এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী - A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali
এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী - A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী

A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali : মিশাইল ম্যান অগ্নিপুরুষ এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) । ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ.পি.জে. আবদুল কালামকে মিশাইলম্যান বলা হয়ে থাকে । ২০০২ সালে কালাম তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর এই পদে আসীন থাকার পর এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) শিক্ষাবিদ, লেখক ও জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন। ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্নসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছিলেন এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam)

  মিশাইল ম্যান এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali বা এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর আত্মজীবনী বা (A.P.J. Abdul Kalam Jivani Bangla. A short biography of A.P.J. Abdul Kalam. A.P.J. Abdul Kalam Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

এ.পি.জে. আবদুল কালাম কে ছিলেন ? Who is A.P.J. Abdul Kalam ?

 এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) ছিলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একাদশ রাষ্ট্রপতি (২০০২ – ২০০৭)। কালাম তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে। পরে এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) ঘটনাচক্রে গণপ্রজাতন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। কালামের জন্ম বর্তমান ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমে। এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) পদার্থবিদ্যা বিষয়ে সেন্ট জোসেফ’স কলেজ থেকে এবং বিমান প্রযুক্তিবিদ্যা (এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) বিষয় নিয়ে মাদ্রাজ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এম আই টি) থেকে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর চল্লিশ বছর এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) প্রধানত রক্ষা অনুসন্ধান ও বিকাশ সংগঠন (ডিআরডিও) ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। 

মিশাইল ম্যান এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali :

নাম (Name) আভুল পকির জয়নুলাবেদীন আব্দুল কালাম বা এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam)
জন্ম (Birthday) ১৫ অক্টোবর ১৯৩১ (15th October 1931)
জন্মস্থান (Birthplace) রামেশ্বরম, ভারতবর্ষ
অভিভাবক (Parents)/পিতামাতা জয়নুল আবেদিন

অশিয়াম্মা

জাতীয়তা ভারতীয়
প্রাক্তন শিক্ষার্থী সেন্ট জোসেফ’স কলেজ, তিরুচিরাপল্লি

মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি

জীবিকা অধ্যাপক

লেখক

বিমান প্রযুক্তিবিদ

ধর্ম ইসলাম
কাজের মেয়াদ ২০০২ – ২০০৭
মৃত্যু (Death) ২৭ জুলাই ২০১৫ (27th July 2015)
মৃত্যুর কারণ (Cause of Death) হৃদরোগ

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জন্ম – A.P.J. Abdul Kalam Birthday :

 ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর তামিলনাড়ুর রামানাথপুরম জেলায় রামেশ্বরম দ্বীপসাগরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) । 

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর পিতা – A.P.J. Abdul Kalam Father :

 পিতা জয়নুল আবেদিন ছিলেন পেশায় মৎসজীবি । খুব বেশী শিক্ষিত মানুষ ছিলেন না তিনি । তবে মনের দিক থেকে তিনি ছিলেন খুবই বড়োমাপের । ছোটবেলা থেকে পুত্র আবদুলের মনে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন । বারবার তিনি গল্পছলে আবদুলকে বলতেন পরবর্তী কালে তুমি যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে পারে ।

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর পরিবার – A.P.J. Abdul Kalam Family :

এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) ছিলেন তিন ভাই আর একবোনের সংসার । জালালউদ্দিন আর সামসুদ্দিনের সঙ্গে আবদুলের ছোটোবেলার দিনগুলি কেটে গিয়েছিল । পরবর্তীকালে আবদুল স্বীকার করেছেন , বেড়ে ওঠার এই ব্যস্ত প্রহরে দু – ভাইয়ের সান্নিধ্য এ.পি.জে. আবদুল কালামকে (A.P.J. Abdul Kalam) নানাভাবে উপকৃত করেছিল । তিন ভাই ছিলেন পিতার আদর্শে গড়া সততার প্রতিমূর্তি। 

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর মাতা – A.P.J. Abdul Kalam Mother :

 মা আসিয়ানা সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি সংসারের কাজে ব্যস্ত থাকতেন । শত দুঃখকষ্ট জ্বালা যন্ত্রনাকে সহ্য করার মতো সহিষ্ণুতা লুকিয়ে ছিল তার অন্তরে ।

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর শৈশবকাল – A.P.J. Abdul Kalam Childhood :

 মায়ের পরিবারের পূর্বপুরুষরা ব্রিটিশ প্রদত্ত বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন । মা কিন্তু তার এই ভাগ্য বিপর্যয়কে হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলেন । তিনটি পুত্র এবং একটি কন্যা সন্তানকে কীভাবে মানুষের মত মানুষ করে বড়ো করা যেতে পারে , তাই ছিল তাঁর ইহজীবনের স্বপ্ন । ছোটবেলার খেলার সাথীদের কথাও মনে পড়ে যায় আবদুলের । মেলামেশা করতেন রামনাথ শাস্ত্রী , অরবিন্দন আর শিব প্রকাশনের সঙ্গে , তাঁরা সকলেই ছিলেন সনাতনপন্থী হিন্দু পরিবারের সন্তান । আর আবদুল গোড়া মুসলমান । কিন্তু শৈশবে তাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার ভেদ রেখা ছিল না । তখন তাঁরা সকলেই একসঙ্গে মেলামেশা করতেন ।

 ভারী সুন্দর ছিল শৈশবের এই অকলঙ্ক দিনগুলি । পৃথিবীর কোনো সমস্যার বোঝা তখন আমাদের মাথার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি । স্মৃতিচারণের মাধ্যমে বারবার এই হারিয়ে যাওয়া রঙিন দিনগুলির কথা শুনিয়েছেন এ.পি.জে. আবদুল কালাম । তখন সারা বছরের সবচেয়ে বড়ো উৎসব ছিল শ্রী সীতারাম কল্যানম্ উৎসব । গোটা পরিবার এই উৎসবে অংশ নিত । রাম সীতার মূর্তি মন্দির থেকে নৌকায় করে তুলে বিবাহমন্ডপে নিয়ে যাওয়া হত । আবার উৎসব শেষ হলে দুটি মূর্তিকে ফেরত নিয়ে যাওয়া হত মন্দিরে ।

 কাছেই একটি পুকুর ছিল রামতীর্থ । সেখানে এই দুটি মূর্তিকে শ্রদ্ধাসহকারে অবগাহন করানো হত । ভাবতে অবাক লাগে , আজ থেকে কত বছর আগে গোড়া মুসলমান পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও আবদুল পরম আগ্রহে ওই বাৎসরিক উৎসবে যোগ দিতেন । 

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর শিক্ষাজীবন – A.P.J. Abdul Kalam Education Life :

 দিন কাটতে থাকে এবার কালামকে বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে হবে । পিতা ছিলেন বিদ্যানুরাগী , সংস্কৃত সাহিত্যের গল্পকথা আবদুলকে শোনাতেন । মা ঠাকুরমার মুখ থেকে আবদুল রামায়ণ এবং মহাভারতের অনেক কাহিনীও শুনেছিলেন । এই ভাবে তাঁর হৃদয়ে সংস্কৃতির পরম্পরা প্রবাহিত হয়েছিল । তিনি ভর্তি হলেন রামেশ্বরম এলিমেন্টরি স্কুলে । পাশাপাশি বেঞ্চে বসে ক্লাস করেন নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ পুত্রের সঙ্গে । টিফিনে একই খাবার ভাগ করে খান । এখানে কোথায় যেন একটা অঘটন ঘটে গেল । কালাম তখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র । মাথায় টুপি পরতেন । এই টুপি দেখে বোঝা যেত এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) মুসলমান পরিবারের সন্তান । ক্লাসে সবসময় প্রথম বেঞ্চে বসতেন । একদিন কঠিন কঠোর নীতিবাগীশ শিক্ষকমশাই আবদুলকে প্রথম বেঞ্চ থেকে সরিয়ে দিলেন । আবদুল এই অপমান অনেক দিন মেনে নিতে পারেননি । অবশ্য পরবর্তীকালে ওই মাস্টারমশাই তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন । তিনি আবদুলকে আবার প্রথম বেঞ্চে ডেকে নেন ।

 রামেশ্বরমে তখন ছোটো ছোটো সামাজিক গোষ্ঠীর অস্তিত্ব ছিল । এক গোষ্ঠীর সদস্যের সঙ্গে অন্য গোষ্ঠীর সদস্যের ক্ষমতার লড়াই চলত । এই ভেদনীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ধ্বজা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক শিব সুব্রহ্মনিয়াম আয়ার । আয়ার ছিলেন আবদুলের অত্যন্ত প্রিয় শিক্ষক ।

 কালাম বড়ো হলেন । গ্রামের সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে উঠলেন । খেতে ভালোবাসতেন মাদ্রাজি খাবার , কলা , ভাত আর সম্বর । লঙ্কার সঙ্গে চাটনি । আবদুলের বাড়ি থেকে রামেশ্বরমের বিখ্যাত শিবমন্দিরটির দূরত্ব খুবই কম । সেই মন্দিরে মাঝে মাঝে যেতেন এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam)

 চোখ বন্ধ করলে ছোটোবেলার খন্ড খন্ড ছবি ভেসে ওঠে । রামেশ্বরম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত পক্ষিলছমন শাস্ত্রীর সঙ্গে পিতার আধ্যাত্মিক আলোচনা বুঝি এখনো শুনতে পান এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) । মুসলমান পিতা এবং হিন্দু পুরোহিত দুধরনের পোশাক পরে একই বিষয় নিয়ে ভাববিনিময় করছেন । 

 একটু বড়ো হয়ে আবদুল বাবার কাছে জানতে চেয়েছিলেন বাবা , প্রার্থনার কি কোনো আলাদা অর্থ আছে ?

 বাবা বলেছিলেন শোনো আবদুল , প্রার্থনার একটা আলাদা মূল্য আছে । প্রত্যেক মানুষের মধ্যে আত্মা আছে । প্রার্থনার দ্বারা আত্মার সাথে দেহের যোগসূত্র স্থাপিত হয় ।

 পরবর্তীকালে কালাম জানিয়েছেন আমার বাবার আধ্যাত্মিক চিন্তা ছিল সহজ সরল গ্রাম্য প্রকৃতির । তিনি বলতেন , এ পৃথিবীর সকলেই ঐশ্বরিক অস্তিত্বের অঙ্গ । সকলের মধ্যে স্বয়ং আল্লাহ বসবাস করছেন । 

 এবার কালাম এলেন বৃহত্তর শিক্ষাঅঙ্গনে । ভর্তি হলেন স্টুওয়াজ হাইস্কুলে । ছোটোবেলার সঙ্গী সাথীদের সাথে আর তার দেখা হতো না । কিশোর কালাম উপলব্ধি করলেন সেই শাশ্বত সত্য জীবনে চলার পথে এভাবেই আমরা একলা পথিক হয়ে যাই । এই হাইস্কুলের অনেকের কথাই মনে পড়ে । ওখানকার শিক্ষক ইয়াদুরাই সলোমনকে তিনি কখনো ভুলতে পারবেন না । তাকে দেখে কিশোর কালামের মনে হত , তিনি বোধহয় বৈদিক যুগের এক ব্রহ্মচারী । ছাত্রের জীবন অন্বেষণার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন ।

 সলোমন কালামকে কর্মযোগী পুরুষে পরিণত করেছিলেন । এই শিক্ষক কালামকে তিনটি মূল মন্ত্র শিখিয়েছিলেন । জীবনে সফল হতে গেলে তিনটি গুণের অধিকারী হতে হবে ইচ্ছা , বিশ্বাস এবং আশাবাদ । ইচ্ছা হল স্বপ্নের প্রথম প্রহর । যদি মনের মধ্যে ইচ্ছার বীজ তপ্ত না হয় তাহলে আমরা সফলতার গাছ কখনো দেখতে পাব না । দ্বিতীয় প্রহর হল বিশ্বাস । নিজের কর্তব্যবোধের ওপর অবিচল আস্থা থাকতে হবে । ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস এবং নির্ভরতা রাখতে হবে।

 সর্বশেষ প্রহরে আশাবাদ জেগে ওঠে । আশাবাদ না থাকলে অরণ্যচারী মানুষ আজ মহাকাশ বিজয়ী হতে পারতনা ।

 পরবর্তীকালে সলোমন রেভারেন্ড হয়েছিলেন । তিনি কালামকে বলেছিলেন , কোনো কাজ সার্থকভাবে পূর্ণ করার আগে তোমাকে সেই কাজটির জন্য বাসনা তৈরী করতে হবে । মনে মনে বারবার বলতে হবে , এই কাজটি আমার দ্বারাই হবে । এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য আমি এই পৃথিবীর বুকে জন্মগ্রহণ করেছি ।

 শিক্ষকের আর একটি কথা কালামকে উদ্দীপ্ত করত । পড়াতে পড়াতে তিনি প্রায়শই বলতেন , বিশ্বাসের জোরে তুমি ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারবে । 

পরবর্তীকালে কালাম এই ব্যাপারটি নিজের জীবনে সত্যি বলে প্রমাণ করেছিলেন । সাধারণ পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি জগৎ সভায় ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছেন ।

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর কলেজ জীবন – A.P.J. Abdul Kalam College Life :

এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) ছোটোবেলা থেকেই ছিলেন বিজ্ঞানের এক অসাধারণ প্রভাবশালী ছাত্র । স্কুলের পরীক্ষাতে বরাবর কৃতিত্বের সাথে পাশ করেছেন । তার কর্মজীবনটিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ১৯৫০ সালে সেন্ট জোসেফ কলেজে ভর্তি হলেন কালাম , ইন্টারমিডিয়েট কোর্সে । সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর ম্যাড্রাস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তি হন এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ।

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর কর্মজীবন – A.P.J. Abdul Kalam Work Life :

 ১৯৬০ – এ বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দেন ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে ( ডি আর ডি ও ) । কেরিয়ার শুরু হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছোট মাপের একটি হেলিকপ্টারের নকশা করার মধ্য দিয়ে । কিন্তু দ্রুতই উত্থান ঘটে তার । ভারতের মহাকাশ গবেষণার সংস্থা ইসরো – র সঙ্গে যুক্ত হন তিনি । দেশীয় প্রযুক্তিতে উন্নত সামরিক মিসাইল তৈরির প্রকল্পে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন । মহাকাশযান ও স্যাটেলাইট বহনকারী পি এস এল ভি এবং এস এল ভি থ্রি রকেট তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ভারতের ‘ মিসাইল ম্যান ‘ বলা হয় তাঁকে । পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে একই সারিতে ভারতকে তুলে আনার জন্য তাঁর অবদান অনস্বীকার্য । ১৯৯৮ সালে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা সংক্রান্ত ‘ পোখরান – টু ’ প্রকল্পের চিফ প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর ছিলেন তিনি ।

 দেশের প্রথম সারির বিজ্ঞানী হিসাবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন । রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করা । রাষ্ট্রপতির পদে দাঁড়ানো এবং সেই পদে নির্বাচিত হওয়া । রাষ্ট্রপতি হিসাবে বিভিন্ন বিতর্কমূলক কাজে জড়িয়ে পড়া । নিজেকে রাজনৈতিক দলাদলির উর্দ্ধে রাখা , এমন অনেক আদর্শ স্থানীয় কাজ করে আজ কালাম আমাদের কাছে এক মহান মানুষে পরিণত হয়েছেন । আজও মাঝে মাঝে তিনি বিভিন্ন জায়গাতে ভাষণ দিতে যান । যেখানেই যান , সেখানেই তাঁর শিক্ষকসুলভ দার্শনিকতা প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে ।

 সব অর্থে কালামকে আমরা এক ভারতীয় ঋষির সঙ্গে তুলনা করতে পারি । জীবনে তিনি দ্বার পরিগ্রহ করেননি । আজীবন ব্রহ্মচারী তাপসের মতো জীবন কাটিয়েছেন । তাই তাঁর প্রতি আমরা আমাদের অস্তরের সশ্রদ্ধ প্রণিপাত নিবেদন করি । ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাসে এ.পি.জে. আবদুল কালামকে এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব হিসাবে আমরা অবশ্যই চিহ্নিত করব । 

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর আত্মজীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Autobiography : 

 ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আত্মজীবনী— “ উইঙ্গস অফ ফায়ার ” । এই গ্রন্থের পাতায় পাতায় বিধৃত আছে মানব কল্যাণে উৎসর্গীকৃত প্রাণ এই মহান বিজ্ঞানীর অন্তরের ইচ্ছা ।

[আরও দেখুন, জগদীশ চন্দ্র বসুর জীবনী – Jagdish Chandra Bose Biography in Bengali]

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর উল্লেখযোগ্য অবদান :

 উড়ান ও স্যাটেলাইট বহনকারী পি এস ভি এবং এস এল ভি থ্রি রকেট তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ভারতের ‘ মিসাইল ম্যান ‘ বলা হয় । পরমানু শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে একই সারিতে ভারতকে তুলে আনার জন্য এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) এর অবদান অনস্বীকার্য । ১৯৯৮ সালে পরমানু অস্ত্র পরীক্ষা সংক্রান্ত ‘ পোখরান – টু ’ প্রকল্পের চিফ প্রজেক্ট কো – অর্ডিনেটর ছিলেন তিনি । 

এ.পি.জে. আবদুল কালাম ভারতের ১১ তম রাষ্ট্রপতি – A.P.J. Abdul Kalam India’s 11th President :

 ২০০২ সালে ভারতের একাদশতম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) । ২০০২-২০০৭ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) । পরে এ.পি.জে. আবদুল কালাম (A.P.J. Abdul Kalam) শিলং আই আই এম – এ ভিজিটিং প্রফেসর হন । 

[আরও দেখুন, প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জীবনী – Prafulla Chandra Ray Biography in Bengali]

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর সন্মান গুলি – A.P.J. Abdul Kalam Prizes :

এক নজরে সম্মান : পদ্মভূষণ ( ১৯৮১ ) পদ্মবিভূষণ ( ১৯৯০ ) ইনস্টিটিউট অব ডিরেক্টর্স ( ইন্ডিয়া ) -র ডিশটিংগুইশড ফেলো ( ১৯৯৪ ) ভারতরত্ন ( ১৯৯৭ ) ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার ( ১৯৯৭ ) বীর সাভারকর পুরস্কার ( ১৯৯৮ ) রামানুজন পুরস্কার ( ২০০০ ) ইংল্যান্ডের উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ( ২০০৭ ) কিং চার্লস টু মেডেল ( ২০০৭ ) আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ( ২০০৮ ) সিঙ্গাপুরের নান্যাঙ্গ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ( ২০০৮ ) ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ইন্টারন্যাশনাল ভোন কর্মণ উইংস অ্যাওয়ার্ড ( ২০০৯ ) হুভার মেডেল ( ২০০৯ ) আমেরিকার ওকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ( ২০০৯ ) কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ( ২০১০ ) ইনস্টিটিউট অব ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্সের সাম্মানিক সদস্যপদ ( ২০১১ ) কানাডার সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ( ২০১২ ) ইংল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ( ২০১৪ ) । 

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর মৃত্যু – A.P.J. Abdul Kalam Death :

 ২৭ শে জুলাই ২০১৫ ভারতের পরমানু গবেষনার পথিকৃৎ তথা দেশের ‘ মিসাইল ম্যান ‘ , ভারতের একাদশতম প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে ( আবুল পকির জয়েনুল আবদিন ) এ.পি.জে. আবদুল কালামের ( ৮৪ ) জীবনাবসান হয় ।

 ২৭ জুলাই ২০১৫ সন্ধে সাড়ে ছটায় শিলংয়ের আই আইএমের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মঞ্চের ওপরেই পড়ে যান । এ.পি.জে. আবদুল কালামকে (A.P.J. Abdul Kalam) স্থানীয় বেথানি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় । সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছিল । 

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali FAQ :

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম কে ছিলেন ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম ছিলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একাদশ রাষ্ট্রপতি ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জন্ম কবে হয় ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জন্ম হয় ১৫ অক্টোবর ১৯৩১ সালে ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর পিতার নাম কী?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর পিতার নাম জয়নুল আবেদিন ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর মাতার নাম কী ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর মাতার নাম অশিয়াম্মা ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম কবে ভারতের রাষ্ট্রপতি হোন ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম ২০০২ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি হোন ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম কবে পদ্মভূষণ পান ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম ১৯৮১ সালে পদ্মভূষণ পান ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর আত্মজীবনী কবে প্রকাশিত হয় ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর আত্মজীবনী ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয় ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম কবে ভারতরত্ন পান ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম ১৯৯৭ সালে ভারতরত্ন পান ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম কত সালে সেন্ট জসেফ কলেজে ভর্তি হন ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম ১৯৫০ সালে সেন্ট জসেফ কলেজে ভর্তি হন ।

  1. এ.পি.জে. আবদুল কালাম কবে মারা যান ?

Ans: এ.পি.জে. আবদুল কালাম ২৭ জুলাই ২০১৫ সালে মারা যান ।

[আরও দেখুন, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর জীবনী – Satyendra nath Bose Biography in Bengali

আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bengali

আরও দেখুন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী – Ishwar Chandra Vidyasagar Biography in Bengali

আরও দেখুন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনী – Sourav Ganguly Biography in Bengali

আরও দেখুন, মেরি কম এর জীবনী – Mary Kom Biography in Bengali]

এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali

   অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali  ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali পড়ে কেমন লাগলো কমেন্টে জানাও। আশা করি এই এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali পোস্টটি থেকে উপকৃত হবে। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।