সারদা দেবীর জীবনী - Sarada Devi Biography in Bengali
সারদা দেবীর জীবনী - Sarada Devi Biography in Bengali

সারদা দেবীর জীবনী

Sarada Devi Biography in Bengali

সারদা দেবীর জীবনী – Sarada Devi Biography in Bengali : 

 –আমাকে তোমার কি মনে হয় ?

 —যে কালীমাতা মন্দিরে বিরাজিতা , তিনিই আমার পাশে উপবিষ্টা ।

 –তোমার মধ্যে আমি সাক্ষাৎ জগদম্বাকে দেখতে পাই ।

 পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং শ্রীশ্রীমার উপরোক্ত কথোপকথনে শ্রীমার প্রকৃত স্বরূপই প্রকাশ পেয়েছে ৷ 

পরমপুরুষের প্রকৃত সহধর্মিনী ছিলেন শ্রীমা ।

 ঠাকুর বলতেন , ‘ ওরে তোমার এত ছেলে হবে যে , সকলে মা মা বলে অস্থির করে তুলবে । ‘ 

বর্তমানে শ্রী শ্রীমার জয়গানে বিশ্ব আজ মুখরিত । সারা বিশ্ব জুড়ে আজ তার স্বরণোৎসব চলছে ।

 হিন্দু নারী এবং হিন্দু – সহধর্মিনীর প্রকৃত প্রকাশ শ্রীশ্রীমার মধ্যে মূর্ত্ত হয়ে উঠেছিল । বিবাহিত হয়েও তিনি ছিলেন আজীবন ব্রহ্মচারিণী ; আবার ব্রহ্মচারিণী হয়েও গৃহিনী । তাঁর জীবন ছিল সরল , শুদ্ধ এবং প্রার্থনার নিবিড় নীরবতার মত শান্তিময় ও সাধনাময়।

  জগন্মাতা শ্রী শ্রী মা সারদামণি বা সারদা দেবী এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । সারদা দেবী এর জীবনী – Sarada Devi Biography in Bengali বা সারদা দেবী এর আত্মজীবনী বা (Sarada Devi Jivani Bangla. A short biography of Sarada Devi. Sarada Devi Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) সারদা দেবী এর জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

সারদা দেবী কে ছিলেন ? Who is Sarada Devi ?

সারদা দেবী (Sarada Devi) ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি হিন্দু ধর্মগুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসের পত্নী ও সাধনাসঙ্গিনী এবং রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সংঘজননী। ভক্তগণ সারদা দেবীকে (Sarada Devi) শ্রীশ্রীমা নামে অভিহিত করে থাকেন। রামকৃষ্ণ আন্দোলনের বিকাশ ও প্রসারে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

জগন্মাতা শ্রী শ্রী মা সারদামণি মুখোপাধ্যায় বা সারদা দেবী এর সংক্ষিপ্ত জীবনী – Sarada Devi Short Biography in Bengali :

নাম (Name) সারদামণি মুখোপাধ্যায় বা সারদা দেবী (Sarada Devi)
জন্ম (Birthday) ২২ ডিসেম্বর ১৮৫৩ (22nd December 1853)
জন্মস্থান (Birthplace) জয়রামবাটী, বাঁকুড়া, বাংলা প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
অভিভাবক (Parents)/পিতামাতা রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং শ্যামাসুন্দরী দেবী
জাতীয়তা ভারতীয়
মৃত্যু (Death) ২০ জুলাই ১৯২০ (20th July 1920)
মৃত্যুস্থান  উদ্বোধন কার্যালয় ভবন (মায়ের বাড়ি) কলকাতা, বাংলা প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত 

সারদা দেবীর জন্ম – Sarada Devi Birthday :

সারদা দেবীর (Sarada Devi) ৯ ই পৌষ ১২৬০ বঙ্গাব্দে বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত জয়রামবাটী গ্রামে শ্রীমার জন্ম হয় । শ্রীমার রাশ্যাশ্রিত নাম শ্রীমতী ঠাকুরমণি দেবী এবং প্রচলিত নাম শ্রীমতী সারদামণি । 

সারদা দেবীর পিতামাতা – Sarada Devi Parents :

 শ্রীমার বাবা রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মা শ্যামাসুন্দরী দেবী । মা শ্যামাসুন্দরী দেবী অত্যন্ত স্নেহময়ী জননী ছিলেন । বাবা ছিলেন গ্রাম্য সরল ভক্তিমান পুরুষ ।

 শ্রীমার সারাজীবনই অপার্থিব ঘটনায় পূর্ণ । বিশেষ করে তার অলৌকিক জন্মকাহিনী অপরের মনকে প্রভাবিত না করলেও তার বাবা – মার মনে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছিল । 

 শোনা যায় , বাবা – মা আজীবন কন্যাকে শ্রদ্ধাপূর্ণ , সম্ভ্রমপূর্ণ স্নেহ দ্বারা লালন – পালন করেছেন । স্বয়ং জগজ্জননী মহামায়া তাদের কন্যারূপে পৃথিবীতে আবিভূর্ত হয়েছেন । এই ছিল তাঁদের বিশ্বাস । 

 মা শ্যামাসুন্দরী তাই প্রায়ই বলতেন , ‘ মাগো , তুই আমার কে মা ? আমি কি তোকে চিনতে পারছি মা ? ‘ উত্তরে কন্যা অন্যমনস্কভাবে বলতেন , ‘ কে আবার ? আমার কি চারটে হাত হয়েছে নাকি ? তাহলে তোমার কাছে আসব কেন ? ’ 

 এই বিশ্বাসের মূলে ছিল সত্য – সত্যই এক অপূর্ব কাহিনী । একবার শ্যামাসুন্দরী বাড়ির পাশে একটি বেলতলায় শৌচে যান । এ সময় তিনি দেখেন একটি অপূর্ব সুন্দরী কন্যা বেল গাছ থেকে দশদিক আলো করে নিচে নেমে এল এবং তাঁর গলা জড়িয়ে ধরল । সঙ্গে সঙ্গে তিনি অচৈতন্য হয়ে যান এবং জ্ঞানলাভ করার পর তিনি অনুভব করেন , যেন কন্যাটি , তার উদরে প্রবেশ করে ।

 এ ঘটনার কিছুকাল পরেই বাবা রামচন্দ্র এরকমই একটি অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন । ঠিক এর দশমাস পরে গর্ভাশ্রিতা দেবী ধরাতলে অবতীর্ণ হন । আর তিনিই হলেন শ্রীমা সারদামণি । 

সারদা দেবীর শৈশবকাল – Sarada Devi Childhood :

 প্রচন্ড দারিদ্রের কারণে তাদের সংসার সচ্ছল ছিল না । বাবা রামচন্দ্র যজন – যাজন , কৃষিকাজ আর বাক্ – সূত্র – রচনা করে জীবিকা অর্জন করতেন । কিন্তু এ দারিদ্র তাদের স্বাভাবিক চরিত্র – মাধুর্যকে অবনত করতে পারেনি ।

 বাবা – মায়ের প্রথম সন্তান ছিলেন সারদামণি । তাই বাবার প্রতিটি কাজেই তিনি ছিলেন দক্ষিণহস্তস্বরূপা । শৈশবে বাবার সবকাজে সাহায্য করা , চাষের ক্ষেতে মজুরদের খাবার দিয়ে আসা , বাড়িতে গরুর ঘাস কাটা এবং ধান কাটার সময় ক্ষেতে গিয়ে আঁটি বাঁধা পর্যন্ত সব কাজ সারদা দেবী (Sarada Devi) করতেন ।

 কৈশোরে পা দেবার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর স্বভাবের স্বরূপ প্রকাশ পেতে লাগল । সাধারণত সারদা দেবী (Sarada Devi) ছিলেন গম্ভীর প্রকৃতির মেয়ে । বালসুলভ চপলতা তার ছিল না । তিনি যেন সবসময় আপনাতে আপনিই বিভোর হয়ে থাকতেন । দেব – দেবীর মূর্তি নিয়ে খেলা করতে ভালবাসতেন । ফুল – চন্দন দিয়ে মূর্তি সাজিয়ে তিনি একদৃষ্টিতে সেদিকে চেয়ে থাকতেন । সারদা দেবীর (Sarada Devi) সেই সময়ের ধ্যানরতা মূর্তি যেন ভবিষ্যতের শ্রীমার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় ।

সারদা দেবীর শিক্ষাজীবন – Sarada Devi Education Life :

 শ্রীমার প্রকৃতরূপ শৈশবেই বিকশিত হয়েছিল । শৈশবে লেখাপড়ার সুযোগ সারদা দেবী (Sarada Devi) পাননি । তবুও সারদা দেবী (Sarada Devi) ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্রী লক্ষ্মীর কাছে কিছু কিছু পড়তে শিখেছিলেন । তা থেকেই তিনি রামায়ণ – মহাভারত পাঠ করতেন । এছাড়া যাত্রা , কথকতা প্রভৃতি শুনে তার মধ্যে স্বাভাবিক ধর্মপ্রবণতা জাগ্রত হয়েছিল ।

সারদা দেবীর বিবাহ জীবন – Sarada Devi Marriage Life :

 শৈশবে শ্রীমার মধুর সরল স্বভাব তাঁকে সকলের স্নেহাস্পদা করে তুলেছিল । এভাবে সারদা দেবী (Sarada Devi) ছয় বছর বয়সে পা দেবার সময়েই তাঁর বিয়ে হয় । এ সময়ে সমাজে বাল্যবিবাহ প্রচলিত ছিল । শ্রীশ্রীঠাকুরের বয়স তখন চব্বিশ বছর । জগন্মাতার দর্শনলাভে আকুল এবং পাগলপ্রায় শ্রীরামকৃষ্ণকে সংসারে ফিরিয়ে আনবার জন্য শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মা শ্রীমার সঙ্গে তার বিয়ে দেন । 

 ঠাকুর ও শ্রীমার বিয়ে সম্বন্ধে এক অদ্ভুত ঘটনা শোনা যায় । সাধক শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন , “ জয়রামবাটীতে আমার জন্য কন্যা ‘ কুটা – বাঁধা ’ হয়ে আছে । আবার বিয়ে বাড়িতে অনেক লোকের মধ্যে গদাধরকে দেখে নিতান্ত শিশু সারদামণি বলেছিলেন , ‘ আমি ওকেই বিয়ে করব । ‘ 

শ্রীরামকৃষ্ণের সেবায় সারদামণির আত্মনিয়োগ :

 ১৮৬৭ খ্রীষ্টাব্দে দক্ষিণেশ্বর থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ কামারপুকুর এলে সারদামণির প্রথম পতিমিলন হয় । এ সময় তাঁর বয়স চৌদ্দ বছর মাত্র । সারদামণি সে সময় থেকে শ্রীরামকৃষ্ণের সেবায় আত্মনিয়োগ করলেন । শ্রীরামকৃষ্ণের সাহচর্য্যে তাঁর মনে আধ্যাত্মিক ভাব প্রকাশ পেতে লাগল ৷ বিবাহিত জীবনে তাঁরা হলেন প্রকৃত সাধক – সাধিকা । দেবতূল্য পতির কাছে তিনি নবজীবন লাভ করলেন । দীক্ষিতা হলেন সহধর্মিনীর উৎকৃষ্ট আদর্শে । 

সারদা দেবীর দক্ষিণেশ্বরে যাওয়া – Sarada Devi Going to Dakshineswar :

 সাত মাস পরে শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ফিরে এলেন । শ্রীরামকৃষ্ণের সাধন ভজনে আত্মমগ্নতা ও উন্মত্ততা বিকৃতভাবে শ্রীমার কানে এলে তিনিও দক্ষিণেশ্বরে যাবার জন ব্যাকুল হয়ে ওঠেন । 

 কলকাতায় গঙ্গাস্নানের নাম করে বাবার সঙ্গে শ্রীমা অসুস্থ অবস্থায় দক্ষিণেশ্বরে পৌঁছালেন । দক্ষিণেশ্বরে আসার সময় আবার এক অপার্থিব ঘটনা ঘটে । শোনা যায় যে , পথিমধ্যে স্বয়ং মা জগন্মাতা তাঁকে দেখা দেন।

 দক্ষিণেশ্বরে স্বামীর যত্নে সারদামণি সুস্থ হয়ে শাস্তড়ী মণির সঙ্গে বাস করতে লাগলেন । এসময় স্বামীর সাহচর্যে তাঁর পত্নীত্ব শিষ্যত্বে পরিণত হয়েছিল । এসময়ে তার হৃদয়ে সাধিকার ভাব জাগ্রত হয় ।

 শ্রীশ্রী ঠাকুর বলতেন , ‘ সারদার মন , তুষার ধবল , পবিত্র , কামগন্ধহীন না হলে আমার মন দেহভূমির্তে নেমে আসত কিনা কে জানে ? ‘

 ১৮৭৩ খ্রীষ্টাব্দে ফলহারিনী কালীপূজার রাতে সারদামণিকে কালীজ্ঞানে শ্রীশ্রী ঠাকুর পূজোও করেছিলেন । আর এখানেই শ্রীসারদামায়ের জীবনে চরম ও পরম সার্থকতা । এভাবেই প্রায় বহু বছর অতিবাহিত করবার পর স্বামীর কাছে থেকে ১৮৭৪ খ্রীষ্টাব্দে পিত্রালয়ে প্রত্যাগমন করেন এবং গৃহকর্মে মনোনিবেশ করেন । 

 এর বছর দুয়েক পরেই আমাশয় রোগগ্রস্ত স্বামীর সেবার জন্য তিনি আবার দক্ষিণেশ্বরে আগমন । স্বামীকে সুস্থ করে শেষে নিজেও ঐ রোগে আক্রান্ত হন । শীর্ণদেহে তিনি আবার জয়রামবাটীতে ফিরে আসেন এবং সিংহবাহিনীর মন্দিরে পূজো দিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন । শোনা যায় , এ সময় তাঁর পুজোয় সিংহবাহিনী জাগ্রত হয়েছিলেন । 

 এভাবে সারদামণির জীবন পতির সেবা ও সাধনার মধ্য দিয়ে কেটেছিল । এ সেবায় যাতে বিন্দুমাত্র ত্রুটি না ঘটে , সেজন্য তিনি অধিকাংশ সময় দক্ষিণেশ্বরে নহবততলায় বাস করতেন । যদিও ঠাকুরের শিষ্যগণ তাঁকে আলাদা ঘর তৈরি করে দিয়েছিলেন , তাহলেও তিনি ঠাকুরের সেবায় বিয়ের সম্ভাবনায় আত্মসুখ পরিহার করেছিলেন।

সারদা দেবীর ঈশ্বর দর্শন লাভ :

 দক্ষিণেশ্বরে অবস্থানকালে সারদামণি সকালে ও সন্ধ্যায় নিয়মিতভাবে পূজো ও ধ্যানে বসতেন । জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তার এই অভ্যাস অটুটই ছিল । এখানে থাকাকালে সারদামণি ঈশ্বর দর্শন লাভ করেন । 

 ভাবসমাধি প্রভৃতির দ্বারা শ্রীশ্রীঠাকুরের আধ্যাত্মিক ঐশ্বর্য প্রকাশ পেলেও শ্রীমা ছিলেন স্বয়ংসিদ্ধ সাধিকা । সংসারের সব মানুষই তার কৃপা ছায়ায় স্নিগ্ধ শাস্তি লাভ করত । সন্তানের দুঃখে তাঁর অন্তঃকরণে মাতৃস্নেহধারা বিগলিত হত ; তিনি শান্তির বারিধারা সঙ্গে নিয়ে সন্তানের কাছে তার কল্যাণ কামনায় ছুটে যেতেন ।

সারদা দেবীর শ্যামপুকুরে আসা – Sarada Devi Comes to Shyampukur :

 ১৮৮৫ খ্রীস্টাব্দে দুরারোগ্য কর্কট – রোগে আক্রান্ত স্বামীর চিকিৎসার জন্য শ্রীমা তার সঙ্গে শ্যামপুকুরে আসেন । এখানে তিনি ঐকান্তিক সেবায় স্বামীর কষ্টের লাঘব করেছিলেন সত্য , কিন্তু স্বামীকে পার্থিব মায়ায় আর বেঁধে রাখতে পারেননি । 

[আরও দেখুন, স্বামী বিবেকানন্দ এর জীবনী – Swami Vivekananda Biography in Bengali]

শ্রীরামকৃষ্ণ এর আমৃতলোকে যাত্রা :

 ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে যুগশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব অমৃতলোকে যাত্রা করলেন।

 শোনা যায় , দেহত্যাগের পর শ্রীশ্রী ঠাকুর শ্রীশ্রীমাকে দেখা দিয়ে বৈধব্যবেশ ধারণ করতে নিষেধ করেন । সেজন্য শ্রীমা অবশিষ্ট জীবনে সরু লালপাড় শাড়ী আর বালা পরিধান করতেন । 

সারদা দেবীর তীর্থভ্রমণ :

 স্বামীর মৃত্যুর পর শোকতপ্ত হৃদয় নিয়ে শ্রীমা তীর্থভ্রমণে বের হন । ভারতের অনেক তীর্থস্থান পরিভ্রমণ করে শান্তির প্রলেপ হৃদয়ে নিয়ে তিনি পিত্রালয়ে ফিরে এলেন । এই তীর্থভ্রমণে তাঁর একমাত্র সাধনা ছিল যে , মানুষের দোষ যেন তিনি না দেখতে পান । তাঁর হৃদয় যেন জ্যোৎস্নার মত শুভ্র ও সুন্দর হয়।

 সত্যই সেই সাধনাবলে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক শক্তিধারণ করে শ্রীশ্রীমা লোককল্যাণে জীবন উৎসর্গ করেন । এসময়ে তিনি অনেক সাধু – সন্ন্যাসীকে মন্ত্রদীক্ষাও দান করেন । 

[আরও দেখুন, শ্রীরামকৃষ্ণ এর জীবনী – Ramakrishna Biography in Bengali]

সারদা দেবীর মৃত্যু – Sarada Devi Death :

 এভাবে জনকল্যাণের কাজে অবশিষ্ট জীবন ব্যয় করে শ্রীশ্রীমা ৪ ঠা শ্রাবণ , ১৩২৭ বঙ্গাব্দে এই ধরাধাম ত্যাগ করে চিরশান্তিলোকে প্রস্থান করেন । 

 শ্রীশ্রীমা ছিলেন ভারতীয় নারীর আদর্শের প্রতীক । তিনি প্রাচীনা হয়েও নবীনা ছিলেন । ভারতীয় প্রাচীন আদর্শে মন্ডিত হয়েও তিনি আধুনিক হিন্দুনারীর সমুজ্জল প্রতীক ছিলেন । 

 ধর্মবিজয়ের জন্য যাত্রার আগে স্বামী বিবেকানন্দ পাশ্চাত্য দেশে শ্রীমায়ের আশীর্বাদের ভিখারি হয়েছিলেন । তাঁর আশীর্বাদপুত অধুনা বিস্তৃত রামকৃষ্ণ মিশন আজ বিশ্ববিখ্যাত ৷ 

 শ্রীমা বলতেন , “ শ্রীরামকৃষ্ণ ও আমি অভেদ । আমার আশীষ তাঁর আশীষতুল্য বলে মনে করবে ।” 

 জাতিধর্মনির্বিশেষে তার করুণা সবাইকে শান্তি ও আধ্যাত্মিক পথের সন্ধান দিয়েছে । সীতা , সাবিত্রী , শ্রীরাধা , মীরাবাঈ প্রভৃতির মত শ্রীশ্রীমাও ভারতীয় নারী জাতির আদর্শে পূর্ণ প্রকাশিত হয়েছিলেন ।

সারদা দেবীর জীবনী – Sarada Devi Biography in Bengali FAQ :

  1. সারদা দেবীর জন্ম কবে হয় ?

Ans: সারদা দেবীর জন্ম কবে ২২ ডিসেম্বর ১৮৫৩ সালে।

  1. সারদা দেবী কে ছিলেন ?

Ans: সারদা দেবী ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি হিন্দু ধর্মগুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসের পত্নী ও সাধনাসঙ্গিনী এবং রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সংঘজননী।

  1. সারদা দেবীর জন্ম কোথায় হয় ?

Ans: সারদা দেবীর জন্ম হয় বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত জয়রামবাটী গ্রামে শ্রীমার জন্ম হয় ।

  1. সারদা দেবীর পিতার নাম কী ?

Ans: সারদা দেবীর পিতার নাম রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।

  1. সারদা দেবীর মায়ের নাম কী ?

Ans: সারদা দেবীর মায়ের নাম শ্যামাসুন্দরী দেবী ।

  1. সারদা দেবীর বিবাহ কার সাথে হয় ?

Ans: সারদা দেবীর বিবাহ শ্রী রামকৃষ্ণ এর সাথে হয়।

  1. শ্রী রামকৃষ্ণ কবে মারা যান ?

Ans: শ্রী রামকৃষ্ণ ১৮৮৬ সালে মারা যান ।

  1. সারদা দেবী কবে মারা যান ?

Ans: সারদা দেবী মারা যান ২০ জুলাই ১৯২০ সালে ।

[আরও দেখুন, গৌতম বুদ্ধের জীবনী – Gautam Buddha Biography in Bengali

আরও দেখুন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী – Ishwar Chandra Vidyasagar Biography in Bengali

আরও দেখুন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনী – Sourav Ganguly Biography in Bengali

আরও দেখুন, শচীন টেন্ডুলকারের জীবনী – Sachin Tendulkar Biography in Bengali

আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]

সারদা দেবী এর জীবনী – Sarada Devi Biography in Bengali

   অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” সারদা দেবী এর জীবনী – Sarada Devi Biography in Bengali  ” পােস্টটি পড়ার জন্য। সারদা দেবী এর জীবনী – Sarada Devi Biography in Bengali পড়ে কেমন লাগলো কমেন্টে জানাও। আশা করি এই সারদা দেবী এর জীবনী – Sarada Devi Biography in Bengali পোস্টটি থেকে উপকৃত হবে। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।