Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী

Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী

Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী : Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী নিচে দেওয়া হলো। এই Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী থেকে বাংলা রচনা, প্রশ্ন উত্তর গুলি স্কুল, কলেজ ও সমস্ত প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। আপনার যারা Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী খুঁজে চলেছেন, তারা নিচে দেওয়া আলোচনাটি ভালো করে পড়তে পারেন।

Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী

Bankim Chandra Chatterjee – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – এর জন্ম

বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (Bankim Chandra Chatterjee) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে জুন বাংলা ১২৪৫ , ১৩ ই আষাঢ় নৈহাটির কাঠাল পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন । বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একজন বিখ্যাত বাঙালি কবি, লেখক এবং সাংবাদিক ছিলেন। ভারতের জাতীয় সংগীত বন্দে মাতরম তার লেখা বহু বছর আগে। বাংলা ভাষায় রচিত এই গানটি এখনও মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমকে সতেজ করে তোলে। আমাদের দেশের মহান লেখকদের মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সেরা স্থান অর্জন করেছেন।

Bankim Chandra Chatterjee – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কে ছিলেন?

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (Bankim Chandra Chatterjee) ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়।

সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত জীবনী (Bankim Chandra Chatterjee Short Biography in Bangali):

নাম (Name) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (Bankim Chandra Chatterjee)
জন্ম (Birthday) ২৬ শে জুন ১৮৩৮ (26th June 1838)
অভিভাবক (Guardian) / পিতা ও মাতা  যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (বাবা)

দূর্গাদেবী (মা)

ছদ্দনাম (Pseudonym) কমলাকান্ত (Kamalakanta)
দাম্পত্যসঙ্গী (Spouse) মােহিনীদেবী / রাজলক্ষ্মী দেবী
পেশা (Career) সরকারি কর্মকর্তা, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক
উল্লেখযোগ্য উপন্যাস দুর্গেশনন্দিনী , কপালকুন্ডলা , মৃণালিনী , বিষবৃক্ষ , ইন্দিরা , যুগলাঙ্গুরীয় , চন্দ্রশেখর , রাধারাণী , রজনী , কৃষ্ণকান্তের উইল , রাজসিংহ , আনন্দমঠ , দেবী চৌধুরানী ও সীতারাম।
মৃত্যু (Death) ৮ ই এপ্রিল ১৮৯৪ (8th April, 1894)
মৃত্যুস্থান কলকাতা ,পটলডাঙ্গায়

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় -এর বংশপরিচয় :

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর পিতার নাম যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর মায়ের নাম দূর্গাদেবী । বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন তাদের তৃতীয় সন্তান । বঙ্কিমচন্দ্ররা তিন ভাই ছিলেন শ্যামাচরণ , সঞ্জীবচন্দ্র ও পূর্ণচন্দ্র । পূর্ণচন্দ্রের রচনা থেকে বঙ্কিমচন্দ্র সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যায় ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় -এর শিক্ষা :

 কুল পুরােহিত বিশ্বম্ভর ভট্টাচার্য পাঁচ বছর বয়সে বঙ্কিমের হাতেখড়ি দেন । ভর্তি হলেন গ্রামের পাঠশালায় । রামপ্রাণ সরকার ছিলেন ঐ পাঠশালার গুরুমশাই । কোন অক্ষরই বঙ্কিমকে দ্বিতীয়বার দেখাতে হত না । গুরুমশাই অত্যন্ত অবাক হয়ে বলেছিলেন , “ এত তাড়াতাড়ি করে যদি সব লিখে ফেল তবে তােমাকে আর কতদিন পড়াতে পারব ।

আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bengali

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর শৈশব :

 বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর সাত – আট বছর বয়সেই প্রকৃত শিক্ষা শুরু হয় ।  বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর বাবা তখন মেদিনীপুরের ডেপুটি সন ছিলেন । ১৯৪৪ খ্রি : ছয় বৎসর বয়সে সেখানে দাদা সঞ্জীবচন্দ্রের সঙ্গে তাকেও উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় । মিঃ এফ . টিড সাহেব ছিলেন প্রধান শিক্ষক । এখানে বঙ্কিমচন্দ্র অসাধারণ মেধার পরিচয় দেন । তিনি প্রধান শিক্ষকের বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন ।

 বঙ্কিমচন্দ্র কোন বছর অকৃতকার্য হতেন না । কয়েকবার বছরে দু’বার প্রমােশনও পেয়েছিলেন । 

 বাবার বদলির জন্যও ১৮৪৯ খ্রঃ বঙ্কিমচন্দ্রকে মেদিনীপুর ত্যাগ করে আবার কাঠালপাড়ায় চলে আসতে হল । এখানে পন্ডিত শ্রীরাম ন্যায়বাগীশের কাছে সংস্কৃত ও বাংলা ভাষা শেখেন । মহাভারতের কথা বিশ্লেষণ করে বােঝাতেন পন্ডিত হলধর তর্ক চূড়ামণি ।

 সে সময়ই বঙ্কিমের মনে সাহিত্যের বীজ দানা বাঁধতে লাগল । তিনি ১৮৪৯ খ্রীষ্টাব্দের ২৮ শে অক্টোবর চুঁচুড়ায় হাজি মহম্মদ মহসীন কলেজে ( হুগলী কলেজ ) বিদ্যালয় বিভাগে ভর্তি হন । সেখানে তিনি জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং আট টাকা বৃত্তি লাভ করেন ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর বিবাহ :

 যাদবচন্দ্র ১৮৪৯ খ্রি : ফেব্রুয়ারি মাসে নারায়নপুর গ্রাম নিবাসী পাঁচ বছরের মােহিনীদেবীর সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্রের বিয়ে দেন ।

 ১৮৫৬ খ্রীষ্টাব্দে তিনি সিনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা দেন । তাতেও প্রথম স্থান অধিকার করে কুড়ি টাকা বৃত্তি লাভ করেন । বিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই বঙ্কিমচন্দ্রের বাইরের বই পড়ার দিকে ভালােই ঝোঁক ছিল । কখনও শ্রেণীতে না গিয়ে গ্রন্থাগারে বসে নানা ধরনের বই পড়তেন । এভাবে তিনি অগাধ জ্ঞান অর্জন  করেন ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতা :

 কলেজে পড়ার সময় সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় বঙ্কিমচন্দ্রের গদ্য ও পদ্য লেখা বের হত । ১৮৫৩ খ্রীষ্টাব্দে তিনি সংবাদ প্রভাকর ’ -এ কবিতা প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণ করেন । তাঁর কবিতা ( কামিনীর প্রতি উক্তি ) সর্বশ্রেষ্ঠ বলে প্রমাণিত হল ও তিনি কুড়ি টাকা বৃত্তি পান । এই পত্রিকার সম্পাদক ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত কবিতার এই প্রতিযােগিতার নাম দিয়েছিলেন কলেজীয় কবিতা – যুদ্ধ । মনে মনে ঈশ্বরচন্দ্রকে গুরুর আসনে বসিয়েছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র ।

 ১৮৫৩ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র সংস্কৃত সাহিত্যে গভীরভাবে আত্মনিয়ােগ করেন । এ সময়েই রচনা করেন ললিতা ’ ও ‘ মানস

 এরপর ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন । এ সময়েই কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর ইংরেজী শিক্ষা :

 কলেজে পড়ার সময় বঙ্কিমচন্দ্র ইংরেজী লেখায় ও পড়ায় অত্যন্ত দক্ষ হয়ে উঠেছিলেন । নবীনচন্দ্র দাসের কাছেই ইংরেজী শিক্ষায় হাতে খড়ি হয় ।

 সংস্কৃত ও গণিত শাস্ত্রে তার বিশেষ দক্ষতা ছিল । গণিতের শিক্ষক যখন তাকে জ্যামিতির প্রতিপাদ্য বােঝাতেন তখন মন দিয়ে তা শুনতেন।এরপর বঙ্কিমচন্দ্র সিনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করেন এবং ট্রান্সফার নিয়ে চলে এলেন প্রেসিডেন্সী কলেজে । বঙ্কিমচন্দ্র প্রেসিডেন্সী কলেজের আইন বিভাগ থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন ।

 ১৮৫৮ খ্রীষ্টাব্দে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবর্তিত হল বি . এ . পরীক্ষা । এই পরীক্ষা খুবই কঠিন ছিল  ।ভালভাবে পড়াশুনা করে  তবেই ঐ পরীক্ষা দিতে হত । এজন্য ঐ বছরই এই পরীক্ষা দেবার কথা প্রথমে চিন্তা করেন নি । হঠাৎ পরীক্ষার দুই – তিন মাস আগে মন স্থির করলেন যে , ঐ বছরেই তিনি বি . এ . পরীক্ষা দেবেন । ঐ কলেজের অধ্যাপকরা ও ছাত্ররা তাকে ঐ পরীক্ষা দিতে নিষেধও করেছিলেন । কারণ তিনি এই সাধারণ বিভাগে বিশেষ কিছুই পড়াশনা করেন নি , কোন ক্লাশও করেন নি । এভাবে কোন ক্লাশ না করেও কিছুই পড়াশুনা না করে কোন ছাত্র পরীক্ষা দিতে পারে , এটা সকলের কাছে কল্পনাতীত ছিল ।বঙ্কিমচন্দ্র এ বিষয়ে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে ঐ পরীক্ষা দেন । সে বছর মােট তেরজন পরীক্ষার্থীর মধ্যে দশজন পরীক্ষা দিয়েছিলেন ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর প্রথম বাঙালি হিসেবে গ্রাজুয়েট :

 বি . এ . পরীক্ষার ফল যখন বের হল তখন চারদিকে হৈচৈ পড়ে গেল । বঙ্কিমচন্দ্র এই পরীক্ষার সর্বপ্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন । বঙ্কিমচন্দ্র ও যদুনাথ বসু প্রথম বাঙালি হিসেবে গ্রাজুয়েট হলেন ।

 বঙ্কিমচন্দ্রের এই অসাধারণ কৃতিত্বে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ , পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর , ছােট লাটসাহেব , অনেক ইংরেজ সাহেব ও দেশের মনীষীগন আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন । বঙ্কিমচন্দ্রের এই কৃতিত্বের জন্য বঙ্গ সরকারের সচিব ইয়ং সাহেব বঙ্কিমচন্দ্রকে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরী গ্রহণ করতে অনুরােধ করেন । পিতার সম্মতি নিয়ে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি এই চাকরী নিয়ে চলে যান কর্মস্থল যশােরে । এই সময়েই তার সঙ্গে দীনবন্ধু মিত্রের পরিচয় হয় । এই সময়ই Rajmohan’s wife নামে একটি ইংরেজী উপন্যাস রচনার কাজেও হাত দেন তিনি ।

ইতিমধ্যে যশােরে ১৮৫৯ খ্রীষ্টাব্দে স্ত্রী মােহিনী দেবীর মৃত্যু হয় । তখন বঙ্কিমচন্দ্রের বয়স মাত্র বাইশ বছর । প্রথমা পত্নীর বিয়ােগ । ব্যথা তাকেনিথর করে তুলেছিল । এবছরেই কবি ঈশ্বরচন্দ্র গপ্তেরও মৃত্যু হয় ।

 ১৮৬০ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র রাজলক্ষ্মী দেবীকে বিয়ে করেন । বঙ্কিমচন্দ্র খুলনা মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর পদে ১৮৬০ খ্রীষ্টাব্দে ৯ ই নভেম্বর যােগদান করেন । এসময় তিনি যশােহরের ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বও পালন করেন । ১৮৬৪ খ্রীষ্টাব্দের ৫ ই মার্চ পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর কর্মজীবন :

 ১৮৬৪ খ্রীষ্টাব্দে খুলনা ত্যাগ করে তিনি বারুইপুর চলে আসেন । এসময় তিনি ভয়ানক দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করেন । তার লেখা Rajmohan’s wife ধারাবাহিকভাবে সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয় ।

 বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস ‘ দুর্গেশনন্দিনী ’ প্রকাশিত হয় ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসে । এই সময়েই পিতা যাদবচন্দ্র দানপত্র লিখে যান ।

 ১৮৬৭ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র আইন কলেজে ভর্তি হন । তাঁর ‘ কপালকুন্ডলা ‘ উপন্যাসটি ১৮৬৬ খ্রিঃ প্রকাশিত হয় ।

 ১৮৬৮ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র আবার বারুইপুরে ফিরে আসেন । এবার তিনি আইন পরীক্ষা দেবার জন্য প্রস্তুতি নেন । ১৮৬৯ খ্রীষ্টাব্দে চাকুরিরত অবস্থায় প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে আইন পরীক্ষা দেন ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন । এ বছরেই তার মৃণালিনী ’ প্রকাশিত হয় ও ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় । তার শারীরিক অবস্থা বিশেষ ভাল না থাকায় কাশী , প্রয়াগ , দিল্লী ভ্রমণ করেন । এই উপন্যাসেই স্বদেশপ্রেমিক বঙ্কিমচন্দ্রের আবির্ভাব লক্ষ্য করা যায় ।

 ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্রের মাতৃবিয়ােগ হয় । ইংরেজী প্রবন্ধ পাঠ করে তিনি খ্যাতিলাভ করেন । বেথুন সােসাল সায়েন্স অ্যাসােসিয়েশনের সভায় ‘ বাঙ্গালার জনসাধারণের সাহিত্য বিষয়ে ইংরেজী প্রবন্ধ পাঠ করেন ।

 পরের বছর The Calcutta Review – এ ইংরেজী প্রবন্ধ Budhism Sankhya Philosophy ‘ প্রকাশিত হয় । ১৮৭৪ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র বারাসাত বদলি হন ও তারপর মালদহে বদলি হন । ১৮৭৫ খ্রীষ্টাব্দে তিনি হুগলীতে বদলি হন । বঙ্কিমচন্দ্র সম্পাদিত ‘ বঙ্গদর্শন ‘ বাংলা সাহিত্যের উর্ষ বিধানে তিনি পাঠক সমাজের কাছে এক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন । বহুবিবাহ , ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলন , বিজ্ঞান , রাজনীতি , ইতিহাস , সমাজসংস্কার ইত্যাদি প্রসঙ্গে ‘ বঙ্গদর্শনের মূল্যবান অভিমত আজও প্রণীধানযােগ্য । ঊনবিংশ শতাব্দীতে যেসব পত্র পত্রিকা দেশের সামাজিক , রাজনৈতিকও সাংস্কৃতিক জীবনের অন্যতম মুখপাত্র হয়ে উঠেছিল‘বঙ্গদর্শন’তারমধ্যে বিশেষ অগ্রগণ্য ।

 সমাজের সাধারণ মানুষের মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্রের যােগাযােগ যে কত গভীর ছিল এবং তাঁর সমাজ সৃষ্টি যে কত সুদূরপ্রসারী তার দৃষ্টান্ত সাম্য প্রবন্ধ । মার্কসবাদের দীক্ষায় দীক্ষিত না হয়েও , বঙ্কিমচন্দ্র যে বাংলাদেশের কৃষকদের দূর্দশার কারণগুলি দেখিয়েছেন , তা আজও প্রাসঙ্গিক । 

বঙ্কিমচন্দ্র ১৮৮১ খ্রীষ্টাব্দের ১৪ ই ফেব্রুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাওড়া ডেপুটি ষ্ট্রেট ও বর্ধমান ডিভিসনের কমিশনারের অস্থায়ী সহকারীরূপে দায়িত্ব পালন করেন ।

বঙ্কিমচন্দ্রের কোন পুত্র সন্তান ছিল না । তার কন্যারা হলেন । শরৎকুমারী , নীলাজকুমারী ও উৎপলকুমারী ।

 ১৮৭৬ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র বঙ্গদর্শনের সম্পাদকের কার্যভার । সঞ্জীবচন্দ্রের উপর ন্যস্ত করেন । এ বছরেই তিনি দীনবন্ধু মিত্রের জীবনী ’ প্রকাশ করেন ।

 ১৮৮১ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্রের পিতৃবিয়ােগ হয় । এবছরেই তিনি বেঙ্গল গর্ভনমেন্টের সহকারী সচিব পদে নিযুক্ত হন । ১৮৮২ খ্রীষ্টাব্দে আলিপুরে ও ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দে যশােরের শিলাইদহতে বদলি হন । 

বঙ্কিমচন্দ্রের সম্পাদনায় ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দে ‘ ঈশ্বর গুপ্তের জীবন চরিত কবিত্ব ’ প্রকাশিত হয় । এ বছরেই বঙ্কিমচন্দ্র কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট সদস্য নির্বাচিত হন ।

 এরপর ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র হাওড়ায় বদলি হন ও শ্রীমদ্ভাগবত গীতার বাংলা টীকা লেখা আরম্ভ করেন।

  সুদীর্ঘ তেইশ বছর বিভিন্ন সরকারী পদে অধিষ্ঠিত থেকে ১৮৯১ খ্রীষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে চাকরী থেকে অবসরগ্রহণ করেন । এ বছরেই পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যু হয় ।

 বঙ্কিমচন্দ্র Society for Higher Training প্রতিষ্ঠা করেন । ও তার সাহিত্য শাখার স্থায়ী সভাপতি হন ।

 ১৮৯২ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র রায় বাহাদুর ’ উপাধি লাভ করেন ।

 বঙ্কিমচন্দ্র ১৮৯৪ খ্রীষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসে সি . আই’ই উপাধি অর্জন করেন ।

 বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বঙ্কিমচন্দ্র একজন খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক হিসেবে পরিচিত হলেও , তিনি পরিণত বয়স পর্যন্ত কবিতা লিখেছিলেন । বঙ্কিমচন্দ্র রচিত প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘ ললিতা ।

 বঙ্কিমচন্দ্র অনেক কবিতা এবং অসংখ্য চিন্তাশীল প্রবন্ধ ও প্রস্তাব রচনা করেন । চমকপ্রদ ছিল তাঁর সাহিত্য জীবন । তিনি ছিলেন । একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক । তার লেখা ‘ আনন্দমঠ উপন্যাস দেশবাসীকে গভীরভাবে স্বদেশিকতায় উদ্বুদ্ধ করেছিল । তারই লেখা বন্দেমাতরম্ গান আমাদের জাতীয় সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে ।

 বঙ্কিমচন্দ্র যেভাবে শ্রম ও অধ্যবসায় দ্বারা নিজের জীবন গড়ে তুলেছিলেন ও দেশের মুক্তির জন্য মসী ’ ধরেছিলেন , তা এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর উপন্যাসসমূহ :

 বঙ্কিমচন্দ্র মােট চোদ্দটি উপন্যাস রচনা করেন । উপন্যাসগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য দুর্গেশনন্দিনী , কপালকুন্ডলা , মৃণালিনী , বিষবৃক্ষ , ইন্দিরা , যুগলাঙ্গুরীয় , চন্দ্রশেখর , রাধারাণী , রজনী , কৃষ্ণকান্তের উইল , রাজসিংহ , আনন্দমঠ , দেবী চৌধুরানী ও সীতারাম । এছাড়া তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থগুলি হল কৃষ্ণচরিত , লােকরহস্য , বিজ্ঞানরহস্য , ললিতা , দীনবন্ধু মিত্রের জীবনী , ধর্মতত্ত্ব , শ্রীমদ্ভাগবতগীতা প্রভৃতি ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর মৃত্যু :

 ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ৮ ই এপ্রিল বঙ্কিমচন্দ্র স্বল্পকাল রােগভােগের পর কলকাতা , পটলডাঙ্গায় অমৃতলােকে যাত্রা করেন ।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali QNA

  1. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর জন্ম কত সালে এবং কোথায় ?

Ans: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে জুন বাংলা ১২৪৫ , ১৩ ই আষাঢ় নৈহাটির কাঠাল পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ।

  1. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর মৃত্যু কত সালে এবং কোথায় ?

Ans: ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ৮ ই এপ্রিল বঙ্কিমচন্দ্র স্বল্পকাল রােগভােগের পর কলকাতা ,পটলডাঙ্গায় অমৃতলােকে যাত্রা করেন ।

3.বঙ্কিমচন্দ্র মােট কতটি উপন্যাস রচনা করেন ?

Ans: বঙ্কিমচন্দ্র মােট চোদ্দটি উপন্যাস রচনা করেন ।

4.বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর পিতার নাম কি?

Ans: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর পিতার নাম যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ।

5.বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর মায়ের নাম কি?

Ans: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর মায়ের নাম দূর্গাদেবী ।

  1. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর দাম্পত্যসঙ্গী কে ছিলেন?

Ans: রাজলক্ষ্মী দেবী।

  1. ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সংগীত বন্দে মাতরম গানের রচয়িতা কে?

Ans: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

  1. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের নাম কি?

Ans: দুর্গেশনন্দিনী , কপালকুন্ডলা , মৃণালিনী , বিষবৃক্ষ , ইন্দিরা , যুগলাঙ্গুরীয় , চন্দ্রশেখর , রাধারাণী , রজনী , কৃষ্ণকান্তের উইল , রাজসিংহ , আনন্দমঠ , দেবী চৌধুরানী ও সীতারাম।

  1. বঙ্কিমচন্দ্র রচিত প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম কি?

Ans: বঙ্কিমচন্দ্র রচিত প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘ ললিতা ।

  1. কত খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র রায় বাহাদুর ’ উপাধি লাভ করেন?

Ans: ১৮৯২ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্র ‘রায় বাহাদুর ’ উপাধি লাভ করেন ।

আরও দেখুন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনী – Michael Madhusudan Dutt Biography in Bengali

আরও দেখুন, আদি কবি মহাঋষি বাল্মীকি জীবনী  Maharishi Valmiki Biography in Bengali

Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali PDF Download | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী 

Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali PDF Download | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী। Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali PDF Download in here | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী বাংলা । Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali PDF Download | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী পিডিফ ফাইলে ডাউনলোড করো।

Bankim Chandra Chatterjee Rochona in Bengali PDF Download | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রবন্ধ রচনা 

Bankim Chandra Chatterjee Rochona in Bengali PDF Download | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রবন্ধ রচনা – Bankim Chandra Chatterjee Rochona in Bengali PDF Download | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রবন্ধ রচনা দেখুন – Bankim Chandra Chatterjee Rochona in Bengali PDF Download | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রবন্ধ রচনা উপরে আলোচনা করা হলো  । 

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী | Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী | Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী প্রশ্ন ও উত্তর | Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী । Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী 

        অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী  ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করুন এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন , ধন্যবাদ।