চে গুয়েভারা এর জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali
চে গুয়েভারা এর জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali : সশস্ত্র সংগ্রামী অগ্নিপুরুষ চে গুয়েভারা বিশ্বের সশস্ত্র সংগ্রামের ইতিহাসে চে গুয়েভারা এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব । কিউবার বুকে চে গুয়েভারা (Che Guevara) আগুন ঝরিয়ে ছিলেন । মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন মাথা উঁচু করে । দীর্ঘদিন চে গুয়েভারাকে (Che Guevara) আত্মগোপন করে থাকতে হয়েছিল । যৌবনের বিলাস অবহেলায় দমন করেছেন । হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তির মহানায়ক ।
সশস্ত্র সংগ্রামী অগ্নিপুরুষ চে গুয়েভারা এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । চে গুয়েভারা এর জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali বা চে গুয়েভারা এর আত্মজীবনী বা (Che Guevara Jivani Bangla. A short biography of Che Guevara. Che Guevara Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) চে গুয়েভারা এর জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
চে গুয়েভারা কে ছিলেন ? Who is Che Guevara ?
চে গুয়েভারা (Che Guevara) ছিলেন একজন আর্জেন্টিনীয় মার্কসবাদী, বিপ্লবী, চিকিৎসক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, গেরিলা নেতা, কূটনীতিবিদ, সামরিক তত্ত্ববিদ এবং কিউবার বিপ্লবের প্রধান ব্যক্তিত্ব। চে গুয়েভারা (Che Guevara) এর প্রকৃত নাম ছিল এর্নেস্তো গেভারা দে লা সের্না (স্পেনীয়: Ernesto Guevara de la Serna)। তবে চে গুয়েভারা (Che Guevara) সারা বিশ্ব লা চে বা কেবলমাত্র চে নামেই পরিচিত।
সশস্ত্র সংগ্রামী অগ্নিপুরুষ চে গুয়েভারার জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali :
নাম (Name) | চে গুয়েভারা (Che Guevara) |
জন্ম (Birthday) | ১৪ জুন ১৯২৮ (14th June 1828) |
জন্মস্থান (Birthplace) | রোসারিও, আর্জেন্টিনা |
অভিভাবক (Parents)/পিতামাতা | এর্নেস্তো গেভারা লিঞ্চ
সেলিয়া ডে লা সা |
পেশা (Occupation) | চিকিৎসক, লেখক, গেরিলা, সরকারি অফিসিয়াল |
দাম্পত্য সঙ্গী (Spouse) | হিলডা গাডি (১৯৫৫-১৯৫৯)
আলেইডা মার্চ (১৯৫৯-১৯৬৭, তার মৃত্যু পর্যন্ত) |
সন্তান | ইলদা (১৯৫৬-১৯৯৫), আলেইদা (জন্ম ১৯৬০), কামিলো (জন্ম ১৯৬২), সেলিয়া (জন্ম ১৯৬৩), এর্নেস্তো (জন্ম ১৯৬৫) |
সমাধি | চে গেভারা স্মৃতিসৌধ
সান্তা ক্লারা, কিউবা |
প্রতিষ্ঠান | ছাব্বিশে জুলাই আন্দোলন, ইউনাইটেড পার্টি অফ দ্য কিউবান সোশ্যালিস্ট রেভোলিউশন ন্যাশানাল লিবারেশন আর্মি (বলিভিয়া) |
মৃত্যু (Death) | ৯ অক্টোবর ১৯৬৭ (9 October 1967) |
চে গুয়েভারার জন্ম ও পিতামাতা – Che Guevara Birthday and Parents :
১৯২৮ সালের ১৪ ই জুন আর্জেন্তিনার রোজারিও শহরে আরনেসটো চে গুয়েভারার জন্ম হয়েছিল । চে গুয়েভারা (Che Guevara) হলেন ঝিনচ এবং সেলিয়া দ্য লাসারনার প্রথম সন্তান ।
চে কিন্তু তাঁর জন্মদত্ত নাম নয় । চে গুয়েভারা (Che Guevara) মাঝে মধ্যে কথায় কথায় এই শব্দটি ব্যবহার করতেন । এই শব্দটি গুয়ারানি অঞ্চলের আদিবাসীদের মুখের ভাষা । তারা ‘ আমার ‘ অর্থে এই শব্দের ব্যবহার করে । আবার প্যাম্পাস অঞ্চলের অধিবাসীরা স্বরভঙ্গি বা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে এই শব্দটির দ্বারা মানুষের সব কটি অনুভূতিকে প্রকাশ করে । বিস্ময় , উল্লাস , দুঃখ , কোমলতা , সমর্থন অথবা প্রতিবাদ – চে – র মাধ্যমে সবই বলা যায় ।
চে গুয়েভারার ছদ্মনাম – Che Guevara Pseudonym Name :
এই অব্যয়টি এত প্রিয় হবার জন্যই কিউবার বিপ্লবীরা ডন আরনেসটোর ছেলে আরনেসটো গুয়েভারার নাম দিয়েছিলেন চে । লড়াইয়ের সময় এই ডাকনামটি চে গুয়েভারা (Che Guevara) এর ছদ্মনাম হয়ে ওঠে , মূল নামের সঙ্গে জুড়ে যায় । কিউবা এবং পৃথিবীর সর্বত্র চে গুয়েভারা (Che Guevara) আরনেসটো চে গুয়েভারা নামেই পরিচিত ।
চে বিপ্লবের উত্তরাধিকার বহন :
জন্মসূত্রে চে বিপ্লবের উত্তরাধিকার বহন করেছিলেন । চে গুয়েভারা (Che Guevara) একাধিক আইরিশ বিদ্রোহী স্প্যানিশ রাজ্য দখলকারী এবং আর্জেন্তিনার দেশপ্রেমিকের রক্তের উত্তরাধিকার বহন করেছেন । অস্থিরমতি পূর্বপুরুষদের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য চে গুয়েভারা (Che Guevara) মধ্যে বর্তেছিল ।
চে – র প্রকৃতির মধ্যে এমন কিছু ছিল , যা তাঁকে বিপজ্জনক অভিযানের দিকে টানত ৷
চে – র বাবাও যৌবনে এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে থাকতে পারতেন না । প্রথমে প্যারাগুয়ে সীমাত্তের নিকটবর্তী মিশিওয়া নামে আর্জেন্তিনার এক সুদূরতম প্রদেশে একটি চা বাগানে মালিক হয়ে বসেছিলেন । তারপর আসেন কর্দোবা , বুয়েনস আয়ার্সে এবং অন্যান্য শহরে গৃহনির্মাণ প্রতিষ্ঠান তৈরি করে । এই ব্যবসায় প্রচন্ড ক্ষতি হয় । অন্যদের ঠকিয়ে বড়োলোক হতে চাননি । তিনি জানতেন , জীবনে অর্থই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ নয় । সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল নিজের পরিষ্কার বিবেক । চে গুয়েভারা (Che Guevara) এর আর্থিক অবস্থা কোনোদিনই ভালো ছিল না । তা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য কার্পণ্য করেন নি । আরনেসটোর জন্য পিতা সবথেকে বেশি গর্ববোধ করে গেছেন । পিতার চোখে আরনেসটো এক নির্ভীক যোদ্ধা।
চে গুয়েভারার শিক্ষাজীবন – Che Guevara Education Life :
ছোটো থেকেই চে ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র । ভালোভাবেই প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করলেন । চে গুয়েভারা (Che Guevara) এর সারা জীবনের স্বপ্ন ছিল মেডিকেল স্কুলের ছাত্র হবেন । শেষপর্যন্ত এই স্বপ্নটাও সফল হল । ১৯৪৬ সালে বুয়েনস আয়ার্স – এর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুলে ভরতি হলেন । দীর্ঘ সাতবছর ধরে মন দিয়ে পড়াশোনা করলেন । ১৯৫৩ সালে মেডিকেল গ্র্যাজুয়েট হয়ে বেরিয়ে এলেন ।
ইতিমধ্যে কয়েকটি অভিযানে অংশ নিয়েছেন । হঠাৎ কী খেয়ালে এক তৈলবাহী ট্যাঙ্কারের নাবিক হিসেবে গেলেন ত্রিনিদাদ ও ব্রিটিশ গায়নাতে । তখন চে গুয়েভারার (Che Guevara) বয়েস খুবই কম । মাত্র বাইশ বছর । সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষের দুঃখ – কষ্ট নিজের চোখে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করলেন । বুঝতে পারলেন , সাম্রাজ্যবাদ কীভাবে পৃথিবীকে ধ্বংস করতে উদ্যত । নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষরা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে । পাশবিক জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে ।
চে গুয়েভারার ভ্রমন অভিযান – Che Guevara Tour :
১৯৫১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সমস্ত লাতিন আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন । চিলি , পেরু , কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলাতে চে গুয়েভারা (Che Guevara) এর পায়ের চিহ্ন আঁকা হয়েছিল । ফিরে এলেন ১৯৫২ – র আগস্ট মাসে । চে আবার আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে গিয়েছিলেন । ফিরে এলেন বুয়েনস আয়ার্সে । এবার লাতিন আমেরিকায় দ্বিতীয়বার পর্যটন ।
১৯৫৩-৫৪ , বলিভিয়া , পেরু , সালভাদোর , কোস্টারিকা , পানামা , কলম্বিয়া এবং ইকোয়েডর । সেই সময় চে একটি চাঞ্চল্যকর অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন । গুয়েতেমালার প্রেসিডেন্ট আরবেনজের সরকারকে রক্ষা করার সংগ্রামে অংশ নিলেন । শেষ অব্দি এই অভিযান সাফল্যমন্ডিত হয়নি । প্রেসিডেন্ট আরবেনজো পরাস্ত হলেন । ভগ্ন মনোরথে চে ফিরে এলেন মেক্সিকোতে যোগ দিলেন মেক্সিকোর ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওলজিতে । চিকিৎসকের বৃত্তি গ্রহণ করে বছর দুই থাকলেন ।
চে গুয়েভারার গ্রানামা অভিযান :
তখনই তাঁর জীবনে এক স্মরণীয় ঘটনা ঘটে গেল । দেখা হল বিশ্বের আর এক মহান বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে । বিশ্বের এই দুই মহান বিপ্লবী একে অন্যকে দেখে চিনতে পারলেন । ফিদেলের বিপ্লবী ইউনিটে যোগ দিলেন । শুরু হল গ্রানমা অভিযানের প্রস্তুতি ।
চে গুয়েভারার কারাবাস – Che Guevara’s imprisonment :
অবশ্য এর জন্য পুলিশ চে – কে নানাভাবে ভৎসিত করে । শুধু তাই নয় , মেক্সিকো শহরে তাঁকে কারাবাস করতে হয় । এই ঘটনাটি ঘটে ১৯৫৬ সালের জুন থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে । ইতিমধ্যে ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে ৮১ জন বিপ্লবী গ্রানমায় পৌঁছে গেছেন । চে তাদের সঙ্গী হলেন । ২ রা ডিসেম্বর এলেন কিউবার উপকূলে ।
কিউবার বিপ্লবী যুদ্ধ – Cuba War :
১৯৫৬-১৯৫৯ পর্যন্ত কিউবার বৈপ্লবিক যুদ্ধে চে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন । যুদ্ধে তিনি দু – দুবার মারাত্মকভাবে আহত হন । তা সত্ত্বেও রণক্ষেত্র থেকে নিষ্ক্রান্ত হননি । চে গুয়েভারা (Che Guevara) এর সাহসিকতার পরিচয় পেয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা পর্যন্ত অবাক হয়ে গিয়েছিল ।
চে গুয়েভারার মেজর পদ – Che Guevara Major Title :
১৯৫৭ সালে শুরু হল উভেরোর যুদ্ধ চে গুয়েভারাকে (Che Guevara) মেজর পদে নিযুক্ত করা হল । চে গুয়েভারা (Che Guevara) চতুর্থ বিপ্লবী বাহিনীর নেতৃত্বভার গ্রহণ করলেন । বৈপ্লবিক চিন্তাধারার স্ফুরণ ঘটালেন । অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে গেরিলা পদ্ধতিতে মার্কিন বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করতে শুরু করলেন ।
চে গুয়েভারা চিরডেদন্ডের অষ্টম বাহিনীর প্রধান :
১৯৫৮ সালের ২১ আগস্ট চিরডেদন্ডের অষ্টম বাহিনীর প্রধান হিসাবে তাঁকে দেখতে পাওয়া গেল । চে গুয়েভারা (Che Guevara) সাভিল্লা প্রদেশে আক্রমণ কেন্দ্রীভূত করলেন । ১৬ ই অক্টোবর বিজয় গর্বে চে এসক্যাস্ট্রে পর্বতমালার সন্নিহিত অঞ্চলে প্রবেশ করলেন । শুরু হল সাস্তাক্লারের ওপর আক্রমণ ৷ চে প্রত্যেকটি আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ।
চে গুয়েভারার বিবাহ জীবন – Che Guevara Marriage Life :
অবশেষে সান্তাক্লারা ঈপ্সিত মুক্তিলাভ করল । চে এবার এগিয়ে চলেছেন হাভানার দিকে । হাভানায় প্রবেশ করে ক্যাবানা দুর্গ দখল করলেন । সেই সময় চে গুয়েভারা (Che Guevara) কিউবার নাগরিকত্ব পান । সেদেশের ভূমিপুত্রদের সমান অধিকার পান । বিয়ে করেন অ্যালিইদামার্চকে ।
চে গুয়েভারার বিশ্বভ্রমণ – Che Guevara World Tour :
১২ ই জুন থেকে ৪ ঠা সেপ্টেম্বরের মধ্যে চে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ করেছিলেন । চে গুয়েভারা (Che Guevara) এসেছিলেন মিশর , সুদান , পাকিস্তান , ভারত , ব্রহ্মদেশ , ইন্দোনেশিয়া , সিংহল , জাপান , মরক্কো , যুগোশ্লেভিয়া ও স্পেনে । তখন চে গুয়েভারাকে (Che Guevara) কিউবার জাতীয় ব্যাঙ্কের অধিকর্তা করা হয়েছে ।
[আরও দেখুন, আলবার্ট আইনস্টাইন জীবনী – Albert Einstein Biography in Bengali]
চে গুয়েভারার বিখ্যাত গ্রন্থ – Che Guevara Famous Book :
চে এবার এলেন সোভিয়েত ইউনিয়নে । প্রযুক্তিবিদ্যা , বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতি সংক্রান্ত এক প্রদর্শনীতে অংশ নিলেন । প্রকাশিত হল তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ গেরিলা যুদ্ধের কৌশল ‘ । চে গুয়েভারাকে (Che Guevara) অর্থনীতি মিশনের প্রধান হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন , চেকোশ্লেভাকিয়া , জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র , চিন ও প্রজাতন্ত্র কোরিয়াতে আসতে হয়েছিল ।
চে গুয়েভারার কর্ম জীবন – Che Guevara Work Life :
চে এবার অন্য জীবনধারার প্রতি আকৃষ্ট হলেন । চে গুয়েভারা (Che Guevara) বুঝতে পেরেছিলেন , শুধু সশস্ত্র বিপ্লব করলেই চলবে না । বিপ্লবকে দীর্ঘায়ত করতে হবে । যাতে দেশের সমস্ত মানুষ একইরকম অধিকার পান , চে গুয়েভারা (Che Guevara) এর ব্যবস্থা করতে হবে । প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে চে এখন এই কাজে মন দিলেন । একটির পর একটি শান্তিচুক্তি সই করলেন । অর্থনৈতিক চুক্তি করা হল সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে । মিলিত হলেন ইউরি গ্যাগরিনের সঙ্গে । চে – র সবথেকে বড়ো কৃতিত্ব , তিনি একদিকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং অন্যদিকে সোভিয়েত সাম্যবাদ এই দুয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে গেছেন ।
[আরও দেখুন, জেমস ওয়াট এর জীবনী – James Watt Biography in Bengali]
চে গুয়েভারা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য – Che Guevara Communist party Member :
কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য হলেন ও জাতীয় নেতৃত্ব ও সদস্য পদ গ্রহণ করলেন ।
চে গুয়েভারাকে (Che Guevara) বারবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ করতে হয়েছে । যেখানেই গেছেন , সেখানে গিয়ে সাম্যবাদের জয়গান গেয়েছেন । অংশ নিয়েছেন অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ৪৭ তম বার্ষিক উৎসবে । হাউস অফ ফ্রেন্ডশিপ – এ গিয়ে সোভিয়েত – কিউবা মৈত্রী সমিতির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন । শুধু তাই নয় , চে – র রাজনৈতিক জীবনের সবথেকে বড়ো কৃতিত্ব হল নিউইয়র্কে রাষ্ট্র সংঘের সাধারণ অধিবেশনে কিউবার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব করা ।
চে গুয়েভারার মৃত্যু – Che Guevara Death :
এই হলেন চে , সাংগঠনিক দক্ষতার শীর্ষে উঠেও চে গুয়েভারা (Che Guevara) কিন্তু বৈপ্লবিক দিনগুলিকে ভুলতে পারেননি । ১৯৬৭ সালের ২৩ শে মার্চ আমরা চে গুয়েভারাকে (Che Guevara) আবার সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নিতে দেখলাম । বলিভিয়া জাতীয় মুক্তিবাহিনী তার নেতৃত্বে সামরিক অভিযান শুরু করে । তিন মহাদেশীয় সংহতি সংগঠনের কাছে চে একটি বার্তা পাঠান । শেষ অব্দি তাঁকে হাভানায় ডাকা হয় । ৮ ই অক্টোবর ইউরোপ যুদ্ধে আহত হয়ে চে বন্দি হন । ৯ ই অক্টোবর ১৯৬৮ সাল হিগুয়েরা গ্রামে রেঞ্জারস বাহিনী তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে । ১৫ ই অক্টোবর ফিদেল কাস্ত্রো বলিভিয়াতে চে – এর মৃত্যুর কথা সরকারীভাবে স্বীকার করেন । এইভাবেই শেষ হয়ে যায় এক সশস্ত্র বিপ্লবীর জীবন- ইতিহাস । পৃথিবীর বুকে মাত্র চল্লিশ বছর বেঁচেছিলেন চে গুয়েভারা । অথচ আজও আখের ক্ষেতে আগুন জ্বলে উঠলে আমরা চে – র কথাই মনে করি । তার মৃত্যু নেই । সত্যিই চে – র মৃত্যু নেই ।
চে বেঁচে আছেন বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের অন্তরের অন্তরতম স্থানে । আজ পৃথিবীর বুকে রাজনৈতিক অবস্থান অনেকখানি পাল্টে গেছে । বিশ্ব রাজনীতির অঙ্গন থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের চিরবিদায় ঘটেছে । আজ বিশ্বের একছত্র সম্রাট হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবির্ভূত হয়েছে । বিশ্বায়নের ফলে সব দেশে বইছে খোলা হাওয়া । আজকের দিনে চে – র মতো মানুষের দাম কতখানি ? অনেকে এই প্রশ্ন করে থাকেন । তবে একটা কথা মনে হয় । তা হল , মানুষের জাগ্রত বিপ্লবী সত্তার কি অবসান ঘটে গেছে ? আজও পৃথিবীর বুকে শোষন বেঁচে আছে । তাই আজও শোষকও শোষিতের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিদ্যমান ।
যতদিন পৃথিবীর বুকে নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত মানুষ বেঁচে থাকবে ততদিন চে গুয়েভারা সেই সব অবহেলিত বঞ্চিত মানুষের মনের মণিকোঠায় চিরভাস্বর হয়ে বেঁচে থাকবেন ।
চে গুয়েভারার জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali FAQ :
- চে গুয়েভারা কে ছিলেন ?
Ans: চে গুয়েভারা ছিলেন ছিলেন একজন আর্জেন্টিনীয় মার্কসবাদী, বিপ্লবী, চিকিৎসক, লেখক ।
- চে গুয়েভারার জন্ম কোথায় হয় ?
Ans: চে গুয়েভারার জন্ম হয় আর্জেন্টিনায় ।
- চে গুয়েভারা কবে জন্মগ্রহণ করেন ?
Ans: চে গুয়েভারা জন্মগ্রহণ করেন ১৪ জুন ১৯২৮ সালে ।
- চে গুয়েভারার পিতার নাম কী ?
Ans: চে গুয়েভারার পিতার নাম এর্নেস্তো গেভারা লিঞ্চ।
- চে গুয়েভারার মাতার নাম কী ?
Ans: চে গুয়েভারার মাতার নাম সেলিয়া ডে লা সা ।
- চে গুয়েভারার বিখ্যাত গ্রন্থ কী ?
Ans: চে গুয়েভারার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ গেরিলা যুদ্ধের কৌশল ‘ ।
- চে গুয়েভারার মৃত্যু কিভাবে হয় ?
Ans: চে গুয়েভারার মৃত্যু হয় হত্যা করে ।
- চে গুয়েভারার স্ত্রীর নাম কী ?
Ans: চে গুয়েভারার স্ত্রীর নাম হিলডা গাডি (১৯৫৫-১৯৫৯) আলেইডা মার্চ (১৯৫৯-১৯৬৭) ।
- চে গুয়েভারার সন্তানের নাম কি?
Ans: চে গুয়েভারার সন্তানের নাম ইলদা (১৯৫৬-১৯৯৫), আলেইদা (জন্ম ১৯৬০), কামিলো (জন্ম ১৯৬২), সেলিয়া (জন্ম ১৯৬৩), এর্নেস্তো (জন্ম ১৯৬৫)।
- চে গুয়েভারার মৃত্যু কবে হয় ?
Ans: চে গুয়েভারার মৃত্যু হয় ৯ অক্টোবর ১৯৬৭ সালে।
[আরও দেখুন, উইলিয়াম শেকসপিয়র এর জীবনী – William Shakespeare Biography in Bengali
আরও দেখুন, সক্রেটিসের জীবনী – Socrates Biography in Bengali
আরও দেখুন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী – Ishwar Chandra Vidyasagar Biography in Bengali
আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bengali
আরও দেখুন, আর্কিমিডিস এর জীবনী – Archimedes Biography in Bengali]
চে গুয়েভারা এর জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” চে গুয়েভারা এর জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali ” পােস্টটি পড়ার জন্য। চে গুয়েভারা এর জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali পড়ে কেমন লাগলো কমেন্টে জানাও। আশা করি এই চে গুয়েভারা এর জীবনী – Che Guevara Biography in Bengali পোস্টটি থেকে উপকৃত হবে। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।