পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ এর জীবনী - Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali
পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ এর জীবনী - Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali

পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ এর জীবনী

Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali

পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ এর জীবনী – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali : রাশিবিজ্ঞানের জনক , সফল অধ্যাপক গবেষক প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশতার অপরিসীম পান্ডিত্যের জন্য দেশবিদেশের প্রশংসা লাভ করেছিলেন তার অবদান বহুমুখী ।

রাশিবিজ্ঞানের পথিকৃৎ প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর জীবনী – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali বা প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর আত্মজীবনী বা (Prasanta Chandra Mahalanobis Jivani Bangla. A short biography of Prasanta Chandra Mahalanobis. Prasanta Chandra Mahalanobis Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ কে ছিলেন ? Who is Prasanta Chandra Mahalanobis ?

পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ (Prasanta Chandra Mahalanobis) ছিলেন একজন ভারতীয় বিজ্ঞানী এবং পরিসংখ্যানবিদ ছিলেন। মহলানবিশ দূরত্ব নামক ধারণাটির জন্য এবং মুক্ত ভারতের দ্বিতীয় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হওয়ায় পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ (Prasanta Chandra Mahalanobis) বিখ্যাত হয়ে আছেন। পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ (Prasanta Chandra Mahalanobis) ভারতে নৃবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। পশান্তচন্দ্র মহলানবীশ (Prasanta Chandra Mahalanobis) ভারতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বড় আকারের নমুনা জরিপের নকশায় অবদান রেখেছিলেন। পশান্তচন্দ্র মহলানবীশকে (Prasanta Chandra Mahalanobis) ভারতের আধুনিক পরিসংখ্যানের জনক বিবেচনা করা হয়।

রাশিবিজ্ঞানের পথিকৃৎ প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ এর জীবনী – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali :

নাম (Name) পশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ (Prasanta Chandra Mahalanobis)
জন্ম (Birthday) ২৯ জুন ১৮৯৩ (29th June 1893)
জনমস্থান (Birthplace) কলকাতা, ভারত
অভিভাবক (Parents)/ পিতামাতা প্রবোধ চন্দ্র মহলানবিশ
জাতীয়তা ভারতীয়
দাম্পত্য সঙ্গী (Spouse) নির্মল কুমারী মহলানবীশ
কর্মক্ষেত্র গণিত, পরিসংখ্যান
প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়

ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট

পরিচিতির কারণ মহলানবিশ দূরত্ব

ফিল্ডম্যান–মহালানোবিস মডেল

উল্লেখযোগ্য পুরস্কার পদ্মবিভূষণ (১৯৬৮)

অফিসার অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই, ১৯৪২) 

রয়েল সোসাইটির ফেলো (এফআরএস)

ওয়েলডন স্মৃতি পুরস্কার

মৃত্যু (Death) ২৮ জুন ১৯৭২ (28th June 1972) 

প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ এর জন্ম ও পরিবার – Prasanta Chandra Mahalanobis Birthday and Family :

 ১৮৯৩ খ্রিঃ ২৯ শে জুন কলকাতায় প্রশান্তচন্দ্রের জন্ম । তার পিতার নাম প্রবােধচন্দ্র মহলানবীশ । 

প্রশান্ত চন্দ্রের শিক্ষাজীবন – Prasanta Chandra Education Life :

 ছাত্র হিসেবে প্রশান্তচন্দ্র বরাবরই ছিলেন কৃতী । বিদ্যালয়ের পড়াশােনা শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন । আই এস সি পাশ করার পর বিদেশে যান । 

প্রশান্ত চন্দ্রের কর্মজীবন – Prasanta Chandra Work Life :

 কেমব্রিজে পড়াশােনা করেন । কেমব্রিজ থেকে গণিত ও পদার্থবিদ্যায় প্রথম শ্রেণীর অনার্স সহ ট্রাইপস পেয়ে ইন্ডিয়ান এডুকেশনাল সার্ভিসে যােগদান করেন । দেশে ফিরে এসে প্রেসিডেন্সিতে অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন । প্রথমে ছিলেন অস্থায়ীপদে পরে স্থায়ী পদ লাভ করেন । 

 ১৯১৫ খ্রিঃ থেকে ১৯৪৮ খ্রিঃ পর্যন্ত একটানা তেত্রিশ বছর প্রেসিডেন্সিতে অধ্যাপনা করেন । 

প্রশান্ত চন্দ্রের রাসিবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা – Prasanta Chandra Zodiac Research :

শেষের দিকে কয়েক বছর অধ্যক্ষের পদেও ছিলেন । রাশিবিজ্ঞানে গভীর অধ্যয়ন ও গবেষণা ছিল প্রশান্তচন্দ্রের । এ বিষয়ে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল পাশ্চাত্যের কার্ল পিয়ার্সনের রচনা ও গবেষণা । 

 প্রগাঢ় নিষ্ঠা ও একাগ্রতা নিয়ে রাশিবিজ্ঞানের ওপর গবেষণা করতেন তিনি । আশেপাশের অনেকেই বিষয়টাকে অনেকটা । উপহাসের দৃষ্টিতেই দেখত । বলততার খেয়ালিপনার কথা । 

 এইউপেক্ষা ও অবহেলা অবদমিত করতে পারেনি প্রশান্তচন্দ্রকে । এককালে তিনিই হয়ে উঠলেন রাশিবিজ্ঞানের পথিকৃৎ । 

প্রশান্ত চন্দ্রের পত্রিকা প্রকাশ – Magazine Released :

 প্রায়ােগিক গবেষণাটির পাশাপাশি তাত্ত্বিক গবেষণাতেও নিরলস পরিশ্রম করেছেন । তারই সম্পাদনায় প্রকাশিত হত গবেষণা পত্রিকা ‘ সংখ্যা ‘ । পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইনসটিটিউট । 

 এখানেই ভারতে প্রথম কম্পিউটার বসে প্রশান্তচন্দ্র ও হােমি জাহাঙ্গির ভাবার প্রচেষ্টায় ।

 স্ট্যাটিসটিকাল ইনসটিটিউট এক নিরন্তর গবেষণার ক্ষেত্র । কৃষিক্ষেত্র থেকে জাতীয় অর্থনীতি পর্যন্ত এখানকার গবেষণার ব্যাপ্তি । তার গবেষণায় আলােকিত উপকৃত হয়েছে বিভিন্ন দিক। 

 প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর অনুরােধে প্রশান্তচন্দ্র জাতীয় আয় বৃদ্ধি , এমনকিপশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানেও নিজেকে নিয়ােজিত করেছিলেন । প্ল্যানিং কমিশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন । 

প্রশান্ত চন্দ্রের রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্য লাভ : good fortune to be close to Rabindranath :

 প্রশান্তচন্দ্রের ছিল নিখাদ সাহিত্যপ্রীতি । রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভেরও সৌভাগ্য হয়েছিল তার । 

 প্রেসিডেন্সিতে অধ্যাপনার সময়েই ব্রাহ্মসমাজের সংস্কার সাধনে ব্রতী হয়েছিলেন । একাজে তাকে ব্রাহ্ম নেতাদের প্রবল বিরােধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ।

 প্রশান্তচন্দ্রের ইচ্ছা ছিল রবীন্দ্রনাথের প্রকৃত স্বীকৃতি আসুক ব্রাহ্মসমাজ থেকে । কিন্তু প্রবীন ব্রাহ্মদের অনেকেই রবীন্দ্রনাথকে পছন্দ করতেন না । কবি প্রেমের গান লিখেছেন , গােরার মত বিতর্কিত উপন্যাস লিখেছেন — এই অভিযােগে ব্রাহ্ম সমাজের কার্যনির্বাহক সমিতিতে নেওয়া হচ্ছিল না রবীন্দ্রনাথকে।

 সমিতির সভায় প্রশান্তচন্দ্র ও সুকুমার রায়ের প্রস্তাব ছিল । রবীন্দ্রনাথকে সাম্মানিক সদস্যপদ দেওয়া হােক।

প্রশান্ত চন্দ্রের পুস্তিকা – Prasanta Chandra Book :

 রবীন্দ্রনাথকে নির্বাচনের প্রশ্নে বৈঠকের পর বৈঠক হল , কিন্তু প্রত্যেক বারই প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেল । শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের সমর্থনে প্রশান্তচন্দ্র ‘ কেন রবীন্দ্রনাথকে চাই ‘ , এই নামে একটি পুস্তিকা লিখে প্রকাশ করলেন । 

 শেষ পর্যন্ত ভাবাবেগের দ্বারা চালিত প্রাচীনপন্থী রবীন্দ্রবিরােধীদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল ।

 ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের বার্ষিক অধিবেশনে ব্যালট – ভােটে রবীন্দ্রনাথ সম্মানিত সদস্য নির্বাচিত হন । 

[আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bengali]

প্রশান্ত চন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথ – Prasanta Chandra And Rabindranath :

 রবীন্দ্রনাথ প্রশান্তচন্দ্রকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন । তার বিবাহ অনুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত ছিলেন । শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমের ছাত্র না হওয়া সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথের আগ্রহে প্রশান্তচন্দ্র আশ্রমিক সঘের সদস্য হয়েছিলেন ।

 সঞ্চয়িতার আগে চয়নিকা নামে রবীন্দ্রনাথের নির্বাচিত কবিতার একটি সংকলন প্রচলিত ছিল । সেই সংকলনের কবিতা বাছাই করেছিলেন প্রশান্তচন্দ্র । কবির বিদেশ ভ্রমণের সময়েও তিনি সস্ত্রীক সঙ্গী হয়েছিলেন । প্রশান্তচন্দ্রের স্ত্রী রানী মহলানবীশও ছিলেন রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যা ।

প্রশান্ত চন্দ্রের চেষ্টায় রাসিবিজ্ঞানের পঠন পাঠনের সূত্রপাত :

 শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী হিসেবে প্রশান্তচন্দ্রের অবদান সুবিদিত । রাশিবিজ্ঞানের প্রচার ও প্রসারে তিনি ছিলেন অক্লান্তকর্মী । তারই চেষ্টায় এদেশে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে রাশিবিজ্ঞানের পঠন পাঠনের সূত্রপাত হয় ।

প্রশান্ত চন্দ্রের আবিষ্কার – Prasanta Chandra Invention :

 রাশিবিজ্ঞানের ওপর প্রশান্তচন্দ্রের আবিষ্কার মহলানবীশ ডিসট্যান্স নামে পরিচিত । নৃতত্ত্ব এবং আবহাওয়াতত্ত্বেও তার দান স্মরণীয় । ১৯২২ খ্রিঃ বঙ্গীয় সরকারের আহ্বানে বন্যার উৎপত্তি সম্পর্কেতার গবেষণা অত্যন্ত ফলপ্রসূ । 

ভারতের পঞচবার্ষিকী পরিকল্পনার কাঠামো প্রশান্ত চন্দ্র :

 বিভিন্ন সময়ে প্রশান্তচন্দ্র ভারত সরকারের উপদেষ্টার কাজ করেছেন । এদেশে তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কাঠামাে তিনিই । রচনা করেন । 

[আরও দেখুন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী – Ishwar Chandra Vidyasagar Biography in Bengali]

প্রশান্ত চন্দ্রের শ্রেষ্ঠকীর্তি : 

 প্রশান্তচন্দ্রের জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইনসটিটিউট প্রতিষ্ঠা । তিনি রয়াল সােসাইটির ফেললা নির্বাচিত হয়েছিলেন ।

প্রশান্ত চন্দ্রের মৃত্যু – Prasanta Chandra Death :

 ১৯৭২ খ্রিঃ ২৮ শে জুন শিক্ষাবিদ ও রাশিবিজ্ঞানের পথিকৃৎ কর্মবীর প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ লােকান্তরিত হন ।

প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ এর জীবনী (প্রশ্ন ও উত্তর) – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali (FAQ):

  1. প্রশান্ত চন্দ্রের জন্ম কবে হয় ?

Ans: ২৯ জুন ১৮৯৩ সালে ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্রের পিতার নাম কী ?

Ans: প্রবোধ চন্দ্র মহলানবিশ ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্র কে ছিলেন ?

Ans: রাশিবিজ্ঞানের পথিকৃত ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্রের জন্ম কোথায় হয় ?

Ans: কলকাতায় ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্রের আবিষ্কার কী নামে পরিচিত ?

Ans: মহলানবীশ ডিসট্যান্স নামে পরিচিত ।

  1. ভারতের পঞ্চবার্ষিকী কাঠামো পরিকল্পনা কে করেন ?

Ans: প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্র কী নিয়ে গবেষণা করেন ?

Ans: রাশিবিজ্ঞান নিয়ে ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্র কত সাল অবধি অধ্যাপনা করেন ?

Ans: ১৯১৫ খ্রিঃ থেকে ১৯৪৮ খ্রিঃ পর্যন্ত একটানা তেত্রিশ বছর ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্রে কবে জন্মগ্রহণ করেন ?

Ans: ২৯ জুন ১৮৯৩ সালে ।

  1. প্রশান্ত চন্দ্রের মৃত্যু কবে হয় ?

Ans: ১৯৭২ খ্রিঃ ২৮ শে জুন ।

[আরও দেখুন, জগদীশ চন্দ্র বসুর জীবনী – Jagdish Chandra Bose Biography in Bengali

আরও দেখুন, কাজী নজরুল ইসলাম জীবনী – Kazi Nazrul Islam Biography in Bengali

আরও দেখুন, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর জীবনী – Satyendra nath Bose Biography in Bengali

আরও দেখুন, Bankim Chandra Chatterjee Biography in Bengali | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী]

প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর জীবনী – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali

   অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর জীবনী – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali  ” পােস্টটি পড়ার জন্য। প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর জীবনী – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali পড়ে কেমন লাগলো কমেন্টে জানাও। আশা করি এই প্রশান্ত চন্দ্র মহলাবিশ এর জীবনী – Prasanta Chandra Mahalanobis Biography in Bengali পোস্টটি থেকে উপকৃত হবে। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।