ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer
ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর

HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer : ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer নিয়ে আলোচনা করা হলো। এই West Bengal WBCHSE HS Class 12th History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer, Suggestion, Notes | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) থেকে রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal HS Class 12th Twelve XII History 4th Semester Examination – পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষা তে এই সাজেশন বা কোশ্চেন ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer গুলো আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।

তোমরা যারা ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা এই প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়ো এবং নীচে দেওয়া লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নাও।

রাজ্য (State) পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)
বোর্ড (Board) WBCHSE, West Bengal
শ্রেণী (Class) উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণী (WB HS Class 12th)
বিষয় (Subject) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস (HS Class 12 History)
চতুর্থ অধ্যায় (4th Chapter) ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab)

[দ্বাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নউত্তর Click Here]

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal WBCHSE HS Class 12th History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab 4th Chapter Question and Answer 

রচনাধর্মী | ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | WB HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Descriptive Question and Answer:

1. গান্ধি-সুভাষ পর্বে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘S-T-S’ তত্ত্ব কী? অথবা, ‘P-C-P’ কী?

Ans: ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে মহাত্মা গান্ধি ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান অবিস্মরণীয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় সত্যাগ্রহ আন্দোলনে সাফল্যলাভের পর ভারতে ফিরে গান্ধিজি ১৯১৭খ্রিস্টাব্দে চম্পারণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। অন্যদিকে আবার ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে চিত্তরঞ্জন দাশের আহ্বানে লোভনীয় সিভিল সার্ভিস চাকুরি প্রত্যাখ্যান করে সুভাষচন্দ্র বসু অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিলে সূচনা হয় এক নতুন পর্বের। আর জাতীয় আন্দোলনের এই পর্বেই বিকাশলাভ করেছিল এক অভিনব রাজনৈতিক তত্ত্ব, যা S-T-S নামে পরিচিত। S-T-S / P-C-P তত্ত্ব: গান্ধি-সুভাষ পর্বে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘S-T-S’ তত্ত্বের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

‘S-T-S’ তত্ত্বের ধারণা: ‘S-T-S’ তত্ত্বের পুরো অর্থ হল- সংগ্রাম-শান্তি-সংগ্রাম বা Struggle-Truce-Struggle। এটি ছিল মূলত গালিজির আন্দোলন পরিচালনার ক্ষেত্রে গৃহীত এক রাজনৈতিক সুকৌশল।

সাধারণ ‘S-T-S’ তত্ত্বের প্রকৃতি: ‘S-T-S’ তত্ত্বের প্রকৃতি সম্পর্কে বলা যায় যে-

  • গান্ধিজি ছিলেন গণ আন্দোলনের সংগঠক। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি যথার্থই উপলব্ধি করেন গণ-মানসিকতার প্রস্তুতি ছাড়া কোনও আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।
  • সাধারণ মানুষের দুঃখকষ্ট ও সহ্যের একটা সীমা আছে। তাই জনগণের সহ্যসীমা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই, তাকে সামরিক বিশ্রাম (Breathing space) দেওয়া জরুরি। এই মধ্যবর্তী পর্বে মানুষের সংগ্রামী উদ্যম নতুন শক্তি সঞ্চয় করবে। তারপর প্রয়োজন হলে পুনরায় নতুন উদ্যমে সবাই আন্দোলনমুখী হবে। এটি একটি চক্রবৎ রাজনৈতিক কৌশল। অর্থাৎ, সংগ্রাম (Struggle), শাস্তি (Truce) এবং পুনরায় সংগ্রাম (Struggle) বা Struggle-Truce-Struggle কিংবা সংক্ষেপে ‘S-T-S’ পদ্ধতির মাধ্যমে এক কৌশলী আন্দোলন।
  • একইভাবে গান্ধিজির আন্দোলনের এই কৌশল চাপ তৈরি-সমঝোতা-চাপ তৈরি [Pressure-Compromise-Pressure (P-C-P)] নীতি নামেও পরিচিত।
  • মধ্যবর্তী পর্ব অর্থাৎ, শান্তি (Truce)-র সময় তিনি জনশক্তিকে গঠনমূলক কাজে নিয়োজিত থাকার পরামর্শ দেন। গ্রাম পুনর্গঠন, চরকা কাটা, শিক্ষাবিস্তার, নারী উন্নয়ন ইত্যাদি কর্মসূচি রূপায়ণের মধ্য দিয়ে এই সংগ্রাম বিরতি পর্বে আত্মশক্তি অর্জন এবং প্রতিপক্ষের (ব্রিটিশ সরকার) উপর চাপ অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
  • বলা হয়, ব্রিটিশদের জন্য গান্ধিজির S-T-S কর্মপন্থা জলে কুমির ডাঙায় বাঘের মতো (উভয়সংকট) পরিস্থিতি তৈরি করে এবং এই কৌশল জনগণকে ক্ষয়ক্ষতি সামলে নিয়ে পুনরায় লড়াইয়ে শামিল হওয়ার জন্য যথেষ্ট অবকাশ তৈরি করে দেয়।

‘S-T-S’ বা ‘সংগ্রাম শান্তি-সংগ্রাম’ তত্ত্ব গ্রহণের কারণ:

‘S-T-S’ তত্ত্ব গ্রহণের কয়েকটি কারণ হল-

(i) ব্রিটিশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল : গান্ধিজি মনে করতেন, ‘S-T-S’ রণকৌশল অত্যন্ত কার্যকরী। এই তত্ত্বের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব।2-1-8

(ii) রাজনৈতিক বাস্তবতা: গান্ধিজির ডাকে ভারতের আপামর জনসাধারণ শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, নারী সকলেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতেন। কিন্তু অর্থনৈতিক ও সামাজিক সীমাবদ্ধতার জন্য তাদের পক্ষে একটানা সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই গান্ধিজি বাস্তবতা মেনে আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন।

(iii) সরকারের দমনপীড়ন থেকে আন্দোলনকারীদের রক্ষা করা: তাছাড়া কখনো কখনো আন্দোলন হিংসাশ্রয়ী হয়ে উঠলে সরকারের দমনপীড়নের মুখে আন্দোলনকারীদের পড়তে হত। তাই গান্ধিজি সময় মতো বিরতি নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেন।

(iv) সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ : আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্লান্তি আসত এবং আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ কমে যেত। তাই গান্ধিজি বিরতি দিয়ে আবার নতুন উদ্যমে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিকল্পনা করেন।

ভারতে গান্ধিজির আন্দোলনে ‘S-T-S’ তত্ত্বের প্রয়োগ: গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দোলন থেকে ভারতে সংঘটিত চম্পারণ, খেদা, আহমেদাবাদ আন্দোলনে ‘S-T-S’ নীতি প্রয়োগ করে সাফল্য পান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আইন অমান্য আন্দোলনের সময় জওহরলাল নেহরু ‘S-T-S’ কৌশলের পরিবর্তে সংগ্রাম-বিজয় বা Struggle-Victory (S-V) পদ্ধতি প্রয়োগের উপর গুরুত্ব দেন। যদিও গান্ধিজি এক্ষেত্রেও ‘S-T-S’ কৌশল গ্রহণ করতে দ্বিধা করেননি।

বস্তুত, গান্ধিজির ‘S-T-S’ তত্ত্বের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রয়োগ লক্ষ করা যায় আইন অমান্য আন্দোলনে। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি লবণ আইন ভঙ্গের মাধ্যমে এই আন্দোলনের সূচনা করলেও ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে গান্ধি-আরউইন চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে তা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এই সময় লন্ডনে দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকেও যোগ দেন গান্ধিজি। কিন্তু দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় এই আন্দোলন শুরু করেন তিনি।

সুভাষচন্দ্র বসুর মতামত: জাতীয় আন্দোলন পরিচালনার ক্ষেত্রে সুভাষচন্দ্র বসুর লক্ষ্য ও কৌশল উভয়ই মহাত্মা গান্ধির থেকে অনেকটাই আলাদা ছিল। গান্ধিজি ‘S-T-S’ কৌশলের মাধ্যমে স্বরাজ আদায় করার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে সুভাষচন্দ্র বসুর কৌশল ছিল আপোষহীন সংগ্রামের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা আদায় করা। তিনি মনে করতেন ব্রিটেন ও ভারতবর্ষের মধ্যে কখনোই রাজনৈতিক বোঝাপড়া সম্ভব নয়, যেহেতু উভয়দেশের স্বার্থ সম্পূর্ণ পৃথক। তাই সুভাষচন্দ্র বসু গান্ধিজির সংগ্রাম-শান্তি-পুনরায় সংগ্রাম বা ‘S-T-S’ তত্ত্বের বদলে ব্যাপক গণসংগ্রাম, সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে সশস্ত্র বিপ্লব এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, যোগাযোগ ও সাহায্যের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা লাভের চেষ্টা করেছেন। বস্তুত সুভাষচন্দ্রের মতে, ভারতের স্বাধীনতা একমাত্র ব্রিটিশ শক্তির পরাজয়ের মাধ্যমেই আসতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, গান্ধিজির আন্দোলন ছিল প্রকৃতপক্ষে বি-সমমিলন (Hybrid) বিশিষ্ট ক্রমিক একটি প্রক্রিয়া (Process)। এইরূপ রাজনৈতিক ও নৈতিক (Political and Ethical) আন্দোলনের কৌশল হিসেবে তিনি ‘S-T-S পদ্ধতির অবতারণা করেন। অধ্যাপক আদিত্য মুখার্জি তাই যথার্থই লিখেছেন, ‘গান্ধিজির সমালোচকরা প্রায়শই বুঝতে পারেন না যে, সব গণ আন্দোলনেরই একটা পর্যায়ে এসে সহজাত ভাটার প্রবণতা থাকে। মানুষের আত্মত্যাগের ক্ষমতাও সীমাহীন নয়। তাই একটা সময়ে এসে শক্তি সংগ্রহ করার জন্য দম ফেলার প্রয়োজন হয়।’

2. সাইমন কমিশন কেন গঠন করা হয়েছিল? এই কমিশনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

অথবা, সাইমন কমিশন গঠনের পটভূমি কী ছিল? সাইমন কমিশন-বিরোধী আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

অথবা, ভারতীয়রা কেন সাইমন কমিশন বর্জন করেন?

Ans: ইংল্যান্ডের ঔপনিবেশিক নীতি ছিল উপনিবেশগুলিকে ধাপে ধাপে স্বায়ত্তশাসনের উপযোগী করে তোলা। এই নীতি অনুসারে অন্যান্য উপনিবেশের মতো ভারতেও শাসনসংস্কার করা হয়। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইনের কার্যকারিতা বিচার করার জন্য ১৯২৭খ্রিস্টাব্দে সাইমন কমিশন গঠিত হয়। কিন্তু কিছু ত্রুটির জন্য ভারতীয়রা এই কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।

সাইমন কমিশনের গঠনের কারণ/ পটভূমি:

সাইমন কমিশন গঠনের পিছনে নিম্নলিখিত কারণগুলির উল্লেখ করা যায়-

  • ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন পাস হলেও তা ভারতীয়দের কাছে ছিল অস্পষ্ট। তাই এই আইন পরিবর্তনের জন্য সব রাজনৈতিক দল সোচ্চার হয়ে ওঠে।
  • ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইন পাসের সময় বলা হয়েছিল যে, এই নির্দিষ্ট আইনবিধির কার্যকারিতা সম্বন্ধে অনুসন্ধানের জন্য ১০ বছর পর একটি রাজকীয় কমিশন নিযুক্ত করা হবে।
  • ইংল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে শ্রমিক দল জয়যুক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকায়, ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের নেতারা ভারত সংক্রান্ত শাসনতন্ত্র পুনর্বিচারের কৃতিত্ব নিজেদের হাতে রাখতে এক কমিশন নিয়োগের কথা ভাবেন।

কমিশন গঠন: বড়োলাট লর্ড আরউইন-এর সুপারিশ মেনে ব্রিটিশ সরকার ভারতে শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য ১৯২৭খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর ইন্ডিয়ান স্ট্যাটুটরি কমিশন নিয়োগ করে। ৭ জন সদস্যবিশিষ্ট এই কমিশনের চেয়ারম্যান হন স্যার জন সাইমন। তাঁর নামানুসারে এটি সাইমন কমিশন নামে পরিচিত হয়। এই কমিশনের কাজ ছিল ব্রিটিশ ভারতের শাসনব্যবস্থার কার্যকারিতা বিচার করে প্রতিনিধিত্বমূলক সংস্থাগুলির উন্নয়ন ও দায়িত্বশীল সরকার স্থাপনের পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করা।

সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলন/সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া:

নবগঠিত সাইমন কমিশনে কোনও ভারতীয় সদস্য নেওয়া হয়নি। সকলেই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। তাই ভারতবাসীর কাছে এটি ছিল ‘All White Commission’। বস্তুত, কমিশনের ভারতে আগমনের আগে থেকেই নানাভাবে দেশবাসী প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

কমিশনের ভারতে পদার্পণের পূর্বের প্রতিবাদ: ভারতে সাইমন কমিশন গঠনের খবর ছড়িয়ে পড়লে ভারতের সকল রাজনৈতিক দল তার বিরোধিতা করে। ইতিমধ্যে ভারত-সচিব বার্কেনহেড ভারতীয়দের সাংবিধানিক জ্ঞান সম্পর্কে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করলে সকল ভারতীয় রাজনৈতিক দল অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। কংগ্রেস, মুসলিম লিগ, কমিউনিস্ট পার্টি-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল কমিশনের গঠনপদ্ধতিতে আপত্তি জানায় এবং সাইমন কমিশন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের শেষদিকে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের মাদ্রাজ অধিবেশনে সাইমন কমিশনকে সর্বক্ষেত্রে ও সর্বরূপে বয়কট করার এবং একটি গ্রহণযোগ্য শাসনতন্ত্র রচনার জন্য সর্বদলীয় অধিবেশন আয়োজন করার কথা স্থির হয়।

কমিশনের ভারতে পদার্পণ ও ভারতীয়দের কমিশন-বিরোধী আন্দোলন: ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি সাইমন কমিশনের সদস্যরা বোম্বাই শহরে এসে পৌঁছান। ভারতে কমিশনের পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গে দেশব্যাপী একাধিক প্রতিবাদ আন্দোলন, মিছিল, সভা-সমাবেশ, কালো পতাকা প্রদর্শন ইত্যাদির মাধ্যমে ভারতবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। কলকাতা, বোম্বাই, দিল্লি, লাহোর, লখনউ-সহ প্রধান প্রধান শহরগুলিতে পালিত হয় হরতাল। সাইমন ফিরে যাও (Go Back Simon) ধ্বনির মাধ্যমে সর্বত্র এই কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। যুব সম্প্রদায়, কৃষক, শ্রমিক সমস্ত স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে যোগদান করেন। সরকার দমনপীড়ন দ্বারা আন্দোলন ভেঙে দিতে উদ্যত হয়। এমনকি মাদ্রাজে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় টি প্রকাশন নামক এক আন্দোলনকারীর। লখনউতে পুলিশ লাঠি চালায় জওহরলাল নেহরু ও গোবিন্দবল্লভ পন্থ-এর উপর। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর লাহোরে জননেতা লালা লাজপত রায়কে লাঠি দিয়ে আঘাত করে পুলিশ। এই আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে ১৭নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।

অবশ্য এত তীব্র অশান্তি এবং ভারতীয়দের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও সাইমন কমিশন তার তদন্ত চালিয়ে যায়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। বস্তুত, এই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই প্রণীত হয়েছিল ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন।

মূল্যায়ন: অসহযোগ আন্দোলনের পর সাইমন কমিশন-বিরোধী আন্দোলনকেই ভারতবাসীর সফল গণবিক্ষোভ বলা যেতে পারে। অবশ্য ঐতিহাসিকদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন যে, জাতীয় কংগ্রেস বা অন্যান্য জাতীয়তাবাদী নেতারা এই গণ অভ্যুত্থানের কর্মসূচি নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। স্বয়ং সুভাষচন্দ্র বসু বলেছেন যে, ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে যদি বৃহত্তর কোনও রাজনৈতিক গণ আন্দোলন শুরু করা যেত, তবে তা সময়োপযোগী হত। কারণ-আলোচ্য পর্বে জনগণের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সঞ্চারিত হয়েছিল, ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে সংগঠিত আইন অমান্য আন্দোলনের তুলনায় তা বেশি ছিল।

3. ভারতীয় অর্থনীতির উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কীরূপ প্রভাব পড়েছিল?

অথবা, ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

Ans: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪-১৯১৮ খ্রিস্টাব্দ) ছিল বিশ্ব ইতিহাসের একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ এই যুদ্ধের দ্বারা কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্রপক্ষের অন্তর্ভুক্ত ছিল গ্রেট ব্রিটেন। আর ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে সরকার ভারতবর্ষকে একটি ‘যুদ্ধরত দেশ’ বলে ঘোষণা করে। যুদ্ধের শেষে মিত্রপক্ষ ভারতে স্বশাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হবে-এই আশা থেকেই ভারতবাসী যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে অর্থ, সম্পদ, সৈন্য, রসদ প্রভৃতি দিয়ে সাহায্য করেন।

ভারতীয় অর্থনীতির উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবসমূহ:

ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব ছিল বহুমুখী, নেতিবাচক ও ধ্বংসাত্মক।

(i) অস্বাভাবিক ব্যয়বৃদ্ধি: ব্রিটেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে যুদ্ধখাতে ব্রিটিশ সরকারের প্রায় ১৩ কোটি স্টার্লিং পাউন্ড (পরিসংখ্যান অনুযায়ী) অর্থ ব্যয় হয়। ব্রিটিশ সরকার এই বিপুল পরিমাণ ব্যয়ের একটি বড়ো অংশ ভারত থেকে সংগ্রহের চেষ্টা করে। ফলে জাতীয় ঋণের পরিমাণ আনুমানিক ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধ শেষ হলেও ভারতে সামরিক খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ অব্যাহত রাখা হয়।

(ii) করভার বৃদ্ধি: যুদ্ধখাতে অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে সরকার ভারতীয়দের উপর অস্বাভাবিক হারে করের বোঝা চাপিয়ে দেয়।

  • এসময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর বাড়ানো হয়েছিল প্রায় ৩০ শতাংশ।
  • যুদ্ধের আগে (১৯১১-১২ খ্রি.) ভারতে মোট রাজস্বের মাত্র ২ শতাংশ সংগ্রহ করা হত আয়কর থেকে। কিন্তু যুদ্ধের পর ১৯১৯-২০ অর্থবর্ষে আয়কর বেড়ে হয় মোট আদায়ীকৃত রাজস্বের ১১.৭৫ শতাংশ।
  • এ ছাড়া ভূমিরাজস্বও ৮.৯ শতাংশ থেকে বেড়ে হয় ১৪.৮ শতাংশ।
  • ধনী-দরিদ্র সবার উপরেই যুদ্ধকর চাপিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি কৃষকেরা ও নিয়মিত রাজস্ব ছাড়াও উপকর দিতে বাধ্য হন।

(iii) মুদ্রাস্ফীতি: যুদ্ধ-পরবর্তী বছরগুলিতে ভারতে অস্বাভাবিক হারে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। সরকার যুদ্ধের অতিরিক্ত ব্যয় মেটানোর তাগিদে কাগজের মুদ্রা ছেপে অর্থসংকট মেটাতে চেষ্টা করে। এর ফলে ভারতীয় বাজারে লাগামছাড়া মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। পাউন্ড ও টাকার মূল্যমান (Money Value-মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা অর্থাৎ একটি মুদ্রা দ্বারা যে পরিমাণ পণ্য ও পরিসেবা ক্রয় করা যায়) পরিবর্তিত হয়। এই সময় থেকেই ব্রিটিশ সরকার রুপোর মুদ্রার উপর নির্ভর করতে শুরু করে।

(iv) দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি: মুদ্রাস্ফীতির অনিবার্য ফলস্বরূপ দেখা দেয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। যুদ্ধকালীন অস্থিরতার সুযোগে বৃদ্ধি পায় মজুতদারি ও কালোবাজারিও।

(v) খাদ্য সংকট: ভারতীয় সৈন্যদের নিয়মিত খাদ্যের জোগান দেওয়ার প্রয়োজনে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশস্য বিদেশে পাঠানো হতে থাকে। অথচ সে সময়ে দক্ষিণ ভারতের মানুষ অনাহারে ভুগছিলেন। ফলে দেশে এক কৃত্রিম খাদ্য সংকটের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়ে গ্রামাঞ্চলে কৃষক পরিবারগুলি খাদ্যশস্যের পরিবর্তে অর্থকরী ফসল উৎপাদনে বাধ্য হওয়ায় দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং চারিদিকে অন্নের জন্য হাহাকার পড়ে যায়।

(vi) কৃষকদের দুরবস্থা: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতীয় কৃষক শ্রেণি চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

  • যুদ্ধের সময় পাট, বস্ত্র, পশম প্রভৃতি পণ্যের প্রচুর চাহিদা ছিল তাই এই সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পণ্য উৎপাদকেরা বর্ধিত মূল্যের সুবিধা পাননি।
  • বেশি লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা খাদ্যের মজুতদারি ও কালোবাজারি শুরু করে। এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষক ও সাধারণ শ্রেণির মানুষ।
  • পাশাপাশি দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতির মধ্যেও ব্রিটিশ সরকার কৃষকদের কর মুকুব না করে করের বোঝা আরও বাড়িয়ে দেয়। ভূস্বামীরা বিভিন্ন অজুহাতে জমি থেকে কৃষকদের উচ্ছেদ করে নিজেদের আয় বাড়ানোর চেষ্টা করে। ফলে কর বৃদ্ধির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানের কৃষকরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

(vii) ভারতীয় বণিক ও শিল্পপতিদের উপর প্রভাব: ভারতীয় বণিক ও শিল্পপতিদের উপরেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব পড়েছিল-

  • (a) যুদ্ধ চলাকালীন শিল্পে অগ্রগতি: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সাময়িকভাবে ভারতের শিল্পক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল। এই সময় ইংল্যান্ড থেকে ভারতে শিল্পপণ্যের আমদানি হ্রাস পেলে নতুন শিল্পস্থাপন ও পুরোনো কারখানার আধুনিকীকরণ শুরু হয়। যুদ্ধকালে আবার বোম্বাই ও গুজরাটের কাপড়কলগুলি অতিরিক্ত উৎপাদন ও বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদশালী হয়ে ওঠে। এই সময় ভারতীয় শিল্পপতিদের সমর্থন ও আস্থা অর্জনের জন্য ব্রিটিশ সরকার ভারতে শুল্কসংরক্ষণ নীতি গ্রহণ করে।
  • (b) যুদ্ধের শেষে পুনরায় শিল্পসংকট : বস্তুত, ভারতকে শিল্পে স্বনির্ভর করার ইচ্ছা ব্রিটিশ সরকারের ছিল না। তাই যুদ্ধ চলাকালে আর্থিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রয়োজনে তারা শিল্পবান্ধব নীতি সাময়িকভাবে গ্রহণ করেছিল। এর ফলে বণিক ও শিল্পপতিরা লাভবান হন। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঔপনিবেশিক সরকার পুনরায় ব্রিটেন থেকে শিল্পপণ্যের আমদানি শুরু করে। ভারতীয় শিল্পের স্বাভাবিক বিকাশকে বুদ্ধ করার জন্য কঠোর এবং বিমাতৃসুলভ অর্থনীতির প্রয়োগ শুরু হয়। ফলে দেশীয় শিল্প সংকটের মুখে পড়ে।

(viii) শ্রমিক ছাঁটাই: বিশ্বযুদ্ধের শেষে গোটা বিশ্বে প্রবল অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়।

  • অভ্যন্তরীণ বাজার দুর্বল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় শিল্পপণ্য বিদেশে রফতানি নানাভাবে হ্রাস করতে থাকে।
  • গবেষক রবীন্দ্র কুমার তাঁর লাহোর সংক্রান্ত গবেষণাপত্রে দেখিয়েছেন, ১৯১৭-২১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে খাদ্যশস্যের মূল্য যখন ১০০ শতাংশ বাড়ে, তখন কারিগর ও শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ২০-২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
  • এই অবস্থায় অনিবার্যভাবে কলকারখানা থেকে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়। কর্মরত শ্রমিকদের মজুরিও বৃদ্ধি করা হয়নি। ফলে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়তে থাকে। শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হলে ভারতে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন সংগঠিত হয়।

এইভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামোকে একেবারে দুর্বল করে দেয়। মুদ্রাস্ফীতি, সরকারি ঋণভার বৃদ্ধি, মূল্যবৃদ্ধি, শিল্পে মন্দা, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব ইত্যাদির চাপে ভারতীয় অর্থনীতির বিকাশ বুদ্ধ হয়ে পড়ে।

4. অসহযোগ আন্দোলন কেন প্রত্যাহার করা হয়? অথবা, গান্ধিজি কেন অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন?

অথবা, ‘চৌরিচৌরা-র ঘটনা কী?

Ans: অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের কারণ:

মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে অহিংস আদর্শের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত প্রথম গণ আন্দোলন ছিল অসহযোগ আন্দোলন। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে গান্ধিজি এই আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।

চৌরিচৌরার ঘটনা: অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরাতে এক হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে (৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ)। পুলিশ সত্যাগ্রহী নেতা ভগবান আহীরকে গ্রেফতার করলে স্বেচ্ছাসেবীরা থানা ঘেরাও করেন। পুলিশ অকস্মাৎ জনতার উপর গুলি চালায়। ক্ষিপ্ত জনতা থানায় অগ্নিসংযোগ করলে ২২ জন পুলিশের মৃত্যু হয়। এটিই চৌরিচৌরার ঘটনা নামে পরিচিত। জনতার হিংসাত্মক আচরণে মর্মাহত হয়ে গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। বারদৌলিতে অনুষ্ঠিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভায় (১২ ফেব্রুয়ারি) গান্ধিজির সিদ্ধান্ত অনুমোদিতও হয়।শা দিলেচষ্টা

আন্দোলন প্রত্যাহার বিষয়ে গান্ধিজির মুক্তি:

অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের পিছনে মহাত্মা গান্ধির নিজস্ব কিছু যুক্তি ছিল। সেগুলি হল-

(i) হিংসার প্রবেশ: গান্ধিজির আন্দোলনের নীতি ছিল অহিংস। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে বেশকিছু স্থানে সেই নীতি মেনে চলা হয়নি। গান্ধিজির ভাষায়, ‘তখন যদি একে বন্ধ না করা হত তাহলে অহিংস আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা হিংসাত্মক আন্দোলনেরই দায়িত্ব নিয়ে ফেলতাম।’

(ii) জনগণের ধৈর্যচ্যুতি : আন্দোলনের ফলে স্কুলকলেজ বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হচ্ছিলেন। সরকারি চাকুরি ও অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন।

(iii) দেশীয় প্রতিষ্ঠান ও বস্ত্রের জনপ্রিয়তা হ্রাস:

অসহযোগ আন্দোলনের ফলে গড়ে ওঠা জাতীয় বিদ্যালয় ও দেশীয় কাপড়ের জনপ্রিয়তা কমে আসছিল।

এইসব কারণের পরিপ্রেক্ষিতে গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। এরপর ১০ মার্চ ব্রিটিশ সরকার গান্ধিজিকে কারারুদ্ধ করে।

5. স্বরাজ্য দলের উদ্ভবের পটভূমি লেখো।

অথবা, কারা, কবে, কী উদ্দেশ্যে স্বরাজ্য দল গঠন করে?

Ans: স্বরাজ্য দল গঠনের পটভূমি/কারণ :

স্বরাজ্য দল প্রতিষ্ঠার পটভূমি বা কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হল-

(i) জাতীয় রাজনীতিতে সংকট: বারদৌলিতে অহিংস-অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এবং ভাইসরয় লর্ড রিডিং-এর কঠোর দমননীতি তৎকালীন জাতীয় রাজনীতিতে সংকট সৃষ্টি করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের অনেকের মনেই গান্ধিজির কৌশলের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তাছাড়া ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে গান্ধিজি গ্রেফতার হওয়ায় জাতীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এক শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতেই দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মোতিলাল নেহরু প্রমুখ নেতৃবর্গ নতুনভাবে জাতীয় আন্দোলন পরিচালনা করার চেষ্টা করেন।

(ii) কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব: জাতীয় কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে চিত্তরঞ্জন দাশ, মোতিলাল নেহরু প্রমুখ মনে করতেন, Legislative Council তথা আইন বা ব্যবস্থাপক সভায় কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করা উচিত। তাই ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে কলকাতায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্থির হয় যে, ডিসেম্বর মাসে আসন্ন গয়া অধিবেশনে পরবর্তী নীতি নির্ধারিত হবে। বস্তুত, নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের মধ্যে দুটি গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়- পরিবর্তনের সমর্থক বা পরিবর্তনপন্থী (Pro-Changer) এবং পরিবর্তন-বিরোধী (No-Changer)। হাকিম আজমল খান, বিঠলভাই প্যাটেল, মদনমোহন মালব্য প্রমুখ পরিবর্তনের সমর্থক নেতারা আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মতকে সমর্থন করেন।

অন্যদিকে, পরিবর্তন-বিরোধী গোষ্ঠী অর্থাৎ রাজেন্দ্র প্রসাদ, চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী প্রমুখ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আইনসভায় প্রবেশের পক্ষপাতী ছিলেন না।

(iii) কংগ্রেসের গয়া অধিবেশন: কংগ্রেসের গয়া অধিবেশনে (ডিসেম্বর, ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ) সভাপতিত্ব করেন চিত্তরঞ্জন দাশ এবং সম্পাদক হন মোতিলাল নেহরু। কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে গয়ায় ভোটাভুটি হলে Pro-Changer-রা পরাজিত হন (পক্ষে ৮৯০টি এবং বিপক্ষে ১৭৪৮/১৭৪০টি ভোট) এবং প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়। মর্মাহত হয়ে দেশবন্ধু ও মোতিলাল নেহরু নিজ নিজ পদে ইস্তফা দেন।

স্বরাজ্য বা স্বরাজ দল গঠন: এরপর ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি মোতিলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখের সাহায্যে চিত্তরঞ্জন দাশ কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই একটি দল গঠন করেন। এই দলের নাম হয় কংগ্রেস খিলাফৎ স্বরাজ পার্টি বা সংক্ষেপে স্বরাজ বা স্বরাজ্য দল। এই নবপ্রতিষ্ঠিত দলের। সভাপতি হন চিত্তরঞ্জন দাশ এবং মোতিলাল নেহরু অন্যতম সম্পাদক পদে বসেন।

6. মহম্মদ আলি জিন্নাহ-র ‘চোদ্দো দফা দাবি বলতে কী বোঝায়?

Ans: মহম্মদ আলি জিন্নাহ-র উত্থাপিত চোদ্দো দফা দাবি সমূহ:

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ভারত-সচিব লর্ড বার্কেনহেড-এর বক্তব্য ও সর্বদলীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভারতের সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয় একটি কমিটি, যার নেতৃত্বে ছিলেন মোতিলাল নেহরু। এই কমিটির অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বরা ছিলেন- সুভাষচন্দ্র বসু, আলি ইমাম, সর্দার মঙ্গল সিং, তেজবাহাদুর সপু, এম আর জয়াকার প্রমুখ। এরপর সর্বদলীয় সম্মেলনের লখনউ অধিবেশনে (আগস্ট, ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ) মোতিলাল নেহরু ভারতীয় সংবিধানের একটি খসড়া পেশ করেন, যা পরিচিত নেহরু রিপোর্ট নামে। ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর কলকাতায় অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় সম্মেলনে মহম্মদ আলি জিন্নাহ উক্ত রিপোর্টের তিনটি সংশোধনী দাবি করলে তা নাকচ হয়ে যায়। এর পরবর্তীকালে জিন্নাহ আগা খানের নেতৃত্বে ‘নিখিল ভারত মুসলিম সম্মেলন’-এ যোগ দেন। ভারতীয় মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার্থে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ২৮ মার্চ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম লিগের সম্মেলনে সভাপতি মহম্মদ আলি জিন্নাহ পেশ করেন তাঁর বিখ্যাত চোদ্দো দফা দাবি। এই দাবিগুলি হল-

  1. ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। অবশিষ্ট ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে।
  2. সমস্ত আইনসভা ও স্থানীয় পরিষদে সংখ্যালঘুদের পর্যাপ্ত প্রতিনিধি থাকবে।
  3. প্রত্যেক প্রদেশ একই ধরনের স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে।
  4. কেন্দ্রীয় পরিষদে এক-তৃতীয়াংশ আসন মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
  5. পৃথক নির্বাচনের ভিত্তিতে সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কোনও সম্প্রদায় ইচ্ছা করলে যৌথ নির্বাচনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারবে।
  6. সীমানা বদল করে পাঞ্জাব, বাংলা ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠতা হ্রাস করা যাবে না।
  7. প্রত্যেক সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকবে।
  8. সম্প্রদায় বিশেষের জন্য কোনও আইনবিধি বা সিদ্ধান্ত ক্ষতিকর এই যুক্তিতে সেই সম্প্রদায়ের যদি তিন-চতুর্থাংশ সদস্য আইন পরিষদ বা অন্য কোনও নির্বাচিত পরিষদে সেই আপত্তিকর বিল বা প্রস্তাবের বিরোধিতা করে, তবে তা অনুমোদিত হবে না।
  9. বোম্বাই প্রেসিডেন্সি থেকে সিন্ধু প্রদেশকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
  10. উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও বালুচিস্তানে শাসনসংস্কার করতে হবে।
  11. যোগ্যতা ও দক্ষতার মাপকাঠিতে সমস্ত সরকারি চাকুরিতে মুসলমানদের সমানাধিকার দিতে হবে।
  12. ইসলাম ধর্ম, ইসলামি কৃষ্টি, ভাষা, শিক্ষা, আইন প্রতিষ্ঠানগুলির সংরক্ষণ এবং উন্নয়নে সরকারি সাহায্য ও নিশ্চয়তা দিতে হবে।
  13. কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রীসভায় এক-তৃতীয়াংশ মুসলমান প্রতিনিধি থাকবে।
  14. প্রদেশগুলির সম্মতি ছাড়া কেন্দ্রীয় আইন পরিষদ সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না। পরবর্তীকালে মুসলিম লিগের কর্মসূচিতে এই দাবিগুলির প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছিল। কিন্তু এই দাবি হিন্দু ও মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তোলে। কারণ-জিন্নাহ-র দাবিগুলির অধিকাংশই গণতন্ত্র-বিরোধী হলেও মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে তা সমর্থনযোগ্য বলে মনে হতে থাকে। ফলে, ভারতে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ বৃদ্ধি পায়।

7. লেখো: ডান্ডি অভিযান।

অথবা, গান্ধিজি কীভাবে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন?

অথবা, গান্ধিজি কবে, কেন ডান্ডি অভিযান করেন?

Ans: ডান্ডি অভিযান:

অসহযোগ আন্দোলনের পর আইন অমান্য আন্দোলন ছিল গান্ধিজির নেতৃত্বে পরিচালিত দ্বিতীয় সর্বভারতীয় সত্যাগ্রহ আন্দোলন। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ‘পূর্ণ স্বরাজ প্রস্তাব’ পাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য লবন এবং অন্যান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে গান্ধিজি আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেন। এই আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ছিল লবণ সত্যাগ্রহ ও ডান্ডি অভিযান।

উদ্দেশ্য: ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মহামন্দা, সাইমন কমিশনের প্রতিক্রিয়াশীল নীতি, সশস্ত্র বিপ্লবী কার্যকলাপ-সহ নানান ঘটনা সমগ্র ভারতব্যাপী এক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করে।

  • বড়োলাট লর্ড আরউইনের কাছে গান্ধিজি রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি, লবণ কর বিলোপ, করের বোঝা হ্রাস-সহ ১১ দফা প্রস্তাব এই রাখলেও সরকার তা অগ্রাহ্য করে।
  • এই পরিস্থিতিতে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি গুজরাটের সবরমতী আশ্রমে আয়োজিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আইন অমান্য আন্দোলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
  • এরপর গান্ধিজি ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকায় আইন অমান্যর চূড়ান্ত রূপরেখা ঘোষণা করেন। লর্ড আরউইনকে লেখা একটা বড়ো চিঠিতে গান্ধিজি লেখেন (২ মার্চ) যে, গুজরাটের সমুদ্র উপকূলবর্তী ডান্ডি নামক স্থানে তিনি লবণ আইন ভঙ্গ করে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করবেন।

অর্থাৎ, লবণ আইনের বিরোধিতা করে দেশের সর্বত্র আইন অমান্যের বিস্তার, তথা দেশবাসীকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করাই ছিল ডান্ডি অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য।

যাত্রাপথ:

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ লবণ আইন অমান্যের জন্য ৭৮ জন (মতান্তরে ৭১ বা ৭৯ জন) অনুগামী-সহ গান্ধিজি সবরমতী আশ্রম থেকে গুজরাটের সমুদ্র উপকূলবর্তী ডান্ডি অভিমুখে যাত্রা করেন। এই পদযাত্রা ইতিহাসে ডান্ডি অভিযান (Dandi March) নামে খ্যাত। প্রায় দুশো মাইলেরও বেশি দীর্ঘ এই যাত্রাপথে হাজার হাজার নারী-পুরুষ গান্ধিজি ও তাঁর সহগামীদের সংবর্ধনা ও অভিনন্দন জানান। গান্ধিজির অভিযানের খবর সংবাদপত্রের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র দেশে ও বিদেশে। লাঠিতে ভর দিয়ে নগ্নপদে এগিয়ে চলা গান্ধিজিকে দেখে ভারতীয়দের মধ্যে প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়। জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম নেত্রী সরোজিনী নাইডু ও অন্যান্যরা তাঁর সহযাত্রী হন। এই সময় গান্ধিজি জনগণকে সরকারি চাকুরি বর্জন ও খাজনা বন্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।

লবণ আইন ভঙ্গ:

মাত্র ২৪ দিনে ২৪১ মাইল পথ অতিক্রম করে ৫ এপ্রিল মহাত্মা গান্ধি ডান্ডির সমুদ্রতীরে পৌঁছান। ৬ এপ্রিল নিজ হাতে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরি করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন। এরপর গান্ধিজির নেতৃত্বে অন্যান্য সত্যাগ্রহীরাও লবণ প্রস্তুত দ্বারা আইন ভঙ্গ করেন। এইভাবে আইন অমান্য আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে।

গুরুত্ব: গান্ধিজির নেতৃত্বে ডান্ডি অভিযানে সাধারণ মানুষ সত্যাগ্রহীদের বিপুল উৎসাহ প্রদান করেছিলেন। সুভাষচন্দ্র বসু-র মতে, ডান্ডি অভিযান ছিল একটি মহান আন্দোলনের মহান সূচনা। ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন যে, ডান্ডি অভিযান পরিকল্পনা ছিল একটি মহান পরিকল্পনা এবং এটি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কার্যকর করা হয়েছিল। তাই ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ডান্ডি অভিযান-এর গুরুত্ব অপরিসীম।

8. টীকা লেখো: পুনা চুক্তি।

Ans: পুনা চুক্তি: ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির মাধ্যমে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র‍্যামসে ম্যাকডোনাল্ড শুধুমাত্র অন্যান্য ধর্মসম্প্রদায়কে পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেননি, পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়কে বর্ণহিন্দু এবং অনগ্রসর হিন্দু-এই দুটি ভাগে ভাগ করে তাদের জন্যেও পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণার প্রতিবাদে গান্ধিজি মহারাষ্ট্রের যারবেদা জেলে ২০ সেপ্টেম্বর (১৯৩২ খ্রি.) আমরণ অনশন শুরু করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর: সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রতিবাদে পুনায় গান্ধিজির আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত সারা দেশে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। মদনমোহন মালব্য, রাজেন্দ্র প্রসাদ, বি আর আম্বেদকর, এম সি রাজা-সহ বিভিন্ন নেতারা সক্রিয় হন। এঁদের উদ্যোগে দলিত শ্রেণির নেতা বি আর আম্বেদকরের সঙ্গে গান্ধিজির আলোচনা শুরু হয়। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ২৫ সেপ্টেম্বর সমঝোতার ভিত্তিতে গান্ধিজি ও বি আর আম্বেদকরের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক পুনা চুক্তি।

চুক্তির শর্তাবলি: পুনা চুক্তি দ্বারা

  • অনুন্নত শ্রেণির জন্য পৃথক নির্বাচনের দাবি ত্যাগ করা হয়।
  • অনুন্নত শ্রেণির জন্য নির্দিষ্ট আসনসংখ্যা বাড়ানো হয়। এর আগে প্রাদেশিক আইনসভাগুলিতে দলিতদের জন্য ৭১টি আসন সংরক্ষিত ছিল। পুনা চুক্তির পর তা বৃদ্ধি করে ১৪৮টি করা হয়। আবার কেন্দ্রীয় আইনসভাতেও দলিতদের জন্য সংরক্ষিত হয় ১৮ শতাংশ আসন।
  • তাছাড়া যৌথ নির্বাচকমণ্ডলী দ্বারা নির্বাচন হবে বলে স্থির হয়। ব্রিটিশ সরকার এই চুক্তি মানতে বাধ্য হয়। গান্ধিজি অনশন ভঙ্গ করেন (২৬ নভেম্বর) এবং বিনা শর্তে মুক্তি পান।

মূল্যায়ন:

  • পুনা চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেন জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখ। তাঁরা মনে করেন যে, পুনা চুক্তি সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত সমস্যার সমাধানের পরিবর্তে, তাকে নতুনতর ভিত্তি দিয়েছে।
  • লিবার্টি পত্রিকায় লেখা হয় (১৪ আগস্ট, ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দ) যে, পুনা চুক্তির ফলে লাভবান হয়েছে শুধুমাত্র ব্রিটিশ-আশ্রিত প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলি।
  • ড. অমলেশ ত্রিপাঠীর মতে, ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে মর্লে-মিন্টো তাঁদের শাসনসংস্কার আইন দ্বারা মুসলমানদের যে সুযোগ পাইয়ে দেন, ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি পুনা চুক্তি দ্বারা অনুন্নত হিন্দুদের একই সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এখন থেকে ‘মুসলমান ও অনুন্নত হিন্দুরা একজোটে বাঁধা পড়েন।’ বস্তুত, বর্ণহিন্দু ও অনুন্নত হিন্দুদের মধ্যে শ্রেণিবিভাজন তৈরির কাজে পুনা চুক্তির ভূমিকাকে অস্বীকার করা যায় না।

9. মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসনসংস্কারের (১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ) বৈশিষ্ট্য এবং ত্রুটিগুলি সম্পর্কে লেখো।

Ans: মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসনসংস্কারের বৈশিষ্ট্যসমূহ:

(ⅰ) কেন্দ্রীয় আইনসভার গঠন ও তার সদস্যসংখ্যা : এই আইনে কেন্দ্রে দুইকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠিত হয়, যথা-উচ্চকক্ষ বা রাষ্ট্রীয় পরিষদ (Council of State) এবং নিম্নকক্ষ বা কেন্দ্রীয় আইনসভা (Central Legislative Assembly)। উচ্চকক্ষের সদস্যসংখ্যা ৬০ জন এবং নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা ১৪৫ জন।

(ii) প্রদেশের শাসনব্যবস্থা: প্রাদেশিক সরকারের দ্বারা অধিকৃত বিষয়গুলিকে সংরক্ষিত (Reserved) ও হস্তান্তরিত (Transferred) – এই দুভাগে ভাগ করা হয়। সাধারণ প্রশাসন, পুলিশ, অর্থ, বিচার -এগুলি সংরক্ষিত বিষয় এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্বায়ত্তশাসন প্রভৃতি হস্তান্তরিত বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ ছাড়া পৌরসভা, ইউনিয়ন বোর্ড গড়ে তুলে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থাও চালু করা হয়। আপন

(iii) ভারত-সচিবের কাউন্সিল : ভারত-সচিবের কাউন্সিলের সদস্যসংখ্যা ৮ থেকে ১২-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয় এবং তাদের কার্যকালের মেয়াদ ছিল ৫ বছর। এতদিন পর্যন্ত সদস্যদের বেতনের ব্যয়ভার ভারতীয় রাজস্ব থেকেই মেটানো হত। কিন্তু এই নতুন আইনে স্থির হয়, এই বেতনভার বহন করবে ব্রিটিশ সরকার -যা ছিল মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

মন্টেগু চেমসফোর্ড শাসনসংস্কারের ত্রুটিসমূহ:

মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসনসংস্কারে দায়িত্বশীল সরকার গঠনের কোনও প্রচেষ্টাই পরিলক্ষিত হয়নি। এই আইনের ত্রুটিগুলি হল-

(i) সরকারি নিয়ন্ত্রণ: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে কেন্দ্রে বড়োলাট প্রভৃত ক্ষমতার অধিকারী হন। ভারতীয় আইনসভার কাছে তাঁর কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না। একইভাবে প্রদেশগুলিতে ছোটোলাট অনুরূপ ক্ষমতা লাভকরেন। কেন্দ্র ও প্রদেশে সরকার পক্ষেরই সংখ্যাধিক্য বজায় থাকে।

(ii) দ্বৈত শাসনব্যবস্থার সূচনা: প্রাদেশিক শাসনকার্য সংরক্ষিত ও হস্তান্তরিত- এই দুটি ভাগে ভাগ করে একদিকে ক্ষমতাহীন দায়িত্ব এবং অন্যদিকে দায়িত্বহীন ক্ষমতার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর ফলে শাসনকাঠামোর ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে ও দ্বৈত শাসনব্যবস্থার সূচনা হয়।

(iii) সীমিত ভোটাধিকার ও পৃথক নির্বাচনী ব্যবস্থা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন দ্বারা কেবলমাত্র মুষ্টিমেয় বিত্তবান ভারতীয়রাই ভোটাধিকার লাভ করেছিলেন। আবার মর্লে-মিন্টো আইনে যে সাম্প্রদায়িক নির্বাচন পদ্ধতি গৃহীত হয়েছিল ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনেও তা বজায় থাকে। এর ফলে ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ঐক্য ক্ষুণ্ণ হয়। তাই বলা যায়, ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের আইন ভারতবাসীর আশাপূরণে ব্যর্থ হয়েছিল।

(iv) সীমিত অর্থ বরাদ্দ: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের আইনে জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য খুবই সীমিত অর্থ ধার্য করা হয়। সীমিত অর্থে জনকল্যাণের মতো বিশাল কর্মপরিচালনা করা কখনোই সম্ভবপর ছিল না।

পরিশেষে বলা যায়, মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইনে কিছু ভালো দিক থাকা সত্ত্বেও তা সমস্ত শ্রেণির ভারতবাসীকে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হয়। স্বয়ং লোকমান্য তিলক এই প্রস্তাবকে বিবেচনার অযোগ্য বলে দাবি করেছেন। জাতীয় কংগ্রেসের বোম্বাই অধিবেশনে (১৯১৮ খ্রি.) মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনকে তুচ্ছ, বিরক্তিকর ও নৈরাশ্যজনক বলে সমালোচনা করা হয়। অ্যানি বেসান্ত আবার এই আইনকে দাসত্বের পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেন। তবে কংগ্রেসের নরমপন্থী নেতৃবৃন্দের একাংশের কাছে এই আইন ছিল স্বাধিকার অর্জনের পথে এক নব পদক্ষেপ।

10. সত্যাগ্রহ আদর্শ বলতে কী বোঝো?

Ans: দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধিজি বর্নবৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এক অভিনব কৌশল বা কর্মদর্শন গড়ে তোলেন, যা ইতিহাসে সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।

সত্যাগ্রহ আদর্শ: বিশিষ্ট বুশ লেখক লিও টলস্টয়ের Kingdom of God is Within You, ব্রিটিশ লেখক জন রাসকিন রচিত Unto This Last, হেনরি ডেভিড থরোর Civil Disobedience, এডুইন আর্নল্ডের The Light of Asia (বুদ্ধের জীবনী)-সহ বিভিন্ন চিন্তাবিদদের রচনা ও নানা ধর্মদর্শন থেকে গান্ধিজি তাঁর সত্যাগ্রহ আদর্শ রূপায়ণের প্রেরণা পেয়েছিলেন।

ধারণা: মহাত্মা গান্ধির দৃষ্টিতে সত্য হল ইতিবাচক গুণসম্পন্ন এমন একটি শক্তি যা নেতিবাচক উপাদানের বিপরীতে অবস্থান করে। তাঁর কাছে সত্য হল আত্মশক্তি, নির্ভীকতা, নিঃস্বার্থপরতা, সম্প্রীতি, ভালোবাসা ইত্যাদির প্রতীক। অন্যদিকে অসত্য হল পাশবিকতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ, স্বার্থপরতা ও পরাধীনতার প্রতীক। নানা পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্য দিয়ে গান্ধিজি এই সত্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন সত্য দিয়ে তিনি অসত্য-কে জয় করতে চেয়েছেন। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, গান্ধিজির কাছে অহিংসার ধারণা বহুক্ষেত্রেই সত্য ধারণার সমার্থক বা পরিপূরক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

সহজ ভাষায় বললে, অহিংস উপায়ে আত্মকষ্টের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে জয় করাই হল সত্যাগ্রহ। মহাত্মা গান্ধির মতে, সত্যের প্রতি যে ব্যক্তির কোনও ঘৃণা বা বিদ্বেষ নেই সেই প্রকৃত সত্যাগ্রহী।

রাজনীতিতে প্রয়োগ: রাজনীতিতে সত্যাগ্রহ আদর্শের প্রয়োগ তথা সাফল্যের বিষয়টি বেশ কঠিন বলে গান্ধিজি মনে করতেন। এই সত্যাগ্রহের প্রয়োগ সম্পর্কিত তিনি কয়েকটি বিষয়ের উল্লেখ করেন-

  • গান্ধিজির মতে, সত্যাগ্রহ হল আত্মার শক্তি বা প্রেমের শক্তি। এর উৎস হল সত্য ও অহিংসা।
  • তিনি বলতেন, অহিংসা কাপুরুষের ভূষণ নয়; অহিংসা বীরত্বের মহান প্রকাশ।
  • অহিংসার সঙ্গে সত্যাগ্রহের যোগ খুবই ঘনিষ্ঠ। প্রতিক্ষেত্রে আঘাত না করে দুঃখবরণ করে নিয়ে সত্যের প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলেই তিনি মনে করতেন।
  • অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় একজন সত্যাগ্রহীকে সকল রকম দুঃখকষ্ট, নির্যাতন হাসিমুখে সহ্য করতে হবে।
  • হিংসার পথ দুর্বল ও তা কাপুরুষের হাতিয়ার। কিন্তু একজন চরিত্রবান আত্মসংযমী, নৈতিক বলে বলীয়ান ও সাহসী ব্যক্তিই সত্যাগ্রহের পথে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম।
  • গান্ধিজি বলেছেন, প্রেমের দ্বারা ঘৃণাকে, সত্যের দ্বারা অসত্যকে এবং নির্যাতন ভোগের দ্বারা হিংসাকে জয় করাই হল প্রত্যেক সত্যাগ্রহীর আদর্শ।

11. রাওলাট আইন’ কী? এই আইনে কী বলা হয়েছিল?

Ans: রাওলাট আইন: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে ভারতবর্ষে চরম অসন্তোষ ও অসহিমুতার পরিবেশ লক্ষ করা যায়। আলোচ্য পর্বে অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবিলা, বৈপ্লবিক তৎপরতা অনুসন্ধান ও তা দমনের জন্য ব্রিটিশ সরকার স্যার সিডনি রাওলাটের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে (১০ ডিসেম্বর, ১৯১৭খ্রিস্টাব্দ)। এটি রাওলাট কমিটি নামে পরিচিত। সভাপতি রাওলাট ছাড়াও এই কমিটিতে আরও ৫ জন সদস্য ছিলেন। এই রাওলাট কমিটির পোশাকি নাম হল সিডিশন কমিটি।

সিডিশন কমিটির কাজ ছিল- ভারতে ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপের প্রকৃতি, তার ব্যাপকতা অনুসন্ধান করা। ভারতে বৈপ্লবিক তৎপরতা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনের সুপারিশ করা। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে এই কমিটি তার রিপোর্ট পেশ করে এবং ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় আইনসভায় কমিটির সুপারিশ উত্থাপিত হয়।

রাওলাট আইনের বক্তব্য/ধারাসমূহ:

সিডিশন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মার্চ Anarchical and Revolutionary Crimes Act of 1919 (নৈরাজ্য এবং বৈপ্লবিক অপরাধ) নামক দুটি কুখ্যাত আইন বিধিবদ্ধ করা হয়। সাধারণভাবে এগুলিই রাওলাট আইন নামে পরিচিত।

রাওলাট আইনের প্রথম আইনে রাজদ্রোহ মামলার বিচারের জন্য নতুন একটি বিচারালয় গঠনের ব্যবস্থা করা হয়। এই কোর্ট বা বিচারালয়ের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনও সুযোগ ভারতীয়দের ছিল না।

দ্বিতীয় আইনে ফৌজদারি দণ্ডবিধির পরিবর্তন করা হয় এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিশেষ ক্ষমতা।

আইন দুটিতে বলা হয় যে-

  • জেলাশাসক ও পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন যে-কোনো ব্যক্তিকে বিনা পরওয়ানায় গ্রেফতার এবং বিনা বিচারে অনির্দিষ্টকাল কারারুদ্ধ করা ও নির্বাসন দেওয়া যাবে।
  • সরকার যে-কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তির বাড়ি বিনা পরওয়ানায় তল্লাশি করতে পারবে।
  • আদালতে বিচারকগণ কোনও জুরির সহায়তা এবং কোনোরকম সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই বিচার সম্পন্ন করতে পারবেন।
  • সরকারবিরোধী সব ধরনের প্রচারকার্য দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে। কোনও সংবাদপত্র স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না। এ ছাড়া বলা হয় রাওলাট আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজনীতি, শিক্ষা বা ধর্মসংক্রান্ত কোনও কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে, রাজদ্রোহিতা দমনের নামে ভারতবাসীর যে-কোনো রকম উপনিবেশবাদ-বিরোধী আন্দোলন স্তব্ধ করার লক্ষ্যে এই কুখ্যাত আইন প্রণয়ন করা হয়। অমৃতবাজার পত্রিকা তাই রাওলাট আইনকে “a gigantic blunder” (এক ভয়াবহ ভ্রান্তি) বলেছে। প্রতিক্রিয়াশীল ও দমনমূলক রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

12. জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড বলতে কী বোঝায়? 

Ans: ব্রিটিশ ভারতের কুখ্যাত ঘটনাগুলির মধ্যে অন্যতম হল জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকান্ড। পাঞ্জাবে রাওলাট আইনবিরোধী প্রতিবাদী আন্দোলন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে, যা প্রতিহত করতে সরকার চরম দমননীতির আশ্রয় নেয়। এরই পরিণতি ছিল ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড।

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড:

বিশ্ব ইতিহাসে অন্যতম নিন্দাজনক ও নৃশংস ঘটনা হিসেবে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড আজও স্মরনীয়।

পটভূমি: ব্রিটিশ সরকার রাওলাট আইন জারি করলে সারা পাঞ্জাব সর্বাধিক প্রভাবিত হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে পাঞ্জাব থেকে বলপূর্বক, সেনাসংগ্রহ, গদর পার্টি-র আন্দোলনের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষদের উপর সরকারের দমনপীড়ন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে গোটা পাঞ্জাবে এক অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এর উপর ছিল পাঞ্জাবের মুখ্য প্রশাসক মাইকেল ও’ ডায়ার (Michael Francis O’Dwyer)-এর স্বৈরাচারী শাসন। এইরূপ পরিস্থিতিতে ইংরেজ সরকার পাঞ্জাবের দুই স্থানীয় জাতীয়তাবাদী নেতা ড. সত্যপাল ও সৈফুদ্দিন কিচলুকে ১০ এপ্রিল গ্রেফতার ও অন্তরিন করলে জনগণ অসন্তুষ্ট হয় ও বিক্ষোভ দেখায়। অপরদিকে ব্রিটিশ সরকার জনসাধারণের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে এই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে।

১৩ এপ্রিল: হত্যাকান্ডের সূচনা ও নির্মমতা:

জালিয়ানওয়ালাবাগ হল পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবস্থিত একটি উদ্যান। চারিদিকে বড়ো বড়ো অট্টালিকা ও প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এই উদ্যানটির প্রবেশপথ ছিল বেশ চওড়া। কিন্তু প্রস্থান পথ ছিল ৪টি ও সেগুলি ছিল খুব সংকীর্ণ।

গান্ধিজি-সহ পাঞ্জাবের নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ১৩ এপ্রিল বৈশাখীর দিনে অমৃতসরের অসংখ্য মানুষ (প্রায় ১০ হাজার) শান্তিপূর্ণভাবেই জালিয়ানওয়ালাবাগে এক সমাবেশে একত্রিত হন। এঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বৈশাখী উৎসবে যোগ দিতে আসা গ্রামীণ নারী, বয়স্ক মানুষ ও শিশু। সভা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই জেনারেল ডায়ার (Reginald Dyer) সেখানে হাজির হয়ে কোনোরূপ প্ররোচনা ছাড়াই কিংবা সভায় উপস্থিত মানুষজনকে সতর্ক না করেই এই নিরস্ত্র শিশু-নারী-বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু উদ্যানের চারিদিক প্রাচীর দিয়ে ঘেরা থাকায় মাঠ থেকে পালিয়ে প্রাণরক্ষা করার কোনও সুযোগই ছিল না নিরস্ত্র অসহায় মানুষগুলির। সেনাবাহিনীর ৫০টি রাইফেল থেকে নির্গত ১৬৫০ রাউন্ড গুলিতে কিছু মিনিটের মধ্যেই ঝাঁঝরা হয়ে যায় অসংখ্য মানুষের দেহ। চারিদিকে হাজার হাজার মানুষ দিশাহীনভাবে ছুটতে থাকেন। অনেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টায় ঝাঁপ দেন পাতকুয়োতে। অনেকে পদপিষ্ট হয়েই মারা যান।

সরকারি মতে, জালিয়ানওয়ালাবাগে সেদিন মারা গিয়েছিলেন ৩৭৯ জন এবং ১২০০ জন = আহত হয়েছিলেন। কিন্তু বেসরকারি মতে, এই সংখ্যা ছিল দ্বিগুণেরও বেশি।

ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া:

এই অমানবিক ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে মানুষের মনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এহেন বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদস্বরূপ ব্রিটিশদের দেওয়া নাইট উপাধি ত্যাগ করেন। এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে গান্ধিজি তাঁর ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকায় লেখেন, ‘এই শয়তান সরকারের সংশোধন করা যাবে না, একে ধ্বংস করা প্রয়োজন।’

HS Class 12 3rd Semester (Third Unit Test) Question and Answer :

  • HS Class 12 Bengali 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 English 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 Geography 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 History 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 Education 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 Political Science 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 Philosophy 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 Sociology 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 Sanskrit 3rd Semester Question Click here
  • HS Class 12 All Subjects First Semester Question Click here

HS Class 12 4th Semester (Forth Unit Test) Question and Answer :

  • HS Class 12 Bengali 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 English 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 Geography 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 History 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 Education 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 Political Science 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 Philosophy 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 Sociology 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 Sanskrit 4th Semester Question Click here
  • HS Class 12 All Subjects 4th Semester Question Click here

Higher Secondary All Subject Suggestion – উচ্চমাধ্যমিক সমস্ত বিষয়ের সাজেশন

আরোও দেখুন:-

HS Bengali Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 English Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 Geography Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 History Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 Political Science Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 Education Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 Philosophy Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 Sociology Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 Sanskrit Suggestion Click here

আরোও দেখুন:-

Class 12 All Subjects Suggestion Click here

◆ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি: বিনামূল্যে নোটস, সাজেশন, PDF ও সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp Group এ Join হয়ে যাও।

Class 12 WhatsApp Groups Click Here to Join

দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th History Question and Answer / Suggestion / Notes Book

আরোও দেখুন :-

দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নউত্তর Click Here

FILE INFO : ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer with FREE PDF Download Link

PDF File Name ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer PDF
Prepared by Experienced Teachers
Price FREE
Download Link  Click Here To Download
Download PDF Click Here To Download

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) অধ্যায় থেকে আরোও বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

Update

[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন রচনা – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]

[আমাদের YouTube চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন Subscribe Now]

Info : ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর

 HS Class 12 History Suggestion | West Bengal WBCHSE Class Twelve XII (HS Class 12th) History Question and Answer Suggestion 

” ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা (West Bengal Class Twelve XII / WB HS Class 12 / WBCHSE / HS Class 12 Exam / West Bengal Council of Higher Secondary Education – WB HS Class 12 Exam / HS Class 12th / WB HS Class 12 / HS Class 12 Pariksha ) এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Bhugol Shiksha .com এর পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ( দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন / দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ও উত্তর । Class-11 History Suggestion / HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer / HS Class 12 History Suggestion / Class-11 Pariksha History Suggestion / History HS Class 12 Exam Guide / MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer / HS Class 12 History Suggestion FREE PDF Download) উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক সাজেশন এবং বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর (HS Class 12 History Suggestion / West Bengal Twelve XII Question and Answer, Suggestion / WBCHSE HS Class 12th History Suggestion / HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer / HS Class 12 History Suggestion / HS Class 12 Pariksha Suggestion / HS Class 12 History Exam Guide / HS Class 12 History Suggestion 2024, 2025, 2026, 2027, 2028, 2029, 2030 / HS Class 12 History Suggestion MCQ , Short , Descriptive Type Question and Answer. / Class-11 History Suggestion FREE PDF Download) সফল হবে।

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর 

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস 

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Question and Answer, Suggestion 

উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) | পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সহায়ক – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer, Suggestion | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Suggestion | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Notes | West Bengal HS Class 12th History Question and Answer Suggestion.

উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর | Higher Secondary Class 12 History Question and Answer, Suggestion 

দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) । HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Suggestion.

WBCHSE HS Class 12th History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়)

WBCHSE HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর । ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।

HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab 4th Semester Question and Answer Suggestions | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর 

HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab 4th Semester Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) সংক্ষিপ্ত, রোচনাধর্মী বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ।

WB HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Suggestion | দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) সাজেশন 

HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর – ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) সাজেশন । HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Suggestion দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।

West Bengal HS Class 12 History Suggestion Download WBCHSE HS Class 12th History short question suggestion . HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Suggestion download HS Class 12th Question Paper History. WB HS Class 12 History suggestion and important question and answer. HS Class 12 Suggestion pdf.পশ্চিমবঙ্গ দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষার সম্ভাব্য সাজেশন ও শেষ মুহূর্তের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর ডাউনলোড। দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর।

Get the HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer by Bhugol Shiksha .com

HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer prepared by expert subject teachers. WB HS Class 12 History Suggestion with 100% Common in the Examination .

Class Twelve XII History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Suggestion | West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Exam 

HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer, Suggestion Download PDF: West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) HS Class 12 Twelve XII History Suggestion is provided here. HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer Suggestion Questions Answers PDF Download Link in Free here.

ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer 

অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব (চতুর্থ অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12 History Bharater Upar Prothom Biswa Juddher Provab Question and Answer ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই Bhugol Shiksha ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Channel Follow Now