আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer
আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer : আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই West Bengal WBCHSE Class 11th Geography Weather and Climate Question and Answer, Suggestion, Notes | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 11th Eleven XI Geography Examination – পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। একাদশ শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষা তে এই সাজেশন বা কোশ্চেন (আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer) গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।

তোমরা যারা আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো।

রাজ্য (State) পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)
বোর্ড (Board) WBCHSE, West Bengal
শ্রেণী (Class) একাদশ শ্রেণী (WB Class 11th)
বিষয় (Subject) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল (Class 11 Geography)
প্রাকৃতিক ভূগোল (Physical Geography) আবহাওয়া ও জলবায়ু (Weather and Climate)

[একাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE Class 11th Geography Weather and Climate Question and Answer 

সংক্ষিপ্ত | আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Geography Weather and Climate SAQ Question and Answer :

  1. অ্যালবেডো কী?

Ans: সংজ্ঞা: সূর্য থেকে পৃথিবীতে আগত মোট সৌর বিকিরণের শতকরা 35 ভাগ (ভিন্ন মতে 34 ভাগ) বৃহৎ তরঙ্গরূপে মহাশূন্যে ফিরে যায় এবং এর দ্বারা ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হতে পারে না। একে পৃথিবীর অ্যালবেডো বলে।

  1. উষ্ণতা পরিমাপের এককগুলি কী?

Ans: উষ্ণতা পরিমাপের একক: উষ্ণতা পরিমাপের প্রধান এককগুলি হল- (i) ডিগ্রি সেলসিয়াস (°সে) এবং (ii) ডিগ্রি ফারেনহাইট (°ফা)।

  1. ‘উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাস হার’ বা ‘উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার’ বলতে কী বোঝ?

Ans: উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাসের হার: সূর্যতাপে প্রথমে ভূপৃষ্ঠ উষ্ণ হয় এবং তারপর ওই উষ্ণ ভূপৃষ্ঠ থেকে তাপ বিকির্ণ হয়ে বায়ুমণ্ডলকে উষ্ণ করে। এজন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে উষ্ণতা হ্রাস পায়। অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উষ্ণতার এই হ্রাসকে উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাস হার (normal lapse rate of temperature) বলা হয়। উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাসের হার প্রতি 1000 মিটার বা 1 কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় 6.4°সে। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় বলেই উচ্চস্থান শীতল হয় এবং সুউচ্চ পর্বতশিখর তুষারাবৃত থাকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাস হার কেবল বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে পরিলক্ষিত হয়।

  1. উষ্ণতার প্রসর বলতে কী বোঝ?

Ans: ধারণা: কোনো স্থানে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার পার্থক্যকে উষ্ণতার প্রসর বলে। দৈনিক উষ্ণতার প্রসর: কোনো দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার পার্থক্যকে দৈনিক উষ্ণতার প্রসর বলে। মাসিক উষ্ণতার প্রসর: একইভাবে মাসিক গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার পার্থক্যকে মাসিক উষ্ণতার প্রসর বলে। বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর: কোনো বছরের গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার মান দুটির পার্থক্যকে বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর বলে।

  1. তাপ বিষুবরেখা কাকে বলে?

Ans: সংজ্ঞা: কোনো নির্দিষ্ট সময়ের প্রতিটি দ্রাঘিমারেখায় প্রাপ্ত সর্বোচ্চ উষ্ণতাকে মানচিত্রে বসিয়ে যোগ করলে যে রেখা সৃষ্টি হয়, সেই রেখাকে তাপ বিষুবরেখা বলে। বৈশিষ্ট্য: যেহেতু নিরক্ষরেখা বরাবর উষ্ণতা সর্বাধিক হয়, তাই তাপ বিষুবরেখাও প্রায় নিরক্ষরেখা বরাবর প্রসারিত হয়। তবে সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সময় এই রেখাটিও সামান্য উত্তর বা দক্ষিণে সরে যায়।

  1. এল নিনো কী?

Ans: সংজ্ঞা: দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূলে কোনো কোনো বছর ক্রিসমাসের সময় শীতল পেরু স্রোতের পরিবর্তে যে দুর্বল প্রকৃতির উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের আবির্ভাব ঘটে, সেই ঘটনাকে এল নিনো বলে। বৈশিষ্ট্য: এল নিনোর প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের আবহাওয়ায় অস্বাভাবিক গোলযোগ দেখা যায়।

  1. কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো।

Ans: গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম: কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাস হল- (i) কার্বন ডাইঅক্সাইড, (ii) মিথেন, (iii) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, (iv) কার্বন মনোক্সাইড, (v) নাইট্রাস অক্সাইড, (vi) জলীয় বাষ্প প্রভৃতি। এর মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনহাউস গ্যাস।

  1. লীনতাপ (Latent heat) কাকে বলে?

Ans: যে তাপ গ্রহণ বা বর্জন করার দ্বারা কোনো পদার্থের কেবল অবস্থার পরিবর্তন (কঠিন থেকে তরল, তরল থেকে গ্যাসীয়, তরল থেকে কঠিন প্রভৃতি) ঘটে কিন্তু উষ্ণতার কোনো প্রকার পরিবর্তন হয় না, সেই তাপকে লীনতাপ বলা হয়। যেমন-বায়ুমণ্ডলের ঘনীভবন প্রক্রিয়ায় জলীয়বাষ্প জলকণাতে পরিণত হওয়ার সময় লীনতাপ ত্যাগ করে, ওই তাপ বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। লীনতাপ থার্মোমিটারে পরিমাপযোগ্য নয়।

  1. পরিচলন (Convection) প্রক্রিয়া কাকে বলে?

Ans: উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরও উত্তপ্ত এবং হালকা হয়ে পড়ে, তখন ওই বায়ু ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যায়। অন্যদিকে ওপরের শীতল ও ভারী বায়ু ওই শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য নীচে নেমে আসে। ওই শীতল বায়ু নীচে এসে উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে উত্তপ্ত হয়ে এবং হালকা হয়ে পুনরায় ওপরে উঠতে থাকে। তখন একইভাবে ওপরের শীতল বাতাস নীচে নেমে আসে। এভাবে বায়ুতে যে চক্রাকার প্রক্রিয়া চলতে থাকায় বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়, তাকেই পরিচলন প্রক্রিয়া বলে।

  1. উপত্যকা বায়ু কাকে বলে?

Ans: দিনের বেলা সূর্যতাপে উত্তপ্ত উপত্যকার দু-দিকের ঢালের ওপরের বায়ু যে পরিমাণ উত্তপ্ত হয়, উপত্যকার মধ্যভাগের বায়ু ততটা উত্তপ্ত হয় না। এই বায়ু শীতল থাকে এবং তার ফলে উচ্চচাপের সৃষ্টি করে ও ভারী হয়ে নীচের দিকে নামে। এই নিম্নগামী বায়ুর চাপে তখন উপত্যকার দু-দিকের ঢালের বায়ু ওপরের দিকে প্রবাহিত হয়। এই ঊর্ধ্বঢাল প্রবাহী বায়ুকে বলে উপত্যকা বায়ু। এর আর এক নাম অ্যানাবেটিক বায়ু (Anabatic Wind, গ্রিক শব্দ Ana=up বা ওপরের দিকে)।

বৈশিষ্ট্য: (i) বিপরীতমুখী: উপত্যকা বায়ু হল পার্বত্য বায়ুর ঠিক বিপরীত। (II) উচ্চ অংশে জনবসতি: ইউরোপের অনেক জায়গায় উপত্যকা বায়ুর প্রভাবে লোকবসতি ও কৃষিকাজ উপত্যকার নীচের দিকে না হয়ে পর্বতের ওপরের ঢালে গড়ে ওঠে।

  1. প্রত্যয়ন বায়ু কাকে বলে?

Ans: উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ে এসে পর্যায়ক্রমে উষ্ণ এবং হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। আবার পৃথিবীর আবর্তন গতিবেগ নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বাধিক থাকার কারণে যে বিক্ষেপ বল তৈরি করে তার ফলে ওই বায়ু দুই মেরুর দিকে ছিটকে যায়। কিন্তু কর্কটীয় এবং মকরীয় উচ্চচাপ বলয়ে ওই বায়ু শীতল ও ভারী হয়ে নেমে আসে। একেই প্রত্যয়ন বায়ু বলা হয়। অর্থাৎ আয়ন বায়ু বলয়ের মধ্যেই অধিক উচ্চতায় ঠিক তারই বিপরীতে প্রবাহিত বায়ুকে প্রত্যয়ন বায়ু বলা যেতে পারে।

  1. চিনুক কী?

Ans: ইংরেজি ‘chinook’ শব্দের অর্থ তুষার ভক্ষক বা তুষার খাদক। উৎপত্তিস্থল ও প্রবাহপথজ্ঞ চিনুক একপ্রকার উষ্ণ স্থানীয় বায়ু। উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞ্চলের পূর্ব ঢাল বেয়ে যে উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু প্রেইরি সমভূমিতে নেমে আসে, তার নাম চিনুক।

প্রভাব: (i) চিনুক বায়ুর প্রভাবে রকি পর্বতের পাদদেশ-সহ সমগ্র প্রেইরি অঞ্চলের তুষার গলে যায়। এজন্য এই বায়ুর নাম চিনুক। (ii) এই তুষারগলা জলে ভূমি সিক্ত হয় বলে প্রেইরি অঞ্চলে পশুচারণের উপযোগী বিস্তীর্ণ তৃণভূমি সৃষ্টি হয়েছে এবং ওখানে গম চাষ করা হয়।

  1. 13. লু বলতে কী বোঝ?

Ans: উত্তর-পশ্চিম ভারতের একপ্রকার স্থানীয় বায়ুর নাম ‘লু’। বায়ুপ্রবাহের দিক ও সময়: গ্রীষ্মকালে মে-জুন মাসে দিনেরবেলা উত্তর-পশ্চিম ভারতের স্থলভাগ প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়। ওই উষ্ণ ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরের বায়ুও প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয় এবং দুপুর ও অপরাহ্নের দিকে তাপপ্রবাহ রূপে প্রবল বেগে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালভাবে উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়।

বৈশিষ্ট্য: (i) এই বাতাসের উষ্ণতা থাকে গড়ে 45°সে-এরও বেশি। (ii) এটি উষ্ণ, শুষ্ক ও ঝোড়ো প্রকৃতির।

ভারতে প্রভাবিত অঞ্চল: উত্তর ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে ‘লু’ বায়ু প্রবাহিত হয়।

  1. বাইস ব্যালট সূত্র বলতে কী বোঝ?

Ans: উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বাইস ব্যালট (Buys Ballot) নামে একজন ওলন্দাজ বিজ্ঞানী বায়ুচাপের তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের মধ্যে এক সম্পর্ক নির্ধারণ করে একটি সূত্র প্রদান করেন।

সূত্র: এই সূত্রানুযায়ী উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে ডানদিকের তুলনায় বামদিকে বায়ুর চাপ কম অনুভূত হয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঠিক এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়। বায়ুপ্রবাহ সংক্রান্ত এই বৈশিষ্ট্য বা নিয়ম-নীতিই বাইস ব্যালট সূত্র (Buys Ballot’s law) নামে পরিচিত।

  1. আবহাওয়া ও জলবায়ু বলতে কী বোঝায়?

Ans: কোনো নির্দিষ্ট স্থানের কোনো নির্দিষ্ট সময়ের বায়ুর উষ্ণতা, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুর আর্দ্রতা, আকাশে মেঘের অবস্থা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রভৃতি উপাদানের অবস্থাকে আবহাওয়া বলা হয়। অর্থাৎ আবহাওয়া হল বায়ুমণ্ডলের সাময়িক অবস্থা, যা বায়ুমণ্ডলের কতকগুলি উপাদানের ওপর নির্ভরশীল।

কোনো বিস্তৃত অঞ্চলের কমপক্ষে 35 বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থাকে জলবায়ু বলা হয়। সুতরাং, জলবায়ু হল আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহের দীর্ঘকালীন গড় অবস্থা।

  1. বায়ুস্রোত কী? ITCZ বা আন্তঃক্রান্তীয় অভিসারী অঞ্চল কী?

Ans: বায়ু যখন উল্লম্বভাবে অর্থাৎ ওপর থেকে নীচে বা নীচ থেকে ওপরে চলাচল করে, তখন তাকে বায়ুস্রোত বলে।

উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু এবং দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় অঞ্চলে এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার পরিবর্তে তাপমাত্রা বেশি থাকায় উত্তপ্ত এবং হালকা হয়ে ঊর্ধ্বগামী হয়। ফলে বায়ুপ্রবাহ বোঝা যায় না এবং শান্ত অবস্থা বিরাজ করে। এই কারণে উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর মিলনস্থল (0°-5°/10° উ. ও দ.) আন্তক্রান্তীয় অভিসরণ মন্ডল বা Inter Tropical Convergence Zone সংক্ষেপে। TCZ নামে পরিচিত।

  1. ফেরেল কোশের অবস্থান কোথায়? ফেরেল কোশ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

Ans: উভয় গোলার্ধে 30° থেকে 60° অক্ষাংশে অর্থাৎ মধ্য অক্ষাংশে ফেরেল কোশের অবস্থান লক্ষ করা যায়।

ফেরেল কোশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি-(i) নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত সৃষ্টিতে সহায়তা করে, (ii) তাপ বিনিময়ের মাধ্যমে তাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

  1. জেট বায়ু কোন্ দিক থেকে কোন্ দিকে প্রবাহিত হয়? অবস্থান অনুসারে জেট বায়ুপ্রবাহ কয় প্রকার ও কী কী?

Ans: জেট বায়ু পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়।

অবস্থান অনুসারে জেট বায়ুপ্রবাহ তিনপ্রকার (1) মেরু জেট বায়ুপ্রবাহ, (ii) উপক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ ও (iii) ক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ।

  1. প্রাথমিক জেট বায়ুপ্রবাহ কী? কোন্ জেট বায়ুপ্রবাহ সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী?

Ans: মেরুদেশীয় জেট বায়ুপ্রবাহের অপর নাম প্রাথমিক জেট বায়ুপ্রবাহ।

মেরুদেশীয় জেট বায়ুপ্রবাহ সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী।

  1. এল নিনো কী?

Ans: কোনো কোনো বছর ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমে পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূল বরাবর দক্ষিণমুখী উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের নিস্তেজ প্রবাহ ঘটে। ফলে বায়ুমণ্ডলীয় স্বাভাবিক অবস্থার পরিবর্তে যে বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে এল নিনো (El-Nino) বলে। এটি হল সামুদ্রিক ও বায়ুমণ্ডলীয় এক বিশেষ অবস্থা।

  1. আয়ন বায়ু কাকে বলে? ‘জেট বায়ুপ্রবাহ’ কী?

Ans: যে বায়ু সারাবছর উভয় গোলার্ধে 0°-30° অক্ষরেখার মধ্যে প্রবাহিত হয়, তাকে আয়ন বায়ু বলে।

ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্ব সীমানায় পৃথিবীকে বেষ্টন করে যে ক্ষিপ্র গতিসম্পন্ন সর্পিলাকার বিরামহীন জিওস্ট্রফিক বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে জেট বায়ুপ্রবাহ বলে।

  1. ডোলড্রাম বলতে কী বোঝ?

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর বেশি উষ্ণতা থাকে বলে বায়ু অনবরত উষ্ণ ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। এজন্য এখানে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ুর প্রবাহ বা গতি বোঝা যায় না। ফলে সর্বদা ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলে শান্তভাব বিরাজ করে। তাই নিরক্ষীয় নিম্নচাপ অঞ্চলের অপর নাম নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রাম।

  1. কোরিওলিস বল কাকে বলে?

Ans: আবর্তন গতির জন্য পৃথিবীতে একটি কেন্দ্রাতিগ বা কেন্দ্রবহির্মুখী শক্তি সৃষ্টি হয়, যার প্রভাবে পৃথিবীর সব প্রবহমান পদার্থেরই দিবিক্ষেপ ঘটে। 1835 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি গণিতবিদ গাসপার্ড গুস্তাভ কোরিওলিস পৃথিবীর আবর্তনঘটিত এই শক্তি বা বলের তত্ত্বটি আবিষ্কার করেন বলে একে কোরিওলিস বল নামে অভিহিত করা হয়। ধারণা: এই বলের প্রভাবে পৃথিবীর সব পদার্থই পৃথিবী থেকে ছিটকে বেরিয়ে যেতে চায়। তবে তার মধ্যে বেশিরভাগ পদার্থই এই বলকে এড়িয়ে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে পৃথিবীপৃষ্ঠে আটকে থাকলেও বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি প্রবহমান বস্তুসমূহের দিগ্বিক্ষেপ ঘটে। কোরিওলিস বলের জন্যই এরকমটি হয়।

  1. পরিচলন পদ্ধতি বলতে কী বোঝ?

Ans: ধারণা: ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন উষ্ণ বায়ু প্রসারিত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায় এবং চারপাশের শীতল ভারী বায়ু ওই শূন্যস্থান পূরণ করতে এসে উষ্ণ ও হালকা হয়ে পুনরায় ওপরে উঠে যায়। এইভাবে বায়ুর উল্লম্ব সঞ্চলন তথা চক্রাকার আবর্তনের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে পরিচলন পদ্ধতি বলে। বৈশিষ্ট্য: পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ায় এই প্রক্রিয়া নিরক্ষীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।

  1. ইনসোলেশন কী?

Ans: ধারণা: ইংরেজিতে incoming solar radiation-কে সংক্ষেপে ইনসোলেশন (insolation) বলে। সূর্য থেকে বিকিরিত শক্তির প্রায় 200 কোটি ভাগের এক ভাগ ক্ষুদ্র আলোকতরঙ্গরূপে

পৃথিবীতে এসে পৌঁছোয়। এই ক্ষুদ্র আলোকতরঙ্গকে সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বা আগত সৌর বিকিরণ বা ইনসোলেশন বলে।

রচনাধর্মী | আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer :

1. তাপমাত্রার প্রসর (Range of Temperature) বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা করো।

Ans: তাপমাত্রার প্রসর: কোনো স্থান বা অঞ্চলের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য বা বিয়োগফলকে তাপমাত্রার প্রসর বলা হয়।

প্রকারভেদ: (i) দৈনিক তাপমাত্রার প্রসর: কোনো দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্যকে দৈনিক তাপমাত্রার প্রসর বলা হয়। (ii) মাসিক তাপমাত্রার প্রসর: কোনো মাসের সর্বোচ্চ দৈনিক গড় উষ্ণতা এবং সর্বনিম্ন দৈনিক গড় উষ্ণতার পার্থক্যকে মাসিক তাপমাত্রার প্রসর বলে। (iii) বার্ষিক তাপমাত্রার প্রসর: কোনো বছরের উষ্ণতম মাসের গড় তাপমাত্রা ও শীতলতম মাসের গড় তাপমাত্রার পার্থক্যকে বার্ষিক তাপমাত্রার প্রসর বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য: (i) নিরক্ষীয় অঞ্চলে উষ্ণতার প্রসর সবথেকে কম মেরুর দিকে তা ক্রমশ বাড়তে থাকে। (ii) জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগের উষ্ণতার প্রসর বেশি হয়।

প্রভাব: তাপমাত্রার প্রসর পরিবেশে জীবের ওপর তাপ সংক্রান্ত স্বস্তি বা অস্বস্তির মাত্রা বুঝতে সাহায্য করে। তাপমাত্রার প্রসর বেশি হলে জীবের অভিযোজনে সমস্যা দেখা যায়।

2. আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করো।

Ans: আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য:
আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –

বিষয় আবহাওয়া জলবায়ু
ধারণা উষ্ণতা, বায়ুর চাপ, বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতার ইত্যাদি বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলির কার্যকারিতার ফলে মাঝেমধ্যেই সাময়িক অবস্থা কে আবহাওয়া বলে। জলবায়ু হল আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহের দীর্ঘকালীন গড় অবস্থার একটি রূপ।
বিস্তৃতি আবহাওয়া স্বল্প পরিসর স্থানের বায়ুমণ্ডলের অবস্থা নির্দেশ করে। জলবায়ু বিস্তৃত অঞ্চলের আবহাওয়ার গড় অবস্থা পরিচিত দেয়।
সময় আবহাওয়া হল দৈনন্দিন ব্যাপার। প্রতিদিন এমনকি প্রতি ঘন্টাতেও আবহাওয়া পালটাতে পারে। জলবায়ু বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলোর দীর্ঘকালীন গড় অবস্থা। কমপক্ষে ৩৫ বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থা জলবায়ু নির্ধারনে বিবেচিত হয়।

3. পৃথিবীব্যাপী ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে প্রবাহিত বিভিন্ন প্রকার স্থানীয় বায়ুর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

Ans: পৃথিবীব্যাপী ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে প্রবাহিত স্থানীয় বায়ু:
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে বেশ কয়েকটি অন্যান্য স্থানীয় বায়ুর অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার প্রত্যেকটির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে—

[1] ট্রামন্টানা: এটি একটি শুষ্কশীতল ও ঠান্ডা উত্তররের বায়ু যা পাইরেনিশ এবং ম্যাসিফ সেন্ট্রাল থেকে কল্লাসার উপকূল এবং বালিয়ারিক দ্বীপপুঞ্জের দিকে প্রবাহিত হয়। এটি কনভেকশন ধরে চলতে পারে এবং প্রায়শই পরিষ্কার আকাশ নিয়ে আসে।

[2] গ্রেগাল: উত্তর-পূর্ব থেকে উদ্ভূত এই বায়ু সাধারণত শুষ্ক এবং ঠান্ডা। আইবেরিয়ান উপদ্বীপ থেকে নাফিকাল ব্রিজ শিপচালনার জন্য যে দ্বীপটি গ্রহণ করে তার নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে।

[3] লেভান্তে: এটি পূর্ব দিকের বায়ু যা ভূমধ্যসাগর থেকে আর্দ্র বায়ু নিয়ে আসে এবং প্রায়শই ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব আইবেরিয়ান উপদ্বীপে বিশেষভাবে লক্ষ করা যায়।

[4] সিরোক্কো: Xaloc নামে পরিচিত এটি একটি গরম ও শুষ্ক বায়ু যা সাহারা মরুভূমি থেকে উৎপন্ন হয়। এটি ধুলোর বালি বহন করতে পারে। যার ফলে দৃষ্টিহীনতা এবং উচ্চ তাপমাত্রা সৃষ্টি করে।

[5] মিস্ত্রাল: এটি একটি ঠান্ডা ও শুষ্ক উত্তর-উত্তর পশ্চিমের বায়ু যা রোন উপত্যকার মধ্য দিয়ে ভূমধ্যসাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু উত্তেজিত জনপদ পরিচিত এবং উদ্ভিজ্জ উৎপাদনে তাপমাত্রা কমাতে পারে।

উপসংহার: এইসমস্ত বায়ু ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু এবং আবহাওয়ার ধরন গঠনেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

4. জেট বায়ু কী? এর বৈশিষ্ট্য লেখো।

Ans: জেট বায়ু: উর্ধ্ব ট্রপোস্ফিয়ারে প্রবাহিত অত্যন্ত শীতল, দ্রুতগতিসম্পন্ন, সংকীর্ণ, সর্পিলাকার বায়ুপ্রবাহকে জেট বায়ু বলে।

জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য: জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

[1] জিস্ট্রেফিক বায়ু: ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে জেট বায়ুপ্রবাহ সমচাপরেখার সমান্তরালে প্রবাহিত হয়। তাই এটি জিওস্ট্রফিক বায়ু নামে পরিচিত।

[2] বায়ুর গতিবেগ: এটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং দ্রুতগামী বায়ু। এই বায়ু ঘণ্টায় 100-500 কিমি বেগে প্রবাহিত হয়।

[3] জেট স্ট্রিম: সংকীর্ণ ঝরনা বা নদীর মতো প্রবাহিত হয় বলে একে জেট স্ট্রিম বা জেট প্রবাহ বলে।

[4] জেট বায়ুপ্রবাহের দিক ও স্থান: এই বায়ু দুটি গোলার্ধেই 30°-60° অক্ষাংশের মধ্যে পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হয়। তবে সূর্যের উত্তরায়ণ বা দক্ষিণায়নের সাথে জেট বায়ুপ্রবাহের কিছুটা স্থান পরিবর্তন হয়।

[5] বায়ুর প্রকারভেদ: জেট বায়ু তিনপ্রকারের হয়-মেরুদেশীয় জেট বায়ু, উপক্রান্তীয় জেট বায়ু ও ক্রান্তীয় জেট বায়ু।

5. সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বা ইনসোলেশন বলতে কী বোঝ? এর নিয়ন্ত্রকগুলি লেখো। এর প্রভাব কী?

Ans: সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বা ইনসোলেশন: সূর্যের আলোক বলয় থেকে সৌরবিকিরণ হিসেবে পৃথিবীতে আগত সৌরশক্তিকে ইনসোলেশন (বা সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বা আগত সৌরবিকিরণ) বলে। ইংরেজি Incoming Solar Radiation-কে সংক্ষিপ্ত আকারে Isolation বলা হয়। সূর্য থেকে বিকিরিত শক্তির 200 কোটি ভাগের মধ্যে মাত্র । ভাগ পৃথিবীতে ইনসোলেশন হিসেবে আসে।

ইনসোলেশনের নিয়ন্ত্রকসমূহ: ইনসোলেশনের নিয়ন্ত্রকগুলি হল-

[1] সূর্যরশ্মির পতনকোণ: সূর্যরশ্মি যত উল্লম্বভাবে পড়বে ইনসোলেশনের হাত তত বেশি পাবে। যতই সূর্যরশ্মির পতনকোণ তীর্যক হবে, ততই ইনসোলেশনের মাত্রা কমবে। এজন্য নিরক্ষীয় অঞ্চলের তাপমাত্রা বেশি এবং মেরুপ্রদেশের তাপমাত্রা কম থাকে।

[2] দিবাভাগের দৈর্ঘ্য: দিবাভাগের দৈর্ঘ্য বেশি হলেও ইনসোলেশন বেশি হয়। আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে দিবাভাগের দৈর্ঘ্য বেশি বলেই গরম পড়ে।

[3] পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব: পৃথিবী তার উপবৃত্তাকার কক্ষপথে যখন সূর্যের নিকটে আসে তখন ইনসোলেশন বাড়ে, সূর্যের থেকে দূরে থাকলে ইনসোলেশন কম হয়।

[4] বায়ুমণ্ডলের স্বচ্ছতা: বায়ুমণ্ডলে মেঘাচ্ছন্নতা বা ধূলিকণা বেশি থাকলে সৌররশ্মি প্রতিফলিত হয়ে ফিরে যায় এবং ইনসোলেশন কমে যায়।

[5] সৌরকলঙ্ক: প্রতি 11 বছর অন্তর সৌরকলঙ্কের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। বিজ্ঞানীদের মতে এটি ইনসোলেশন হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটানোর জন্য কিছুটা দায়ী।

ইনসোলেশনের প্রভাব: ইনসোলেশনের প্রভাবগুলি হল-

[1] পৃথিবী তাপ ও আলো পায়।

[2] বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা প্রাপ্তি ঘটে। উষ্ণতার তারতম্যে বায়ুতে উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয়।

[3] গাছ সালোকসংশ্লেষ দ্বারা খাদ্য তৈরি করে থাকে।

6. পৃথিবীর তাপ বাজেট (Heat Budget) বা উত্তাপের সমতা ব্যাখ্যা করো।

Ans: পৃথিবীর তাপ বাজেট বা উত্তাপের সমতা: ক্ষুদ্র তরণ হিসেবে যে পরিমাণ সৌরবিকিরণ পৃথিবীতে আসে, তা দীর্ঘ তরণের পার্থিব বিকিরণ হিসেবে পুনঃবিকিরিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায়। এর ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রার খুব একটা হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে না বা তাপের ভারসাম্য বজায় থাকে। একেই পৃথিবীর তাপবাজেট বা তাপের সমতা বলা হয়।

ব্যাখ্যা: সূর্য থেকে পৃথিবীতে আগত শক্তিকে 100% ধরা হলে তার মধ্যে 35% (মেঘ দ্বারা 27%, বায়ুমণ্ডল দ্বারা বিচ্ছুরিত 6% এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত 2%) পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত না করেই মহাশূন্যে ফিরে যায়। একে ‘অ্যালবেডো’ (Albedo) বলে। বাকি 65% পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। তাই একে ‘কার্যকরী সৌরবিকিরণ’ (Effective Solar Radiation) বলে। এই 65% সৌরশক্তির মধ্যে বায়ুমণ্ডল দ্বারা শোষিত হয় 14% এবং 51% ভূপৃষ্ঠে (34% সরাসারি ভূপৃষ্ঠ এবং 17% বিচ্ছুরিত শক্তি গ্রহণ) পৌঁছোয়। ওই 65% শক্তি আবার বায়ুমণ্ডল থেকে সরাসরি 14%, ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলের দ্বারা 34% (ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমন্ডলে সরাসরি বিকিরণ 6%, ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমন্ডলে পরিচলন পদ্ধতিতে বিকিরণ 9% ও ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলে ঘনীভবন পদ্ধতিতে বিকিরণ 19%) এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে মহাশূন্যে সরাসরি 17% বিকিরিত হয়।

অক্ষাংশীয় উত্তাপের সমতা: সামগ্রিকভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রার কোনো হেরফের না হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রার বিভিন্নতা দেখা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন অক্ষাংশে সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্যের জন্য সৌর বিকিরণ তথা তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটে। নিরক্ষরেখার নিকট অর্থাৎ নিম্ন অক্ষাংশে আগত সৌরকিরণের পরিমাণ বিকিরিত সৌরকিরণ অপেক্ষা বেশি। অন্যদিকে উচ্চ অক্ষাংশে বিকিরিত সৌরকিরণের পরিমাণ আগত সৌরকিরণ অপেক্ষা বেশি। এই বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি প্রতিনিয়ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। সমুদ্রস্রোত এবং বায়ুপ্রবাহ নিম্ন অক্ষাংশ থেকে উত্তাপ উচ্চ অক্ষাংশে পরিবহণ করে চলেছে।

7. তাপবলয় বা তাপমণ্ডল কাকে বলে? পৃথিবীর তাপবলয়গুলির পরিচয় দাও।

Ans: তাপবলয় বা তাপমণ্ডল: অক্ষাংশ অনুসারে অর্থাৎ নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে

সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্য অনুসারে পৃথিবীতে নির্দিষ্ট কতকগুলি তাপ অঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে। এগুলিকে তাপবলয়/তাপমণ্ডল (Thermal Zone) বলে। পৃথিবীতে সৃষ্টি হওয়া প্রধান ও টি তাপবলয় হল-

[1] উষ্ণমণ্ডল (Torrid Zone) বিস্তার: নিরক্ষরেখার উভয় পার্শ্বে 23° অক্ষাংশ অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তিরেখা এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তিরেখার মধ্যবর্তী প্রসারিত অঞ্চলই হল উষ্ণমণ্ডল বা গ্রীষ্মমণ্ডল।

সৃষ্টির কারণ: সারাবছর ধরেই প্রায় লম্বভাবে সূর্যরশ্মির কিরণ পড়ে। তা ছাড়া দিন-রাতের পার্থক্য খুব বেশি হয় না। ফলে সারাবছর ধরেই এই অঞ্চলে বায়ুর তাপমাত্রা অন্য যে-কোনো অঞ্চল অপেক্ষা বেশি থাকে। এই কারণেই এই অংশে উষ্ণমণ্ডল সৃষ্টি হয়েছে।

জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য: [1] উষ্ণমণ্ডলে সারাবছর ধরেই প্রায় লম্বভাবে সূর্যরশ্মি কিরণ দেয়। [ii] সারাবছর ধরে গড় তাপমাত্রাও বেশ বেশি থাকে। [iii] ঋতুপরিবর্তন দেখা যায় না বললেই চলে, কর্কটক্রান্তি এবং মকরক্রান্তি রেখার নিকট কিছুটা ঋতুপরিবর্তন দেখা গেলেও গ্রীষ্মই প্রধান ঋতু। [iv] দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যের পার্থক্য এবং উষ্ণতার প্রসর খুব কম।

[2] নাতিশীতোয়মণ্ডল (Temperate Zone) বিস্তার: উভয় গোলার্ধে 23° থেকে 66° অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তিরেখা থেকে সুমেরুবৃত্ত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তি রেখা থেকে কুমেরুবৃত্ত পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলকে নাতিশীতোর মণ্ডল ধরা হয়।

সৃষ্টির কারণ: সূর্যরশ্মি একেবারে লম্বভাবেও পড়ে না আবার মেরু অঞ্চলের মতো ততটাও তির্যকভাবে পড়ে না বলে তাপমাত্রা মাঝারি মানের হয়। দিনরাত্রের দৈর্ঘ্যের হ্রাস-বৃদ্ধিও মাঝামাঝি হয়। ফলে মাঝারি তাপমাত্রাযুক্ত নাতিশীতোয়মণ্ডল সৃষ্টি হয়েছে।

জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য: [i] সারাবছর সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়ে। [ii] সারাবছরই তাপমাত্রা মাঝারি মানের থাকে অর্থাৎ নাতিশীতোয় জলবায়ু বিরাজ করে। [iii] দিনরাতের তাপমাত্রার তারতম্য বা প্রসরও মাঝারি মানের হয়।

উপবিভাগ: অক্ষাংশের ওপর নির্ভর করে [1] উত্তর নাতিশীতোয়মণ্ডল (উত্তর গোলার্ধ) এবং [ii] দক্ষিণ নাতিশীতোয়মণ্ডল (দক্ষিণ গোলার্ধ)-এই দুটি অংশে বিভক্ত। আবার উষ্ণতার ভিত্তিতে – [i] উষ্ণ নাতিশীতোয়মণ্ডল (উষ্ণমণ্ডলের পার্শ্ববর্তী) এবং [ii] শীতল নাতিশীতোয়মণ্ডল (হিমমণ্ডলের পার্শ্ববর্তী) এই দুই অংশে বিভক্ত।

[3] হিমমণ্ডল (Frigid zone) বিস্তার: উভয় গোলার্ধের 66° থেকে মেরুবিন্দু (90°) পর্যন্ত অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে সুমেরুবৃত্ত থেকে উত্তর মেরু। সুমেরু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে কুমেরুবৃত্ত থেকে দক্ষিণমেরু। কুমেরু পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল হল হিমমণ্ডল।

সৃষ্টির কারণ: এই অংশে সারাবছর ধরে সূর্যালোক অতি তির্যকভাবে পড়ে। দিন-রাতের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য অনেক বেশি। দুই মেরুতে তো একটানা 6 মাস দিন ও 6 মাস রাত থাকে। সারাবছর অত্যধিক শীতলতার জন্য দুই মেরুপ্রদেশ পুরু বরফ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। বরফের সংস্পর্শে বাতাস শীতল ও ভারী হয়ে নীচে নেমে আসে। এভাবে হিমমণ্ডল সৃষ্টি হয়েছে।

জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য: [i] সূর্যরশ্মি সারাবছর ধরে অতি তির্যকভাবে কিরণ দেয়। সর্বোচ্চ সূর্যের উষ্ণতিকোণ মাত্র 23 হয়। [ii] সারাবছরই অত্যন্ত ঠান্ডা চিরশীতল জলবায়ু দেখা যায়। [iii] দিন-রাতের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য সবথেকে বেশি। [iv] দীর্ঘকালীন রাতের আকাশে অনেক সময় মেরুজ্যোতি দেখতে পাওয়া যায়।

উপবিভাগ: অক্ষাংশের ওপর নির্ভর করে-[i] উত্তর হিমমণ্ডল (উত্তর গোলার্ধ) এবং [ii] দক্ষিণ হিমমণ্ডল (দক্ষিণ গোলার্ধ) এই দুই অংশে ভাগ করা যায়। আবার উষ্ণতা ও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে-[i] তুন্দ্রামণ্ডল (নাতিশীতোয়মণ্ডলের পার্শ্ববর্তী) এবং [ii] চিরতুষারাবৃতমণ্ডল (মেরুবিন্দু কেন্দ্রিক)-এই দুই অংশে বিভক্ত।

8. বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global warming) কারণগুলি আলোচনা করো। অথবা, গ্রিনহাউস গ্যাস কোনগুলি? এরা কীভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটায় আলোচনা করো।

Ans: বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming): জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, যানবাহনের সংখ্যাবৃদ্ধি,

নগরায়ণ ও শিল্পায়ন, নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদন, জৈব আবর্জনার পচন, কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত নাইট্রোজেনঘটিত সার ব্যবহার, সর্বোপরি জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে যেসকল গ্যাস সৌর বিকিরণের ক্ষুদ্র তরঙ্গের প্রবেশে বাধা দেয় না কিন্তু বৃহৎ তরঙ্গের পার্থিব বিকিরণকে ফিরে যেতে দেয় অর্থাৎ তাপশোষণ এবং সংরক্ষণ করে, সেই সকল গ্যাসকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে। যেমন-কার্বনডাই অক্সাইড (CO₂), মিথেন, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) প্রভৃতি। এর ফলে সমগ্র পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে সমগ্র পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা ভূ উষ্ণায়ন বা বিশ্ব উষ্ণায়ন বলেছেন। নিম্নে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির কারণে কীভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটছে তা আলোচনা করা হল-

[1] কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂): প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস হল কার্বন ডাইঅক্সাইড। আধুনিক সভ্যতায় নগরায়ণ, শিল্পায়ন, বৃক্ষচ্ছেদন, জীবাশ্ম জ্বালানি দহন, দাবানল, যানবাহনের ধোঁয়া প্রভৃতি থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয় ও বায়ুমণ্ডলে যুক্ত হয়। এই কার্বন ডাইঅক্সাইডের বৃদ্ধির ফলে বাতাসের তাপগ্রহণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতা বেড়ে যাচ্ছে। এভাবে বিশ্ব উষ্ণায়নের পথ প্রশস্ত হচ্ছে। বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ 412 PPM (Source-NASA)। বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা 49%।

[2] ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC): মূলত হিমায়ন যন্ত্র বা এয়ার কন্ডিশনার, ফ্রিজ, ডিওডোরেন্ট, দাড়ি কামানোর ফোম, হিমঘর, এ, রং ও প্রসাধনী শিল্পে ক্লোরোফ্লুরোকার্বনের ব্যবহার দেখা যায়। বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ অতি নগন্য হলেও বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা কার্বন ডাইঅক্সাইড অপেক্ষা কয়েকগুণ বেশি। তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা প্রায় 14%।

[3] মিথেন (CH): জলাজমি, জৈব বর্জ্যের বিয়োজন, গবাদিপশুর মলমূত্র, ক্রিয়াকলাপ, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লাখনির দহন প্রভৃতির মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাস অন্তর্ভুক্ত হয়। বায়ুমণ্ডলে মিথেনের পরিমাণ কম হলেও কার্বন ডাইঅক্সাইড অপেক্ষা তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে প্রায় ৪০ গুণ বেশি কার্যকারী। বর্তমানে বায়ুতে এর পরিমাণ 1866 ppb এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভূমিকা 18%1

[4] নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O): বিভিন্ন শিল্পকারখানা, কৃষিজমিতে ব্যবহৃত নাইট্রোজেনযুক্ত সার, সুপারসনিক জেটবিমানের ধোঁয়া, দাবানল, মৃত্তিকায় জীবাণুর বিক্রিয়া প্রভৃতির ফলে বায়ুতে নাইট্রাস অক্সাইড ও অন্যান্য নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ যুক্ত হয়। বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ অতি নগণ্য হলেও কার্বন ডাইঅক্সাইডের তুলনায় বায়ুকে উত্তপ্তকরণের ক্ষমতা প্রায় 30 গুণ বেশি। বায়ুমণ্ডলে এর বর্তমান পরিমাণ 331 ppb এর বিশ্ব উষ্ণায়নে অবদান প্রায় 6%।

[5] অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসসমূহ: উপর্যুক্ত গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি ছাড়াও কার্বন মনোক্সাইড (CO₂) হাইড্রোফ্লুরো কার্বন (HFC), ওজোন (O3) সালফার ডাইঅক্সাইড (SO₂) ইথেন (C₂H₄) প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাস এবং জলীয় বাষ্পধূলিকণা ও এবং তাপের সংরক্ষণ করে বিশ্ব উষ্ণায়নকে ত্বরান্বিত করে চলেছে।

9. পৃথিবীব্যাপী বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবগুলি আলোচনা করো।

Ans: পৃথিবীব্যাপী বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব: পৃথিবীব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধি বা বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রধান প্রভাবগুলি হল –

[1] মেরু ও পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের গলন: পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে গ্রিনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা সহ উচ্চ অক্ষাংশের বা মেরুর নিকটবর্তী অঞ্চলের জমা বরফ বা হিমবাহ এবং উচ্চ পার্বতা অঞ্চলসমূহের (হিমালয়, কারাকোরাম, আন্দিজ, আল্পস প্রভৃতি) বরফ বা হিমবাহ গলে যাচ্ছে। সেই বরফগলা জল সমুদ্রে যুক্ত হয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের বা জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি করছে। এমনকি মহাসাগরে হিমশৈলের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

[2] জলবায়ু পরিবর্তন: বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে বাষ্পীভবনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য বাতাসের জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতাও বাড়ছে। ফলে পৃথিবীর জলবায়ুর চরিত্রের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ঘূর্ণবাতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধঃক্ষেপণের প্রকৃতি পালটে যাচ্ছে। ইউরোপের দেশগুলিতে তুষারপাতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, তুষারঝড়ের সংখ্যা বাড়ছে। কোথাও অতিবৃষ্টির ফলে বন্যা, আবার কোথাও অনাবৃষ্টির ফলে খরা দেখা দিচ্ছে।

[3] উপকূলবর্তী অঞ্চলের জলমগ্নতা: সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে উপকূলবর্তী নিম্ন ভূমিভাগ বা সমভূমি বিশেষত নদীর বদ্বীপ অঞ্চলসমূহের নিমজ্জন ঘটবে। ফলে পৃথিবীর বহু শহর, বসতজমি, কৃষিজমি, ম্যানগ্রোভ অরণ্যের অস্তিত্বের সংকট ঘনিয়ে আসছে। কৃষিজমির নিমজ্জন ঘটলে খাদ্যশস্যের উৎপাদনে ঘাটতি ও খাদ্যসংকট পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। আবার বনভূমির নিমজ্জন ঘটলে তাতে থাকা বন্যপ্রাণীগুলির জীবনহানি ঘটবে। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে।

[4] কৃষিকাজের ওপর প্রভাব: বিশ্ব উষ্ণায়ন তথা অধঃক্ষেপণের প্রভাবে কৃষিকাজে প্রধানত দুই ধরনের প্রভাব পড়বে। (i) শস্য উৎপাদনে হ্রাসবৃদ্ধি: খরা-বন্যার প্রভাবে খাদ্যশস্যের উৎপাদন 10-70 শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আবার কিছুক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধিও হতে পারে। (ii) কৃষিপদ্ধতির পরিবর্তন: অধঃক্ষেপণ বা জলবায়ুর প্রকৃতি পরিবর্তন হলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রচলিত কৃষিপদ্ধতির পরিবর্তন হতে বাধ্য। যেমন-নাতিশীতোয়মন্ডলের গম বলয়ে অধিক বৃষ্টিপাত হলে গমের বদলে অন্য কৃষিফসল চাষের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আবার কোনো কোনো স্থানে বৃষ্টিপাতের স্বল্পতার জন্য শাকসবজি, ফুল-ফলের চাষও ব্যাহত হচ্ছে।

[5] এল নিনো ও পৃথিবীব্যাপী তার প্রভাব: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পেরু উপকূলে শীতল পেরু বা হামবোল্ড স্রোতের পরিবর্তে অতি উষ্ণ দক্ষিণমুখী একপ্রকার অস্থায়ী সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়, একে ‘এল নিনো’ বলা হয়। এই এল নিনোর প্রভাবে ভারত-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয় এবং খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলবর্তী অঞ্চলের দেশগুলিতে স্বাভাবিক অপেক্ষা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত অনেক সময় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তা ছাড়া সমুদ্রজলের এই উষ্ণতার বৈপরীত্য প্রবালকীট এবং প্লাঙ্কটনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে থাকে। সাধারণত 2-7 বছর অন্তর এই এল নিনোর আগমন ঘটে এবং 6 মাস-2 বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কোনো কোনো বছর এল নিনোর বিপরীতধর্মী অতিশীতল উত্তরমুখী স্রোত পেরু উপকূলে আবির্ভূত হয় একে লা নিনা বলে।

[6] পৃথিবীতে আগত ও বিকিরিত তাপের বৈষম্য: শিল্পবিপ্লবের পর থেকে বিশেষ করে বিগত শতকে নগরায়ণ, শিল্পায়ন, বনসংহার, জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার, দুটি বিশ্বযুদ্ধ বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি করেছে। ফলে চাদোয়ার ন্যায় পরিস্থিতি উদ্‌ভূত হয়েছে। এই কারণে সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্রতরঙ্গের অবলোহিত (Infra red) রশ্মি শোষণ করে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি তাপ সংরক্ষণ করে উত্তপ্ত হয়। আবার পার্থিব বিকিরণের (দীর্ঘতরঙ্গ হিসেবে) কিছুটা পরিমাণ মহাশূন্যে ফিরে যেতে বাধাদান করে। এর ফলে কিছু পরিমাণ তাপ নিম্ন বায়ুমণ্ডলে থেকে যায়। এভাবে পৃথিবীতে আগত ও বিকিরিত তাপের বৈষম্য ঘটে চলেছে এবং ধীরে ধীরে পৃথিবীর তাপমাত্রা একটু একটু করে বেড়েই চলেছে। এই ঘটনাকে ‘বর্ধিত গ্রিনহাউস প্রভাব’ও বলা হয়।

10. চিত্র-সহ ভূপৃষ্ঠের নিয়ত বায়ুগুলির পরিচয় দাও।

অথবা, পৃথিবীর নিয়ত বায়ুপ্রবাহগুলির উৎপত্তি ও গতিপথ চিত্র-সহ ব্যাখ্যা করো।

Ans: নিয়ত বায়ুপ্রবাহ: পৃথিবীতে ওটি স্থায়ী নিম্নচাপ ও 4টি স্থায়ী উচ্চচাপ বলয় থাকার জন্য কতকগুলি বায়ু সারাবছর ধরে ওই উচ্চচাপ বলয়গুলি থেকে নিম্নচাপ বলয়গুলির দিকে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হয়। এদের বলে নিয়ত বায়ু। নিয়ত বায়ু প্রধানত তিনপ্রকার-

[1] আয়ন বায়ু: উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের যথাক্রমে কর্কটীয় ও মকরীয় বা উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে দুটি বায়ু সারাবছর নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়, তাদের বলা হয় আয়ন বায়ু।

শ্রেণিবিভাগ: আয়ন বায়ু দু-প্রকার (i) উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু: উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্র অনুসারে ডান দিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়। একে বলা হয় উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু। (ii) দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আয়ন বায়ু নিয়মিতভাবে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্র অনুসারে বাম দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়। তাই এই বায়ুর নাম দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু।

বৈশিষ্ট্য: (i) বায়ুর গতিবেগ: উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগ বেশি বলে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ একটু কম, ঘণ্টায় 15-25 কিলোমিটার। দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগ বেশি থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু ঘণ্টায় 25-35 কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হয়। (ii) প্রবাহ অঞ্চল: আয়ন বায়ু সাধারণত নিরক্ষরেখার দু-দিকে 5° থেকে 25° অক্ষরেখার মধ্যে সারাবছর প্রবাহিত হয়। (iii) প্রভাব: আয়ন বায়ুর প্রবাহপথে মহাদেশগুলির পশ্চিম দিকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পৃথিবীর বড়ো বড়ো মরুভূমিগুলি (যেমন-সাহারা, ঘর, কালাহারি, আটাকামা প্রভৃতি) সৃষ্টি হয়েছে।

[2] পশ্চিমা বায়ু: উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে বায়ু দুই মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় (সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় ও কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয়)-এর দিকে সারাবছর নির্দিষ্ট পথে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়, তাদের বলা হয় পশ্চিমা বায়ু।

শ্রেণিবিভাগ: পশ্চিমা বায়ু দু-প্রকার (i) দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু: উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্রানুসারে ডান দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। তাই এই বায়ুকে বলা হয় দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু। (ii) উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু ফেরেলের সূত্রানুসারে বাম দিকে বেঁকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। তাই এই বায়ুকে বলা হয় উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু।

বৈশিষ্ট্য: (i) নামকরণ: পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ু পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত। (ii) নিম্নচাপ বলয় অভিমুখী প্রবাহ: উত্তর ও দক্ষিণ উভয় গোলার্ধে 35°-60° অক্ষাংশের মধ্যে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় অভিমুখে পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়। (iii) বৃষ্টিপাতের আধিক্য: পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পশ্চিম অংশে বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। (iv) নাতিশীতোয় তৃণভূমির অবস্থান: পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্বাংশে বৃষ্টির পরিমাণ ক্রমশ কমে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ নাতিশীতোয় তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে। (v) গতিবেগ: এই বায়ুর গতিবেগ উত্তর গোলার্ধের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে (জলভাগের বণ্টন বেশি থাকার কারণে) বেশি।

[3] মেরু বায়ু: সুমেরু ও কুমেরু উচ্চচাপ বলয় থেকে যে বায়ু নিয়মিতভাবে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়, তাদের মেরু বায়ু বলে।

শ্রেণিবিভাগ: মেরু বায়ু দু-প্রকার (i) উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু: উত্তর গোলার্ধের মেরু বায়ু সুমেরু দেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে ফেরেলের সূত্রানুসারে ডান দিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। এর নাম উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু। (ii) দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের মেরু বায়ু কুমেরু দেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে ধাবিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্রানুসারে বাম দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু নামে প্রবাহিত হয়।

বৈশিষ্ট্য: (i) শুষ্ক প্রকৃতি: মেরু বায়ু অতিশীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির। (ii) শীতকালীন প্রাধান্য: এই বায়ুর প্রভাব বছরের অন্য সময়ের তুলনায় শীতকালে বেশি পরিলক্ষিত হয়। (iii) তুষারপাত ও বৃষ্টিপাত: মেরু বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্ব অংশে তুষারপাত ও সামান্য বৃষ্টিপাত হয় এবং দুই মেরুবৃত্তে ভয়াবহ তুষারঝড়ের সৃষ্টি হয়।

11. নিয়ত বায়ু বলতে কী বোঝ? যে-কোনো একটি নিয়ত বায়ুপ্রবাহের পরিচয় দাও।

Ans: নিয়ত বায়ু: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে কতকগুলি স্থায়ী উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ বলয় থাকার জন্য কতকগুলি বায়ুও সারাবছর ধরে ওই উচ্চচাপ বলয়গুলি থেকে নিম্নচাপ বলয়গুলির দিকে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্টপথে প্রবাহিত হয়। এদের বলে নিয়ত বায়ু। ভূপৃষ্ঠে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ুপ্রবাহ লক্ষ করা যায়। এগুলি হল [1] আয়ন বায়ু, [2] পশ্চিমা বায়ু এবং [3] মেরু বায়ু।

আয়ণ বায়ু: উভয় গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে দুটি বায়ু সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়, সেই বায়ু দুটিকে বলা হয় আয়ন বায়ু।

অন্য নাম: ‘আয়ন’ কথাটির অর্থ ‘পথ’। আগেকার দিনে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথ ধরে এই বায়ুপ্রবাহের সাহায্যে পালতোলা জাহাজে বাণিজ্য করার সুবিধা হত বলে এই বায়ুপ্রবাহকে আয়ন বায়ু বা বাণিজ্য বায়ু বলা হয়।

শ্রেণিবিভাগ: আয়ন বায়ু দু-প্রকার –

(i) উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু: উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় বা কর্কটীয় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে যাওয়ার সময় ফেরেল-এর সূত্রানুসারে একটু ডানদিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়। একে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু বলা হয়।

(ii) দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় বা মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে ছুটে যাওয়ার সময় ফেরেল-এর সূত্রানুসারে একটু বামদিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে একে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য:

(i) উত্তর গোলার্ধে প্রবাহের গতিবেগ: উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগ বেশি থাকায় (বেশি বাধাপ্রাপ্ত হয় বলে) উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ একটু কম, ঘণ্টায় 15-25 কিলোমিটার।

(ii) দক্ষিণ গোলার্ধে প্রবাহের গতিবেগ: দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগ বেশি থাকায় (কম বাধাপ্রাপ্ত হয়

বলে) দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ একটু বেশি, ঘণ্টায় 25-35 কিলোমিটার।

(iii) প্রবাহ অঞ্চল: আয়ন বায়ু সাধারণত নিরক্ষরেখার দু-দিকে 5° থেকে 25° অক্ষাংশের মধ্যে (অর্থাৎ দুটি গোলার্ধ মিলে 50° থেকে 60° অক্ষরেখা জুড়ে) সারাবছর প্রবাহিত হয়।

(iv) উচ্চতা ও জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা: ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে অর্থাৎ কম উষ্ণ অঞ্চল থেকে বেশি উষ্ণ অঞ্চলে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ুর উষ্ণতা ও জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

জলবায়ুতে প্রভাব:

(i) স্থলভাগের উপর প্রবাহের জন্য উত্তর গোলার্ধে এই বায়ু বৃষ্টিপাত ঘটায় না।

(ii) অপেক্ষাকৃত শীতল অঞ্চল থেকে উষ্ণ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয় বলে আয়ন বায়ু ক্রমশ উষ্ণ হয়। তাই আয়ন বায়ুর গতিপথে মহাদেশসমূহের পশ্চিমভাগে বৃষ্টিপাত হয় না, বড়ো বড়ো মরুভূমি (সাহারা, কালাহারি, আটাকামা, আরবীয় মরুভূমি প্রভৃতি) সৃষ্টি হয়েছে।

(iii) দক্ষিণ গোলার্ধের যেসব অংশে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু সমুদ্রের ওপর দিয়ে বয়ে আসে, সেখানে বৃষ্টিপাত হয়।

12. স্থানীয় বায়ু কাকে বলে? কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

Ans: ভূপৃষ্ঠের একটি নির্দিষ্ট স্থানে যখন ভূপ্রকৃতি, মৃত্তিকা, শিলার প্রকৃতি, উদ্ভিদের আচ্ছাদন, বায়ুর উষ্ণতা প্রভৃতির তারতম্যে স্থানীয়ভাবে বায়ুচাপের তারতম্য হয়, তখন সেখানকার উচ্চচাপ এলাকা থেকে নিম্নচাপ এলাকার দিকে এক ধরনের বায়ু প্রবাহিত হয়। স্থানীয় কারণে উৎপত্তি হয় বলে এদের স্থানীয় বায়ু বলা হয়। বায়ুর প্রকৃতি অনুসারে স্থানীয় বায়ুকে দুভাগে ভাগ করা যায়-উদ্বু বায়ু এবং শীতল বায়ু।

কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয়: কয়েকটি স্থানীয় ব্যয়ু হল –

[1] লু: গ্রীষ্মকালে দিনেরবেলা উত্তর-পশ্চিম ভারতের ভূভাগ যখন প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়, তখন ওই উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুও প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়ে প্রবল বেগে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়। এইরূপ প্রচণ্ড উল্ল ও শুষ্ক বাতাসকে বলা হয় লু। সাধারণত এই বায়ুর উষ্ণতা থাকে 43° সে-48°সে। গ্রীষ্মের দুপুরে বা অপরাহ্নে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে এই ‘লু’ তাপপ্রবাহ রূপে বয়ে যায়। সন্ধ্যার পর এই বায়ুর তীব্রতা অনেক কমে যায়। তবে প্রচণ্ড উত্তপ্ত এই বায়ুর প্রভাবে মানুষ-সহ বহু গবাদিপশু মারা যায়।

[2] ফন: ইউরোপের আল্পস পার্বত্য অঞ্চলের উত্তর (অনুবাত) ঢাল বেয়ে যে উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু নীচের দিকে নেমে রাইন নদী উপত্যকার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকেই বলে ফন বায়ু। এর ফলে কোনো কোনো সময়ে উপত্যকার উষ্ণতা 24 ঘণ্টার মধ্যে প্রায় 15° সে-20° সে পর্যন্ত বেড়ে যায়। এই উষ্ণ বায়ুর সংস্পর্শে পর্বতের বরফ গলে যায় এবং ওই বরফগলা জলে পার্বত্য উপত্যকায় তৃণভূমির সৃষ্টি হয়।

[3] চিনুক: উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞ্চলের পূর্ব ঢাল থেকে যে উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু প্রেইরি সমভূমিতে নেমে আসে তার নাম চিনুক। ইংরেজি ‘chinook’ শব্দের অর্থ ‘snow eater’ বা ‘তুষার ভক্ষক’। শীতকালে এই বায়ুর প্রভাবে রকি পর্বতের পাদদেশ-সহ সমগ্র অঞ্চলের তুষার গলে যায় বলে প্রেইরি অঞ্চলে বিস্তীর্ণ তৃণভূমি সষ্টি হয়েছে।

[4] সিরোক্কো: গ্রীষ্মকালে আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির উত্তরাংশ থেকে একপ্রকার অতি উষ্ণ, শুষ্ক ও ধুলোপূর্ণ বায়ু উৎপন্ন হয়ে উত্তরে ভূমধ্যসাগরের দিকে প্রবাহিত হয় এবং তারপর ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করে ইউরোপের দক্ষিণ প্রান্তে পৌঁছে যায়। ইটালির সিসিলিতে এই বায়ুকে বলে সিরোক্কো। আফ্রিকার উত্তর উপকূল পর্যন্ত এই বায়ু উষ্ণ ও শুষ্ক থাকলেও ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার পর যথেষ্ট আর্দ্র ও মনোরম হয়ে যায় (ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার আগে মিশরে এই বায়ুটিকেই বলে খামসিন।)

[5] মিস্ট্রাল: শীতকালে ইউরোপের আল্পস পর্বত থেকে দক্ষিণে ফ্রান্সের রোন নদী উপত্যকার দিকে যে শীতল ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে বলে মিস্ট্রাল। এটি অত্যন্ত শীতল ও শুষ্ক বায়ু। তাই এই বায়ুর প্রভাবে রোন উপত্যকার তাপমাত্রা যথেষ্ট কমে যায় এবং কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন তখন বিপর্যস্ত হয়।

[6] বোরা: শীতকালে ইউরোপের আল্পস পর্বতের দক্ষিণ ঢাল বেয়ে নীচের দিকে নেমে যে শীতল ও শুষ্ক বায়ু দক্ষিণ ইটালির অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের উপকূল অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে বলে বোরা। এই শীতল ও শুষ্ক বায়ুটির প্রভাবে অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে তীব্র শৈত্য প্রবাহের সৃষ্টি হয় এবং তার ফলে স্বাভাবিক জনজীবন বিঘ্নিত হয়।

[7] অন্যান্য স্থানীয় বায়ু: (i) দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ অংশে আন্দিজ পর্বতের পূর্ব ঢাল থেকে যে শীতল ও শুষ্ক বায়ু পম্পাস তৃণভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে বলে পাম্পেরো। (ii) আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে যে উষ্ণ, শুষ্ক ও ধূলিপূর্ণ বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে হারমাট্টান বলে।

13. জেট বায়ু বলতে কী বোঝ? জেট বায়ুপ্রবাহের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

Ans: জেট বায়ু: ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্ব সীমানায় পৃথিবীকে বেষ্টন করে যে ক্ষিপ্র গতিসম্পন্ন। সর্পিলাকার বিরামহীন জিওস্ট্রফিক বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে জেট বায়ু বলে।

জেট বায়ুপ্রবাহের বৈশিষ্ট্য: জেট বায়ুপ্রবাহের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

[1] উচ্চতাগত অবস্থান: ভূপৃষ্ঠ থেকে 9-12 কিমি উচ্চতায় ট্রপোস্ফিয়ার ও ট্রপোপজের মধ্যবর্তী অঞ্চলে এই বায়ুস্রোত প্রবাহিত হয়।

[2] গতিবেগ: এটি অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন বায়ুপ্রবাহ। এর গড় গতিবেগ 350-450 কিমি/ঘণ্টা।

[3] অক্ষাংশগত অবস্থান: জেট বায়ুস্রোত উভয় গোলার্ধে 20° থেকে 90° অক্ষরেখার মধ্যে প্রবাহিত হয়।

[4] বায়ুপ্রবাহের দিক: উত্তর গোলার্ধে ক্রান্তীয় পুবালি জেট ছাড়া সমস্ত জেট বায়ু পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে প্রধানত পূর্ব থেকে পশ্চিমে এঁকেবেঁকে সর্পিল আকারে প্রবাহিত হয়।

[5] প্রবাহের সময়: শীতের প্রারম্ভে এই বায়ুপ্রবাহ শুরু হয় এবং মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলে।

[6] গতিপ্রকৃতি: জেট বায়ুর গতি পরোক্ষভাবে বায়ুর সামগ্রিক সঞ্চলন (General Circulation of Wind)-কে প্রভাবিত করে।

14. প্রধান কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম ও তাদের উৎস লেখো।

Ans: প্রধান গ্রিন হাউস গ্যাস ও তাদের উৎস হল –

গ্রিনহাউস গ্যাস উৎস
কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂) জীবাশ্ম জ্বালানির দহন ও অন্যান্য দহন, কৃষিকাজে CO₂ এর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বনউচ্ছেদন নির্গত যৌগী প্রতিক্রিয়া।
কার্বন মনোক্সাইড (CO) জীবাশ্ম জ্বালানির অসম্পূর্ণ দহন, মানববর্জ্য দহন, বনউচ্ছেদন নির্গত যৌগী প্রতিক্রিয়া।
নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) নাইট্রোজেনযুক্ত রাসায়নিক সার, সুপারসনিক জেটবিমানের দহন, পশুপাখির মল ও মৃত জৈব বস্তু, জীবাশ্ম জ্বালানির দহন প্রভৃতি।
মিথেন (CH₄) ধান চাষের জমি, গবাদিপশুর দহন, জলাভূমি অঞ্চলে জৈব বস্তু অবক্ষয়ের কেমিক্যাল বিক্রিয়া, আবর্জনা ও খাদ্যের দহন, খনিজ খনির দহন, বর্জ্যব্যবস্থাপনা প্রভৃতি।
ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশনার যন্ত্র, হিমায়ন, দারুণ ক্যানানোল ফোম ও অন্যান্য প্রমোশনী দ্রব্য, কম্পিউটার চিপ প্রভৃতি।

15. সিসনের থার্মোমিটার-এর পরিচয় দাও।

Ans: সিসনের থার্মোমিটার: দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাপা হয় বিজ্ঞানী জেমস সিসন-এর আবিষ্কৃত থার্মোমিটার দ্বারা। একে অনেকেই সিসনের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার-ও বলে থাকেন।

পরিচিতি: প্রকৃতপক্ষে এই থার্মোমিটারটি ‘U’ আকারবিশিষ্ট কাঁচের নিষিক্ত। এই কাঁচনলটি একটি ফ্রেমের মধ্যে খাঁজকাটা আঁটসাঁট থাকে। দুই দিকে বাইরের কিছু অংশে দুটি বল থাকে কুইকসিলভার অংশ থাকে। দুই কাঁচনলের মধ্যে কিছু অংশে পারদ এবং বাকি অংশে অ্যালকোহল ও অ্যালকোহলের রঙ থাকে। বাস্তুবিন্দু বিশেষে বাইরে কাঁচনলের কেল্লা উপর বা নিচের দিকে বৃদ্ধি পায়। এতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা যায় বা কাঁচনলের নিচে দিকের কণার দিকে বৃদ্ধি পায়। এতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা যায়। এই থার্মোমিটার তাপমাত্রা মাপার জন্য ফারেনহাইট এবং সেলসিয়াস উভয়েই ব্যবহার করা হয়।

গুরুত্ব: সিসনের থার্মোমিটার দ্বারা দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সহজেই নির্ণয় করা যায় বলে দৈনিক, মাসিক ও বার্ষিক গড় তাপমাত্রা তথা এম্যানস তাপমাত্রার দৈনিক, মাসিক ও বার্ষিক পরিসংখ্যান পরিমাপ করা যায়।

16. বৈপরীত্য উত্তাপ বলতে কী বোঝ?

Ans: বৈপরীত্য উত্তাপ: বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে অর্থাৎ ট্রপোস্ফিয়ারে ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে তাপমাত্রা হ্রাস পায় (প্রতি 1000 মিটার উচ্চতায় প্রায় 6.4 °সে হারে)। তাপমাত্রার এই হ্রাসকে তাপমাত্রার স্বাভাবিক হ্রাসের হার (Normal lapse rate of temperature) বলা হয়।

বিপরীত ধারণা: কিন্তু কোনো কোনো সময় উচ্চতা বাড়লেও উষ্ণতা না কমে বরং বেড়ে যায়। একে বলা হয় বৈপরীত্য উত্তাপ (Inversion of temperature) I

বৈপরীত্য সৃষ্টির প্রধান কারণগুলি হল –

[1] পার্বত্য অঞ্চলে শীতল রাত্রি: পার্বত্য অঞ্চলে রাতের বেলা উপরের দিকের বাতাস শীতল এবং ভারী হয়ে পর্বতের গা বেয়ে নীচে নেমে আসে এবং শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য নীচের উপত্যকাটি উষ্ণ ও হালকা বাতাস উপরে উঠে যায়। এভাবে বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি করে।

[2] শীতল ভূমিভাগ: শীতকালে পরিষ্কার মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে ভূমিভাগ দ্রুত তাপবিকিরণ করে রাতে শীতল হয়ে পড়ে এবং ভূমিভাগ সংলগ্ন বাতাস ও শীতল হয়ে পড়ে, কিন্তু ওপরে বাতাস উষ্ণ থাকায় বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি করে।

[3] সীমান্ত সৃষ্টি: মধ্য অক্ষাংশে বায়ুপ্রাচীর বা সীমান্ত সৃষ্টি হলে শীতল বাতাস ভারী বলে নীচে এবং উষ্ণ বাতাস তুলনামূলক হালকা হয় বলে ওপরে অবস্থান করে। এভাবেও বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি করে।

[4] বায়ুর নিমজ্জন: উচ্চ স্থানে একটি বৃহৎ ভরের বাতাস নীচে নেমে আসলেও বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি হয়।

[5] বরফের সংস্পর্শ: উচ্চ অক্ষাংশে ভূমিভাগ বরফ আচ্ছাদিত থাকলে তার সংস্পর্শে বাতাস শীতল হয়ে পড়ে; যদি কিছুটা উচ্চতার বাতাস তুলনামূলক উষ্ণ থাকে। এভাবে বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি হতে পারে।

প্রভাব: (i) ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুতে কুয়াশা, শিশির তৈরি হয়। (ii) পার্বত্য অঞ্চলের ঢালে বা পর্বতগাত্রে বসতি গড়ে ওঠে। উপত্যকা বা ঢালের নিম্নাংশে রাত্রিকালীন শীতল আবহাওয়া বসবাসের উপযুক্ত হয় না।

Class 11 First (1st) Unit Test Question and Answer :

  • Class 11 Bengali 1st Semester Question Click here
  • Class 11 English 1st Semester Question Click here
  • Class 11 Geography 1st Semester Question Click here
  • Class 11 History 1st Semester Question Click here
  • Class 11 Education 1st Semester Question Click here
  • Class 11 Political Science 1st Semester Question Click here
  • Class 11 Philosophy 1st Semester Question Click here
  • Class 11 Sociology 1st Semester Question Click here
  • Class 11 Sanskrit 1st Semester Question Click here
  • Class 11 All Subjects First Semester Question Click here

Class 11 Second (2nd) Unit Test Question and Answer :

  • Class 11 Bengali 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 English 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 Geography 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 History 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 Education 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 Political Science 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 Philosophy 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 Sociology 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 Sanskrit 2nd Semester Question Click here
  • Class 11 All Subjects 2nd Semester Question Click here

Class 11 Suggestion 2025 – একাদশ শ্রেণীর সাজেশন ২০২৫

আরোও দেখুন:-

Class 11 Bengali Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 English Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Geography Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 History Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Political Science Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Education Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Philosophy Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Sociology Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 Sanskrit Suggestion 2025 Click here

আরোও দেখুন:-

Class 11 All Subjects Suggestion 2025 Click here

◆ একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার প্রস্তুতি, বিনামূল্যে নোটস, সাজেশন, PDF ও সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp Group এ Join হয়ে যাও।

Class 11 WhatsApp Groups Click Here to Join

একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Class 11th Geography Question and Answer / Suggestion / Notes Book

আরোও দেখুন :-

একাদশ শ্রেণীর ভূগোল সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here

FILE INFO : আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer with FREE PDF Download Link

PDF File Name আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer PDF
Prepared by Experienced Teachers
Price FREE
Download Link  Click Here To Download
Download PDF Click Here To Download

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

Update

[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]

[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]

Info : আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর

 Class 11 Geography Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Eleven XI (Class 11th) Geography Question and Answer Suggestion 

” আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Eleven XI / WB Class 11 / WBCHSE / Class 11 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB Class 11 Exam / Class 11th / WB Class 11 / Class 11 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর ( একাদশ শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন / একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ও উত্তর । Class-11 Geography Suggestion / Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer / Class 11 Geography Suggestion / Class-11 Pariksha Geography Suggestion / Geography Class 11 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / Class 11 Geography Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস একাদশ শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং প্রশ্ন ও উত্তর (Class 11 Geography Suggestion / West Bengal Eleven XI Question and Answer, Suggestion / WBCHSE Class 11th Geography Suggestion / Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer / Class 11 Geography Suggestion / Class 11 Pariksha Suggestion / Class 11 Geography Exam Guide / Class 11 Geography Suggestion 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / Class 11 Geography Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 Geography Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর 

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর।

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল 

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ প্রশ্ন উত্তর।

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির ভূগোল 

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ প্রশ্ন উত্তর – একাদশ শ্রেণি ভূগোল | Class 11 Geography Weather and Climate 

একাদশ শ্রেণি ভূগোল (Class 11 Geography Weather and Climate) – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) | Class 11 Geography Weather and Climate Suggestion একাদশ শ্রেণি ভূগোল – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন উত্তর।

একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণির ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Question and Answer, Suggestion 

একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) | পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল সহায়ক – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর । Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer, Suggestion | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Notes | West Bengal Class 11th Geography Question and Answer Suggestion.

একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ প্রশ্ন উত্তর | WBCHSE Class 11 Geography Question and Answer, Suggestion 

একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর | আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) । Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion.

WBCHSE Class 11th Geography Weather and Climate Suggestion | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল)

WBCHSE Class 11 Geography Weather and Climate Suggestion একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর । আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) | Class 11 Geography Weather and Climate Suggestion একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর ।

Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestions | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ, সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর ।

WB Class 11 Geography Weather and Climate Suggestion | একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন ও উত্তর 

Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) MCQ প্রশ্ন ও উত্তর । Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর।

West Bengal Class 11 Geography Suggestion Download WBCHSE Class 11th Geography short question suggestion . Class 11 Geography Weather and Climate Suggestion download Class 11th Question Paper Geography. WB Class 11 Geography suggestion and important question and answer. Class 11 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ একাদশ শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। একাদশ শ্রেণীর ভূগোল পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর।

Get the Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer by Bhugol Shiksha .com

Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB Class 11 Geography Suggestion with 100% Common in the Examination .

Class Eleven XI Geography Weather and Climate Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Exam 

Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Eleven XI Geography Suggestion is provided here. Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.

আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer 

অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” আবহাওয়া ও জলবায়ু (প্রাকৃতিক ভূগোল) একাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Class 11 Geography Weather and Climate Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Channel Follow Now