
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer : আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer নিয়ে আলোচনা করা হলো। এই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (Antorjatik Somporko) থেকে যে SAQ ও রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর গুলি স্টার মার্ক করা হয়েছে সেগুলো আগামী West Bengal HS Class 12th Twelve XII Political Science 4th Semester Examination – পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষার জন্য (VVI) খুব ইম্পর্টেন্ট। উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষাতে এই সাজেশন বা কোশ্চেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।
তোমরা যারা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা এই প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়ো এবং নীচে দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নাও।
| রাজ্য (State) | পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) |
| বোর্ড (Board) | WBCHSE, West Bengal |
| শ্রেণী (Class) | উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণী (WB HS Class 12th) |
| বিষয় (Subject) | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান (HS Class 12 Political Science) |
| প্রথম অধ্যায় (1st Chapter) | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (Antorjatik Somporko) |
[দ্বাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE HS Class 12th Political Science Antorjatik Somporko 1st Chapter Question and Answer
সংক্ষিত | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko SAQ Question and Answer:
- আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান দুটি মৌলিক উপাদানের নাম লেখো। ***
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান দুটি মৌলিক উপাদান হল-
ক্ষমতা (Power): আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ক্ষমতা হল একটি রাষ্ট্র বা অভিনেতার অন্য রাষ্ট্র বা অভিনেতাদের আচরণ প্রভাবিত করার বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা। এটি সামরিক শক্তি, অর্থনৈতিক শক্তি, সাংস্কৃতিক প্রভাব বা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মতো বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পেতে পারে। ক্ষমতা আন্তর্জাতিক রাজনীতির একটি কেন্দ্রীয় চালিকা শক্তি।
স্বার্থ (Interest): রাষ্ট্র বা অভিনেতারা তাদের নিজস্ব স্বার্থ দ্বারা চালিত হয়, যা তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে। জাতীয় স্বার্থের মধ্যে সাধারণত নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, ভু-রাজনৈতিক প্রভাব এবং আদর্শগত প্রচার অন্তর্ভুক্ত থাকে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষণ প্রায়শই এই স্বার্থগুলির সংঘাত বা সমন্বয়ের উপর ভিত্তি করে হয়।
- হ্যান্স মর্গেনথাউ-এর বাস্তববাদ বিষয়ে প্রধান বইটির নাম কী? **
Ans: হ্যান্স মর্গেনথাউ এর বাস্তববাদ বিষয়ে প্রধান বইটির নাম হল ‘Politics Among Nations: The Struggle for Power and Peace’ (1948)। এই বইটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নে ক্লাসিক্যাল বাস্তববাদের একটি মৌলিক পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এটি মর্গেনথাউ-এর ‘ছয়টি রাজনৈতিক বাস্তববাদের নীতি’ (Six Principles of Political Realism) তুলে ধরে।
- ‘Security dilemma’ ধারণাটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কোন তত্ত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত? **
Ans: ‘Security dilemma’ ধারণাটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদ (Realism), বিশেষ করে নয়া-বাস্তববাদ (Neo-realism) তত্ত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। এই ধারণাটি ব্যাখ্যা করে যে যখন একটি রাষ্ট্র তার নিজের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেয় (যেমন সামরিক শক্তি বৃদ্ধি), তখন এটি অন্য রাষ্ট্রগুলিকে অনিচ্ছাকৃতভাবে নিরাপত্তাহীন বোধ করাতে পারে, যার ফলে তারাও তাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে শুরু করে। এই পালটাপালটি পদক্ষেপের ফলে শেষ পর্যন্ত কোনো রাষ্ট্রই বেশি নিরাপদ হয় না, বরং প্রত্যেকের নিরাপত্তাহীনতা আরও বেড়ে যায়, যা সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
- বাস্তববাদ কোন ধরনের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কল্পনা করে? ***
Ans: বাস্তববাদ একটি অরাজক (Anarchic) আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কল্পনা করে। এর অর্থ হল, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো একক, সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বা বিশ্ব সরকার নেই যা রাষ্ট্রগুলির উপর আইন প্রয়োগ করতে পারে বা তাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এই অরাজক পরিবেশে, প্রতিটি রাষ্ট্রকেই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য স্ব-সহায়ক (self-help) হতে হয় এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়। এর ফলে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ক্ষমতা অর্জন এবং নিরাপত্তার জন্য প্রতিযোগিতা তৈরি হয়, যা প্রায়শই সংঘাতের দিকে নিয়ে যায়।
- বাস্তববাদ অনুযায়ী যুদ্ধ অনিবার্য কেন? ***
Ans: বাস্তববাদ অনুযায়ী যুদ্ধ অনিবার্য কারণ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অরাজক প্রকৃতি। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ নেই যা রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বিরোধ নিষ্পন্ন করতে পারে বা তাদের উপর আইন প্রয়োগ জন্য নিজেরাই দায়ী থাকতে হয়। করতে পারে। এর ফলে, রাষ্ট্রগুলিকে নিজেদের নিরাপত্তার
নিরাপত্তা উভয়সংকট (Security Dilemma): যখন একটি রাষ্ট্র তার নিজের নিরাপত্তা বাড়ানোর চেষ্টা করে, তখন এটি অন্য রাষ্ট্রগুলিকে অনিরাপদ বোধ করাতে পারে, যার ফলে তারাও সামরিক শক্তি বাড়ায়। এই চক্রটি শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা বাড়ায় এবং যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করে।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠে আদর্শবাদের মূল লক্ষ্য কী? ***
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠে আদর্শবাদের মূল লক্ষ্য হলো:
যুদ্ধ পরিহার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা: আদর্শবাদের প্রধান লক্ষ্য হলো যুদ্ধ প্রতিরোধ করা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা।
গণতন্ত্র ও আত্মনিয়ন্ত্রণ: গণতন্ত্রের বিস্তার এবং জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের প্রতি আদর্শবাদীরা গুরুত্ব দেয়, কারণ তারা বিশ্বাস করে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি কম যুদ্ধপ্রবণ হয়।
- আদর্শবাদীরা রাষ্ট্রের কোন দিকটির ওপর বেশি গুরুত্ব দেন? **
Ans: আদর্শবাদীরা রাষ্ট্রের নৈতিক এবং আইনগত দিকটির ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। তারা বিশ্বাস করেন যে রাষ্ট্রপুলি শুধু ক্ষমতা বা স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয় না, বরং তাদের একটি নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে আন্তর্জাতিক আইন, মানবতাবোধ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি। আদর্শবাদীরা আন্তর্জাতিক আইনের শাসন, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিস্তারের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন। তারা মনে করেন, রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব, যদি তারা নৈতিক নীতিগুলি মেনে চলে।
- উড্রো উইলসন কোন তত্ত্বের প্রবক্তা ছিলেন? **
Ans: উড্রো উইলসন আদর্শবাদ (Idealism) তত্ত্বের প্রধান প্রবক্তা ছিলেন। বিশেষ করে, তিনি উইলসনীয় আদর্শবাদ (Wilsonian Idealism) এর জন্য পরিচিত, যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে পুনর্গঠিত করার চেষ্টা করেছিল। তার মূল ধারণাগুলির মধ্যে ছিল জাতিগুলির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, গোপন চুক্তির বিলোপ, নিরস্ত্রীকরণ এবং একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা (যেমন লিগ অফ নেশনস) প্রতিষ্ঠা যার উদ্দেশ্য হবে সম্মিলিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যত যুদ্ধ প্রতিরোধ করা।
- আদর্শবাদ কোন ঐতিহাসিক ঘটনার পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়? **
Ans: আদর্শবাদ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (1914-1918) শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। এই যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং বিপুল ক্ষয়ক্ষতি রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে একটি নতুন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছিল, যা ভবিষ্যৎ যুদ্ধ প্রতিরোধ করতে পারবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসনের নেতৃত্বে ‘লীগ অফ নেশনস’ (League of Nations) গঠনের প্রস্তাব ছিল এই আদর্শবাদী দৃষ্টিভঙ্গির একটি বাস্তব রূপ, যার লক্ষ্য ছিল সম্মিলিত নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
- লিগ অব নেশনস আদর্শবাদের কোন ধারণার বাস্তব রূপ? **
Ans: লিগ অব নেশনস (League of Nations) আদর্শবাদের যৌথ নিরাপত্তা (Collective Security) এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রতিষ্ঠান (International Cooperation and Institutions) ধারণার বাস্তব রূপ ছিল।
আদর্শবাদীরা বিশ্বাস করতেন যে এককভাবে রাষ্ট্রগুলির সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করার পরিবর্তে, যদি সব রাষ্ট্র একত্রিত হয়ে কোনো আক্রমণকারী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তাহলে যুদ্ধ প্রতিরোধ করা সম্ভব। লিগ অব নেশনস এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছিল, যেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলি একে অপরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছিল এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করার কথা ছিল। এটি ছিল প্রথম বৃহৎ আন্তর্জাতিক সংস্থা যা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠে আদর্শবাদ এবং বাস্তববাদের মধ্যে একটি মূল পার্থক্য লেখো। ***
Ans: রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা। বাস্তববাদে রাষ্ট্রকে ‘unitary’ ও ‘rational actor হিসেবে দেখা হয়, যে সর্বদা জাতীয় স্বার্থের (national interest) অনুসন্ধানে নিয়োজিত। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা যেখানে অরাজক (anarchic)-সেখানে কোনো উচ্চতর কর্তৃপক্ষ নেই। আদর্শবাদ এই কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করে বলে যে, রাষ্ট্র একমাত্র actor নয়, আন্তর্জাতিক সংস্থা, NGO, আন্তর্জাতিক আইন, এমনকি ব্যক্তিবিশেষও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা মনে করেন এই actor-দের মধ্যে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় নিয়ম ও শৃঙ্খলা আনা সম্ভব।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ‘যৌথ নিরাপত্তা’ (Collective Security) ধারণাটি কোন্ তত্ত্বের অন্তর্গত? **
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ‘যৌথ নিরাপত্তা’ (Collective Security) ধারণাটি আদর্শবাদ (Idealism) তত্ত্বের অন্তর্গত। এই ধারণার মূল বক্তব্য হল, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় কোনো একটি রাষ্ট্রের উপর আক্রমণকে সব রাষ্ট্রের উপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং সব রাষ্ট্র সম্মিলিতভাবে সেই আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এর উদ্দেশ্য হলো সম্ভাব্য আক্রমণকারীকে নিবৃত্ত করা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা। লিগ অফ নেশনস এবং পরবর্তীতে জাতিপুঞ্জের (United Nations) গঠনের মূলে এই যৌথ নিরাপত্তার ধারণাই ছিল।
- আদর্শবাদ কোন্ ধরনের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কল্পনা করে? *
Ans: আদর্শবাদ একটি শান্তিপূর্ণ, সহযোগিতামূলক এবং ন্যায়ভিত্তিক (Peaceful, Cooperative, and Just) আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা কল্পনা করে। বাস্তববাদের অরাজক ব্যবস্থার ধারণার বিপরীতে, আদর্শবাদীরা বিশ্বাস করেন যে আন্তর্জাতিক আইন, নৈতিক নীতি, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রসারের মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলি সংঘাত পরিহার করে পারস্পরিক সহযোগিতা করতে পারে। তারা একটি বিশ্ব সমাজ এবং একটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গঠনের কথা ভাবে, যেখানে সাধারণ স্বার্থ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং যেখানে যুদ্ধ একটি অগ্রহণযোগ্য সমাধান।
- আদর্শবাদীরা যুদ্ধরোধের জন্য কোন উপায়গুলি প্রস্তাব করেন? *
Ans: আদর্শবাদীরা যুদ্ধরোধের জন্য নিম্নলিখিত উপায়গুলি প্রস্তাব করেন:- যৌথ নিরাপত্তা (Collective Security). আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিষ্ঠান, নিরস্ত্রীকরণ, গণতন্ত্রের প্রসার, মুক্ত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা, প্রকাশ্য কূটনীতি, জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ।
- উদারবাদ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কোন ধারণা প্রচার করে? *
Ans: উদারবাদ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহযোগিতা (Cooperation), শান্তি (Peace), পারস্পরিক নির্ভরশীলতা (Interdependence) এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান (International Institutions) এর ধারণা প্রচার করে। উদারবাদীরা বিশ্বাস করেন যে রাষ্ট্রগুলি শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্য প্রতিযোগিতা করে না, বরং তারা সাধারণ স্বার্থের ভিত্তিতে একে অপরের সাথে সহযোগিতা করতে পারে। তারা মুক্ত বাণিজ্য, গণতন্ত্রের বিস্তার এবং আন্তর্জাতিক আইনের শাসনকে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য বলে মনে করে।
- উদারবাদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক নীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলে? ***
Ans: উদারবাদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক নীতিতে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। এর মূল বিষয়গুলি হলো:
গণতান্ত্রিক শান্তি তত্ত্ব (Democratic Peace Theory): উদারবাদীরা বিশ্বাস করেন যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি একে অপরের সাথে যুদ্ধ করে না। এর কারণ হলো, গণতন্ত্রে জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং জনগণ সাধারণত যুদ্ধের বিরোধিতা করে।
আইনের শাসন: যে রাষ্ট্রগুলিতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত, তারা আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি মেনে চলতে বেশি আগ্রহী হয়, যা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বাড়ায়।
অভ্যন্তরীণ মূল্যবোধের প্রতিফলন: একটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উদার মূল্যবোধ (যেমন মানবাধিকার, স্বাধীনতা) প্রায়শই তার আন্তর্জাতিক নীতিতে প্রতিফলিত হয়, যা অন্যান্য উদার রাষ্ট্রগুলির সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়ক হয়।
- Interdependence ধারণাটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠে কোন তত্ত্বের ভিত্তি? **
Ans: Interdependence (পারস্পরিক নির্ভরশীলতা) ধারণাটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠে উদারবাদ (Liberalism) এবং বিশেষ করে এর আধুনিক সংস্করণ নয়া-উদারবাদ (Neo-liberalism) তত্ত্বের ভিত্তি। এই ধারণাটি বোঝায় যে আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রগুলি অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত এবং প্রযুক্তিগতভাবে একে অপরের উপর নির্ভরশীল। যখন রাষ্ট্রগুলি একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়, তখন তাদের মধ্যে সংঘাতের ব্যয় বেড়ে যায় এবং সহযোগিতার সুবিধা বেশি হয়। এটি মুক্ত বাণিজ্য, বিশ্বায়ন এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগের প্রসারের মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সম্পর্ককে আরও জটিল ও নিবিড় করে তোলে, যা যুদ্ধের পরিবর্তে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কীভাবে একটি পাঠ্যবিষয় হিসেবে বিকশিত হয়েছিল?
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি স্বতন্ত্র পাঠ্যবিষয় হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (1914-1918) পর বিকশিত হয়েছিল। ১৯১৯ সালে ওয়েলসে (University of Wales, Aberystwyth) বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ চালু হয়। তবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (1939-1945) সূত্রপাত এবং লিগ অফ নেশনসের ব্যর্থতা আদর্শবাদের দুর্বলতা প্রকাশ করে। এর প্রতিক্রিয়ায়, বাস্তববাদ (Realism) একটি প্রভাবশালী তত্ত্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়। ঠান্ডা যুদ্ধের সময়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আচরণবাদ (Behavioralism) এবং নয়া-বাস্তববাদ (Neo-realism) ও নয়া-উদারবাদ (Neo-liberalism) এর মতো তত্ত্বগুলি বিকশিত হয়, যা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং কাঠামোগত বিশ্লেষণের উপর জোর দেয়। ঠান্ডাযুদ্ধ পরবর্তীকালে বিশ্বায়ন, মানবাধিকার, পরিবেশগত সমস্যা এবং অ-রাষ্ট্রীয় অভিনেতাদের উত্থানের সাথে সাথে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি আরও বৈচিত্র্যময় এবং আন্তঃবিষয়ক ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, যেখানে নির্মাণবাদ (Constructivism), মার্কসবাদ, নারীবাদ সমালোচনামূলক তত্ত্বের মতো নতুন দৃষ্টিভঙ্গিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এইভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আজ বিশ্ব রাজনীতির জটিল প্রক্রিয়াগুলি বোঝার একটি অপরিহার্য পাঠ্যবিষয় হিসেবে গড়ে উঠেছে।
- মার্কসবাদীদের মতে রাষ্ট্র কী?
Ans: মার্কসবাদীদের মতে, রাষ্ট্র হল মূলত শাসক শ্রেণির (Ruling Class) স্বার্থ রক্ষার একটি যন্ত্র। কার্ল মার্কস এবং ফ্রেডরিখ এঙ্গেলসের ধারণার উপর ভিত্তি করে, মার্কসবাদীরা বিশ্বাস করেন যে, রাষ্ট্র কোনো নিরপেক্ষ সত্তা নয়, বরং এটি একটি শ্রেণির (পুঁজিবাদী সমাজে বুর্জোয়া শ্রেণি) ক্ষমতা এবং সম্পত্তি রক্ষণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি পুঁজিবাদের উৎপাদন সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং শ্রমজীবী শ্রেণিকে (প্রলেতারিয়েত) শোষণ করতে সাহায্য করে। রাষ্ট্র এবং এর আইন-কানুন সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামোর (base) একটি ‘উপরিকাঠামো’ (superstructure)। অর্থাৎ, উৎপাদন পদ্ধতি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কই রাষ্ট্রের প্রকৃতি নির্ধারণ করে। রাষ্ট্র ঐতিহাসিক বিকাশের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে (যেমন শ্রেণি সমাজের উত্থান) উদ্ভূত হয়েছে এবং শ্রেণিগত বিভাজন দূর হলে (যেমন-সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর) এটি ‘বিলুপ্ত’ (wither away) হবে।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি স্বতন্ত্র পাঠ্যবিষয় হিসেবে কখন আত্মপ্রকাশ করে?
Ans: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি স্বতন্ত্র পাঠ্যবিষয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যুদ্ধের ভয়াবহতা বিশ্বকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার গুরুত্ব বোঝাতে সাহায্য করে, যার ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ডিসিপ্লিনটি কোন্ ঘটনার পরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে?
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ডিসিপ্লিনটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (1914-1918) পরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই যুদ্ধ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং ভবিষ্যৎ সংঘাত প্রতিরোধের জন্য একটি কাঠামোগত পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
- Twenty Years’ Crisis’ গ্রন্থটি কে লিখেছেন এবং এর গুরুত্ব কী?
Ans: “Twenty Years’ Crisis’ গ্রন্থটি ই.এইচ. কার (E.H. Carr) লিখেছেন। এর গুরুত্ব হল এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তি স্থাপন করে। কার আদর্শবাদের সীমাবদ্ধতাগুলি তুলে ধরেছেন এবং ক্ষমতার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।
- ভার্সাই (Versailles) চুক্তি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ডিসিপ্লিনে বিকাশে কীভাবে প্রভাব ফেলেছিল?
Ans: ভার্সাই চুক্তি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ডিসিপ্লিনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল। এই চুক্তি যুদ্ধোত্তর বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য আদর্শবাদী ধারণার জন্ম দেয়, যা পরবর্তীকালে লিগ অফ নেশনস এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নের প্রাথমিক ভিত্তি তৈরি করে।
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ডিসিপ্লিনের কী পরিবর্তন আনে?
Ans: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ডিসিপ্লিনের আদর্শবাদী দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করে। এর ফলে বাস্তববাদের উত্থান ঘটে, যা ক্ষমতা, জাতীয় স্বার্থ এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের উপর বেশি জোর দেয়। এটি ডিসিপ্লিনের গবেষণার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনে।
- আচরণবাদ (Behaviouralism) পদ্ধতির আগমন আন্তর্জাতিক সম্পর্কে কোন দশকে ঘটে? *
Ans: আচরণবাদ পদ্ধতির আগমন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ডিসিপ্লিনে ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকে ঘটে। এই পদ্ধতি আন্তর্জাতিক ঘটনা বিশ্লেষণের জন্য বৈজ্ঞানিক এবং পরিমাণগত পদ্ধতির উপর জোর দেয়, যার ফলে ডিসিপ্লিন আরও সুসংহত এবং পদ্ধতিগত হয়।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ‘রাষ্ট্রকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি’ (State-centric approach) বলতে কী বোঝায়? *
Ans: রাষ্ট্রকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধ্যয়নের একটি প্রধান কাঠামো। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা হল সার্বভৌম রাষ্ট্র। এটি ধরে নেয় যে রাষ্ট্রগুলি তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থ অনুসরণ করে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি মূলত রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ক্ষমতা ও নিরাপত্তার জন্য প্রতিযোগিতা। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা অ-রাষ্ট্রীয় অভিনেতাদের ভূমিকা গৌণ বলে বিবেচিত হয়। এটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পররাষ্ট্রনীতি এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ককে বিশ্লেষণের মূল ভিত্তি হিসেবে দেখে।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কোন্ কোন সামাজিক বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত?
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি আন্তঃবিষয়ক ক্ষেত্র এবং এটি বিভিন্ন সামাজিক বিজ্ঞানের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি শাখা, যা ক্ষমতা, শাসন, এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অধ্যয়ন করে। অর্থনীতি: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন এবং বিশ্ব অর্থনীতির গতিশীলতা বোঝার জন্য অর্থনীতির জ্ঞান অপরিহার্য।
ইতিহাস: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, পূর্ববর্তী ঘটনা এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বিবর্তন বোঝার জন্য ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সমাজবিজ্ঞান: বিশ্বায়ন, সংস্কৃতি, পরিচয় এবং সামাজিক আন্দোলনের মতো বিষয়গুলো বোঝার জন্য সমাজবিজ্ঞানের ধারণা ব্যবহৃত হয়।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দুটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য লেখো।
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দুটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো—
সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহের কেন্দ্রীয় ভূমিকা: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান অভিনেতা হলো সার্বভৌম রাষ্ট্র, যাদের নিজস্ব ভূখণ্ড, জনসংখ্যা, সরকার এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষমতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার কাঠামো মূলত এই সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল।
অরাজক প্রকৃতি (Anarchic nature): আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় কোনো একক, সর্বজনীন বা কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ নেই যা রাষ্ট্রগুলির উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। এর অর্থ হলো, রাষ্ট্রগুলি মূলত স্ব-সহায়ক (self-help) এবং তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার জন্য নিজেরাই দায়ী। এই অরাজক প্রকৃতি প্রায়শই ক্ষমতা সংগ্রাম এবং নিরাপত্তা উদ্বেগকে জন্ম দেয়।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান তিনটি actor কারা? *
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান তিনটি কারক (actor) হল সার্বভৌম রাষ্ট্র (Sovereign States): এরাই আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা। যেমন ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন ইত্যাদি। এরা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে, চুক্তি করে, যুদ্ধ করে এবং নিজেদের জাতীয় স্বার্থ পূরণের চেষ্টা করে।
আন্তর্জাতিক আন্তঃসরকারীয় সংস্থা (Intergovern mental Organizations IGOs): এগুলি বিভিন্ন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে গঠিত হয়। যেমন জাতিপুঞ্জ (UN), বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) ইত্যাদি। এরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নিয়মকানুন তৈরিতে সহায়তা করে।
অ-রাষ্ট্রীয় কারক (Non-State Actors): এই কারকরা রাষ্ট্র বা সরকারের অংশ নয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে,
আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা (International Non-Governmental Organizations INGOs): যেমন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, রেড ক্রস।
বহুজাতিক কর্পোরেশন (Multinational Corpora tions – MNCs): যেমন- অ্যাপল, গুগল।
সন্ত্রাসী গোষ্ঠী: যেমন-আল-কায়েদা, আইএসআইএস।
ব্যক্তিবিশেষ: যেমন- বিল গেটস, মালালা ইউসুফজাই।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্কে সার্বভৌমত্ব (Sovereignty)-এর ধারণার অর্থ কী? *
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্কে সার্বভৌমত্ব বলতে একটি রাষ্ট্রের নিজস্ব ভূখণ্ডে সর্বোচ্চ এবং একচেটিয়া কর্তৃত্ব বোঝায়। এর অর্থ হল:
অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব: একটি রাষ্ট্র তার নিজস্ব সীমানার মধ্যে আইন তৈরি ও প্রয়োগে স্বাধীন এবং কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়াই তার অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব: একটি রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্যান্য সার্বভৌম রাষ্ট্রের সাথে সমান মর্যাদায় আচরণ করে এবং কোনো উচ্চতর আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের অধীন নয়।
সার্বভৌমত্বের ধারণা ওয়েস্টফালিয়া শান্তি চুক্তির (1648) পর থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে, যা রাষ্ট্রগুলিকে স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার অধিকার প্রদান করেছে।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠে বাস্তববাদের মূল বক্তব্য কী?
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পাঠে বাস্তববাদের মূল বক্তব্য হল: ক্ষমতার সংগ্রাম: আন্তর্জাতিক রাজনীতি মূলত ক্ষমতা অর্জনের জন্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একটি নিরন্তর সংগ্রাম। রাষ্ট্রগুলি নিজেদের নিরাপত্তা এবং টিকে থাকার জন্য ক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রয়োগের উপর জোর দেয়।
স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তা: রাষ্ট্রগুলি তাদের জাতীয় স্বার্থ (বিশেষত নিরাপত্তা) দ্বারা চালিত হয়। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অরাজক প্রকৃতির কারণে, রাষ্ট্রগুলি স্ব-সহায়ক এবং নিজেদের রক্ষা করার জন্য সামরিক শক্তি অপরিহার্য।
- থুকিডিডিস বাস্তববাদের কোন্ ধারণা প্রবর্তন করেন?
Ans: খুকিডিডিস, প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসবিদ, তাঁর ‘পেলোপনেশীয় যুদ্ধের ইতিহাস’ (History of the Peloponnesian War) গ্রন্থে বাস্তববাদের যে ধারণাটি প্রবর্তন করেন, তা হল ‘শক্তিই চূড়ান্ত’ (might makes right) বা ‘দুর্বলের উপর সবলের শাসন’ (the strong do what they can and the weak suffer what they must)। তিনি দেখিয়েছিলেন যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে নৈতিকতা বা ন্যায়বিচারের চেয়ে ক্ষমতা এবং স্বার্থের বিবেচনা বেশি প্রাধান্য পায়। থুকিডিডিসের মতে, রাষ্ট্রগুলির আচরণ তাদের ক্ষমতা এবং টিকে থাকার ইচ্ছার দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অরাজক প্রকৃতিই এই বাস্তবতার জন্ম দেয়। বিশেষ করে, মেলিয়ান সংলাপ (Melian Dialogue) এই ধারণার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
রচনাধর্মী | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Descriptive Question and Answer:
1. বাস্তববাদ সম্পর্কে মরগেনথাউ-এর বিশ্লেষণ আলোচনা করো। **
Ans: বাস্তববাদ সম্পর্কে মরগেনথাউ-এর বিশ্লেষণ
সাবেকি বা রাজনৈতিক বাস্তববাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন হ্যানস্ মরগেনথাউ। তিনি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর ‘পলিটিক্স অ্যামঙ্গ নেশনস্: দ্য স্ট্রাগল ফর পাওয়ার অ্যান্ড পিস’ গ্রন্থে বাস্তববাদী তত্ত্বের ছয়টি মূল নীতির উল্লেখ করেন। এগুলি বাস্তববাদের মূল স্তম্ভ হিসেবে গৃহীত হয়। নীতিগুলি হল-
(i) রাজনীতি বস্তুগত বিধি দ্বারা চালিত: মানবপ্রকৃতির মধ্যে নিহিত কতকগুলি নৈর্ব্যক্তিক বা বস্তুগত বিধিনিয়ম (Objective laws) দ্বারা রাজনীতি পরিচালিত হয়। এই বিধিনিয়মকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারলে রাষ্ট্রনেতাদের রাজনৈতিক আচরণকে বোঝা সহজ হয়।
(ii) জনতা ও জাতীয় স্বার্থ পরস্পরের পরিপূরক: মরগেনথাউ-এর মতে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রত্যেক রাষ্ট্রই নিজস্ব জাতীয় স্বার্থকে সুরক্ষিত করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে চায়। এজন্যই রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তি হল জাতীয় স্বার্থ। তবে ক্ষমতা ছাড়া জাতীয় স্বার্থ পূরণ অসম্ভব। যেহেতু জাতীয় স্বার্থকে পূরণ করার জন্য শক্তির প্রয়োজন সেহেতু জাতীয় স্বার্থ ও ক্ষমতা পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
(iii) জাতীয় স্বার্থের ধারণা পরিবর্তনশীল : বাস্তববাদীদের মতে, স্থান ও কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সংগতি রেখে জাতীয় স্বার্থের ধারণা পরিবর্তিত হয়। আজ যেটি রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা নাও থাকতে পারে। ফলে রাষ্ট্রগুলিকে তাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করতে হয়।
(iv) সর্বজনীন নৈতিক বিধির অনুপস্থিতি: নৈতিক বিধির সঙ্গে রাজনৈতিক বাস্তববাদের সূক্ষ্ম বিরোধ আছে, তবে এটি নৈতিকতাবিরোধী নয়। মরগেনথাউ-এর বাস্তববাদী তত্ত্ব অনুসারে, রাষ্ট্রের কাজকর্মে কোনো সর্বজনীন নৈতিক ধারণাকে প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। তিনি নৈতিকতার বদলে বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার ভূমিকাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। বরং বিশ্বজনীন নীতিবোধগুলি যতটুকু বিদেশনীতির সঙ্গে বা আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক তা যাচাই করে গ্রহণ করার কথা তিনি বলেছেন।
(v) কোনো জাতির নৈতিক আকাঙ্ক্ষা সর্বজনীন নয় : মরগেনথাউ মনে করেন, প্রত্যেক জাতি একটি বিশেষ নৈতিক আকাঙ্ক্ষা থাকে যা সেই দেশের বিদেশনীতির মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। তাই কোনো একটি রাষ্ট্রের নৈতিক ধারণাকে বিশ্বজনীন নৈতিকতার সঙ্গে একাত্ম করা উচিত নয়। অর্থাং কোনো জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা বা জাতীয় স্বার্থ কখনোই সর্বজনীন হতে পারে না।
(vi) রাজনৈতিক বাস্তববাদের স্বতন্ত্রতা : মরগেনথাউ রাজনীতি শাস্ত্রের স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধিকারের জোরালো দাবি তুলেছেন। তাঁর মতে, রাজনীতির সঙ্গে জ্ঞানচর্চার অন্যান্য শাস্ত্রের সম্পর্ক থাকলেও ক্ষমতার আলোয় বর্ণিত জাতীয় স্বার্থের ধারণা রাজনীতিকে অন্যান্য চিন্তাবিদ্যা থেকে পৃথক করেছে।
উপসংহার: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী আলোচনা বহুতাত্ত্বিক হয়ে থাকলেও মরগেনথাউ-এর অবদান সর্বাধিক শাস্ত্র অধ্যয়নে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
2. আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তত্ত্ব হিসেবে বাস্তববাদী তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করো।
Ans: ভূমিকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে (১৯৪৫ খ্রি.) অর্থাৎ ঠান্ডাযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গবেষণায় বাস্তববাদ জোরালো তত্ত্ব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বাস্তববাদের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী প্রবক্তা হলেন মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যানস্ মরগেনথাউ।
সংজ্ঞা: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্ব বলতে আক্ষরিক অর্থে বোঝায়, বস্তুজগতে যে পরিস্থিতি বিদ্যমান বা বিরাজমান, তাকে স্বীকার করে নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বা বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী কর্মসূচি গ্রহণ করা। অর্থাৎ ব্যক্তি বা সরকারের যাবতীয় সিদ্ধান্তগ্রহণ বা কর্মসূচি প্রণয়ন করার পিছনে কল্পনার থেকে বাস্তব অবস্থা যখন প্রকৃত চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করে তখন তাকে বাস্তববাদ বলা হয়।
বাস্তববাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ:
সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্বের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি চিহ্নিত করা যায়। এগুলি হল-
(i) রাষ্ট্রাকন্দ্রিকতা: বাস্তববাদী তত্ত্ব অনুসারে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রাষ্ট্রকে ঘিরে আবর্তিত হয়। রাষ্ট্র হল আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
(ii) মানবচরিত্রের নেতিবাচক বিশ্লেষণ: বাস্তববাদীদের মতে, মানুষ প্রকৃতিগতভাবে ক্ষমতালোভী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী, অসাধু এবং অন্যের উপর প্রভুত্ব করার প্রবৃত্তি দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিও ক্ষমতা ও চির সংঘাতের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
(iii) ক্ষমতার গুরুত্ব: বাস্তববাদীরা মনে করে, ক্ষমতা হল আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ ‘ক্ষমতা’-ই রাষ্ট্রগুলির জাতীয় স্বার্থ পূরণে সহায়তা করে। কোনো রাষ্ট্র কতটা ক্ষমতাশালী তার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ওই রাষ্ট্রের ভূমিকা নির্ধারিত হয়।
(iv) সামরিক শক্তির উপর গুরুত্ব প্রদান: নৈরাজ্যমূলক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় জাতীয় স্বার্থকে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য রাষ্ট্রগুলির প্রাথমিক কর্তব্য বা দায়িত্ব হল সামরিক শক্তিকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করা। বাস্তববাদীদের কাছে সামরিক ক্ষমতাবৃদ্ধি অর্থনৈতিক শক্তিবৃদ্ধির থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সমালোচনা
বাস্তববাদী তত্ত্ব জনপ্রিয়তা লাভকরলেও তত্ত্বটি নানা সমালোচনার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হল-
(i) অরাষ্ট্রীয় কারককে উপেক্ষা : আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাষ্ট্র অন্যতম প্রধান কারক একথা সঠিক। তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্বে রাষ্ট্র ছাড়া অন্যান্য অরাষ্ট্রীয় সংগঠন বা কারকগুলির কোনো অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়নি। অথচ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অরাষ্ট্রীয় সংগঠনগুলির গুরুত্বও নেহাত কম নয়। ১৯৬০-এর দশক থেকে বিশ্বরাজনীতিতে অরাষ্ট্রীয় কারকসমূহ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেকক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় তারা রাষ্ট্রের মতো সমানভাবে সক্রিয় থাকে। দৃষ্টান্ত হিসেবে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির আঞ্চলিক জোটের কথা বলা যায়।
(ii) মানবপ্রকৃতি সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা: মানবপ্রকৃতি সম্পর্কে বাস্তববাদীদের ধারণা বাস্তবসম্মত নয়। মানবপ্রবৃত্তি সর্বদা ক্ষমতালিঙ্গু বা দ্বন্দ্বপ্রিয় নয়, পারস্পরিক সহযোগিতাও মানবপ্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
(iii) অর্থনৈতিক ক্ষমতাকে উপেক্ষা : মরগেনথাউ তাঁর তত্ত্বে কেবলমাত্র রাষ্ট্রগুলির সামরিক সামর্থ্য বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সামরিক ক্ষমতা ছাড়াও অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মতাদর্শগত ক্ষমতাও যে অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হিসেবে ভূমিকা পালন করে মরগেনথাট্ট তা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে গেছেন।
উপসংহার: উপরোক্ত সমালোচনা সত্ত্বেও একথা বলা যায় যে, বাস্তববাদ ‘ক্ষমতা’-র ধারণাকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের নির্ণায়ক বলে ব্যাখ্যা করেছে, যা সর্বাংশে সত্য। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য আজও বাস্তব। এ ছাড়া জাতীয় স্বার্থের ধারণাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা বাস্তববাদীরা প্রথম তুলে ধরেন।
3. উদারনীতিবাদের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো। ***
Ans: উদারনীতিবাদী তত্ত্বের মৌলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ
১৯৭০-এর দশকে বাস্তববাদের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় উদারনীতিবাদী তত্ত্ব গড়ে ওঠে। এই তত্ত্বের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ-
(i) আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা: উদারনীতিবাদ ক্ষমতার রাজনীতি, হিংসা ও অনৈতিক ক্রিয়াকলাপ থেকে বিশ্বরাজনীতিকে মুক্ত করে, যুদ্ধকে পরিহার করে আন্তর্জাতিক সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতী। এজন্য তাঁরা সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন স্থাপন এবং আন্তর্জাতিক আইন মান্য করা ইত্যাদির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
(ii) অরাষ্ট্রীয় সংগঠনগুলির প্রাধান্য: উদারনীতিবাদীগণ সার্বভৌম রাষ্ট্রের পাশাপাশি অরাষ্ট্রীয় কারকসমূহের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ও ভূমিকাকে স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁদের মতে বিভিন্ন আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি সংগঠনগুলি জাতিরাষ্ট্রের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। যেমন-বৃহৎ বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলি বা Multinational Corporation (MNC) বাস্তবে অনেক দেশের সরকার অপেক্ষাও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
(iii) গণতন্ত্রের প্রসার : এই তত্ত্ব বিশ্বব্যবস্থায় স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রসারের কথা বলে। কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যুদ্ধ-বিবাদের পরিবর্তে দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এমনকি উদারনীতিবাদীদের মতে, রাষ্ট্রগুলি যদি একই আদর্শের উপর ভিত্তি করে তাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলে তাহলে তাদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই, রেষারেষি, যুদ্ধ ও যুদ্ধের হুমকি প্রভৃতির অবসান ঘটবে এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলির মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে, বিশেষত অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক নির্ভরশীলতার মাধ্যমে।
(iv) আর্থিক উন্নয়নে গুরুত্ব : এই তত্ত্ব সামরিক উন্নয়নের পরিবর্তে দেশগুলির অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করে। এজন্য উদারনৈতিক তাত্ত্বিকগণ অবাধ বাণিজ্য নীতি প্রসারের উপর জোর দেন। এই তত্ত্বের সমর্থকদের মতে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন এবং অবাধ বাণিজ্য নীতির পথ ধরে বহুপাক্ষিক (Multilateral) অর্থনৈতিক আদানপ্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলির আর্থিক প্রগতি সুনিশ্চিত করা সম্ভব।
(v) ক্ষমতার রাজনীতিকে অস্বীকার: উদারনীতিবাদ ক্ষমতার রাজনীতিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাঁদের মতে, ক্ষমতার রাজনীতি রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক বিদ্বেষ, রেষারেষি, সংঘর্ষ এমনকি যুদ্ধকে ডেকে আনে। এপ্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ক্ষমতা সম্পর্কিত বাস্তববাদী তত্ত্বের বিরোধিতা করেই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের চর্চায় উদারনীতিবাদ স্বতন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে গড়ে উঠেছে।
(vi) আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা: উদারনীতিবাদ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আন্তঃরাষ্ট্রীয় দ্বন্দ্ব ও বিবাদের শান্তিপূর্ণ মীমাংসার উদ্দেশ্যে বিশ্বস্তরে যৌথ প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করে। এক্ষেত্রে উদারবাদীরা রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে তোলার উপর জোর দেয়।
(vii) বিশ্বজনীন আদর্শ প্রতিষ্ঠা: উদারনীতিবাদী তত্ত্ব জাতিরাষ্ট্রগুলির সংকীর্ণ জাতীয় স্বার্থের ভেদাভেদকে ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্থায়ী শান্তি ও সুস্থিতি স্থাপনের লক্ষ্যে বিশ্বজনীন আদর্শ প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতী। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উদারনীতিবাদী তত্ত্বকে উদার আন্তর্জাতিকতাবাদ বলে অভিহিত করা হয়।
উপসংহার: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় উদারনীতিবাদ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও তত্ত্বটি অধিকমাত্রায় পাশ্চাত্যনির্ভর হওয়ায় একপেশে দৃষ্টিভঙ্গি বলে সমালোচিত হয়েছে। শুধু তাই নয় সমালোচকদের মতে পুঁজিবাদের আধিপত্য বিস্তারের যে ধারণা উদারবাদীগণ দিয়েছেন তা বিশ্বব্যাপী বৈষম্যকে বৃদ্ধি করেছে।
4. আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মার্কসবাদ-এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। ***
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় মার্কসীয় তত্ত্বের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ:
কার্ল মার্কসের চিন্তাধারার উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় স্বতন্ত্র বিশ্লেষণ ধারা গড়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় মার্কসীয় তত্ত্বের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
(i) অর্থনৈতিক উপাদানের প্রাধান্য: মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে অর্থনৈতিক উপাদানই হল আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রধান উপাদান। আন্তর্জাতিক স্তরে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে যে যুদ্ধ, সংগ্রাম সংঘটিত হয় তার প্রধান কারণ নিহিত রয়েছে অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী অসম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হল ভিত্তি (Base) এবং আন্তর্জাতিক আইন, কূটনীতি, রাজনীতি হল উপরিকাঠামো (Super Structure)। আন্তর্জাতিক স্তরে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণের সময় বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আধিপত্য-অধীনতার সম্পর্কটি (উন্নত দেশগুলি কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশগুলির উপর কর্তৃত্ব স্থাপন) প্রতিফলিত হয়।
(ii) আন্তর্জাতিক স্তরে শ্রেণি চরিত্রের গুরুত্ব: মার্কসীয় তত্ত্ব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনার মূল উপাদান হল ‘শ্রেণি’। মার্কসবাদীরা রাষ্ট্রের পরিবর্তে শ্রেণিভিত্তিক আলোচনার উপরেই আস্থা রেখেছিলেন।
(iii) শ্রেণিসংগ্রামের গুরুত্ব: মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বরাজনীতিকে বিশ্লেষণ করে শ্রেণিসংগ্রামের আলোকে। মার্কসবাদীদের মতে, সারা বিশ্ব ‘haves’ এবং ‘have nots’-এই দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। এর মূলে আছে পুঁজিবাদী বিশ্ব বাজার দখল বা বিস্তারের ছলে দরিদ্র দেশগুলিকে শোষণ করার লোভ। যার প্রকাশ ঘটে বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার অসম বিন্যাসের মধ্যে।
(iv) সাম্রাজ্যবাদ ও নয়া সাধাজ্যবাদের বিরোধিতা: মার্কসবাদ অনুসারে ধনতন্ত্রবাদের প্রসারিত রূপ হল সাম্রাজ্যবাদ। ধনতান্ত্রিক দেশগুলির সাম্রাজ্য বা উপনিবেশ বিস্তারের মুখ্য উদ্দেশ্যই হল উৎপাদিত দ্রব্যের বাজার দখল করে বিশ্ব বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করা। এরই আধুনিক রূপ হল নয়া সাম্রাজ্যবাদ। মার্কসবাদী তত্ত্ব অনুযায়ী সাম্রাজ্য স্থাপন, যুদ্ধ সবকিছুর মূলে আছে আর্থিক শোষণ। তাই মার্কসবাদ যাবতীয় আর্থিক শোষণের অবসান চায়।
(v) জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার : তৃতীয় বিশ্বের অবদমিত জাতিগুলির স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে। মার্কসবাদীরা মনে করেন, স্থায়ী বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদ পতনের পর শ্রেণিহীন, রাষ্ট্রহীন সমাজব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে। কারণ এরূপ শ্রেণিহীন, রাষ্ট্রহীন ব্যবস্থায় যুদ্ধের সম্ভাবনা থাকে না।
(vi) সর্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদ : মার্কসবাদী দর্শন অনুসারে, সর্বহারাদের কোনো দেশ নেই, সর্বত্রই এই শ্রেণি শোষিত ও অবদমিত। তাই পুঁজিবাদী শোষণের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে সর্বহারা শ্রেণিকে বিপ্লবের ডাক দিতে হবে। বিশ্ববিপ্লব সম্পাদনের মাধ্যমে শ্রমজীবী শ্রেণির মুক্তি ঘটবে বলে এই তত্ত্বের তাত্ত্বিকরা মনে করেছিলেন।
(vii) বিশ্ববিপ্লবে গুরুত্বদান: মার্কসবাদী তাত্ত্বিকরা আন্তর্জাতিক স্তরে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন এনে বিশ্বে সমাজতন্ত্রবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই সমাজতন্ত্রবাদই তাদের কাছে আদর্শব্যবস্থা। বিশ্বব্যাপী সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেই রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে যুদ্ধ, সংঘাতের অবসান ঘটবে বলে মনে করা হয়।
উপসংহার: আন্তর্জাতিক স্তরের বৃহৎ প্রেক্ষাপটে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে মার্কসবাদের উদ্ভব হলেও তত্ত্বটি অতিমাত্রায় অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণবাদের দোষে দুষ্ট বলে সমালোচিত হয়েছে। শুধু তাই নয় তত্ত্বটি যে বিশ্ব সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ধনতন্ত্রের জয়যাত্রায় সেই স্বপ্ন অধরা থেকে গেছে।
5. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করো। ***
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির মধ্যে পার্থক্য:
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি একই অর্থে ব্যবহৃত হলেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বর্তমান।
পরিধিগত পার্থক্য : বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ধারণা ব্যাপকতর। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক শুধুমাত্র রাষ্ট্রের সম্পর্কের আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি অরাষ্ট্রীয় নানান সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের আলোচনাও করে থাকে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্বসমাজের অন্তর্গত সকল জনগণ ও গোষ্ঠীর সব সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। মূলত রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক রাজনৈতিক বিষয়গুলির সঙ্গে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানবিক পরিবেশ-সহ বিষয়গুলিও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনাক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক রাজনীতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো ব্যাপক ধারণা নয়। আন্তর্জাতিক রাজনীতি কূটনীতি, বিভিন্ন রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক সংগঠনের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি কেবল রাষ্ট্রগুলির রাজনৈতিক বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা করে।
প্রকৃতিগত পার্থক্য: প্রখ্যাত বাস্তববাদী তাত্ত্বিক মরগেনথাউ মনে করেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি প্রধানত বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে ক্ষমতা, প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, বিরোধ ও সংঘর্ষকেন্দ্রিক আলাপ-আলোচনা।
তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বলতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, প্রতিযোগিতা, মিত্রতা ও সমন্বয়সাধন ইত্যাদি বিষয়কে বোঝায় অর্থাৎ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভিন্ন রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্কের বহুমুখী অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক বিষয়ের তত্ত্বগত ও প্রয়োগগত দিক নিয়ে আলোচনা করে।
পামার ও পারকিন্স-এর মত: পামার ও পারকিন্স-এর মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ধারণা আন্তর্জাতিক রাজনীতির তুলনায় ব্যাপক। তাঁদের মতে আন্তর্জাতিক রাজনীতি হল ‘আন্তর্জাতিক সমাজের রাজনীতি’ যা মূলত কূটনীতি ও বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংগঠনের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্বসমাজের সকল মানুষ ও গোষ্ঠীগুলির সকল প্রকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক রাজনীতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অংশবিশেষ।
শ্লেইচার-এর মত : শ্লেইচার মনে করেছেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি সমার্থক নয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক বিরোধ ও সহযোগিতা দুটি দিক নিয়েই আলোচনা করে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতি প্রধানত বিরোধ, বিবাদ ও সংঘর্ষের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
কে জে হলটি-এর মত : হলস্টির মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি, বিদেশনীতি, রাজনৈতিক প্রক্রিয়াসমূহ, বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক নীতি-নৈতিকতা, আন্তর্জাতিক সংগঠন সম্পর্কিত বিষয়গুলি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত।
তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি উপরোক্ত বিষয়গুলির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এটি সাধারণত পররাষ্ট্র সম্পর্কিত আলোচনা তথা সরকার বা উচ্চতর রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ দ্বারা গৃহীত সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচির বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করে।
মরগেনথাউ-এর মত: মরগেনথাউ-এর মতে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনার বিষয়বস্তুতে সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক ক্ষমতার বিরোধ সংক্রান্ত বিষয়বস্তু, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতা এমনকি সমন্বয় সাধনের বিষয়গুলিও অন্তর্ভুক্ত থাকে।
তবে তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক রাজনীতি হল মূলত ক্ষমতার লড়াই। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। আন্তর্জাতিক রাজনীতি এই ক্ষমতাকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা করে।
6. আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা সংক্ষেপে আলোচনা করো।
Ans: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা:
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশকে কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করে আলোচনা করা যায়।
(i) জাতিরাষ্ট্রের উৎপত্তি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশ: ইউরোপের নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে ত্রিশ বর্ষব্যাপী যুদ্ধের অবসান ঘটানোর উদ্দেশ্যে ইউরোপের রাষ্ট্রপ্রধানরা ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির বক্তব্য হল, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলি নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী অন্যদের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অন্যান্য সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে। এভাবে প্রথম আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের সূচনা হয়।
(ii) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশ: ১৯১৪-১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংসলীলা ও মারণক্ষমতা রাষ্ট্রনেতাদের যুদ্ধ এড়ানো এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার আশু প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলে। সাধারণ জনগণও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং তারা যুদ্ধের কারণ হিসেবে গোপন কূটনীতিকে দায়ী করে ও যুদ্ধবিরোধী জনমত গড়ে তোলে। এই সময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের দাবি গড়ে ওঠে। পাশাপাশি মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন স্থায়ী শাস্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। চোদ্দো দফা দাবি পেশ করেন। যার বাস্তবায়ন ঘটে। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তার পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ ও বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা লক্ষ করা যায়।
(iii) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিধ্বংসী ভয়াবহতার ফলে বিশ্বরাজনীতির আমূল পরিবর্তন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিন্যাসে নতুন মাত্রা এনে দেয়। এই বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা ও মারণাস্ত্রের প্রতিযোগিতা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ পুনরায় শান্তিকামী হয়ে ওঠে। এই পর্বে সৃষ্টি হয় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের। এই পর্বেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্বতন্ত্র পাঠ্যবিষয় হিসেবে মর্যাদা লাভ করে। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে আন্তর্জাতিক রাজনীতি যে বিষয়টিকে নিয়ে আবর্তিত হয় তা হল ঠান্ডা লড়াই। এইরকম পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নতুন ধারায় প্রবাহিত হতে শুরু করে।
(iv) সাম্প্রতিক প্রবণতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশ: নব্বইয়ের দশকের পর বিশ্বরাজনীতিতে দ্বিমেরুতার অবসান ঘটার ফলে শক্তি ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটে। ফলস্বরূপ সারা বিশ্বে মার্কিন আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষমতা বিন্যাসের এই পরিবর্তনকে একমেরু বিশ্ব বলে অভিহিত করা হয়। মূলত নব্বই-এর দশকে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির আলোচনা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে বিকশিত করেছে। এরপর একুশ শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল সারা বিশ্বে প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটে যাওয়া।
পরিশেষে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা পর্যালোচনা করে বলা যায়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়টি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আঙিনা থেকে বেরিয়ে পঠনপাঠনের শাস্ত্র হিসেবে বিকাশ লাভকরেছে-যা সমাজবিজ্ঞানের নবীন শাস্ত্র হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
7. আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় আদর্শবাদ বলতে কী বোঝো? তত্ত্বটির মৌলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করো।
Ans: আদর্শবাদের সংজ্ঞা
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আদর্শবাদী দৃষ্টিভঙ্গি বলতে বোঝায় সেই বিশ্লেষণভঙ্গিকে যা স্থায়ী বিশ্বশান্তি, যুদ্ধের অবসান, নৈরাজ্যের অবসান ও যৌথ নিরাপত্তার বিষয়কে লক্ষ্য হিসেবে তুলে ধরে এবং মানবপ্রকৃতির শান্তিকামী প্রবৃত্তির উপর গুরুত্ব আরোপ করে।
আদর্শবাদী তত্ত্বের মৌলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ:
সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আদর্শবাদী তত্ত্বের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি চিহ্নিত করা যায়-
(i) নৈতিকতার প্রতি গুরুত্ব: আদর্শবাদে রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে নৈতিকতা (Morality)-কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সাধারণ নৈতিক আদর্শ ও মূল্যবোধ বিশ্বসম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করে। ফলে রাষ্ট্রগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনে যুদ্ধ, সহিংসতা, স্বৈরাচার প্রভৃতিকে এড়ানো যায়।
(ii) পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতি গুরুত্ব: আদর্শবাদী তত্ত্ব রাষ্ট্রগুলির সম্পর্ক স্থাপনে পারস্পরিক সহযোগিতাকে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ক্ষমতার রেষারেষি থাকলে যুদ্ধমুক্ত শান্তিপূর্ণ আদর্শ বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা স্থাপন করতে হবে।
(iii) আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা: আদর্শবাদের তাত্ত্বিকগণের মতে, যুদ্ধের পরিস্থিতিকে নির্মূল করতে ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় উপস্থিতি থাকা দরকার। তাঁরা মনে করতেন, আন্তর্জাতিক স্তরে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করলে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে নৈরাজ্যমূলক অবস্থার অবসান ঘটানো সম্ভব। এই উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি উইলসন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি ফেরানোর জন্য মিত্রশক্তির (ব্রিটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া) উদ্যোগে বিশ্বের প্রধান রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি ‘লিগ অফ নেশনস্’-এর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
(iv) কূটনীতি ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা : আদর্শবাদীরা আলাপ-আলোচনার সাহায্যে শান্তিপূর্ণভাবে বিবাদ মীমাংসার মাধ্যমে যুদ্ধকে নির্মূল করে স্থায়ী শাস্তির পরিবেশ গড়ে তুলতে চায়। তাঁরা কোনোরকম সহিংসতা, ক্ষমতা প্রদর্শন বা সশস্ত্র আক্রমণের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসাকে অনুমোদন করে না।
(v) রাষ্ট্রীয় কারকের প্রাধান্য: আদর্শবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, ‘রাষ্ট্র’ হল বিশ্বব্যবস্থার প্রধান কারক (Actor) বা ক্রিয়াকারী। কারণ রাষ্ট্রই আন্তর্জাতিক রাজনীতি পরিচালনার প্রধান চালিকাশক্তি।
(vi) ইতিবাচক মানবচরিত্র: আদর্শবাদীদের মতে, মানবপ্রকৃতি মূলত ভালো ও সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন। মানবচরিত্র আত্মকেন্দ্রিক বা ক্ষমতালিঙ্গু নয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। এই সহযোগিতার মানসিকতাই মানবসভ্যতা উন্নয়নের মূল উৎস।
উপসংহার: তবে ১৯৩০-এর দশক থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জাতীয় স্বার্থের প্রাধান্য, ইউরোপে ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের উত্থান, ক্ষমতার রাজনীতির আধিপত্য, অর্থনৈতিক মন্দা, স্থায়ী শান্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে সংশয় প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের চর্চায় আদর্শবাদের অকার্যকারিতা ও দুর্বলতাকে স্পষ্ট করে তোলে।
HS Class 12 3rd Semester (Third Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 English 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 History 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 3rd Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects First Semester Question Click here
HS Class 12 4th Semester (Forth Unit Test) Question and Answer :
- HS Class 12 Bengali 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 English 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Geography 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 History 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Education 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Political Science 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Philosophy 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sociology 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 Sanskrit 4th Semester Question Click here
- HS Class 12 All Subjects 4th Semester Question Click here
Higher Secondary All Subject Suggestion – উচ্চমাধ্যমিক সমস্ত বিষয়ের সাজেশন
আরোও দেখুন:-
HS Bengali Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 English Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Geography Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 History Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Political Science Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Education Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Philosophy Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sociology Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 Sanskrit Suggestion Click here
আরোও দেখুন:-
Class 12 All Subjects Suggestion Click here
◆ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি: বিনামূল্যে নোটস, সাজেশন, PDF ও সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp Group এ Join হয়ে যাও।
| Class 12 WhatsApp Groups | Click Here to Join |
দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th Political Science Question and Answer / Suggestion / Notes Book
আরোও দেখুন :-
দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here
FILE INFO : আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer with FREE PDF Download Link
| PDF File Name | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer PDF |
| Prepared by | Experienced Teachers |
| Price | FREE |
| Download Link | Click Here To Download |
| Download PDF | Click Here To Download |
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
Update
[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]
[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]
Info : আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Political Science Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Twelve XII (HS Class 12th) Political Science Question and Answer Suggestion
” আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Twelve XII / WB HS Class 12 / WBCHSE / HS Class 12 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB HS Class 12 Exam / HS Class 12th / WB HS Class 12 / HS Class 12 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন / দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ও উত্তর । Class-11 Political Science Suggestion / HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer / HS Class 12 Political Science Suggestion / Class-11 Pariksha Political Science Suggestion / Political Science HS Class 12 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / HS Class 12 Political Science Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (HS Class 12 Political Science Suggestion / West Bengal Twelve XII Question and Answer, Suggestion / WBCHSE HS Class 12th Political Science Suggestion / HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer / HS Class 12 Political Science Suggestion / HS Class 12 Pariksha Suggestion / HS Class 12 Political Science Exam Guide / HS Class 12 Political Science Suggestion 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / HS Class 12 Political Science Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 Political Science Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।
উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Question and Answer, Suggestion
উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) | পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহায়ক – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer, Suggestion | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Suggestion | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Notes | West Bengal HS Class 12th Political Science Question and Answer Suggestion.
উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | Higher Secondary Class 12 Political Science Question and Answer, Suggestion
দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) । HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Suggestion.
WBCHSE HS Class 12th Political Science Antorjatik Somporko Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়)
WBCHSE HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko 4th Semester Question and Answer Suggestions | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর
HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko 4th Semester Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।
WB HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) সাজেশন
HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) সাজেশন । HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
West Bengal HS Class 12 Political Science Suggestion Download WBCHSE HS Class 12th Political Science short question suggestion . HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Suggestion download HS Class 12th Question Paper Political Science. WB HS Class 12 Political Science suggestion and important question and answer. HS Class 12 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।
Get the HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer by Bhugol Shiksha .com
HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB HS Class 12 Political Science Suggestion with 100% Common in the Examination .
Class Twelve XII Political Science Antorjatik Somporko Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Exam
HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Twelve XII Political Science Suggestion is provided here. HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মৌলিক এবং রাজনৈতিক নীতি (প্রথম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 Political Science Antorjatik Somporko Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।




















