অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী
Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali : বিজ্ঞানী অ্যান্থনি ফিলিপ ভন লিউয়েন হুককে গবেষণা কর্মে উৎসাহ প্রদান ও আবিষ্কারের সম্মান স্বরূপ রাশিয়ার সম্রাট পিটার দি গ্রেট ও ইংল্যান্ডের রাণী এলিজাবেথ অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক (Antonie Van Leeuwenhoek) এর গৃহে এসে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে ব্যাক্টেরিয়া প্রত্যক্ষ করেন। অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক (Antonie Van Leeuwenhoek) এর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত (২০০-৪০০ গুণ) বিবর্ধন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রায় ২৫০টি অণুবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেছিলেন। আতশ কাঁচে কাপড়ের সুতা পরীক্ষা করা ছিল অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক (Antonie Van Leeuwenhoek) এর অন্যতম পেশা।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali বা অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর আত্মজীবনী বা অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর (Antonie Van Leeuwenhoek Jivani Bangla. A short biography of Antonie Van Leeuwenhoek. Antonie Van Leeuwenhoek Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক কে ছিলেন ? Who is Antonie Van Leeuwenhoek ?
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক (Antonie Van Leeuwenhoek) ছিলেন একজন ওলন্দাজ বিজ্ঞানী। অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক (Antonie Van Leeuwenhoek) প্রথম অণুবীক্ষণযন্ত্র তৈরি করেন এবং ব্যাক্টেরিয়া স্নায়ুকোষ, হাইড্রা, ভলভক্স ইত্যাদির অত্যন্ত সঠিক বর্ণনা দেন।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali :
নাম (Name) | অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক (Antonie Van Leeuwenhoek) |
জন্ম (Birthday) | ২৪ অক্টোবর ১৬৩২ (24th October 1632) |
জন্মস্থান (Birthplace) | ডিলেট, লন্ডন, ইংল্যান্ড |
জাতীয়তা | ডাচ |
পরিচিতির কারণ | ইতিহাসে প্রথম স্বীকৃত মাইক্রোস্কোপিস্ট এবং মাইক্রোবায়োলজিস্ট
অণুজীবের মাইক্রোস্কোপিক আবিষ্কার (পশুপাখি) |
কর্মক্ষেত্র | মাইক্রোস্কোপি
মাইক্রোবায়োলজি |
মৃত্যু (Death) | ২৬ আগস্ট ১৭২৩ (26th August 1723) |
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জন্ম – Antonie Van Leeuwenhoek Birthday :
অ্যান্টনি ভন লিওয়েন হক লিওয়েন হক ১৬৩২ খ্রীষ্টাব্দে হল্যান্ডের ডিলেট ( Delet ) অঞ্চলে এক সম্ভ্রান্ত অথচ দরিদ্র ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর পরিচয় – Introduction :
তিনি যে যুগে জন্মেছিলেন সেটা ছিলাে অন্ধকারের যুগ । এই অন্ধত্ব ছিলাে বিদ্যায় , বিশ্বাসে , জ্ঞানে ও আচরণে সে যুগের মানুষেরা , এমন কি বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত বিশ্বাস করতেন সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘােরে , আর তাতেই হয় দিনরাত । শুধু দিনরাতের ব্যাপার নয় , মানুষের রােগ ব্যাধি , দুর্ঘটনা ও মৃত্যু এসবের জন্য সেকালে প্রচলিত ছিলাে নানা কুসংস্কার ও কাল্পনিক মিথ্যা ধারণা । ধর্মের অনুশাসনের বিরুদ্ধে , অন্ধ বিশ্বাস , ধারণা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে টু শব্দ করার ক্ষমতা ছিলাে না কারাে । তবু সে যুগের নানা কুসংস্কার আর অন্ধত্বের বিরুদ্ধে অসম সাহসে অতি কষ্টে হলেও যেসব মনীষীরা জ্ঞানের আলাে জ্বালাতে সচেষ্ট হয়েছিলেন , তাদেরই একজন বিজ্ঞানী লিওয়েন হক ।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর কর্মজীবন – Antonie Van Leeuwenhoek Work Life :
জন্মের পর কিছুদিনের মধ্যে তার পিতার মৃত্যু হয় । মায়ের আশা ছিলাে ছেলেকে তিনি মানুষের মতাে মানুষ করে তুলবেন । কিন্তু হাকের লেখাপড়া ভালাে লাগতাে না । ষােলাে বছর বয়সে পড়া ছেড়ে এক মুদির দোকানে চাকরি নেন । আর সেই সাথে ঘরে আনলেন নতুন বউ । এরপর প্রায় কুড়িটা বছর কেটে গেল , আর কয়েকটা বিয়ে করা ছাড়া তার জীবনে কোনাে পরিবর্তন এলাে না । বিশ বছর পর মুদি দোকানদারী ছেড়ে স্থানীয় পৌরসভায় ঘর দেখাশুনার চাকরি নিলেন । এই সময় তাকে একটি নতুন নেশায় পেয়ে বসেছিলাে কে যেন তাকে বলেছিলাে কাচের লেন্সের মধ্যে দিয়ে দেখলে সবকিছু বড় দেখায় । আর তাই তিনি কাচ ঘষে ঘষে লেন্স তৈরি করা শুরু করলেন । যারা চশমা তৈরি করে তাদের কাছে ঘুরে ঘুরে চশমা তৈরির কৌশলও শিখে ফেললেন ।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর কাঁচের লেন্স :
কাচ ঘষাঘষির খেলায় লিওয়েন হক একদিন দেখলেন সত্যি সে এক বিস্ময় ক্ষুদ্র যে জিনিসটাকে তিনি খালি চোখে দেখতেই পেতেন না , লেন্সের মধ্য দিয়ে দেখলে সেই জিনিসটাকে বেশ বড় দেখায় স্পষ্ট দেখায় । আরাে মজার ব্যাপার হলাে , এই কাচটা যতাে উন্নতমানের হয় , দর্শনীয় জিনিসটা ততাে বেশি স্পষ্ট ও বড় দেখায় । তাই তিনি চেষ্টা করতে লাগলেন আরাে উন্নতমানের কাচ যােগাড় করতে । আরাে সুন্দর করে লেন্স তৈরি করতে । তিনি লক্ষ্য করলেন , এই দৃশ্যমান জগতের মধ্যেই আরাে একটা অদৃশ্য জগত রয়েছে । সে জগত বড় বিচিত্র , বড় বিস্ময়কর , বড় বিশাল সেই বিময়কর । জগতকে তার আবিষ্কার করতে হবে । আর সেই বিচিত্র বিস্ময়কর জগতে প্রবেশ করতে হলে একমাত্র পথ হলাে কাচের লেন্স ।
লিওয়েন হককে কাচের লেন্সের খেলা সেই সময় এমন নেশার মতাে পেয়ে বসেছিলাে যে , তিনি তখন লেন্স ছাড়া আর কিছুই ভাবতেও পারতেন না । তিনি যা কিছু সামনে পেতেন ছােট অথবা বড় তাই এনে রাখতেন কাচের লেন্সের নিচে আর তখনই দৃশ্যমান বন্ধটির মাঝে ভেসে উঠতাে আর একটি অদৃশ্য জগত । সেসব দেখে তিনি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যেতেন । একদিন হক একটা মাছির মাথা কেটে লেন্সের নিচে রাখলেন । কী আশ্চর্য , তিনি দেখলেন সেই ক্ষুদ্র মাছির মাথায়ও ঘিলু আছে । তিনি উকুনের পা , পােকাদের লও দেখলেন লেন্সের মাধ্যমে ।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর কাঁচের লেন্স আবিষ্কার – Antonie Van Leeuwenhoek Invention Lens :
হক তার লেন্স আবিষ্কার এবং অদৃশ্য জগতের খবর জানিয়ে ইংল্যান্ডের রয়াল সােসাইটির কাছে পত্র লিখলেন । রয়াল সােসাইটির সদস্যরাও এই বিস্ময়কর জগতের সংবাদ শুনে অবাক হয়ে গেলেন । তারা হুককে এ সম্পর্কে আরাে বিস্তারিত তথ্য জানানাের জন্য উৎসাহ দিয়ে পত্র লিখলেন ।
[আরও দেখুন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী – Ishwar Chandra Vidyasagar Biography in Bengali]
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক রয়েল সোসাইটি কাছে পত্র লেখা :
লিওয়েন হক এর কিছুদিন পরই আবিষ্কার করলেন সবচেয়ে বিময়কর জগতটি । তিনি একটু আগে যে গ্লাসের জলপান করেছেন , তাতে আধগ্লাস জল ছিলাে , তিনি সেটা রাখলেন লেন্সের নিচে । সলিময়ে তিনি দেখলেন , সেই ঝকঝকে জলের মধ্যে এক ঝাক বিচিত্র ধরনের পােকা কিলবিল করছে । তাহলে কি মানুষ পােকাসুরী জল খায় ? জলেতে পােকা আসে কিভাবে ? লিওয়েন হক ততক্ষণাৎ তার আবিষ্কৃত যন্ত্র ( লেন্স ) এবং জলেতে বিচিত্র হাজার হাজার পােকার কথা লিখে পত্র পাঠালেন আবার লন্ডনের রয়াল সােসাইটির কাছে ।
রয়াল সােসাইটি দু’জন বিজ্ঞানীকে পাঠালেন লিওয়েন হকের কাছে যন্ত্রটা পরীক্ষা করার জন্য । তারা এসে দেখলেন সত্যি তাে , এ যে বড় বিস্ময়কর আবিষ্কার । তারা হকের তৈরি অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পরিষ্কার জলের মধ্যে সাঁতার কাটতে দেখলেন অসংখ্য পােকাকে ।
অ্যান্টনি ভন লিয়য়েন হক এর বিজ্ঞানী স্বীকৃতি – Scientist recognition of Anthony von Leuven Hook :
এরপর লিওয়েন হক বিজ্ঞানী হিসাবে স্বীকৃতি পেলেন । তিনি লন্ডনের রয়াল সােসাইটির সদস্য হলেন । তবে তিনি তার মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রটি কাউকে খুলে দেখতে দিলেন না বা হাতছাড়া করলেন না ।
ইতিমধ্যে লিওয়ন হকের এই আজব মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রে কথা । সারা বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে । ইংল্যান্ডের রানীও এসে তার যন্ত্রটা । দেখে যান ।
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর মৃত্যু – Antonie Van Leeuwenhoek Death :
মাইক্রোস্কোপের মহা আবিষ্কারক লিওয়েন হুক ১৭৩৩ সালে ১০১ বছর বয়সে মারা যান । তার আবিষ্কৃত মাইক্রোস্কোপের আরাে অনেক উন্নতি হয়েছে পরে । বর্তমানে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে একটা বস্তুকে দশ পনেরাে হাজার গুণ বড় করে দেখা সম্ভব ।
অ্যান্টনি ভন লিয়ায়েন হক এর জীবনী (প্রশ্ন ও উত্তর) – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali (FAQ):
- অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক কে ছিলেন ?
Ans: তিনি ছিলেন একজন বিজ্ঞানী ।
- অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জন্ম কবে হয় ?
Ans: ২৪ অক্টোবর ১৬৩২ সালে ।
- অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ?
Ans: লন্ডনের ডিলিট অঞ্চলে ।
- তিনি কত সালে আবধবৃদ্ধি আবিষ্কার করেন ?
Ans: ১৬৮০ সালে ।
- অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক তার আবিষ্কারের জন্য কোথায় চিঠি লিখেছিলেন ?
Ans: লন্ডনের রয়েল সোসাইটি তে ।
- অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক কবে মারা যান ?
Ans: ২৬ আগস্ট ১৭২৩ সালে ।
[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bengali
আরও দেখুন, পন্ডিত রবিশঙ্কর এর জীবনী – Ravi Shankar Biography in Bengali
আরও দেখুন, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এর জীবনী – SurendraNath Banerjee Biography in Bengali
আরও দেখুন, রাসবিহারী বসুর জীবনী – Rash Behari Bose Biography in Bengali
আরও দেখুন, জহরলাল নেহেরু জীবনী – Jawaharlal Nehru Biography in Bengali]
অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali
অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali ” পােস্টটি পড়ার জন্য। অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali পড়ে কেমন লাগলো কমেন্টে জানাও। আশা করি এই অ্যান্টনি ভন লিউয়েন হক এর জীবনী – Antonie Van Leeuwenhoek Biography in Bengali পোস্টটি থেকে উপকৃত হবে। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।