গুরু নানক এর জীবনী - Guru Nanak Biography in Bengali
গুরু নানক এর জীবনী - Guru Nanak Biography in Bengali

গুরু নানক এর জীবনী

Guru Nanak Biography in Bengali

গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali : শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক গুরুনানক এমন এক সময়ে জন্মেছিলেন যখন ধর্মীয় গোঁড়ামিতে আচ্ছন্ন হিন্দু ও মুসলমানেরা পরস্পরের বিশ্বাসের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরস্পর ঘন – ঘন দাঙ্গা – বিবাদে লিপ্ত ছিলো । মহামতি নানক এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত মোটেই পছন্দ করতেন না । গুরু নানক (Guru Nanak) চাইতেন ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালনের ক্ষেত্রে সবাই সংযম , সহিষ্ণুতা ও উদার মনোভাবের পরিচয় দিক । গুরু নানক (Guru Nanak) হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের কাছে এক ঈশ্বরের কথা প্রচার করতেন । গুরু নানক (Guru Nanak) তাঁর সমসাময়িক সমাজের ধর্মীয় জীবনে প্রচলিত সব ধরনের আচার অনুষ্ঠান , উৎসবাদি , কু – সংস্কারগুলো এবং ভন্ডামি গোঁড়ামিকে নিন্দা করতেন । গুরু নানক (Guru Nanak) সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করতেন সত্য বিশ্বাস , সরলতা এবং জীবনের পরিচ্ছন্নতার সাথে সাথে ধর্মীয় সহিষ্ণুতায় ।

 নানক হিন্দু – মুসলমানের ঐক্যের ওপর বিশেষ জোর দিতেন । ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মূল এবং প্রয়োজনীয় উপদেশগুলো গ্রহণ করে গুরু নানক একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তন করেন । গুরু নানক (Guru Nanak) এই নতুন ধর্মের নাম শিখ ধর্ম । শিখ ধর্মের মূল দর্শন ভালোবাসা এবং সাম্য ৷ শিখ ধর্মের অনুসারীরা চুল ও দাড়ি কাটে না । হাতে বালা পরে । মাথায় পাগড়ি বাঁধে ।

 গুরু নানক জাতিভেদ মানতেন না । সকল মানুষকেই তিনি ঈশ্বরের সম্ভান বলে বিশ্বাস করতেন ।

 জাতি – ধর্ম প্রসঙ্গে গুরু নানক (Guru Nanak) বলতেন , “ ঈশ্বর মানুষের জাতি দেখেন না , ধনী , দরিদ্র দেখেন না । গুরু নানক (Guru Nanak) এর চোখে সকলেই সমান । গুরু নানক (Guru Nanak) শুধু বিচার করেন মানুষের কর্ম । মানুষ যেমন কাজ করে তেমনই ফল ভোগ করে । ”

 কর্মের নামে কুসংস্কার , গোড়ামি বাহ্যিক আচার অনুষ্ঠান আড়ম্বর নানক এসবের নিন্দা করতেন । 

  শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali বা গুরু নানক এর আত্মজীবনী বা (Guru Nanak Jivani Bangla. A short biography of Guru Nanak. Guru Nanak Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) গুরু নানক এর জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

গুরু নানক কে ছিলেন ? Who is Guru Nanak ?

গুরু নানক (Guru Nanak) ছিলেন শিখ ধর্মের প্রবক্তা এবং এই ধর্মের প্রথম গুরু। প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে তার জন্মোৎসব পালিত হয়। গুরু নানক (Guru Nanak) বহু স্থানে ভ্রমণ করে মানুষের মধ্যে এক ঈশ্বরের মতবাদ প্রচলন করেন। গুরু নানক (Guru Nanak) সমতা, ভ্রাতৃত্ব ও সদাচরণের ওপর নির্ভর করে একটি অনন্য ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রচলন করতে সক্ষম হন। শিখ ধর্মে বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, পরবর্তী শিখ গুরুদের গুরুপদ লাভের সময় তাদের মধ্যে গুরু নানকের ঐশ্বরিক ক্ষমতা, ধর্মীয় কর্তৃত্ব ও পবিত্রতা প্রবাহিত হয়ে থাকে।

শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali :

নাম (Name) গুরু নানক (Guru Nanak)
জন্ম (Birthday) ১৫ এপ্রিল ১৪৫৯ (15th April 1459)
জন্মস্থান (Birthplace) তালওয়ান্দি, পাঞ্জাব, (বর্তমান পাকিস্তান)
পিতামাতা (Parents) মেহেতা কালু এবং মেহেতা ত্রিপতা 
সমাধিস্থল গুরুদ্বারা দরবার সাহেব, কর্তারপুর,  পাকিস্তান
ধর্ম শিখ ধর্ম
দাম্পত্য সঙ্গী মাতা সুলাক্ষণী
যে জন্য পরিচিত শিখ ধর্মের প্রবর্তক
উত্তসূরী গুরু অঙ্গদ
মৃত্যু (Death) ২২ সেপ্টেম্বর ১৫৩৯ (22th September 1539)

গুরু নানক এর জন্ম – Guru Nanak Birthday : 

 ধর্মগুরু নানকের জন্ম হয় ১৪৬৯ খ্রিঃ বর্তমানে পাকিস্তানের অন্তর্গত পশ্চিম পাঞ্জাবের লাহোরের নিকটবর্তী তালওয়ান্দি গ্রামে ।

গুরু নানক এর পিতামাতা – Guru Nanak Parents :

 গুরু নানক (Guru Nanak) পিতার নাম মেহেতা কন্যানবাই । লোকে তাকে মেহেতা কালু নামে ডাকত । নানকের মায়ের নাম ত্রিপতা । মেহেতা কালু ছিলেন একজন সম্পন্ন চাষী । তাছাড়া একজন মুসলমান রাজপুত জমিদারের সম্পত্তি তদারক করতেন । 

গুরু নানক এর শৈশবকাল – Guru Nanak Childhood :

 বাল্যকালেই ধর্মগুরু নানকের মধ্যে প্রবল আধ্যাত্মিক ভাবের প্রকাশ দেখা যায় । তার সমবয়সী ছেলেরা যখন খেলা করত , তখন দেখা যেত গুরু নানক (Guru Nanak) নির্জনে একাকী বসে আছেন । 

 সবসময়েই তাঁর মধ্যে কেমন একটা উদাসভাব । যেন বিশ্ব সংসারের যাবতীয় সমস্যা গুরু নানক (Guru Nanak) মাথায় ভর করে আছে ।

 তালওয়ান্দি গ্রামের কাছাকাছি অরণ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাধুদের আস্তানা । পাঁচবছর বয়স থেকেই নানক সেখানে যাতায়াত করতেন ।

জীবন মৃত্যু প্রভৃতি বিষয়ে সাধুদের গূঢ় আলোচনা মগ্ন হয়ে শুনতেন । 

 এমন ছেলেকে নিয়ে পিতামাতার দুশ্চিন্তা হওয়াই স্বাভাবিক । মেহেতা কালু আর ত্রিপতার মনেও শাস্তি ছিল না । একমাত্র সস্তান , সে এমন আত্মভোলা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে , কোন মা – বাবার দেখতে ভাল লাগে ! 

গুরু নানক এর শিক্ষাজীবন – Guru Nanak Education Life :

 কালুর মনে হল , লেখাপড়া করলে সব ঠিক হয়ে যাবে । এইভেবে তিনি ছেলেকে ভর্তি করে দিলেন গ্রামের পাঠশালায় । নানকের তখন ছয় বছর বয়স । 

 পাঠশালার শিক্ষক ছিলেন গোপাল পণ্ডিত । তিনি যা পড়াতেন , নানক চুপচাপ শুনতেন । কোনও জবাব দিতেন না । 

 একদিন পণ্ডিত জিজ্ঞেস করলেন , “ তুমি কোনও কথা বল না কেন ? কিছুই কি বুঝতে পার না ? ” 

 শিশু নানক জবাব দিলেন , “ এসব কথা শুনতে আমার ভাল লাগে না । 

 পণ্ডিত জানতে চাইলেন তবে তোমার কি কথা শুনতে ভাল নানক বললেন , “ ধর্মের কথা , ঈশ্বরের কথা । ” 

 ওইটুকু ছেলের মুখে এমন অদ্ভুত কথা শুনে গোপাল পণ্ডিত চমৎকৃত হন । তিনি তাঁর সহজাত বুদ্ধি দিয়ে অনুভব করলেন , এই শিশু অনন্যসাধারণ । ভবিষ্যতে নানক একদিন নিশ্চয় একজন বড় সাধক হবে । 

 গোপাল পণ্ডিত নানকের প্রতি যত্নবান হলেন । নিজের যেটুকু জ্ঞান ছিল , তাই উজাড় করে দিলেন নানককে । নানকের সঙ্গে তিনি নানা বিষয়ে আলোচনা করতেন । কখনও ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে তাকে শোনাতেন । পরবর্তীকালে নানক গোপাল পণ্ডিতের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে উল্লেখ করতেন । 

গুরু নানক এর ব্রিজনাথ শর্মার কাছে শিক্ষা গ্রহন :

 গোপাল পণ্ডিতের পাঠশালায় নানক মাতৃভাষা ছাড়াও অল্প কিছু ফার্সিভাষা শিখেছিলেন । পাঠশালার পড়া শেষ হলে কালু নানককে সংস্কৃত শিক্ষার জন্য ব্রিজনাথ শৰ্মা নামে এক পণ্ডিতের কাছে পাঠালেন । 

 কিন্তু সেখানে দেখা গেল পাঠবিষয়ে কোন আগ্রহ নেই নানকের । ঈশ্বর , ধর্ম , আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে তিনি গুরুকে নানা প্রশ্ন করেন । 

 বালক ছাত্রের মুখে এইসব গুরুগম্ভীর প্রশ্ন শুনে ব্রিজনাথ শর্মার ধারণা হল , পড়াশুনায় ফাকি দেওয়ার মতলবে নানক এসব বড় বড় প্রশ্ন করছে । ছেলের লেখাপড়া শেখার আদৌ ইচ্ছা নেই । 

 পণ্ডিত ব্রিজনাথের কথা শুনে কালু হতাশ হয়ে পড়লেন । পড়াশুনোতে ছেলের যখন আগ্রহ নেই , তখন চেষ্টা করা বৃথা । 

 তিনি ঠিক করলেন , পাঠশালায় না পাঠিয়ে নানককে বাড়ির গরু ছাগল চরাবার কাজে লাগিয়ে দেবেন । 

 এবার সানন্দে রাজি হলেন নানক । পাঠশালায় যাবার পরিবর্তে তিনি প্রতিদিন সকালে গরু – ছাগল নিয়ে মাঠে যেতে লাগলেন । 

 বাড়ির পাশেই ছিল বিস্তৃত প্রান্তর । সেখানে পোষা জন্তুগুলিকে ছেড়ে দিয়ে একটা গাছতলায় বসে বিশ্রাম করেন নানক । বসে থাকতে থাকতে প্রায় সময়েই ঘুমিয়ে পড়েন । 

 একদিন এমনি ঘুমিয়ে পড়েছেন , এদিকে তার গরুগুলো ঘুরতে ঘুরতে একজনের শস্যখেতে ঢুকে পড়েছে । 

 খেতের মালিক দেখতে পেয়ে গরুগুলিকে ধরে নিয়ে গিয়ে জমিদারের কাছে নালিশ জানাল , নানকের গরু তার জমির ফসল খেয়ে ফেলেছে । 

 জমিদারের পেয়াদা গিয়ে ধরে নিয়ে এল নানককে । নানক জমিদারকে বললেন , আমার গরু কোথাও জমির ফসল নষ্ট করেনি । 

 নানকের কথা শুনে জমির মালিক প্রবল প্রতিবাদ জানাতে থাকে । তখন জমিদারের লোকজনকে পাঠানো হল খেতের অবস্থা দেখতে । 

 তারা গিয়ে দেখে নানকের কথাই সত্য । জমির ফসল যেমন ছিল তেমনি আছে । খেতের মালিকও বিস্ময়ে হতবাক !

 এই ঘটনার মধ্য দিয়েই নানকের অন্তর্নিহিত আধ্যাত্মিক শক্তির প্রথম প্রকাশ ঘটে । লোকের মুখে মুখে নানকের অলৌকিক শক্তির কথা সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে । 

 যে মাঠে এই ঘটনাটি ঘটেছিল , সেখানে পরবর্তীকালে স্থাপিত হয়েছে একটি শিখ উপাসনালয় — গুরুদোয়ারা । তার নাম রিয়াম সাহেব । 

 কিছুদিন পরেই আর একটি ঘটনা ঘটে । সেদিনও মাঠে গরু ছেড়ে দিয়ে নানক গাছতলায় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন । পরন্তু বেলার রোদ এসে পড়েছে তার মুখে । 

 গ্রামের জমিদার রাইবুলার কি কাজে সেই সময় যাচ্ছিলেন সেই পথ দিয়ে । যেতে যেতে হঠাৎ এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখে তিনি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়েন । 

 রাইবুলার দেখেন এক বিষধর সাপ নানকের মাথার কাছে রোদ আড়াল করে ফনা তুলে আছে । তার পায়ের শব্দ পেয়ে আস্তে আস্তে সাপটি চলে গেল । 

 তিনি বুঝতে পারলেন , নানক সাধারণ মানুষ নয় । এছেলে নিশ্চয় কোনও ঈশ্বরভক্ত মহাপুরুষ । সেইদিন থেকে জমিদার রাইবুলার নানককে খুবই শ্রদ্ধা করতেন।

 বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘর – সংসারের প্রতি নানকের উদাসীনতাও বাড়তে লাগল । প্রায়ই দেখা যেত তিনি নির্জনে ধ্যানস্থ হয়ে বসে আছেন । 

 গাঁয়ে কোন সাধু সন্ন্যাসী এলে তিনি তাদের কাছে গিয়ে ঈশ্বরের কথা ধর্ম উপদেশ শুনতে বসতেন । 

 ছেলের উদাসীনভাব দেখে কালু চিন্তায় পড়লেন । ভাবলেন বিয়ে দিয়ে ছেলেকে সংসারী করবেন । কিন্তু তার আগে তো একটা কাজকর্ম দরকার ।

 সেই সময় জমিদারী সেরেস্তায় কাজকর্ম পেতে হলে ফার্সি ভাষা জানতে হতো । কালু নানককে ফার্সি শেখাবার জন্য এক মৌলবীর স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন । তখন তাঁর বয়স বারো বছর ।

 কিন্তু এখানেও সেই ঈশ্বরের কথা , আর ধর্মের কথা । ফার্সিভাষা শেখাও মাঝপথে ইস্তফা দিতে হল । 

গুরু নানক এর কর্মজীবন – Guru Nanak Work Life :

 জয়রাম নামে নানকের এক ভগ্নীপতি ছিলেন সুলতান দৌলত খাঁ লোদীর দেওয়ান । তাঁর চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত উদাসী নানকের কাজকর্মের একটা ব্যবস্থা হল ।

 সুলতান তাঁকে গুদামঘর দেখাশোনার কাজে নিয়োগ করলেন । সময়টা তখন ১৪৮৬ খ্রিঃ । নানকের কাজ ছিল , সারা দিনে গুদামে কত মাল আনা নেওয়া করা হত তার হিসাব রাখা । নানক এই কাজ নিষ্ঠার সঙ্গেই করতে লাগলেন ।

গুরু নানক এর বিবাহ জীবন – Guru Nanak Marriage Life :

 গরীব দুঃখী মানুষ দেখলে নানকের মন কাতর হয়ে পড়ত । মাঝে মাঝেই তিনি তাদের গুদাম থেকে চাল ডাল দান করতেন । নিজেও যা বেতন পেতেন , তার বেশির ভাগটাই গরীব – দুখী মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন । এদিকে বিষয়কর্মে নানকের মন বসেছে দেখে তাঁর বাবা মা একদিন শুভ দিন দেখে নানকের বিয়ে দিলেন । নানকের স্ত্রীর নাম সুলখনি । পরবর্তীকালে নানক শ্রীচঁাদ ও লক্ষ্মীদাস নামে দুই সন্তানের জনক হন ।

 সংসারের সব কাজকর্মের মধ্যেও নানকের মন সর্বদা ঈশ্বর চিন্তায় ডুবে থাকত ৷ 

 সারাদিনের কাজের শেষে রাতে তিনি নিভৃতে ঈশ্বর চিন্তায় মগ্ন হতেন । ক্রমে তিনি তাঁর অন্তরে ঈশ্বরের অস্তিত্ব উপলব্ধি করতে পারলেন ।

 তিনি বুঝতে পারলেন সংসারের ক্ষুদ্র গন্ডির মধ্যে তাঁকে আবদ্ধ থাকলে চলবে না । মানুষের কল্যাণের জন্য তাঁকে কাজ করতে হবে ; ঈশ্বর তাঁকে সেই কাজের জন্যই এই ধরাধামে পাঠিয়েছেন। 

 এরপর থেকে তিনি সংসার বন্ধন ধীরে ধীরে শিথিল করে আনতে লাগলেন । একদিন সুলতানের চাকরিও ছেড়ে দিলেন ।

[আরও দেখুন, আদি কবি মহাঋষি বাল্মীকি জীবনী Maharishi Valmiki Biography in Bengali]

 এখন অফুরন্ত অবসর । সারাদিন ঈশ্বরের নামগান আর ঈশ্বর প্রসঙ্গের মধ্যেই নিজেকে ডুবিয়ে রাখেন । 

 দিন কতক পরে কালু নানকের হাতে কিছু টাকা দিয়ে কিছু মাল খরিদ করতে বাজারে পাঠালেন তার সঙ্গে পাঠানো হল বাড়ির চাকর বালাকে ।

 কালু ভাবতেন , এভাবে কিছুদিন মালপত্র সওদা করতে করতে নানকের মন ব্যবসার দিকে ঝুঁকবে । 

শহরের পথে যেতে যেতে চুহারবানা গঞ্জের কাছে একদল সাধুকে দেখে দাঁড়িয়ে পড়লেন নানক ।

 সাধুদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারলেন , সাধুরা তিন চারদিন উপবাসী রয়েছেন । 

নানক ব্যাকুল হয়ে তখনই ছুটলেন দোকানে । সঙ্গের সব টাকা খরচ করে সাধুদের তৃপ্তি করে খাওয়ালেন ।

 বালা তাঁকে বারণ করার চেষ্টা করল । কিন্তু নানক কোনও কথা শুনলেন না । ছেলেকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে দেখে কালু কারণ জানতে চাইলেন । নানক বাবার কাছে কোনও কথা গোপন করলেন না । 

রাগে দুঃখে হতাশায় কালু সেদিন ছেলেকে খুব তিরষ্কার করলেন । নানক যে জায়গায় সাধুদের ভোজন করিয়েছিলেন , সেস্থানে পরবর্তীকালে সাচ্চা সওদা নামক এক গুরুদোয়ারা প্রতিষ্ঠা করা হয় । 

গুরু নানক এর ধর্ম প্রচার : 

দীর্ঘ প্রায় পঁচিশ বছর ব্যাপী গুরু নানক বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন । জগতের নানা বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে নানক ভারতের কর্তারপুর গ্রামে এসে বসবাস করতে থাকেন । নানক একজন সাধারণ কৃষকের ন্যায় জীবন – যাপন করতেন । তিনি এরপর তাঁর ধর্মপ্রচারে মনোনিবেশ করেন ।

[আরও দেখুন, গৌতম বুদ্ধের জীবনী – Gautam Buddha Biography in Bengali]

শিখ ধর্মের ধর্মগ্রন্থ গুলি – Sikhs Holy Books :

 গুরু নানক তাঁর অনুসারীদের উদ্দেশ্যে যে উপদেশামৃত ও মহামূল্যবান বাণী বিতরণ করতেন , সেইসব উপদেশাবলী ও বাণীর সংকলিত রূপ , ‘ গুরু গ্রন্থসাহেব ’ । গুরু গ্রন্থসাহেব শিখদের কাছে মহাপবিত্র ধর্মগ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত । শিখরা ধর্মের ব্যাপারে যথেষ্ট রক্ষণশীল । তবে অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষহীন ।

গুরু নানক এর মৃত্যু – Guru Nanak Death :

 গুরু নানক ১৫৩৯ খ্রীষ্টাব্দে ৭০ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে অনস্তের পথে যাত্রা করেন ।

গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali FAQ :

  1. গুরু নানক কে ছিলেন ?

Ans: গুরু নানক ছিলেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক ।

  1. গুরু নানক এর জন্ম কোথায় হয় ?

Ans: গুরু নানক এর জন্ম হয় তালবন্দী, পাঞ্জাব ।

  1. গুরু নানক এর জন্ম কবে হয় ?

Ans: গুরু নানক এর জন্ম ১৫ এপ্রিল ১৪৫৯ সালে হয়।

  1. গুরু নানক এর পিতার নাম কী ?

Ans: গুরু নানক এর পিতার নাম মেহেতা কালু ।

  1. গুরু নানক এর মাতার নাম কী ?

Ans: গুরু নানক এর মাতার নাম মেহেতা ত্রিপতা ।

  1. গুরু নানক এর স্ত্রীর নাম কী ?

Ans: গুরু নানক এর স্ত্রীর নাম মাতা সুলাক্ষণী ।

  1. শিখদের ধর্ম গ্রন্থের নাম কী ?

Ans: শিখদের ধর্ম গ্রন্থের নাম ‘ গুরু গ্রন্থসাহেব ‘ ।

  1. গুরু নানক কবে মারা যান ?

Ans: গুরু নানক  মারা যান ২২ সেপ্টেম্বর ১৫৩৯ সালে।

[আরও দেখুন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী – Ishwar Chandra Vidyasagar Biography in Bengali

আরও দেখুন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bengali

আরও দেখুন, শচীন টেন্ডুলকারের জীবনী – Sachin Tendulkar Biography in Bengali

আরও দেখুন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনী – Sourav Ganguly Biography in Bengali

আরও দেখুন, এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর জীবনী – A.P.J. Abdul Kalam Biography in Bengali]

গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali

   অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali  ” পােস্টটি পড়ার জন্য। গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali পড়ে কেমন লাগলো কমেন্টে জানাও। আশা করি এই গুরু নানক এর জীবনী – Guru Nanak Biography in Bengali পোস্টটি থেকে উপকৃত হবে। এই ভাবেই BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো , ধন্যবাদ।