিক নিজ নিজ পছন্দ অনুযায়ী স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করবে এবং রাষ্ট্র সকল ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য সমান সুযোগসুবিধার বিষয়টি সুনিশ্চিত করবে।
2. ভারতীয় সংবিধানের দুটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো।
Ans: ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্য:
ভারতীয় সংবিধানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল-
বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত ও জটিল সংবিধান:
বিশ্বের লিখিত সংবিধানগুলির মধ্যে ভারতের সংবিধান সর্বাপেক্ষা বিশাল, তথ্যবহুল ও জটিল। বিচারপতি মেহেরচাঁদ মহাজন বলেছেন- পৃথিবীর অন্য কোনও দেশে ভারতবর্ষের মতো এত বিশাল শাসনতন্ত্র নেই। প্রবর্তনের সময়কালে এই সংবিধানে মোট ৩৯৫টি ধারা (Article) এবং ৮টি তফসিল (Schedule) ছিল। পরবর্তীকালে কয়েকবার সংশোধনের ফলে কয়েকটি অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণভাবে এবং কয়েকটি আংশিকভাবে বাদ পড়েছে। আবার কিছু নতুন ধারা সংযোজিতও হয়েছে। ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে ১০৬ তম সংবিধান সংশোধনের পর সংবিধানে রয়েছে মোট ৪৪৮টি ধারা এবং ১২টি তফসিল। ভারতীয় সংবিধানে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সম্পর্ক, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাসনকাঠামো, মৌলিক অধিকার, নির্দেশমূলক নীতি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ থাকার ফলে এই সংবিধান আয়তনে বিশাল এবং চরিত্রে জটিল হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রীয় ও কেন্দ্রাভিমুখী সরকারের সমন্বয়: ভারতীয় সংবিধান হল- যুক্তরাষ্ট্রীয় ও কেন্দ্রাভিমুখী শাসনব্যবস্থার সমন্বয়। সংবিধান অনুযায়ী ভারতকে একটি যুক্তরাষ্ট্রের আদর্শে গঠন করা হয়েছে। একাধিক অঙ্গরাজ্যের সমন্বয়ে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠিত। সংবিধানে কেন্দ্র ও অঙ্গরাজ্যগুলির মধ্যে তিনটি তালিকার মাধ্যমে ক্ষমতা বণ্টন করা হয়েছে। এগুলি হল- কেন্দ্রীয় তালিকা, রাজ্য তালিকা ও যুগ্ম তালিকা। কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত বিষয়গুলির উপর কেন্দ্রীয় সরকারের, রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয়গুলির উপর রাজ্য সরকারের এবং যুগ্ম তালিকাভুক্ত বিষয়গুলির উপর কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের যৌথ কর্তৃত্ব স্বীকৃত। অর্থ, প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ, পররাষ্ট্র সম্পর্ক ইত্যাদি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় তালিকার অন্তর্ভুক্ত। আবার এই তিনটি তালিকার বাইরেও সকল বিষয়ের উপর কেন্দ্রের ক্ষমতা স্বীকার করা হয়েছে। এই ক্ষমতাবণ্টন ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারকে অধিক ক্ষমতাশালী করার প্রবণতা স্পষ্ট। তবে ভারত যুক্তরাষ্ট্র হলেও এখানে অঙ্গরাজ্যের পৃথক সংবিধান নেই। কেন্দ্র বিশেষ বিশেষ কারণে অঙ্গরাজ্যের প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করতে পারে। ফলে শাসনব্যবস্থা কেন্দ্রাভিমুখী হয়ে পড়েছে। তাই সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেছেন- ভারতীয় সংবিধান আকারে যুক্তরাষ্ট্রীয়, কিন্তু প্রকৃতিগতভাবে কেন্দ্রাভিমুখী। ড. বি আর আম্বেদকরের মতে, এই আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয় (Quasi-federal)।
3. ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্টা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা কীভাবে পরিলক্ষিত হয়?
Ans: সংবিধানে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার আদর্শ ১৯৩৫ যুক্তরাষ্ট্র বা Federal কথাটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ Foedus থেকে, যার অর্থ চুক্তি। ভারতীয় খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন থেকে গৃহীত হয়েছে। তবে সংবিধানে কোথাও ভারতবর্ষকে যুক্তরাষ্ট্র বলে অভিহিত করা হয়নি। বরং সংবিধানের ১নং ধারায় ভারতকে রাজ্যসমূহের ইউনিয়ন বলে অভিহিত করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা:
যুক্তরাষ্ট্রের যে-সমস্ত স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য থাকে, ভারতের শাসনব্যবস্থাতেও তার বেশকিছু বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এগুলি হল-
কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন: ভারতীয় সংবিধান কর্তৃক কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে কেন্দ্রীয়, রাজ্য ও যুগ্ম-এই তিনটি তালিকার মাধ্যমে ক্ষমতার বণ্টন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তালিকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল-প্রতিরক্ষা, মুদ্রাব্যবস্থা, নাগরিকতা, বিদেশনীতি, ডাকব্যবস্থা প্রভৃতি। রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয় হল-জনস্বাস্থ্য, জনশৃঙ্খলা, কৃষি, মৎস্য চাষ প্রভৃতি। যুগ্ম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল-বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদ, শিক্ষা, দত্তক, ফৌজদারি আইন ও পদ্ধতি প্রভৃতি। তবে যুগ্ম তালিকায় কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে কেন্দ্রের আইনই বলবৎ হবে। এক্ষেত্রে মূলত কেন্দ্রের প্রাধান্যই স্বীকৃত হয়।
লিখিত ও দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধান: যুক্তরাষ্ট্রের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল লিখিত ও দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধান, ভারতের ক্ষেত্রেও যা সমানভাবে প্রযোজ্য। ভারতের সংবিধানটিও লিখিত এবং সাধারণ আইন পাসের মাধ্যমে এটি সহজে পরিবর্তন করা যায় না অর্থাৎ দুষ্পরিবর্তনীয়।
স্বতন্ত্র বিচার বিভাগ: যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র বিচার বিভাগের কথা বলা হয়। এক্ষেত্রে ভারতেও সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট-এর মাধ্যমে স্বাধীন নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা পরিচালিত হতে দেখা যায়। তবে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিরোধ বাধলে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত হিসেবে সুপ্রিমকোর্ট তার মীমাংসা করে।
প্রকৃতিগতভাবে নমনীয়: ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রকৃতিগতভাবে নমনীয়। কারণ, জরুরি অবস্থাকালে ভারতীয় ব্যবস্থাকে কেন্দ্রাভিমুখী ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করা যায়। রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করলে তা সম্ভব। এজন্য সংবিধান সংশোধনের কোনও প্রয়োজন হয় না।
তবে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে এমন কতগুলি বৈশিষ্ট্য আছে, যেগুলি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার নীতি ও বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মেলে না, যেমন- ভারতে দ্বৈত শাসনতন্ত্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, এখানে অঙ্গরাজ্যগুলির পৃথক সংবিধান নেই। ভারতে দ্বৈত বিচারব্যবস্থাকেও স্বীকার করা হয়নি। এখানে বিচারব্যবস্থা এক, অখন্ড এবং কেন্দ্রীভূত। এ ছাড়া ভারতে দ্বিনাগরিকত্ব (Dual Citizenship) বলেও কিছু নেই। সকলেই কেবলমাত্র ভারত রাষ্ট্রের নাগরিক।
4. ভারতের গণপরিষদের গঠন আলোচনা করো।
অথবা, গণপরিষদ কীভাবে গঠিত হয়েছিল?
অথবা, গণপরিষদ গঠনের প্রস্তুতি ও তার বাস্তবায়ন সম্পর্কে লেখো।
অথবা, সংবিধান সভা কীভাবে গঠিত হয়?
Ans: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইংল্যান্ডে শ্রমিক দল
(Labour Party) ক্ষমতায় আসে। এই নতুন সরকার ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনার জন্য ব্রিটিশ সরকার মন্ত্রী মিশন-কে ভারতে পাঠায় (১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ)। মন্ত্রী মিশন ভারতে গণপরিষদ গঠনের রূপরেখা নির্দিষ্ট করে দেয়।
গণপরিষদের গঠন / সংবিধান সভা গঠন/ গঠনের প্রস্তুতি:
ভারতের সাংবিধানিক গতিপ্রকৃতির ইতিহাসে গণপরিষদের প্রতিষ্ঠা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।
মন্ত্রী মিশন না ক্যাবিনেট মিশনের পরিকল্পনা: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি কর্তৃক প্রেরিত ৩ জন সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রী মিশন বা ক্যাবিনেট মিশনের সদস্যরা ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মার্চ, ১৯৪৬ সালে দিল্লিতে এসে পৌঁছান। ক্যাবিনেট মিশন ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামোর সুপারিশ এবং গণপরিষদের গঠনের পদ্ধতি কী হবে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে।
চারটি মূল নীতি: ক্যাবিনেট মিশনের পরিকল্পনা ও অনুসারে চারটি মূল নীতির উপর ভিত্তি করে ভারতীয় গণপরিষদ গঠনের ব্যবস্থা করা হয়। যথা—
- (i) ব্রিটিশশাসিত প্রদেশ ও দেশীয় রাজাগুলি তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে গণপরিষদে আসন পাবে। প্রতিটি প্রদেশ প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যার জন্য একজন করে প্রতিনিধি গণপরিষদে পাঠাবে।
- (ii) গণপরিষদের সকল আসন সাধারণ (অ-মুসলমান ও অ-শিখ), মুসলমান ও শিখ-এই তিন সম্প্রদায়ের মধ্যে আনুপাতিক হারে বিভক্ত হবে।
- (iii) প্রাদেশিক আইনসভাগুলিতে অবস্থিত প্রতিটি সম্প্রদায়ের সদস্যগণ একক হস্তান্তরযোগ্য সমানুপাতিক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করবে।
- (iv) দেশীয় রাজ্যগুলিকে ৯৩ জন প্রতিনিধি পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হয়।
প্রতিনিধিত্বের বিভাজন : গণপরিষদ গঠনের এই মিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী স্থির হয় যে, জন্য ক্যাবিনেট মিশন বিভিন্ন প্রস্তাব পেশ করে। গণপরিষদের মোট সদস্য থাকবেন ৩৮৯ জন।
ব্রিটিশশাসিত প্রদেশের ২৯২ জনের সম্প্রদায়গত বিভাজন ছিল।
এ ছাড়া স্থির করা হয়, গণপরিষদ গঠনের পরে পরিষদে একজন সভাপতি ও অন্যান্য পদাধিকারীদের নির্বাচন করা হবে।
গণপরিষদ গঠনের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন:
নির্বাচন: মন্ত্রী মিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে গণপরিষদ গঠনের জন্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশশাসিত ও চিফ কমিশনার-শাসিত প্রদেশ থেকে (২৯২+৪ = ২৯৬) কংগ্রেস ২০৮টি আসনে বিজয়ী হয়। মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত ৭৮টি আসনের মধ্যে মুসলিম লিগ পায় ৭৩টি আসন। বাকি আসনগুলি কমিউনিস্ট পার্টি, সোশ্যালিস্ট দল, নির্দল প্রভৃতি ছোটো ছোটো গোষ্ঠীগুলি লাভ করে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দলগত বিচারে গণপরিষদ নির্বাচনে কংগ্রেস দল সবথেকে বেশি আসন পায়। তারা প্রায় ৬৯ শতাংশ আসন লাভের মাধ্যমে অর্জন করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। ক্রমশ বিভিন্ন প্রতিনিধিরাও গণপরিষদে যোগ দেন। এরপর অনেক টালবাহানার মধ্যে দিয়ে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১ ডিসেম্বর গণপরিষদ সংবিধান রচনার কাজ শুরু করে।
ভারতীয় গণপরিষদে যেসকল বিশিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচিত হন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-জওহরলাল নেহরু, ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ, ড. বি আর আম্বেদকর, সরোজিনী নাইডু প্রমুখ।
5. গণপরিষদের উল্লেখযোগ্য সদস্য কারা ছিলেন? গণপরিষদের প্রথম অস্থায়ী ও স্থায়ী সভাপতির নাম কী?
Ans: গণপরিষদের সদস্যবৃন্দ: ভারতের গণপরিষদে যেসকল প্রথিতযশা ব্যক্তি নির্বাচিত হন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- জওহরলাল নেহরু, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, ড. বি আর আম্বেদকর, ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, এইচ এন কুঞ্জুর, তেজবাহাদুর সপ্রু ড. সর্বপল্লী রাধাকৃয়ণ, চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, কে শাখানাম, আল্লাদি কৃষ্ণস্বামী আইয়ার, কে এম মুন্সি প্রমুখ।
মহিলা সদস্যবৃন্দ: মহিলা সদস্যদের মধ্যে বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত, সরোজিনী নাইডু, দুর্গাবাঈ, রাজকুমারী অমৃত কৌর প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
প্রথম অস্থায়ী ও স্থায়ী সভাপতি:
গণপরিষদের প্রথম অস্থায়ী সভাপতি ছিলেন-সচ্চিদানন্দ সিনহা এবং প্রথম স্থায়ী সভাপতির নাম ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ।
6. ভারতের ইতিহাসে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারির গুরুত্ব কী?
Ans: ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারির গুরুত্ব
১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি দিনটি ভারতবাসীর কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ওইদিন থেকে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্রে পরিণত হয়েছে।
সংবিধান কার্যকর: ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি স্বাধীন ভারতের সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকরী হয়।
প্রথম সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপন : ভারতীয় সংবিধানে ভারতকে গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র বলা হয়েছে। ভারতের নেতৃবৃন্দ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে সাধারণতন্ত্র দিবস হিসেবে স্মরণীয় করে রাখেন। প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবস (Republic Day) হিসেবে উদ্যাপিত হয়।
২৬ জানুয়ারির ঐতিহাসিক গুরুত্ব: পরাধীন ভারতে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২ জানুয়ারি কংগ্রেসের নবগঠিত কার্যনির্বাহক কমিটির বৈঠকে স্থির হয়েছিল যে, পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি দিনটি স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হবে। সেই অনুসারেই ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি সারাদেশে ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করে প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। জনসাধারণও স্বাধীনতার শপথবাক্য পাঠ করেন। এরপর থেকে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ২৬ জানুয়ারি দিনটি স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা স্মরণ করে ড. ভীমরাও রামজি আম্বেদকরের নেতৃত্বে রচিত খসড়া সংবিধান ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে গৃহীত হলেও, তা ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি থেকে কার্যকরী করা হয়।
7. টীকা লেখো: ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা। অথবা, ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি ব্যাখ্যা করো।
Ans: ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা:
ভারতীয় সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রস্তাবনা বা Preamble. প্রস্তাবনাকে মূলত ভারতীয় সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। এটিকে সংবিধানের মুখবন্ধ-ও বলা যেতে পারে। এ ছাড়াও সংবিধানের প্রস্তাবনাকে সংবিধানের ক্ষুদ্র সংস্করণ, সংবিধানের বিবেক বা সংবিধানের আত্মা বলা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান থেকে ভারতের সংবিধানে প্রস্তাবনার ধারণাটি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর জওহরলাল নেহরু গণপরিষদে তাঁর উদ্দেশ্যমূলক প্রস্তাবগুলি উত্থাপন করেন এবং সেগুলি সংশোধনের পর ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২২ জানুয়ারি অনুমোদিত হয়। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি রচিত হয়েছে।চী
প্রস্তাবনার মূল বক্তব্য: বর্তমানে সংবিধানের প্রস্তাবনাটি হল- আমরা, ভারতের জনগণ, সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে সংকল্প করে ভারতকে একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে এবং তার সকল নাগরিকই যাতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম ও উপাসনার স্বাধীনতা: মর্যাদা ও সুযোগসুবিধার ক্ষেত্রে সাম্য ভোগ করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ববোধ-এর প্রসারকল্পে আজ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর আমাদের গণপরিষদে এই সংবিধান গ্রহণ, বিধিবন্ধকরণ এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
প্রস্তাবনার সংযোজন: ভারতীয় সংবিধানের মূল প্রস্তাবনায় সমাজতন্ত্র (Socialist), ধর্মনিরপেক্ষ (Secular) এবং সংহতি (Integrity) – এই শব্দগুলি ছিল না। পরবর্তীকালে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এই শব্দগুলি সংযোজিত হয়েছে।
প্রস্তাবনার ব্যাখ্যা:
(i) জনগণের স্বরূপ: প্রস্তাবনায় আমরা ভারতের জনগণ এই কথাটির দ্বারা বলা হয়েছে যে, ভারতের জনগণ হল সংবিধানের রচয়িতা ও সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস।
ভারতের স্বরূপ: প্রস্তাবনায় ভারতকে সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র বলা হয়েছে।
সার্বভৌম : সার্বভৌম বলতে বোঝায় ভারত অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। কোনও বিদেশি রাষ্ট্র বা সংস্থার নির্দেশে ভারত রাষ্ট্র পরিচালিত হয় না।
সমাজতান্ত্রিক: ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় মার্কসীয় সমাজতন্ত্রের (Marxist Socialism) পরিবর্তে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র (Democratic Socialism) গৃহীত হতে দেখা যায়। মূলত দারিদ্র্য দুরীকরণ এবং জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভারতীয় সমাজতন্ত্র গঠিত হয়েছে।
ধর্মনিরপেক্ষ : ধর্মনিরপেক্ষ বলতে বোঝায় ভারত রাষ্ট্রের কোনও নিজস্ব ধর্ম নেই। তাছাড়া রাষ্ট্র কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাত বা বিরোধিতা করে না।
গণতান্ত্রিক: সংবিধানের প্রস্তাবনায় গণতান্ত্রিক শব্দটির মাধ্যমে নাগরিকদের রাজনৈতিক ও পৌর অধিকারগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতে সার্বিক প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারের মাধ্যমে কেন্দ্র, রাজ্য ও স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধি নির্বাচিত হন।
সাধারণতন্ত্র: রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন। জনগণই হল সরকারের সকল ক্ষমতার উৎস।
(iii) নাগরিক অধিকার: প্রস্তাবনায় প্রত্যেক নাগরিকের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, সাম্য ও সৌভ্রাতৃত্ব অর্থাৎ, ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি রক্ষার কথা স্বীকৃত হয়েছে।
সংবিধানের প্রস্তাবনার গুরুত্ব প্রসঙ্গে পন্ডিত ঠাকুরদাস ভার্গব বলেছেন যে, প্রস্তাবনাই হল সংবিধানের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান অংশ-সংবিধানের প্রাণ।
8. টীকা লেখো: নেহরু-মহলানবিশ মডেল।
অথবা, দ্বিতীয় পণ্যবার্ষিকী পরিকল্পনায় প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের ভূমিকা সংক্ষেপে আলোচনা করো।
Ans: নেহরু মহলানবিশ মডেল / দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ এর ভূমিকা:
ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউট-এর অধ্যাপক প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার একটি মডেল বা রূপরেখা প্রণয়ন করেন (১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ)। কিছু সংশোধনী-সহ পণ্ডিত নেহরু সেই রূপরেখাটি গ্রহণ করেন। তাই এটি নেহরু-মহলানবিশ মডেল নামে খ্যাত। এই মডেলই ছিল দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূলভিত্তি।
বৈশিষ্ট্য: নেহর-মহলানবিশ মডেলের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, যথা-
(i) ভারী ও মূলধনি শিল্পে গুরুত্ব আরোপ: এই পরিকল্পনাটিতে ভারী ও মূলধনি শিল্পের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার ভারতে নিজস্ব প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, ইস্পাত ইত্যাদি উৎপাদনের উপর উপর জোর দেয়, যা ভবিষ্যতে নতুন শিল্পের প্রসারে সহায়তা করবে। এসময় বৈদেশিক সাহায্যে ভারতবর্ষে কয়েকটি আধুনিক ইস্পাত-শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে। তার মধ্যে রাশিয়ার সাহায্যে ভিলাই স্টিল প্ল্যান্ট, ইংল্যান্ডের সহায়তায় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট এবং পশ্চিম জার্মানির সহায়তায় রৌরকেল্লা স্টিল প্ল্যান্ট অন্যতম।
(ii) নদীবাঁধ নির্মাণ ও জলসেচের উন্নতি: দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নদীবাঁধ নির্মাণ ও জলসেচের উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ হয়। উত্তর ভারতে কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভাকরা-নাঙ্গাল বাঁধ পরিকল্পনা রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জলসেচের পরিকল্পনা সফল করে। ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে দামোদর সেচ প্রকল্প, ময়ূরাক্ষী ও কংসাবতী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় এই পরিকল্পনার মাধ্যমে।
(iii) পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসাধন: দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে অন্যতম অন্তরায় ছিল উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব। সেই উদ্দেশ্যে এই খাতেও ব্যাপক অর্থ বরাদ্দ করা হয়। জাতীয় রাজপথগুলির উন্নতিসাধন এবং তার সঙ্গো সড়ক যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
(iv) শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণ: এই পরিকল্পনায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, চিকিৎসা পরিসেবা ইত্যাদি বৃদ্ধির জন্য স্থাপিত হয় বহু সরকারি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাটমিক এনার্জি-র অধীনে গড়ে ওঠে অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন।
তবে, নেহরু-মহলানবিশ মডেল পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত ছিল না। এই পরিকল্পনায় ভারী শিল্প বেশি গুরুত্ব পায়। কৃষি, কুটিরশিল্প ও ক্ষুদ্রশিল্প তুলনামূলকভাবে অবহেলিত থেকে যায়। তবে এই পরিকল্পনার মাধ্যমে সুতি বস্ত্রশিল্প, পাটশিল্প এবং গ্রামীণ কুটিরশিল্পের উন্নয়ন, সহযোগিতা ও সমন্বয় স্থাপনের জন্য সর্বভারতীয় শিল্পপর্ষদ গঠন করা হয়েছিল। তাই একথা বলাই যায় যে, ভারতের শিল্পায়নে ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে এই মডেলটির এবং সেইসঙ্গে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
9. জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে ভারতের ভূমিকা কীরূপ ছিল?
অথবা, ভারতের জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মূল্যায়ন করো।
অথবা, ভারতের জোটনিরপেক্ষ নীতির সাফলা ও বার্থতা আলোচনা করো।
Ans: জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে ভারতের ভূমিকার মূল্যায়ন:
স্বাধীন ভারতের বিদেশনীতির অন্যতম অলা হল জোটনিরপেক্ষ নীতি (Policy of Non-Alignment)। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভারত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সাফল্য:
(i) কোরিয়ার যুদ্ধে ভূমিকা: ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধসংক্রান্ত যে জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল তার সমাধানে ভারতের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এসময় রাশিয়া ও আমেরিকা কোরিয়ার যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে কোনও পক্ষ ভারতকে গুরুত্ব না দিলেও পরে তারা যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে ভারতের উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।
(ii) ভিয়েতনাম যুদ্ধে ভূমিকা : ইন্দোচিন বা ভিয়েতনামে ফরাসি সাম্রাজ্যবাদী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ভারত স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করেছে। তাছাড়া ভিয়েতনাম সমস্যার সমাধানে তথা এই উদ্দেশ্যে ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জেনেভা সম্মেলনেও ভারতের ভূমিকা ছিল ইতিবাচক।
(iii) চিনকে জাতিপুঞ্জের সদস্যপদ লাভে সমর্থন: ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে চিনে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর মার্কিন জোট প্রজাতন্ত্রী চিনকে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সদস্যরূপে স্বীকৃতি দেয়নি। বিবাদ সত্ত্বেও ভারত চিনকে জাতিপুঞ্জের সদস্য করার পক্ষে সওয়াল করে।
ব্যর্থতা:
(i) ভারত-চিন সম্পর্ক: ভারতের জোটনিরপেক্ষ নীতি চিন ও ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটায়। ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে তিব্বতের ধর্মগুরু দলাই লামা-কে ভারতের আশ্রয়দান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চিনের প্রভাববিস্তারের পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে উভয় দেশের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ২০ অক্টোবর চিন ভারত আক্রমণ করে এবং পরে নিজেরাই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।
(ii) ভারত-পাকিস্তান বিরোধ: ভারত তার প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে সদা আগ্রহী হলেও উভয় দেশের মধ্যে চূড়ান্ত মতবিরোধ আজও বর্তমান। কাশ্মীর সমস্যা, ভারত-পাক আন্তর্জাতিক সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ প্রভৃতি বিষয় পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ককে তিক্ত করে তোলে। বর্তমানেও এই সমস্যা এবং তিক্ততা সমানভাবে লক্ষণীয়। তাই বলা যায়, এই বিষয়টির সমাধানে জোটনিরপেক্ষ নীতি তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেনি।
তবে সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও একথা অনস্বীকার্য যে, ভারতের নেতৃত্বে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন বিশ্বরাজনীতিতে নতুন পথের দিশা দেখায়। বস্তুত, এই নীতির মাধ্যমে ভারত সর্বদা সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ ও বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।
10. বিশ্বশান্তি রক্ষার প্রচেষ্টায় জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের অবদান মূল্যায়ন করো।
অথবা, জোটনিরপেক্ষ/নির্জোট আন্দোলনের মূল্যায়ন করো।
Ans: বিশ্বশান্তি রক্ষার প্রচেষ্টায় জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের অবদান / নির্জোট আন্দোলনের মূল্যায়ন: ১৯৬০-এর দশকের জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের মাধ্যমে ভারত তথা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান লাভ করে। বিশ্বশান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে নির্জোট আন্দোলনের অবদান নিম্নরূপ-
(i) উপনিবেশবাদের অবসান: উপনিবেশবাদের অবসানে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের ভূমিকা ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়া এশিয়া-আফ্রিকার জাতীয় আন্দোলনের সাফল্য, জাতিপুঞ্জের অভ্যন্তরে নিরন্তর চাপ সৃষ্টি প্রভৃতি বিষয়ে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছিল।
(ii) অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি: জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি অস্ত্র প্রতিযোগিতার কুফল ও পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে চলেছে। বস্তুত, জোটনিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলি প্রথম থেকেই সর্বাত্মক নিরস্ত্রীকরণের দাবিতে সোচ্চার থেকেছে।
(iii) দ্বিমেরুকেন্দ্রিকতার অবসান: জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে দ্বিমেরুকেন্দ্রিকতার অবসান ঘটাতে সাহায্য করেছে। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন ছিল ঠান্ডা যুদ্ধের বিরুদ্ধে একটি সংঘবদ্ধ প্রতিবাদ। আকারে ছোটো হলেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের একসূত্রে গড়ে ওঠা যৌথ প্রতিবাদকে আমেরিকা বা রাশিয়া-কোনও রাষ্ট্রই অগ্রাহ্য করতে পারেনি।
(iv) বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদ: জোটনিরপেক্ষ দেশগুলি বর্ণবৈষম্য প্রথার তীব্র বিরোধী ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা-সহ বিভিন্ন দেশের বর্ণবিদ্বেষী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মানবাধিকারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(v) জাতিপুঞ্জে চাপসৃষ্টিকারী একক হিসেবে ভূমিকা: জোটনিরপেক্ষ দেশগুলি জাতিপুঞ্জে একটি চাপসৃষ্টিকারী একক হিসেবে কাজ করেছে। New International Economic Order, United Nations Development Programme প্রভৃতি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ জোটনিরপেক্ষ দেশসমূহের চাপেই গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে।
মূল্যায়ন: জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন বিশ্বরাজনীতিতে এক নতুন পথের সন্ধান দেয়। কিন্তু সদস্য রাষ্ট্রগুলির স্বার্থ, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব এবং প্রতিষ্ঠানিক ত্রুটি সীমাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। তবে সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম।
11. অর্থনৈতিক উদারীকরণ বলতে কী বোঝো ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।
অথবা, ১৯৯০-এর দশকের অর্থনৈতিক সংস্কার বলতে কী বোঝো?
Ans: অর্থনৈতিক উদারীকরণের ধারণা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীতে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ঠান্ডা বৃদ্ধের আবহাওয়া সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত হয়েছিল। মর্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। হারই ফলশ্রুতিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। বিশ্ব অর্থব্যবস্থার সঙ্গে সংগতি রেখে দেশগুলি নিজেদের অর্থনীতিকে পরিচালিত করতে সচেষ্ট হয়। এই নতুন ব্যবস্থা অর্থনৈতিক উদারীকরণ (Economic Liberalisation) নামে পরিচিত। বস্তুত, এটি হল অবাধ, উন্মুক্ত ও জটিলতাহীন একধরনের গতিশীল অর্থনৈতিক কর্মসূচি।
ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণ নীতি গ্রহণ: ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে প্রবল অর্থনৈতিক সংকট নিয়ন্ত্রণের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. পি ভি নরসিমহা রাও-এর নেতৃত্বে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ভারতে অর্থনৈতিক উদারীকরণ নীতি গ্রহণ করেন।
নতুন এই আর্থিক নীতির মাধ্যমে ভারত সরকার নীতিগতভাবে সংরক্ষণমুক্ত অবাধ বাণিজ্যনীতি, বৈদেশিক মূলধন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উদারনীতি গ্রহণ করে বিশ্বায়নের ধারণাকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রয়োগের পথ খুলে দেয়। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য ইত্যাদি অর্থব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রকে এই উদার অর্থনীতি বা উদারীকরণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
অর্থনৈতিক উদারীকরণের বৈশিষ্ট্য: উদার অর্থনীতি হল মূলত বাজারের শক্তির (চাহিদা + জোগান) উপর নির্ভরশীল একটি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া। উদারীকরণের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল-
- আমদানি- রফতানির উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা। এজন্য শুল্ক সংরক্ষণ নীতি বর্জন করে বাণিজ্যিক লেনদেন অবাধ করে দেওয়া হয়।
- শিল্পবাণিজ্যে দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সীমা বাতিল করা হয়। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার বা তৃতীয় পক্ষের শর্ত আরোপ নিষিদ্ধ হয়।
- রাষ্ট্র পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত শিল্পবাণিজ্যের ক্ষেত্রগুলিকে বেসরকারি করার উপর জোর দেওয়া হয়।
- বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষতা, উৎপাদন ক্ষমতা এবং গুণমান বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা করা হয়।
- লাইসেন্স প্রথার সরলীকরণ দ্বারা ব্যক্তিগত ও বেসরকারি উদ্যোগসমূহকে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশীদার করার ব্যবস্থা-সহ নানাবিধ উদ্যোগ গৃহীত হয়।
12. ভারতীয় সংবিধানে কীভাবে আর্থসামাজিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি সুরক্ষিত হয়েছে?
Ans: ভারতবর্ষের সমস্ত নাগরিকদের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার দ্বারা বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা এবং জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগঠনের উদ্দেশ্যে সংবিধানের মৌলিক অধিকারসমূহ ও নির্দেশমূলক নীতিগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়।
আর্থসামাজিক ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত নীতিসমূহ:
মূলত যে নীতিগুলির মাধ্যমে ভারতীয়দের আর্থসামাজিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি সুরক্ষিত হয়েছে, সেগুলি আলোচনা করা হল-
(i) জনগণের মঙ্গলসাধনের জন্য রাষ্ট্র এমন একটি সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবে যেখানে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে (৩৮(১) নং ধারা) এবং যেখানে অর্থনৈতিক সামাজিক মর্যাদা ও সুযোগসুবিধার ক্ষেত্রে কোনোরকম বৈষম্য থাকবে না [৩৮(২) নং ধারা)]।
(ii) রাষ্ট্র এমনভাবে তার নীতিগুলিকে পরিচালনা করবে যাতে- [৩৯ নং ধারা]
- স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল নাগরিক পর্যাপ্ত জীবিকা অর্জনের অধিকার ভোগ করতে পারে।
- দেশের সম্পদের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ সর্বসাধারণের কল্যাণে বণ্টিত হয়।
- সম্পদের উৎসগুলি যাতে মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত না হয় এবং সর্বসাধারণের স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত না হয়।
- একই কাজের জন্য নারী-পুরুষ উভয়ই সমান মজুরি পায়।
(iii) রাষ্ট্র নাগরিকদের কাজের ও শিক্ষার অধিকার প্রদান করবে এবং বেকার, বার্ধক্য ও অসুস্থ অবস্থায় সাধ্যমতো সাহায্য করবে [৪১ নং ধারা) ইত্যাদি।
উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি :
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন: সংবিধানের ৪৬ নং ধারায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের শিক্ষাগত ও সামাজিক মান উন্নয়ন এবং বৈষম্য ও শোষণমুক্তির কথা বলা হয়েছে। গঠিত হয়েছে আদিবাসী উপদেষ্টা পর্ষদ (Tribal Advisory Council)। এই পর্ষদের উদ্দেশ্য হল- প্রান্তিক ও উপজাতিদের শিক্ষা, চাকুরি, তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির উন্নতি এবং বিকাশ, প্রশাসনিক পদে সংরক্ষণ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা।
সংবিধানের ষোড়শ অংশে (Part-XVI) কতিপয় শ্রেণির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা-র কথা বলা হয়েছে। ৩৩০-৩৪২ নং ধারায় পশ্চাৎপদ শ্রেণির জন্য উন্নয়নমূলক বিশেষ ব্যবস্থার উল্লেখ আছে। তপশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য-
- জনসংখ্যার অনুপাতে আইনসভাগুলিতে আসন সংরক্ষিত থাকবে। তপশিলিভুক্ত মানুষেরা সংরক্ষিত আসনের বাইরে অসংরক্ষিত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবেন।
- এঁদের জন্য কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আসন সংরক্ষিত থাকবে। তপশিলিদের জন্য পদ সংরক্ষণ বিষয়ে কেন্দ্র যেসকল ব্যবস্থা নেবে, সাধারণভাবে রাজ্যগুলি তা অনুসরণ করবে।
- অনুন্নত শ্রেণির জন্য সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন সংরক্ষিত থাকবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সের ঊর্ধ্বসীমার ক্ষেত্রে এঁরা বিশেষ সুবিধা পাবেন ইত্যাদি।
জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ: ভারতীয় সংবিধানের ১৭ নং ধারায় অস্পৃশ্যতা বিলোপের কথা বলা হয়েছে। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত The Untouchability (Offences) Act-এর মাধ্যমে অস্পৃশ্যতাকে দন্ডনীয় অপরাধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
গ্রামের উন্নয়ন: গ্রামের উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত হয় দুধরনের কর্মসূচি, যথা- সমষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচি (১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর) এবং পঞ্চায়েত ব্যবস্থা (১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর)। গ্রামীণ কৃষি, যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি প্রায় সবকিছুই ছিল সমষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচির অন্তর্গত। জওহরলাল নেহরু এই কর্মসূচিকে মহান বিপ্লব বলে অভিহিত করেছেন। তবে এই সমষ্টি উন্নয়ন কর্মসূচির কিছু ত্রুটি ছিল। সেই ত্রুটিগুলিকে সংশোধন করে পরবর্তীতে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রবর্তিত হয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা।
13. ভারতীয় সংবিধানে কীভাবে নারী অধিকার বিষয়টি সুরক্ষিত করা হয়েছে?
Ans: ভারতীয় সংবিধানে নারী অধিকার: নারী অধিকার বলতে বোঝায় সকল বয়সের নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একধরনের স্বাধীনতা। পিতৃতান্ত্রিকতা থেকে ভারতীয় সমাজ তথা নারীদের রক্ষা করার জন্য ভারতীয় সংবিধানে একাধিক ব্যবস্থার বিধান আছে। এক্ষেত্রে পুরুষদের মতো মহিলাদেরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে। এই সকল অধিকারগুলি লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে এবং সমাজে নারীদের সুযোগসুবিধা ও মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
সামাজিক ক্ষেত্রে অধিকার:
- সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে ১২ থেকে ৩৫ নং ধারায় মৌলিক অধিকারসমূহের উল্লেখ রয়েছে।
- মহিলাদের বিশেষ স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য রাষ্ট্রকে বিশেষ আইন প্রণয়নের অধিকার দেওয়া হয়েছে।
- নারীর সামাজিক মর্যাদা রক্ষা ও ক্ষমতায়নের উপযোগী বিভিন্ন আইনগুলি হল-
(a) বিবাহব্যবস্থা সংক্রান্ত আইনসমূহ: বিধবা বিবাহ আইন (Widow Remarriage Act, ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ); বিশেষ বিবাহ আইন (Special Marriage Act, ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দ); হিন্দু বিবাহ আইন (Hindu Marriage Act, ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ) ইত্যাদি। এই আইনসমূহ বিবাহের বয়স, বহুবিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, খোরপোশের অধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে মহিলাদের স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করে।
(b) দত্তকগ্রহণ সংক্রান্ত আইন: হিন্দু দত্তক ও ভরণপোষণ আইন (Hindu Adoptation and Maintenance Act, ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ) দ্বারা বিধবা মহিলা, অবিবাহিত মহিলা এবং বিবাহ বিচ্ছিন্নাদের শিশু দত্তক গ্রহণের অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দত্তক হিসেবে যাকে গ্রহণ করা হবে তার বয়স হতে হবে ১৫ বছরের নীচে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অধিকার:
মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষার লক্ষ্যে একাধিক আইন প্রণয়ন করে সংবিধানের উদ্দেশ্য পূরণের চেষ্টা করা হয়েছে। আর্থনীতিক স্বার্থ ও আর্থনীতিক আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলি হল-সম্পত্তির অধিকার, উত্তরাধিকার, সমমজুরি, চাকুরির নিরাপত্তা, মাতৃ কল্যাণমূলক সুযোগসুবিধা, কাজের পরিবেশ ইত্যাদি।
(a) সম্পত্তিতে নারীদের অধিকার: হিন্দু উত্তরাধিকার আইন (১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ) দ্বারা সম্পত্তিতে মহিলাদের অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। পিতার সম্পত্তিতে পুত্রের সঙ্গে সঙ্গে কন্যাকেও দেওয়া হয়েছে সমান অধিকার। বিবাহিতা এবং বিধবা কন্যাও এই অধিকারের যোগ্য।
(b) কারখানায় নারী শ্রমিকের সুযোগসুবিধা: ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত হয় কারখানা আইন। এতে মহিলাদের চাকুরির নিরাপত্তা, মাতৃত্বকালীন সুবিধা ইত্যাদির বিধান আছে।
(c) সমমজুরির অধিকার: ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের সমমজুরি আইন দ্বারা মহিলারা একই কাজের জন্য পুরুষদের সমান বেতন পাওয়ার অধিকারী বলে দাবি করা হয়েছে।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অধিকার: ভারতীয় সংবিধানে নারীজাতির রাজনৈতিক অধিকার স্বীকার ও সংরক্ষণের আদর্শ প্রতিফলিত হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার হল- নারীর ভোটাধিকার এবং আইনসভায় প্রতিনিধিত্বের অধিকার। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে মহিলাদের ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্বের অধিকার স্বীকার করা হয়। স্বাধীন ভারতের সংবিধানের আদর্শ অনুসারে জাতি, ধর্ম, ভাষা, অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে সকল প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্বের অধিকার দেওয়া হয়। বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে পঞ্চায়েত স্তর থেকে সংসদ পর্যন্ত সকল পরিষদে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়। সংরক্ষিত আসনের বাইরেও মহিলারা প্রতিদ্বন্দ্বিতার অধিকার পান।
14. স্বাধীনতালাভের অব্যবহিত পরে ভারতের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি কী কী ছিল?
অথবা, স্বাধীনতালাভের মুহূর্তে ভারতের অর্থনীতির অবস্থা কেমন ছিল?
Ans: স্বাধীনতালাভের অব্যবহিত পরে ভারতের অর্থনৈতিক সমস্যা:
প্রায় ২০০ বছরব্যাপী ঔপনিবেশিক শাসনের পর একটি খণ্ডিত, বিবাদপূর্ণ দেশ হিসেবে ভারত স্বাধীনতা পায়। সেই মুহূর্তে ভারতের অর্থনীতি ছিল ঔপনিবেশিক শোষণে জর্জরিত, সম্পূর্ণ দুর্বল, মেরুদন্ডহীন একটি ব্যবস্থা। সীমাহীন এবং অবাধ শোষণে কৃষি-অর্থনীতি ছিল গতিহীন এবং দুর্বল। এই সময় ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দেয়, যথা-
(i) উদ্দ্বাস্তু ও পুনর্বাসন সমস্যা: দেশভাগের পরে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বহুসংখ্যক হিন্দু ও শিখ মানুষজন এদেশে চলে আসেন। এই বিপুল পরিমাণ শরণার্থীর আগমন ও পুনর্বাসনের সমস্যা নবগঠিত রাষ্ট্রের কাছে একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে উপস্থিত হয়।
(ii) দারিদ্র্য সমস্যা: ইংরেজরা ভারতবর্ষ ত্যাগের সময় দেশ প্রায় নিঃস্ব হয়ে যায়। লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যের শিকার হয়। দারিদ্র্য সমস্যার সমাধান করতে ভারত সরকারকে নানা পদক্ষেপ নিতে হয়। > খাদ্য সংকট: দেশভাগের দরুন বিপুল পরিমাণ কৃষি এলাকা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে দেশে প্রবল খাদ্যাভাব দেখা দেয় এবং এই খাদ্যসমস্যাকে জটিলতর করে তোলে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর আগমন। iv> বেকার সমস্যয়: স্বাধীনোত্তর পর্বের এক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ছিল সীমাহীন বেকারত্ব। দেশভাগ হওয়ার পর কৃষিভিত্তিক ও খাদ্য উৎপাদনের এলাকাগুলি মূলত পাকিস্তানে এবং শিল্পভিত্তিক ভূখণ্ডগুলি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে কাঁচামালের (পাট, গম, তুলা ইত্যাদি) অভাবে ভারতের কলকারখানাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। শিল্পে মন্দা দেখা দেয়। দেশভাগ ও বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর আগমনে বেকার সমস্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।
(c) দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি: স্বাধীনোত্তর ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সমস্যা হল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। কাপড়, কেরোসিন এবং ওষুধপত্র দুষ্প্রাপ্য ও দুর্মূল্য হয়ে ওঠে।
উপরোক্ত এই সমস্ত অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানের জন্য ভারত সরকার ১৯৫০-এর দশকে এক বিশেষ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই পরিকল্পনা মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশের কাজে সকল শ্রেণির মানুষকে নিয়োগের সুযোগ দিয়ে তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা।
HS Class 12 3rd Semester (Third Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 English 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 History 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects First Semester Question Click here
HS Class 12 4th Semester (Forth Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 English 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 History 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects 4th Semester Question Click here
Higher Secondary All Subject Suggestion – উচ্চমাধ্যমিক সমস্ত বিষয়ের সাজেশন
আরোও দেখুন:-
HS Bengali Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 English Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Geography Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 History Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Political Science Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Education Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Philosophy Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sociology Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sanskrit Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 All Subjects Suggestion Click here
◆ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি: বিনামূল্যে নোটস, সাজেশন, PDF ও সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp Group এ Join হয়ে যাও।
| Class 12 WhatsApp Groups | Click Here to Join |
দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th History Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
FILE INFO : স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer with FREE PDF Download Link
| PDF File Name | স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer PDF |
| Prepared by | Experienced Teachers |
| Price | FREE |
| Download Link | Click Here To Download |
| Download PDF | Click Here To Download |
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
Info : স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 History Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Twelve XII (HS Class 12th) History Question and Answer Suggestion
” স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Twelve XII / WB HS Class 12 / WBCHSE / HS Class 12 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB HS Class 12 Exam / HS Class 12th / WB HS Class 12 / HS Class 12 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন / দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ও উত্তর । Class-11 History Suggestion / HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer / HS Class 12 History Suggestion / Class-11 Pariksha History Suggestion / History HS Class 12 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / HS Class 12 History Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (HS Class 12 History Suggestion / West Bengal Twelve XII Question and Answer, Suggestion / WBCHSE HS Class 12th History Suggestion / HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer / HS Class 12 History Suggestion / HS Class 12 Pariksha Suggestion / HS Class 12 History Exam Guide / HS Class 12 History Suggestion 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / HS Class 12 History Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 History Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Question and Answer, Suggestion
উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) | পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সহায়ক – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer, Suggestion | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Suggestion | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Notes | West Bengal HS Class 12th History Question and Answer Suggestion.
উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | Higher Secondary Class 12 History Question and Answer, Suggestion
দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) । HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Suggestion.
WBCHSE HS Class 12th History Swadhinata Uttar Bharat Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়)
WBCHSE HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat 4th Semester Question and Answer Suggestions | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat 4th Semester Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) সাজেশন
HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) সাজেশন । HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal HS Class 12 History Suggestion Download WBCHSE HS Class 12th History short question suggestion . HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Suggestion download HS Class 12th Question Paper History. WB HS Class 12 History suggestion and important question and answer. HS Class 12 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB HS Class 12 History Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Twelve XII History Swadhinata Uttar Bharat Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Exam
HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Twelve XII History Suggestion is provided here. HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.
স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” স্বাধীনতা উত্তর ভারত (ষষ্ঠ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Swadhinata Uttar Bharat Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।





















