ভূগোল ( ভূগোল চিন্তার বিকাশ ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর | Geography – Geographical Thought – Short Question and Answer in Bengali

অধ্যায়ঃ কল্যাণমূলক , সামাজিক , ভাবগত , আলিক ও পদ্ধতিগত ভূগোল | ভূগোল ( ভূগোল চিন্তার বিকাশ ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | WELFARE , SOCIETAL , BEHAVIOURAL , RADICAL - SCHOOL , FUNCTIONAL STRUCTURAL MATERIALISTIC , ECOLOGICAL , REGIONAL । AND SYSTEMATIC SCHOOL - Geographical Thought - Geography

অধ্যায়ঃ কল্যাণমূলক , সামাজিক , ভাবগত , আলিক ও পদ্ধতিগত ভূগোল । WELFARE , SOCIETAL , BEHAVIOURAL , RADICAL – SCHOOL , FUNCTIONAL STRUCTURAL MATERIALISTIC , ECOLOGICAL , REGIONAL । AND SYSTEMATIC SCHOOL

Q. প্রত্যক্ষবাদ ( POSITIVISM ) ।

উত্তর: বহু শতাব্দী ধরে গড়ে ওঠা ভূগােলের ৪টি দর্শনচিন্তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রত্যক্ষদ । প্রত্যক্ষবাদ হল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি । যে পদ্ধতিতে ভৌগােলিক আলােচনাগুলি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ভৌগােলিক সত্যের উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে , তাকে প্রত্যক্ষবাদ বলে । প্রত্যক্ষবাদে সাধারণীকরণ ও তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা উপর জোর দেওয়া হয় । মূলত ফরাসী দেশের উনবিংশ শতাব্দীর দার্শনিক অগাস্ট কোঁৎ – এর চিন্তাধারা থেকে প্রত্যক্ষবাদ উৎপত্তি লাভ করে । 

Q. লেবেন ম্রাউন তত্ত ।

উত্তর: জার্মান ভৌগােলিক ফ্রেডারিক ব্যাটজল – কে মানবীয় ভূগােলের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় । তিনিই লেবেল । প্লাউল তত্ত্ব দেন । এই তত্ত্বে র্যাটজলের বক্তব্য হল যে , একটি নির্দিষ্ট ভৌগােলিক এলাকার মধ্যে স্থানীয় জীবকূল বিকাশ লাভ করে । সুতরাং , জীবকুলের বিকাশের জন্য একটি নির্দিষ্ট space দরকার । এই । দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষকে একটি নিয়ন্ত্রিত জীব বা সত্তা হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে । 

Q. GAYA – এর তত্ত্ব । 

উত্তরঃ পরিবেশগত নিয়ন্ত্ৰণবাদী চিন্তাধারা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ভৌগােলিক গাইয়ার তত্ত্ব বিকাশ লাভ । করে । তিনি বলেন পৃথিবী মাতৃস্বরূপ । তিনি মানুষসহ সকল জীবজগতকে লালনপালন করছেন । গাইয়া পৃথিবীকে জীবন্ত সত্তারূপে বর্ণনা করেছেন । 

Q. অভিজ্ঞতাবাদ ( EMPIRISM ) ।

উত্তরঃ ভৌগােলিক দর্শন চিন্তাধারার এক প্রধান খাত অভিজ্ঞতাবাদ । অর্থাৎ , ভৌগােলিকরা জানবে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে । অভিজ্ঞতাবাদীদের বক্তব্য হল যে সব জিনিসের অস্তিত্ব আছে এবং যাতে আমাদের অভিজ্ঞতা হয় । তাই হল ভূগােলের আলােচ্য বিষয়বস্তু । অভিজ্ঞতাবাদের পদ্ধতি বা বিধিতন্ত্র হল । অভিজ্ঞতাপ্রসূত তথ্য উত্থাপন করা ।

Q. আচরণগত ভূগােল । 

উত্তরঃ ভূগােলে প্রত্যক্ষবাদী দর্শন জনপ্রিয় হবার সঙ্গে সঙ্গে ভৌগােলিকরা সরাসরি মানুষের আচরণ | সমীক্ষা করার প্রয়ােজন অনুভব করলেন । জানতে চাইলেন মানুষেরা প্রকৃতপক্ষে কী করে , কীভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছায় , অবরােহী যুক্তির বদলে আরােহী বিচারের প্রয়ােজন দেখা দেয় । ভূগােলে গড়ে উঠল আচরণগত প্রত্যক্ষবাদ । মানুষের আচরণের পরিমাপ , ব্যাখ্যা ও সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রত্যক্ষবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর । এই ধারাকে বলা হয় আচরণগত ভূগােল ।

Q. মানবতাবাদী ( Humanistic ) ভূগােলের ধারণা ।

উত্তরঃ প্রত্যক্ষবাদের ঠিক বিপরীত চিন্তাধারার মতবাদ গড়ে ওঠে ১৯৭০ এর দশকের পর ভৌগলিক চিন্তানীতিতে । এই চিন্তানীতির ভূগােলকে মানবতাবাদী ভূগােল বলা হয় । মানবতাবাদী ভূগােলের কেন্দ্রে আছে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী মানুষ ও তার বেদন জগৎ | এই ভূগােলে জানার পদ্ধতি হল অধ্যাত্মীয়ভাবে একক মানুষের তৈরী জগতের মধ্যে থেকে জ্ঞানকে পাওয়া ।
বিষয়বস্তু: এর মূল বিষয় হল যা কিছু রয়েছে তা মানুষ আছে বলে মনে করছে বলেই আছে ; মানবতা বাদের মূল পদ্ধতি হল মানুষের ব্যক্তিগত জগৎগুলােকে নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধান করা । 
বৈশিষ্ট্য : ( ক ) মানবতাবাদে ব্যক্তিচিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গীকে গুরুত্ব দেওয়া হয় । ( খ ) মানবতাবাদী ভূগােলে অনেকটাই মানবমুখী চিন্তার ছাপ থাকে । ( গ ) সমীকরণ ছাড়াই এখানে বিশেষকে গুরুত্ব দেওয়া হয় । ( ঘ ) মানুষের সচেতনতা , অবগতি ও সৃজনশীলতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় । ( ঙ ) সমীক্ষাকারীর নিজের ধ্যান – ধারণাকে মর্যাদা দেওয়া হয় । 
ধারা:  মানবতাবাদী – ভূগােলের কয়েকটি বিশেষ ধারা গুরুত্বপূর্ণ : ( ক ) আদর্শবাদ । ( খ ) প্রতিভাস বিজ্ঞান । ( গ ) অস্তিবাদ ।

Q. গঠনবাদ ( Structuralism ) । 

উত্তরঃ সংজ্ঞা: আপাতদৃষ্টিতে কোন বিষয় সম্পর্কে যা তার মধ্যে এক আভ্যন্তরীন প্রক্রিয়া কাজ করে । অভাবীন প্রক্রিয়া দেখা না গেলেও এই প্রক্রিয়াই দশ্যমান জগতের কারণ : তাই আভ্যন্তরীন প্রক্রিয়া একান্তই জানার দরকার হয় ; ইহাই গঠনবাদ জ্ঞান তত্ত্ব নামে পরিচিত ।
 সুচনা: উনবিংশ শতাব্দীতে ফ্রান্সে গঠনবাদের সূচনা হয় ; ফ্রেডারিক র্যাটজেল ও ডুহাইমের তর্কে গঠনবাদের কথা বলেন । অর্ধ শতক পরে জা – পিয়াগেট ও লুই অ্যালথুসারের চিন্তাধারা থেকে গঠনবাদী দর্শনের পূর্ণ বিকাশ সম্ভব হয় । 
 গুরুত্ব: এই তত্ত্ব অনুসারে সামাজিক গঠনবাদে জানার বিষয়বস্তু ও তত্ত্ববিদ্যা হল যা প্রকৃতগতভাবে বিদ্যমান থাকে ; যেমন  যে সকল শক্তি পৃথিবী তৈরী করেছে বা সামাজিক গঠনগুলাে সেগুলােকে প্রত্যক্ষভাবে চোখে দেখা যায় না ; কেবলমাত্র চিন্তাধারা দিয়ে সেগুলােকে উপলদ্ধি করতে হয় । তাই গঠনবাদ পদ্ধতিতে তত্ত্ব নির্মানের উপর অধিক জোর দেওয়া হয় ।

Q. অসাম্যের ভূগােল । 

উত্তরঃ অসাম্যের ভূগােল সমীক্ষা করে অসম বন্টনকে । এই অসাম্য সামাজিক , রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক বা দৈশিক যে কোন ধরনের হতে পারে । অসাম্যের ভূগােল শুধুমাত্র অসাম্যের প্রকৃতি ও কারণ সাধারণীকরণ করা যায় না বরঞ্জ দৈশিক অসাম্যের তীব্রতাকে গভীরভাবে অনুধাবন করাই এর উদ্দেশ্য ।

Q. কল্যাণমূলক ভূগােল ( Welfare Geography ) ।

উত্তরঃ সংজ্ঞা: নানারকম সরকারী নীতি ও প্রকল্প গ্রহণ সমাজের কল্যাণে কিরূপ প্রভাব বিস্তার করে তার ভৌগলিক ব্যাখ্যাকে কল্যাণমূলক ভূগােল বলে । 
 মূলকথা: সামাজিক বিভিন্ন উপকরণ সমাজে কিরূপ বন্টিত হয়েছে ; আয়ের বন্টনে সামঞ্জস্য কিরূপ ; সমাজে দারিদ্রের তীব্রতা ও বন্টন কেমন তার আলােচনা করা হয় কল্যাণমূলক ভূগােলে । শিল্পের অবস্থান , জনবন্টন , পরিষেবা , পরিবহণ ব্যবস্থা , পণ্য বিনিময় প্রভৃতি সমীক্ষার সময় মানুষের জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ্যকে সমীক্ষা করলে তাই হল কল্যাণমূলক ভূগােল । এরূপ ভূগােলে সমাজের ধরণ ; নানান । অর্থনৈতিক , সামাজিক , রাজনৈতিক , দৈশিক গঠনকে ফুটিয়ে তুলে তার আলােচনা করা হয় ।
     সমাজে পরিবর্তনের সাথে সাথে সামাজিক কল্যাণ বৃদ্ধি পায় কিনা তারও বিস্তৃত আলােচনা করা হয় কল্যাণমূলক ভূগােলে । 
    কল্যাণমূলক ভূগােলে জোর দেওয়া হয় কোন সামাজিক প্রাণী কিরুপ সামাজিক অবস্থায় আছে তার উপর ।

Q. প্রণালীবদ্ধ ভূগােল ( SYSTEMATIC GEOGRAPHY ) । 

উত্তরঃ ভৌগােলিক আলােচনায় যখন ভৌগােলিকগণ প্রত্যক্ষবাদী অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিভিন্ন ঘটনাবলীর আলােচনা সুনির্দিষ্ট প্রণালী এবং কার্যকারণ তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করে তখন তাকে প্রণালীবদ্ধ ভূগােল বলে । দৈশিক বিষয়গুলি এবং তাদের পারস্পরিক বা সম্পর্ক সম্বন্ধে চোখে দেখা তথ্য থেকে প্রকাশে হানাে । এই মতবাদ অনুসারে ভুগােল অন্যান্য বিষয় থেকে আলাদা নয় । প্রণালীবদ্ধ ভূগােল সমধরণের প্রক্রিয়া থেকে উৎপন্ন নির্দিষ্ট কতকগুলি বৈশিষ্ট্যকে সমীক্ষা করে । স্কীফার এর প্রবক্তা । 

Q. কালিক ভূগােল ( TIME GEOGRAPHY ) । 

উত্তরঃ ভৌগােলিক হ্যাগারস্ট্রন্ডের মতে আঞ্চলিক বিজ্ঞান ও পরিকল্পনায় ‘ দেশ ’ – এর সঙ্গে সঙ্গে কালকেও বিচার করতে হবে । দেশ ও কাল দুটি বিষয়ই মানুষের কাজকর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে , বাধা দেয় । অর্থাৎ , ভূগােলের যে শাখায় মানুষের কাজকর্মের উপর কালের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় তাকে কালিক ভূগােল বলা হয় ।

Q. মূলক ভূগােল ( RADICAL GEOGRAPHY ) ।

উত্তরঃ 1970 খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও কৃয়াঙ্গদের সামাজিক অধিকার লাভের আন্দোলনের পটভূমিকায় জন্ম নেয় মূলক ভূগােল । এটা হল ভূগােলেরই একটি দৃষ্টিভঙ্গী । যা পুরাতন চিন্তাধারাগুলিকে আমূল বদলে ফেলতে চায় । মূলক ভূগােল জোর দেয় সমাজ , অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রনীতিকে সামগ্রিকভাবে দেখার উপর । এটা মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক চেতনাকে জাগিয়ে তুলতে চায় । আর্থ – সামাজিক সমস্যাগুলির মূল উৎসগুলিকে তুলে ধরতে চেষ্টা করে । পিটের মতে , কিছুটা প্রতিষ্ঠিত ভূগােলের প্রতি এক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া থেকে মুলক ভুগােল গড়ে উঠেছে । ডেভিড হার্ভে , উইলিয়াম বাঙ্গে এর প্রবক্তা ।

Q. নারীবাদ ভূগােল ( Feminest Geography ) । 

উত্তরঃ ওয়েব স্টারের অভিধানে নারীবাদ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে — “ The theory of the political , economic and social equility of the sexes ‘ বর্তমানে নারী ও পুরুষের সমপ্রতিষ্ঠা নেই ; তাই পরিবর্তনকামী ভূগােলের যে শাখা নারীদের প্রতি বৈষম্যকরণের প্রসঙ্গ , অবস্থা ও রূপের ব্যাখ্যা করে তাকে নারীবাদী ভূগােল বলে । 1960 – 70 এর মধ্যে এই শাখা গুরুত্ব লাভ করে । নারীবাদীরা ক্ষমতার অসম বন্টনকে বদলাতে এবং নারীদের অধিক ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষপাতী ।

Q. প্রয়ােগবাদ ( PRAGMATISM ) । 

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ও বিংশ শতাব্দীর গােড়ার দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ওঠে প্রয়ােগবাদ । এই মতবাদ অনুসারে বিশ্বাস করা হয় মানুষের কাজকর্ম অর্থপূর্ণভাবে আধ্যাত্মীয় ব্যাখ্যা দ্বারা গঠিত । 
প্রবক্তা : চার্লস পাইন , উইলিয়াম জোন্স ও জন ডিউই এই মতবাদের প্রবক্তা । 

Q. ভূগােলে প্রাসঙ্গিকতা ।

উত্তরঃ সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই মানুষকে ভূগােল জানতে হয়েছে প্রতি পদে পদে । কারণ মানুষের প্রতিটি কাজের পেছনে ভূগােল যুক্ত । একজন সাধারণ মানুষকে ভূগােলের সামান্য জ্ঞান রাখতে হয় । তাই সাধারণ মানুষের কাছে ভূগােলের প্রাসঙ্গিকতা খুব বেশি । 

Q. তাত্ত্বিক ও ফলিত ( Theoretical and Applied ) ভূগােলের মধ্যে পার্থক্য । 

উত্তরঃ 1960 স ল L . D . Stamp ‘ ফলিত ভূগােলের কথা বলেন ; ভৌগলিকের কাজ হল মানুষ ও পরিবেশের সম্বন্ধের সামগ্রিকতাকে দেখা । ফলিত ভূগােল হল সামাজিক , অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানে ভৌগলিক জ্ঞান , তথ্য , পদ্ধতি , প্রযুক্তি ও নিয়মগুলাের ফলিত প্রয়ােগ । স্বভাবতঃই তাত্ত্বিক ভূগােলের সাথে । এর কিছু পার্থক্য দেখা যায় ; যেমন-

ফলিত ভূগােল 
১ । ফলিত ভূগােল বিশুদ্ধ জ্ঞানের প্রসারিত অঙ্গ 
২ । ফলিত ভূগােল সমস্যাগুলাের সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা নেয় । 
৩ । ফলিত ভূগােলে তাত্ত্বিক মডেলগুলােকে নতুন তথ্য আহরণের সাথে সাথে বদলানাে হয় ও নতুন রূপদান করে । 
৪ । ফলিত ভূগােলে লক্ষ্য হয় অধিক গুরুত্বপূর্ণ । 
৫ । ফলিত ভূগােলের মূলকথা হল — সবকিছু । যেমন হওয়া উচিত । 
৬ । ফলিত ভূগােল মূলতঃ নিয়মস্থাপনকারী বা Nomothetic . 
৭ । এতে মানচিত্রের ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী ।

তাত্ত্বিক ভূগােল 
১ । তাত্ত্বিক ভূগােল হল বিশুদ্ধ জ্ঞান । 
২ । তাত্ত্বিক ভূগােলে পৃথিবীর নানা সমস্যা তুলে ধরা হয় । 
৩ । তাত্ত্বিক ভূগােলের মডেলগুলাে ধরে নেয় সামাজিক , অর্থনৈতিক কাঠামােটি নির্দিষ্ট এবং তা বদলানাে সম্ভব নয় । 
৪ । তাত্ত্বিক ভূগােলে উপায় হয় শ্রেয়তর । 
৫ । তাত্ত্বিক ভূগােলের মূলকথা হল — সবকিছু যেমনটি আছে । 
৬ । তাত্ত্বিক ভূগােল ভাবলেখ ব Idiographic হতে পারে । 
৭ । মানচিত্রের ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী নয় ।

Q. মুলক ভূগােল ( Radical Geography ) ও কালিক ভূগােলের ( Time Geography ) পার্থক্য । 

উত্তরঃ মুলক ভূগােল ( Radical Geography ) : 
সংজ্ঞা: ভৌগলিক বিষয়বস্তু একটি নির্দিষ্ট নিয়মের ভিত্তিতে আলোচনাকে মূলক ভূগােল বলে । 
মূল দর্শন: গতানুগতিক সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তন করা।
গুরুত্ব: সামাজিক বৈষম্য দূর হয় ।
সমর্থক: পিট , জনস্টন ।

কালিক ভূগােলের ( Time Geography ) :
সংজ্ঞা: যে ভূগােলে মানুষের কাজকর্মের উপর কালের প্রভাব বিচার বিশ্লেষণ করা হয় , তাকে কালিক ভূগােল বলে ।
মূল দর্শন: সময়ের পরিবর্তে মানুষের কর্মপদ্ধতির পরিবর্তন ।
গুরুত্ব: মানুষ সময়ের গুরুত্বকে প্রধান্য দেয় । 
সমর্থক: জেমস , হ্যাগারস্ট্যান্ড ।

Q. প্রণালীবদ্ধ ভূগােল ( Systematic Geography ) ও মূলক ভূগােলের ( Radical ৫৮ Geography ) পার্থক্য ।

উত্তরঃ প্ৰণালীবদ্ধ ভূগােল : ( a ) ভৌগলিক বিষয়বস্তু আলােচনাকে একটি নির্দিষ্ট প্রণালীরূপে আলােচনাকে প্রণালীবদ্ধ ভূগােল বলে । ( b ) ভৌগলিক বিষয়বস্তুকে প্রণালীতত্ত্বে পরিণত করে । ( c ) হ্যাগারস্ট্যণ্ড , চোরলে ও বেরী এই মতবাদের প্রবক্তা । ( d ) ভৌগলিক আলােচনাকে সরলভাবে বােঝা যায় ।
মূলক ভূগােল : ( a ) ভৌগলিক বিষয়বস্তু একটি নির্দিষ্ট নিয়মের । ভিত্তিতে আলােচনাকে মূলক ভূগােল বলে । ( b ) ভৌগলিক বিষয়বস্তুর আলােচনাকে নির্দিষ্ট নিয়ম ও নীতিতে ব্যাখ্যা করে । ( c ) পিট , জনস্টন এই মতবাদের প্রবক্তা । ( d ) সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন সম্ভব ।

Q. আরােহী ( Inductive ) ও অবরােহী পদ্ধতির ( Deductive ) পার্থক্য ।

উত্তরঃ আরােহী পদ্ধতি ( Inductive ) : 
সংজ্ঞা : যখন পৃথিবীর কোন অঞলে প্রকৃত সমীক্ষার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে আসা হয় , তাকে আরােহী পদ্ধতি বলে । 
স্কেল : ক্ষুদ্র স্কেলে ও ক্ষুদ্র অঞ্চলের ভৌগলিক সমীক্ষার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়ােগ করা হয় । 
ভিত্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক : ধারণা তাই অধিক গ্রহণযােগ্যতা গ্রহণযােগ্য । 
সফলতা : সাফল্যের সম্ভাবনা বেশী ।

অবরােহী পদ্ধতির ( Deductive ) : 
সংজ্ঞা : পক্ষান্তরে যে পদ্ধতির মাধ্যমে প্রথমে অনুমান ও পরে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে মিলিয়ে দেখা হয় , তাকে অবরােহী পদ্ধতি বলে ।
স্কেল :  বৃহৎ স্কেলে ও বৃহৎ অঞলের সমীক্ষার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়ােগ করা হয় ।
ভিত্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক : অনুমানভিত্তিক ধারণা তাই বেশী গ্রহণযােগ্য নয় ।
সফলতা : সাফল্যের সম্ভাবনা কম ।

Q. মানবতাবাদী ( Humanistic ) ভূগোেল ।

উত্তরঃ সংজ্ঞা : ১৯৭০ – এর দশকে মানবতাবাদী চিন্তাধারা গড়ে ওঠে । মানবতাবাদী ভূগােলের কেন্দ্রে আছে সিদ্ধান্তগ্রহণকারী মানুষ ও তার বেদনাজগৎ । 
বিষয়বস্তু  : এর মূল বিষয়বস্তু হল যা কিছু রয়েছে তা মানুষ আছে বলে মনে করছে বলেই আছে ; মানবতাবাদের মূল পদ্ধতি হল মানুষের ব্যক্তিগত জগৎগুলােকে নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধান করা । 
বৈশিষ্ট্য : ( ক ) মানবতাবাদী ভূগােলে অনেকটাই মানবমুখী চিন্তার ছাপ থাকে । ( খ ) মানবতাবাদে ব্যক্তিচিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় । ( গ ) মানুষের সচেতনতা , অবগতি ও সৃজনশীলতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় ।

Q. অস্তিত্ববাদ । 

উত্তরঃ অস্তিত্ববাদ একটি মিশ্র চিন্তাধারা । এই চিন্তাধারার মূল বক্তব্য হল , মানষের কাজের মধ্য দিয়ে বাস্তব সৃষ্টি হয় – মানুষের দ্বারা এবং মানুষের জন্য । ভূগােলে অস্তিত্ববাদের প্রধান প্রবক্তা মারউইন স্যামুয়েলস অস্তিত্ববাদ ভৌগােলিকদের দৈনন্দিন বাস্তব জীবনের গুণ ও অর্থগুলি জানতে সাহায্য করে । 

Q. ভূগােলে অবস্থানের গুরুত্ব । 

উত্তরঃ ভূ – পৃষ্ঠে প্রতিটি স্থানই তার অবস্থানের দিক থেকে অদ্বিতীয় । সেখানকার প্রাকৃতিক ও মানবীয় বিষয়গুলিও পৃথক । তাই প্রতিটি স্থানের অবস্থান সঠিকভাবে নিরূপণ করা এবং ঐ স্থানের প্রাকৃতিক ও মানবীয় পরিবেশ ব্যাখ্যা করা ও পাশাপাশি স্থানগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় করা হয় । প্রত্যক্ষবাদ ও মাত্রিক বিপ্লবের পরে ভূগােলে অবস্থান গুরুত্ব পেতে শুরু করে । 
Q. সামাজিক নিয়ন্ত্রণবাদ ( SOCIAL DETERMINISM ) । 
উত্তরঃ ভৌগােলিক প্রেস্টন জেনসের মতে পরিবেশ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে না , মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থা । অর্থাৎ , মানুষের সৃষ্ট নিয়মকানুন দ্বারা মানুষ আবদ্ধ একেই বলে সামাজিক নিয়ন্ত্রণবাদ ।

Q. ভূগােলের প্রণালীবদ্ধতা ।

উত্তরঃ SYSTEMATIC APPROACH অনুসারে ভৌগােলিকরা বিভিন্ন ঘটনাবলীকে একটি প্রণালীরূপে আলােচনা করে এবং জটিল বিষয়গুলিকে সাধারণ প্রণালী তত্ত্বে পরিণত করে । যেমন — সারা পৃথিবীর নদীতান্ত্রিক River System , পরিবহণ প্রক্রিয়া Transport System . যখন কোন প্রাকৃতিক বিষয় বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে সামগ্রিক প্রণালীরূপে আলােচনা হয় , তাকে প্রণালীবদ্ধতা বলে । প্রণালী দুই প্রকার হতে পারে । যথা – উন্মুক্ত প্রণালী ও বদ্ধ প্রণালী । 

Q. প্রণালীল ভূগােল Systematic Geography ।

উত্তরঃ সংজ্ঞা : প্রেস্টন জেমসের মতে প্রণালীবদ্ধ ভূগােল সম ধরণের প্রক্রিয়া থেকে উৎপন্ন নির্দিষ্ট কতগুলাে বৈশিষ্ট্যকে সমীক্ষা করে পথিবীর যে কোন স্থানের , অর্থাৎ নির্দিষ্ট এলাকার প্রতি লক্ষ্য না দিয়ে ভগােলর অন্তর্গত যে সকল বিষয় নিয়ে তাদের ব্যাখ্যা করা হয় তাই হল প্রণালীবদ্ধ ভূগােল । যেমন — 
( ক ) প্রাকৃতিক : ভূ – পৃষ্ঠকে অঞলে ভাগ করে ভূ – প্রকৃতি , জলবায়ুর নানা দিক , মৃত্তিকা , উদ্ভিদ এসবের আলােচনা করা হয় । 
( খ ) মানবীয় ভূগােল : এতে জনসংখ্যাতত্ত্ব , জীবিকা , সামাজিক নিয়ম , প্রক্রিয়া , শহর গ্রামীন বসতি প্রভৃতির আলােচনা করা হয় ।

Q. CRITICAL REVOLUTION ।

উত্তরঃ প্রত্যক্ষবাদের বিরুদ্ধে 1970 দশকে ভূগােলে যে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা শুরু হয় তাকে Critical Revolution বলে এবং এই ভূগােলকে মানবতাবাদী ভূগােল বলে । অর্থাৎ শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ অস্তিত্ব আছে এমন জিনিসই নয় , মানুষের মানসিক জগতকেও ধরতে হবে । 

Q. কর্মবাদ বা FUNCTIONALISM ।

উত্তরঃ Functionalism হচ্ছে ভৌগােলিক চিন্তাভাবনার এক বিশেষ দৃষ্টিকোণ যাতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সামজিক ঘটনাবলীকে কার্যকারণ তত্ত্বের উপর নির্ভর করে ব্যাখ্যা করে । অর্থাৎ বিভিন্ন ঘটনাবলী কেন ঘটছে এবং তার ফলে কি হচ্ছে এবং এর পারস্পরিক সম্বন্ধ Functionalism – তে আলােচনা করা হয় ।

Q. PRINCIPLE OF FUNCTIONALISM ।

উত্তরঃ Functionalism – এর মূল আদর্শ হল — 
i ) পারস্পরিক সম্পর্কের পদ্ধতি ব্যাখ্যার জন্য সমাজকে পবিত্রভাবে পরীক্ষা করা । 
ii ) ভারসাম্যযুক্ত সামাজিক পরিবেশ রক্ষা করা । 
iii ) ঘটনার মূল কারণ খোঁজা প্রভৃতি । 

Q. FUNCTIONALISM – এর সমালােচনা ।

উত্তরঃ Functionalism মতবাদ সমাজকে স্থিতিশীল করে রাখে যা বিবর্তনের বিরােধী । এক কর্মবাদে একটি পরিলক্ষিত বিন্যাস বা তথ্য প্রযুক্তি পদ্ধতির উদ্দেশ্যের কোন সঠিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না । ফলে কর্মবাদ সমালােচিত হয় । 

Q. মনুষ্যবাদের সমালােচনা ।

উত্তরঃ মনুষ্যবাদ মতবাদে বিশ্বাসীরা কখনই কোনও বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তের দিকে যেতে পারে না । এই মতবাদ প্রাকৃতিক ও মানবীয় ভূগােলের মধ্যে পার্থক্য রচনা করে এবং এই পর্যবেক্ষণ নির্ভর মতবাদ ফলিত বিদ্যার পরিপন্থী যা বিজ্ঞানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে না ।

Q. ভূগােলে অবলেখি দৃষ্টিভঙ্গী ( IDIOGRAPHIC APPROACH ) ।

উত্তরঃ ‘ldiography’ অর্থাৎ ‘ Idea with graph ’ পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের ভৌগােলিক বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন । হওয়ার জন্য অবরােহী পদ্ধতি অবলম্বন করে পৃথিবীর স্থান ও কাল সমূহের বিশ্লেষণ করা হয় । এই দৃষ্টিভঙ্গীতে অবরােহী পদ্ধতির মাধ্যমে প্রকল্প গঠন করে বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে আলােচনা করা হয় । আঞ্চলিক ভূগােলে এর ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায় । সমর্থক : এই মতের সমর্থক হলেন ইমানুয়েল কান্ট , হার্টসােন প্রমুখ ভৌগােলিকরা । 

Q. ভূগােলে নিয়মস্থাপনকারী দৃষ্টিভঙ্গী ( NOMOTHETIC APPROACH ) ।

উত্তরঃ পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের ভৌগােলিক বৈশিষ্ট্য আলাদা হলেও তারা কিন্তু একটা নির্দিষ্ট নিয়মতন্ত্র মেনে চলে , তাকেই নিয়মস্থাপনকারী দৃষ্টিভঙ্গী বলে । প্রণালীবদ্ধ ভূগােলে এই দৃষ্টিভঙ্গী ব্যবহার হয় । আরােহী পদ্ধতি দ্বারা পর্যবেক্ষণ থেকে সাধারণীকরণ করা হয় ।
সমর্থক : আলেকজান্ডার ভন হামবােল্ড , এডওয়ার্ড হান্টিংটন ও কার্ল রিটার এই দৃষ্টিভঙ্গী প্রতিষ্ঠা করেন ।

INFO : Geography – Geographical Thought – Question and Answer | ভূগোল – ভূগোল চিন্তার বিকাশ – অধ্যায়ঃ কল্যাণমূলক , সামাজিক , ভাবগত , আলিক ও পদ্ধতিগত ভূগোল । WELFARE , SOCIETAL , BEHAVIOURAL , RADICAL – SCHOOL , FUNCTIONAL STRUCTURAL MATERIALISTIC , ECOLOGICAL , REGIONAL । AND SYSTEMATIC SCHOOL – প্রশ্নোত্তর

         ” ভূগোল ( ভূগোল চিন্তার বিকাশ – অধ্যায়ঃ কল্যাণমূলক , সামাজিক , ভাবগত , আলিক ও পদ্ধতিগত ভূগোল । WELFARE , SOCIETAL , BEHAVIOURAL , RADICAL – SCHOOL , FUNCTIONAL STRUCTURAL MATERIALISTIC , ECOLOGICAL , REGIONAL । AND SYSTEMATIC SCHOOL ) “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক বিভিন্ন শ্রেনীর পরীক্ষা (Class 5, 6, 7, 8, 9,  Madhyamik, Higher Secondary – HS, College & University Exam) এবং বিভিন্ন চাকরির (WBCS, WBSSC) পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে BhugolShiksha.com এর পক্ষ থেকে ভূগোল পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নো ও উত্তর উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস  ভূগোল Geography ( ভূগোল চিন্তার বিকাশ – অধ্যায়ঃ কল্যাণমূলক , সামাজিক , ভাবগত , আলিক ও পদ্ধতিগত ভূগোল । WELFARE , SOCIETAL , BEHAVIOURAL , RADICAL – SCHOOL , FUNCTIONAL STRUCTURAL MATERIALISTIC , ECOLOGICAL , REGIONAL । AND SYSTEMATIC SCHOOL / সংক্ষিপ্ত ছোট প্রশ্ন ও উত্তর / SAQ / Short Question and Answer / QNA / FREE PDF Download ) পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নোত্তর সফল হবে।

Source : Bhugolika

    স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ডিজিটাল মাধ্যম BhugolShiksha.com । এর প্রধান উদ্দেশ্য পঞ্চম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী, মাধ্যমিকউচ্চ মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় এবং গ্রাজুয়েশনের শুধুমাত্র ভূগোল বিষয়কে  সহজ বাংলা ভাষায় আলোচনার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে সহজ করে তোলা। 

        আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই আমাদের ভূগোল শিক্ষা – Bhugol Shiksha – BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। ভূগোল বিষয়ে যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইটটি ফলাে করুন এবং নিজেকে ভৌগোলিক  তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন , ধন্যবাদ।

নিচের বাটনে ক্লিক করে শেয়ার করেন বন্ধুদের মাঝে