জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল - ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography) Geography
জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল - ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography) Geography

মানবীয় ভূগোল – ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন | Population Growth & Distribution – Human Geography (Geography) Question and Answer in Bengali

জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography) : মানবীয় ভূগোল – Human Geography (ভূগোল – Geography) জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন – Population Growth & Distribution প্রশ্ন Oও উত্তর  নিচে দেওয়া হল। এই (জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন – Population Growth & Distribution – মানবীয় ভূগোল Human Geography – ভূগোল Geography) প্রশ্নোত্তর গুলি স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। তোমরা যারা জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন – Population Growth & Distribution – মানবীয় ভূগোল – Human Geography (ভূগোল – Geography) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (Short Question and Answer) খুঁজে চলেছো, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্নউত্তর ভালো করে পড়তে পারো।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (Population Growth & Distribution) মানবীয় ভূগোল – ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

1. জনসংখ্যা ( POPULATION ) অথবা , জনসংখ্যা ভূগোল কী ? 

Ans: মানবীয় ভূগোলের এক গুরুত্বপূর্ণ উপজীব্য বিষয় হল জনসংখ্যা । কোন নির্দিষ্ট এলাকার এক জনগোষ্ঠীকে জনসংখ্যা বলে । জনসংখ্যাকে কেন্দ্র করে জনসংখ্যা ভূগোল বিস্তার লাভ করেছে । প্রাকৃতিক ও মানবীয় পরিবেশের পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণই Clarke জনসংখ্যা ভূগোলের কাজ । Beaujeu Gernier- এর মতে , ‘ বর্তমান পরিবেশের কাজ । প্রেক্ষাপটে জ্যামিতিক বিষয়গুলোর বর্ণনা ও ব্যাখ্যা , আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য ও সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয় জনসংখ্যা ভূগোলে ।

2. জনঘনত্ব কী ? ( POPULATION DENSITY ) । 

Ans: জনঘনত্ব হল কোন অঞ্চলে মানুষের বন্টনগত তারতম্যের সূচক । কোন স্থানের মোট জমি ও মোট জনসংখ্যার পরিমাণগত অনুপাতকে জনঘনত্ব বলে । বৈশিষ্ট্য : i ) পরিমাণগত সম্পর্ক : জনঘনত্বে মানুষ ও জমির অনুগত অবস্থা বোঝা যায় না । ii ) দ্বিমাত্রিক চিন্তা : এখানে জমি বলতে দৈর্ঘ্য – প্রস্থ যুক্ত এক ক্ষেত্রকে বোঝায় । iii ) প্রকৃত জনসংখ্যা বোঝা যায় না : দেশের জনবন্টন জানা গেলেও এ থেকে জনসংখ্যা সম্পর্ক জানা যায় না । যেমন— জনঘনত্ব কম হলেও জনসংখ্যা বেশি হতে পারে : চীনের জনঘনত্ব 128 ; তবে জনসংখ্যা 128.5 কোটি । উদাহরণ : 2001 খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনঘনত্ব ছিল প্রতি বর্গকিমিতে 324 জন ।

মেমরী প্লাস : ইউনিসেফ – এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট ( 2009 ) জানা গেছে পাঁচ বৎসরের কম বয়সী শিশু – মৃত্যুর সংখ্যা ভারতে 17 লক্ষ 26 হাজার । যা বিশ্বে সর্বাধিক ।

3. মানুষ – জমি অনুপাত কী ? ( MAN – LAND RATIO ) । 

Ans: সম্পদের প্রাচুর্য ও স্বল্পতার সূচক হল মানুষ – জমি অনুপাত । কোন অঞ্চলের মোট জনসংখ্যাকে মোট কার্যকর জমির পরিমাণ দিয়ে ভাগ করলে যে সংখ্যাটি পাওয়া যায় ; তাকে মানুষ – জমি অনুপাত বৈশিষ্ট্য : i ) ইহা জমির উৎপাদন ক্ষমতার উপর নির্ভর ii ) ইহা সর্বদা গতিশীল ও পরিবর্তনশীল । উদাহরণ : মিশরে জনঘনত্ব 57 জন ; মানুষ – জমি অনুপাত 1492 জন / বর্গকিমি ।

4. জনঘনত্ব ও মানুষ – জমি অনুপাতের পার্থক্য ।

জনঘনত্ব বৈশিষ্ট্য মানুষ – জমি অনুপাত
কোন দেশের মোট জনসংখ্যার ও মোট জমির অনুপাত । i) সংঘা দেশের মোট জনসংখ্যা ও মোট কার্যকর জমির অনুপাত ।
মোট জনসংখ্যা

মোট জমির আয়তন

ii) সূত্র মোট জনসংখ্যা

মোট কার্যকর জমি x জমির উৎপাদন ক্ষমতা

এর দ্বারা দেশের কাম্য জনসংখ্যা সমন্ধে ধারণা লাভ করা যায় না । iii) কাম্য ধারণা জনসংখ্যা কিন্তু এটিতে কাম্য জনসংখ্যা সম্পর্কে ধারণা করা যায় ।
জমির পোষণ ক্ষমতা বিচার করা যায় না । iv) পোষণ ক্ষমতা পোষণ ক্ষমতা বিচার করা যায় ।
লোক বসতি কতটা ব্যাপক ও কার্যকর , জমির উপর বণ্টন জানা যায় না । v) লোকবসতির তীব্রতা জনবসতির তীব্রতা অর্থাৎ জমি অনুসারে মানুষের চাপ কতটা তা বোঝা যায় ।

5. কাম্য জনসংখ্যা কী ? ( OPTIMUM POPULATION ) । 

Ans: অধ্যাপক ক্যানন কাম্য জনসংখ্যা তত্ত্বের প্রবক্তা । যখন কোন দেশে মোট জনসংখ্যা উক্ত দেশে মোট কার্যকর জমি ও সম্পদ বৃদ্ধির সাথে সাথে সুসামঞ্জস্যভাবে গড়ে ওঠে ; তখন তাকে কাম্য জনসংখ্যা বলে ।

ব্যবহার / প্রকৃতি : কাম্য জনসংখ্যা 4 টি অর্থে ব্যবহৃত হয় । ( A ) যে জনসংখ্যা দ্বারা দেশের মাথাপিছু আয় সর্বাধিক হবে ; ( B ) যতদূর পর্যন্ত জনসংখ্যা বাড়বে প্রান্তিক উৎপাদন সর্বনিম্ন হবে ; ( C ) কাম্য জনসংখ্যা হবে সর্বনিম্ন কল্যাণ স্তর গড় উৎপাদনের সমান ; ( D ) প্রান্তিক উৎপাদন সর্বদা ‘ 0 ’ হবে ।

উদাহরণ : জাপান ও ইওরোপের বিভিন্ন দেশে জনবৃদ্ধির সাথে সম্পদের সামঞ্জস্য রাখা হয় ।

6. কাম্য জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য লেখো ।

Ans: কাম্য জনসংখ্যা সম্পদ , মানুষ ও সংস্কৃতি , জমির উপযুক্ততার উপর নির্ভরশীল । এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল i ) এই ধারণাটি গতিশীল ও পরিবর্তনশীল । ii ) ইহা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন । iii ) এই জনসংখ্যা দ্বারা মাথাপিছু আয় সর্বাধিক হয় । iv ) ইহা কোন দেশের প্রাকৃতিক , অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের সে দেশের মানুষের কর্মের আদর্শ অনুপাত । v ) কোন দেশের সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব । vi ) জনসংখ্যার জীবনযাপনের মান উচ্চ হয় । vii ) বেকারত্ব খুবই কম । জাপানে এই বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায় ।

7. জনস্বল্পতা কী ? ( UNDER POPULATION ) 

Ans: কোন স্থানের প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় যদি জনসংখ্যা অপ্রতুল হয় বা জনসংখ্যার অভাবে যদি সম্পদ সৃষ্টি না হয় ; তবে সেই অবস্থাকে জনস্বল্পতা বলে । বৈশিষ্ট্য : ( i ) জনপ্রতি উৎপাদন কম ; ( ii ) অনুন্নত জীবনযাত্রা ; ( iii ) অপ্রতুল জনসংখ্যা দেখা যায় । উদাহরণসহ ব্যাখ্যা : গভীর অরণ্যে ( আমাজনের সেলভা ) , দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল ( আন্দিজ , কুনেরী ) , মালভূমি ( তিব্বত ) , কানাডা ও ব্রাজিলে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর হলেও জনস্বল্পতার কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়নি ।

8. কাম্য জনঘনত্ব কী ? ( OPTIMUM DENSITY ) 

Ans: কাম্য জনঘনত্ব হল আদর্শ জমি ও জনসংখ্যার সূচক । যখন কোন অঞ্চলের জনঘনত্ব প্রয়োজনের তুলনায় বা আঞ্চলিক সঙ্গতির তুলনায় যথার্থ ভারসাম্য স্থাপন করে , তখন তাকে কাম্য জনঘনত্ব বলা হয় । কাম্য জনঘনত্ব একটি তত্ত্বগত ব্যাপার । সর্বনিম্ন জনঘনত্ব অঞ্চলে ( যেমন— সাইবেরিয়া , অস্ট্রেলিয়া ) কাম্য জনঘনত্ব অর্জন করা সম্ভব কিন্তু সর্বোচ্চ জনঘনত্ব অঞ্চলে ( যেমন- দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়া ) কামা জনঘনত্ব প্রবর্তন দুরূহ ব্যাপার । কাম্য জনঘনত্বের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিশেষ তাৎপর্যময় । মানবজীবনের উচ্চমান কাম্য জনঘনত্বের প্রসার ও সংরক্ষণে উপযোগী ।

9. জনাকীর্ণতা কী ? ( OVER POPULATION ) 

Ans: যখন কোন দেশের প্রাকৃতিক , সাংস্কৃতিক সম্পদ , জমির কার্যকারিতা সম্পদ উৎপাদনের তুলনায় জনসংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে সম্পদের ব্যবহারযোগ্যতা ও কার্যকর জমিকে অতিক্রম করে , তখন সেই অবস্থাকে জনাকীর্ণতা বা উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা বলে ।

বৈশিষ্ট্য : ( i ) মাথাপিছু আয় কম হয় ; ( ii ) ক্রমহ্রাসমান উৎপাদনবিধি কার্যকর হয় । প্রভাব বেকারত্ব , অসন্তোষ , কৃষিজমি অধিগ্রহণ , অশিক্ষা , অপুষ্টি এর নেতিবাচক ফল । উদাহরণ : তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে জনাকীর্ণতা মারাত্মকভাবে দেখা যায় ( যেমন- বাংলাদেশ ) ।

10. শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি কী ? ( ZERO POPULATION ) 

Ans: পৃথিবীর যে সমস্ত দেশ বা অঞ্চলে যখন জন্মহার ও মৃত্যুহার উভয়ই অল্প থাকায় জনসংখ্যার স্বাভাবিক হ্রাস বা বৃদ্ধি হয় না অর্থাৎ জনসংখ্যা স্থিতিশীল হয় বা জনসংখ্যা আদর্শ অবস্থায় অপরিবর্তিত থাকে ; তাকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির শূন্য অবস্থা বা নিশ্চল অবস্থা বলে । উদাহরণসহ ব্যাখ্যা : জনসংখ্যা ক্রমবিবর্তনের চতুর্থ পর্বে এই শূন্য অবস্থা পরিলক্ষিত হয় । পশ্চিম ইওরোপের ( ডেনমার্ক , নরওয়ে , জার্মানী ) অস্ট্রেলিয়া দেশসমূহে জনসংখ্যা বৃদ্ধির শূন্য অবস্থা দেখা যায় ।

11. শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যা বা , জনস্বল্পতার সমস্যা কী ?

Ans: কোন দেশের জনসংখ্যার শূন্য অবস্থার বা জনস্বল্পতার সমস্যাগুলি হল A ) সম্পদের অপূর্ণ ব্যবহার : জনস্বল্পতার জন্য কোন দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্ম ব্যাহত হয় । ফলে সেই দেশের অর্থনীতি স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে । B ) কর্মীঘাটতি : শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , প্রশাসনিক ক্ষেত্র , খনিকেন্দ্রে , শিল্পকেন্দ্রে কর্মীর অভাবে ধুঁকতে থাকে । C ) বসতির অসম বন্টন : জনস্বল্পতার কারণে জনসংখ্যার সুষম বন্টন সম্ভব নয় ( উদাহরণ— সাইবেরিয়া ) । D ) অন্যান্য ( i ) 60 বছর ঊর্ধ্বে নাগরিকের পেনসনের ঘাটতি ; ( ii ) বেকার সমস্যার পরিবর্তে কর্মীর অভাব ; ( iii ) দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ব্যাহত হয় । উদাহরণ : ব্রাজিলের উচ্চভূমি , ডেনমার্কে এর সমস্যা দেখা যায় ।

12. জনসংখ্যা অভিক্ষেপ কী ? ( POPULATION PROJECTION ) । 

Ans: যখন সারা পৃথিবী বা কোন দেশ বা অঞ্চলে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য জনসংখ্যা সম্বন্ধে কাল্পনিক পূর্বাভাস দেওয়াকে জনসংখ্যা অভিক্ষেপ বলে । বৈশিষ্ট্য : i ) জনসংখ্যা জনিত সমস্যা সম্পর্কে ধারণা জন্মে । ii ) সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বিচার করে ইহা নির্ণয় করা হয় । iii ) ইহা কিছুটা অনুমান ভিত্তিক ।

উদাহরণসহ ব্যাখ্যা : 2001 খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী পৃথিবীর জনসংখ্যা 600 কোটি ; কিন্তু 2050 সালে এই জনসংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে জনবিজ্ঞানীরা তার পূর্বাভাস দেন । জনবিজ্ঞানীদের মতে , আগামী শতাব্দীতে পৃথিবীতে জন – বিস্ফোরণ ঘটবে ।

13. পশ্চাৎগামী জনসংখ্যা কী ? 

Ans: যখন উন্নত চিকিৎসা , স্বাস্থ্য , পরিষেবা দ্বারা জন্মহার কম ও নিয়ন্ত্রিত হয় এবং মৃত্যু হার হ্রাস পায় । তখন জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে যায় । জনসংখ্যার এরুপ অবস্থাকে পশ্চাদগামী জনসংখ্যা বলে । যেমন— USA , রাশিয়া , আস্ট্রেলিয়া , নরওয়ে প্রভৃতি উন্নত দেশের ক্ষেত্রে দেখা যায় । জনসংখ্যার অবস্থা হলে প্রাথমিক পর্বে উন্নয়ন ঘটলেও বিভিন্ন পরিষেবার ক্ষেত্রে কর্মীহ্রাসের ফলে সম্পদ উৎপাদন বাধা পায় ।

14. অগ্রগামী জনসংখ্যা কী ?

Ans: যখন দারিদ্রতা , অজ্ঞতা , ধর্মীয় কুসংস্কার , বাল্যবিবাহ প্রভৃতির ফলে উচ্চ জন্মহার এবং উচ্চ চিকিৎসায় মারণ রোগের হ্রাসের ফলে মৃত্যুহার হ্রাস পেলে জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধি থেকেও জনসংখ্যার অধিক বৃদ্ধি ঘটে তাকে অগ্রবর্তী বা অগ্রগামী জনসংখ্যা বলে । যেমন— ভারত , বাংলাদেশ প্রভৃতি উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে দেখা যায় । এক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা ও উদ্বৃত্ত শ্রম দ্বারা বেকারত্ব , খাদ্য দাঙ্গা , শ্রানের অপচয়ের ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি Backfoot এ চলে । এক্ষেত্রে পিরামিডের আকারে ভূমিভাগ প্রসারিত ও অগ্রভাগ তীক্ষ্ণ হয় ।

15. বেবীবুম কী ?

Ans: একটি সুনির্দিষ্ট সময় ধরে কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে শিশু জন্মের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়াকেই বেবীবুম বলে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে চিকিৎসাবিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতি , মহামারী নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কারের ফলে সারা ইউরোপ , উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপকভাবে শিশু জন্মের হার বৃদ্ধি পেয়েছিল । সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই বেবীবুম কথাটি ব্যবহৃত হয় । বর্তমানে এই শব্দটি প্রতিটি উন্নয়নশীল দেশেই প্রযোজ্য ।

16. মানসিক মানচিত্র কী ? ( Mental Map ) 

Ans: পিটার গুড প্রথম মানসিক মানচিত্রের কথা বলেন , যা আচরণগত ভূগোলের এক বিষয় । মানুষের স্থান নির্বাচন , সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পরিবেশের গুণগত মান দ্বারা কতটা প্রভাবিত হয় তার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । হয় । পরিবেশের মানসিক প্রতিচ্ছবি মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বৃত্তি হিসাবে ভূগোলে কাজ করে । বাহ্যিক পরিবেশের সঙ্গে ব্যক্তি বিশেষের মানসিক যোগাযোগ সম্বন্ধে ধারণ করা এবং প্রাথমিকভাবে মানুষ ও পরিবেশের সম্পর্কের একটি দৃষ্টান্তস্বরূপ মানসিক মানচিত্র সমীক্ষা করাই এর প্রধান কাজ ।

17. জন – বিস্ফোরণ কী ? ( POPULATION EXPLOSION ) । 

Ans: স্বল্প সময়ে পৃথিবীর কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে যদি জনসংখ্যা বিপুল পরিমাণে বেড়ে যায় ; তখন সেই জনসংখ্যার অভাবনীয় বৃদ্ধিকে জনবিস্ফোরণ বলে । 90 উদাহরণসহ ব্যাখ্যা : 1950 খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল 248.30 কোটি ; 2001 সালে তা হয়েছে 609.56 কোটি । আবার সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী 2025 সালে এই সংখ্যা দাঁড়াবে 850 কোটি । অর্থাৎ সারা পৃথিবীতেই আগামী শতাব্দীতে জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে । ইতিমধ্যেই উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলিতে ( বাংলাদেশ , ভারত ) জনবিস্ফোরণের চেহারা নিচ্ছে ।

18. অধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যা বা , জনাকীর্ণতা বা জনবিস্ফোরণের সমস্যা কী ?

Ans: তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি অধিক জনসংখ্যাজনিত সমস্যায় ভুগছে । এই সমস্যাগুলি হল A ) বনহরণ : 1981-91 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পৃথিবীতে 12 কোটি হেক্টর বনভূমি বিনষ্ট হয়েছে । B ) অর্থনৈতিক অসাম্য : ধনী ও দরিদ্রের আয়ের পার্থক্য বাড়বে ( 2001 সালে এই অনুপাত দাঁড়িয়েছে 80 : 1 ) । C ) সামাজিক সমস্যা : ( i ) দারিদ্র্যতা বৃদ্ধি ; ( ii ) বেকারত্ব ; ( iii ) চিকিৎসার অভাব ; ( iv ) স্কুলের অভাব ইত্যাদি সমস্যা । D ) E ) স্বাস্থ্য সমস্যা : i ) পুষ্টি সমস্যা ; ii ) শিশুমৃত্যু বৃদ্ধি ; iii ) নিম্ন পরিষেবা ; iv ) আয়ু কমে যায় । বাস্তুতন্ত্রজনিত সমস্যা : ( i ) জীববৈচিত্র্য বিনাস ; ( ii ) বনহরণ ; ( iii ) ভূমিক্ষয় ; ( iv ) কৃষিজমির বিনাস ; ( v ) মরুবিস্তার ইত্যাদিও অধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল ।

19. “ ভারতে কী জনবিস্ফোরণ ঘটেছে ? ” — উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও ?

Ans: ভারতে জনবিস্ফোরণ ঘটেছে — একথা এখনই জোর দিয়ে বলা যায় না । কারণ ভারতে লক্ষণীয়ভাবে জনসংখ্যার বৃদ্ধি হলেও ভারতের বিপুল প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ এই জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা থেকে দূরে রেখেছে । কিন্তু একথা ঠিক ভারতে যেভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে তা অদূর ভবিষ্যতে চীনকেও ছাড়িয়ে যাবে । তাই ভারত এই মুহূর্তে জনাকীর্ণতা ও জনবিস্ফোরণের মধ্যবর্তী জায়গায় দাঁড়িয়ে ।

20. জনঘনত্বের তারতমা অনুযায়ী পৃথিবীকে শ্রেণীবিভাগ করো ?

Ans: পৃথিবীকে জনঘনত্বের তারতম্য অনুসারে চার ভাগে ভাগ করা যায় । যথা A ) অতি বিরল সভিযুক্ত অঞ্চল ( 10 জন / বর্গকিমি ) : গভীর বনাঞ্চল ( আমাজন ) , মরু ( সাহারা ) ও মেরু অঞ্চল ( অ্যান্টার্কটিকা ) । B ) বিরল বসতিযুক্ত অঞ্চল ( 11-50 জন / বর্গকিমি ) : ক্রান্তীয় ( সাভানা ) ও নাতিশীতোয় ( স্তেপ ) তৃণভূমি ; সরলবর্গীয় অরণ্য । C ) নাতি নিবিড় বসতিযুক্ত অঞ্চল ( 51-150 জন / বর্গকিমি ) : নিরক্ষীয় এশিয়ার অংশ , অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল । D ) অতি নিবিড় বসতিযুক্ত অঞ্চল ( 151 জন ও তার বেশি / বর্গকিমি ) : দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়া , পশ্চিম ইওরোপ , নিউইয়র্ক ইত্যাদি ।

21. পৃথিবীর ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের নাম কী ? 

Ans: পৃথিবীর প্রধান তিনটি নিবিড় বা ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের নাম নিম্নরূপ A ) দক্ষিণ , দক্ষিণ – পূর্ব ও পূর্ব এশিয়া : ভারতের গাঙ্গেয় সমভূমি , উত্তর – মধ্য বাংলাদেশ পাকিস্তানের সিন্ধু উপত্যকা , ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপ , চীনের হোয়াংহো , জাপানের কোয়ে ) কিনকি সমভূমি । B ) উত্তর – পশ্চিম ইউরোপ : রাইন নিঁচু অববাহিকা , ইতালীর পো – নদী অববাহিকা , ভূমধ্যসাগ উপকূল অঞ্চল , ব্রিটেনের টেমস অববাহিকা , স্কটল্যান্ডের মধ্য উপত্যকা , রাশিয়ার ইউরোধ অংশ । C ) উত্তর আমেরিকা : নিউ ইংল্যান্ড প্রদেশ , মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চল , কানাডার দক্ষিণ পূর্বাংশ । অন্যান্য অঞ্চল : মিশরের নীল অববাহিকা , অস্ট্রেলিয়ার মারে ডার্লিং নদী অববাহিকা ।

22. পৃথিবীর বিরল জনবসতি অঞ্চলের নাম কী ?

Ans: পৃথিবীর সব অঞ্চলে জনঘনত্ব 10 জন / বর্গকিমি । এই অঞ্চলগুলি হল A ) নিরক্ষীয় গভীর বনাঞ্চল : আমাজনের সেলভা অরণ্য , কঙ্গো , জাভা , বালি ও সুমাত্রা B ) মরু অঞ্চল : আফ্রিকার সাহারা , কালাহারী , দক্ষিণ আমেরিকার আটাকামা ; এশিয়ার গোধ অস্ট্রেলিয়ার মধ্যভাগ । C ) শীতল মেরু অঞ্চল : আলাস্কা , কানাডা , গ্রীনল্যান্ড , অ্যান্টার্কটিকা । D ) দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল : রকি , আন্দিজ , কুনেরী , হিমালয় , ড্রাকেনবার্গ পর্বতশ্রেণী । কার্যত প্রবল বৃষ্টিপাত বা বৃষ্টিহীন , অস্বাস্থ্যকর জলবায়ু , বনভূমি ও বন্ধুর ভূ – প্রকৃতি ইত্যাদি প্রতিরোধগুলি জনবিরল অবস্থার জন্য দায়ী ।

23. দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়াতে নিবিড় জনবসতির কারণ কী ? 

Ans: ভারতে প্রতি বর্গমাইলে 814 জন ; বাংলাদেশে 2401 জন ; শ্রীলঙ্কা 771 জন ; পাকিস্তানে 47 জন লোক বাস করে । এখানে নিবিড় জনবসতির কারণগুলি হল— A ) B ) উর্বর মৃত্তিকা : এখানে নদী অববাহিকার উর্বর পলিমাটি ও লাভা মৃত্তিকা কৃষির সহায়ক । নিবিড় কৃষিকাজ : এখানে নিবিড় কৃষিব্যবস্থা জনবৃদ্ধির কারণ । C ) খনিজ প্রাপ্তি : প্রচুর খনিজ ( ছোটনাগপুর ) সম্পদের খনিকে কেন্দ্র করে জনবসতি গড়ে উঠেছে । D ) শিল্প বিকাশ : শিল্পের সুবিধা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি বলে জনঘনত্ব অধিক । E ) উপযোগী জলবায়ু : মৌসুমী জলবায়ু এখানে কৃষির খুবই সহায়ক বলে জনঘনত্ব বেশি ।

24. বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি লেখো ।

Ans: WHO- এর মতে , কেবল নিরোগই নয় , সম্পূর্ণ শারীরিক , মানসিক ও সামাজিকভাবে সুস্থ স্বাস্থ্যের অন্তর্গত । যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা দ্বারা স্বাস্থ্য পরিষেবাকে উন্নত রাখা যায় । বিশ্বস্বাস্থ্য সূচক ( i ) দেশের কত শতাংশ ব্যয় বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতে হয় । ( ii ) স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু খরচের পরিমাণ । যেমন — উন্নত দেশের এই ব্যয় 9.8 % , যুক্তরাচে 13.9 % , উন্নয়নশীল দেশের এই ব্যয় বরাদ্দ 5.3 % , নাইজেরিয়ায় 0.7 % । ( iii ) প্রতি হাজার জনে কত জন ডাক্তার । উন্নত দেশে মানুষ – ডাক্তার অনুপাত সন্তোষজনক যেমন — ফ্রান্সে 500 জনে 1 জন । উন্নয়নশীল দেশে জন প্রতি ডাক্তার সংখ্যা কম যেমন — ইথিওপিয়ায় 72,000 জনে । 1 জন ডাক্তার । পুষ্টি : উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে জনপ্রতি পুষ্টিকর খাদ্যের পরিমাণ বা পার্থক্য খুব বেশী হয় । যেমন — উন্নত দেশগুলিতে জন প্রতি পুষ্টিকর কিলোক্যালোরি যুক্ত খাদ্যের পরিমাণ বেশী এবং তাদের গড় আয়ু বেশী । যেমন — জাপান 80 বছর , নরওয়ে 82 বছর , USA 77 বছর , সুইডেন ৪০ বছর । ( i ) পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ম্যালেরিয়া , আন্ত্রিক , কাশি , নিউমোনিয়া রোগের পরিমাণ বেশী । যেমন — প্রতি 5 জনের একজন অকালে পুষ্টির অভাবে মারা যায় । সুষম খাদ্যের অভাবে প্রতি বছর 1 কোটি 10 লক্ষ শিশু মারা যায় । ( ii ) গড় আয়ু কম । যেমন — বাংলাদেশ 58 বছর , কেনিয়া 45 বছর , জাম্বিয়া 39 বছর ।

25. তৃতীয় বিশ্ব কী ? 

Ans: যে সকল দেশের সম্পদ নিম্নমানের তাদের তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলে । এছাড়াও দেশের প্রধান কাঁচামালের ব্যবহার করতে না পেরে তা রপ্তানী করে অন্য দেশ থেকে উৎপন্ন সামগ্রী আমদানী করলে তাদের তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলে ।

বৈশিষ্ট্য : ( ক ) মনুষ্য সম্পদের মূলধন ও দক্ষতা কম । ( খ ) মনুষ্য সম্পদ প্রাথমিক ক্রিয়াকলাপে জড়িত । ( গ ) এই দেশকে দক্ষিণের দেশ বলে ।

উদাহরণ : কঙ্গো , জাম্বিয়া , বাংলাদেশ , প্রভৃতি ।

26. জনসংখ্যা সূচকের উপাদানের নাম কী ?

Ans: মনুষ্য সম্পদের চরিত্র ও গঠনের উন্নয়নের মানকে জনসংখ্যা সূচক বলে । এর উপাদান হল ( ক ) সঠিক শিক্ষাগত মানে জনসংখ্যাকে নিয়ে যাওয়া । ( খ ) মনুষ্য সম্পদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা । ( গ ) স্বাস্থ্য খাতে সঠিক ব্যয় দ্বারা সার্বিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা । ( ঘ ) গড় ওজন ও সঠিক পুষ্টি গঠন । ( ঙ ) এছাড়া আয়ু , শিল্পের উৎপাদন , জীবন – যাপনের মানের উপর এই সূচক নির্ভর করে ।

27. BIMARU রাজ্য কী ?

Ans: ভারতে জনসংখ্যা সূচকের মান উন্নত নয় ; এমন কিছু রাজ্য আছে যেখানে গড় আয় , আয়ু , হার , নারী শিক্ষার হার , নারী উন্নয়ন সূচক সব কিছুই নিম্ন মানের । সূচকের দিক থেকে সর্ব নিম্নমানে এরুপ রাজ্যকে BIMARU রাজ্য বলে ।

উদাহরণ : বিহার , রাজস্থান , এই পর্যায়ের রাজ্য ।

28. মানব সম্পদের গুণগত বৈশিষ্ট্য লেখো । 

Ans: মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটে এরুপ তিনটি বিষয়কে মানব সম্পদের গুণগত বৈশিষ্ট্য বলে , যেমন শিক্ষা শিক্ষা মানব সম্পদের সর্বাঙ্গীন উন্নতির বিষয় । উদাহরণ । উন্নত শিক্ষার জন্যই জাপান , নরওয়ে , যুক্তরাষ্ট্র সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উপস্থা উন্নত স্বাস্থ্য , পুষ্টি সচেতনতা মানব সম্পদের গুণগত উন্নতির ধারক । উদাহরণ  ঃ সুইডেন , জার্মানি , ব্রিটেন প্রভৃতি দেশের স্বাস্থ্যখাতে অধিক ব্যায় , গড় আয়ু বেশী শিশু মৃত্যু হ্রাস ও মানব সম্পদের কারণ । পুষ্টি মাথাপিছু ক্যালোরির পরিমাণ বেশী উন্নত পুষ্টি দ্বারা মানবসম্পদের গুণগত মান বেশী হয় । যেমন — আইসল্যান্ড , কানাডা , অস্ট্রেলিয়া । কম ক্যালোরির যোগানে অনুন্নত দেশের নিম্নপুষ্টির মনুষ্যসম্পদ নিকৃষ্ট হয় বাংলাদেশ , গ্যাবন ।

29. আদমসুমারি কী ?

Ans: দেশের মোট জনসংখ্যা ও তার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের সামগ্রিক কার্যপ্রণালীকে আদমসুমারী বলে । অর্থঃ ‘ আদমসুমারী ‘ কথাটি এসেছে উর্দু শব্দ আদম বা জন / মানুষ ও সুমারি বা গণনা করা থেকে । ভারতে প্রথম আদমসুমারি শুরু হয় 1872 সালে ; নিয়মিত জনগণনা হয় 1881 থেকে প্রতি দশবা অন্তর 2011 পর্যন্ত 14 বার হয়েছে । ২০১০ – এ জনগণনা শেষ হয়েছে ।

গুরুত্ব : ( ক ) দেশের আর্থ – সামাজিক উন্নয়নের কথা জানা যায় । ( খ ) পরিকল্পনা গ্রহণ ও রূপায়ণ করতে সুবিধা হয় । ( গ ) দেশের উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিতে সুবিধা হয় ।

30. ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি প্রকৃতি কী ?

Ans: 2001 সালের ভারতের লোকসংখ্যা 102 কোটি 72 লক্ষ । জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি প্রকৃতি থেকে বোঝা যায় জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি ঘটেছে । এই গতি প্রকৃতিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । ( ক ) স্থিতিশীল জনসংখ্যা : 1901/1911/1921 খ্ৰীঃ জনসংখ্যা বৃদ্ধি খুবই কম । 23 কোটি 84 লক্ষ থেকে 25 কোটি 13 লক্ষ । ( খ ) ধীর বৃদ্ধি : 1921-1951 এই 30 বৎসরে জনসংখ্যা 16 কোটি বেড়ে 36.11 কোটিতে পৌঁছে ( গ ) দ্রুত বৃদ্ধি : 1951 পর 2001 এই 50 বৎসরে জনসংখ্যার তিনগুণ বৃদ্ধি ঘটে । একে জনবিস্ফোরণ বলে ।

31. অনুপ্রবেশ ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ ও ভৌগলিক ব্যাখ্যা দাও ।

Ans: স্বাধীনতার পর পাকিস্তান থেকে প্রচুর উদ্বাস্তু শরণার্থী ভারতে এসে ভারতের সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ , ত্রিপুরা , আসাম , পাঞ্জাব ও গুজরাটে জনবৃদ্ধি ঘটিয়েছে । কারণ— ( ক ) সামাজিক কারণ ও ধর্মীয় মৌলবাদীদের তাড়নায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার অভাবে অনুপ্রবেশ ঘটে । ( খ ) অর্থনৈতিক কারণঃ ভারতে রুজি রোজগারের জন্য মানুষের অনুপ্রবেশ ঘটে । ( গ ) রাজনৈতিক কারণ : পাকিস্তানে অস্থির রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে স্থিতিশীল ভারতববে অনুপ্রবেশ ঘটে ।

32. ভাসমান জনসংখ্যা কী ? FLOATING POPULATION 

Ans: যারা রুজি রোজগারের আশায় অস্থায়ীভাবে শহরে বন্দরে নদীপথে কাজের আশার ঘুরে বেড়ায় , যাদের নিজস্ব বাসস্থান নেই , তাদের ভাসমান জনসংখ্যা বলে । কিভাবে থাকে : অস্থায়ীভাবে রাস্তার ফুটপাতে , রেলস্টেশনে ও বাসস্ট্যান্ডে অস্থায়ী বস্তিতে এরা বসবাস করে । বৈশিষ্ট্য  ঃ ( ক ) পৌরসভা ও কর্পোরেশনে এদের স্থায়ী বাস করার সুযোগ নেই । ( খ ) জাতীয় গৃহ প্রকল্প এদের ক্ষেত্রে কার্যকরী হয় না । ( গ ) ভারতে প্রায় 3 কোটির বেশী ভাসমান জনসংখ্যা আছে ।

33. জনসংখ্যার ক্রম পরিবর্তন তত্ত্ব লেখো ।

Ans: যখন কোন একটি উচ্চ জন্মহার ও মৃত্যুহার গ্রামীন কৃষিভিত্তিক অশিক্ষিত সংস্কারগ্রস্থ জনসমাজের তুলনায় কম জন্ম ও মৃত্যুহারযুক্ত শিল্পভিত্তিক সুশিক্ষিত সংস্কারমুক্ত জনসমাজে পরিণত হয় , তখন এই পরিবর্তনকরণ প্রক্রিয়াকে জনসংখ্যার ক্রম বিবর্তন বলে । প্রবক্ত্রা ! 1929 সালে থম্পসন ও 1945 সালে নটেনস্টাইন এই তত্ত্বের প্রবস্থা । ধাপ : ( ক ) জন্মহার মৃত্যুহার দ্রুত কমতে থাকে ; ( খ ) জন্ম ও মৃত্যুহারের সাথে সামাসা থাকে ( গ ) পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটে ।

34. জনসংখ্যা ঘড়ি কী ? ( Population Clock ) 

Ans: হাজার হাজার বছরের ক্রমবিবর্তনের মধ্যে পৃথিবীর জনসংখ্যা গুণোত্তর হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে । রোম সাম্রাজ্যের পতনের সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল মাত্র 50 কোটি ও শিল্পবিপ্লবের সময় 100 কোটি । কিন্তু পরবর্তীকালে কৃষি , শিল্প ও চিকিৎসা বিপ্লবের সুবাদে 2001 সালে । লা জানুয়ারী পৃথিবীর জনসংখ্যা হয়েছে 609 কোটি এবং 2002 সালে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 621.5 কোটি । এই পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি যে কাল্পনিক যন্ত্রের দ্বারা নির্ণয় করা হয় তাকে জনসংখ্যা ঘড়ি বলে । এই ঘড়ির হিসাবে প্রতি সেকেণ্ডে প্রায় 2.5 জন মানুষ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার সাথে যুক্ত হচ্ছে ।

35. সামাজিক ভূগোল কী ? 

Ans: পৃথিবীর বিভিন্ন পরিবেশে মানব সমাজের বিভিন্ন ভৌগলিক বিশ্লেষণ করাকে সামাজিক ভূগোল বলে । EYLES এর মতে “ The analysis of social phenomena in space ‘ অর্থাৎ , পৃথিবী পৃষ্ঠের সমাজ সম্পর্কিত বিষয়ের বিশ্লেষণই হল সামাজিক ভূগোল । আবার Watson এর মতে বিশ্ব পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সমাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের চিহ্নিতকরণকে সমাজ ভূগোল বলে । প্রবক্তা : ১৮৪৪ ফরাসী বিজ্ঞানী ভেঁমোলার প্রথম সমাজ ভূগোল কথাটির ব্যবহার করেন ।

36. সামাজিক গোষ্ঠী কী ?

Ans: এক নির্দিষ্ট সাংগাঠনিক কাঠামোয় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত গোষ্ঠীকে সামাজিক গোষ্ঠী বলে । বৈশিষ্ট্য : ( ক ) সদস্যরা এক সাংগঠনিক মেল বন্ধনে যুক্ত থাকে । ( খ ) গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে একতা বা সংহতি বজায় থাকে । ( গ ) নিজেদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐক্য গড়ে ওঠে । ( ঘ ) অর্থনৈতিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে ।

উদাহরণ : পরিবার , জাতি , সংঘ , সমিতি , দল সংগঠন প্রভৃতি । গুরুত্ব  ঃ এর ফলে সমাজ উন্নত হয় ; সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে , জীবনের একঘেয়েমী ও অবসাদ দূর হয় ।

37. উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জনবৃদ্ধির হার অধিক কারণ ব্যাখ্যা দাও ।

Ans: ভারত , বাংলাদেশ , দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়া , আফ্রিকা , লাতিন আমেরিকার দেশগুলো জনবৃদ্ধির হার [ 1.3-3 % ] বেশি হয় । কারণ হল A ) দুর্বল ও কৃষিপ্রধান অর্থনৈতিক কাঠামো জনবৃদ্ধির অন্যতম কারণ ।

B ) শিক্ষার হার কম ; নারীশিক্ষা আরো কম বলে জনসচেতনতা কম । C ) নারীর প্রতি অবহেলা ও স্বল্প সামাজিক মর্যাদা জনবৃদ্ধির এক কারণস্বরূপ । D ) সার্বজনীন বিবাহপ্রথা ও অল্প বয়সে বিবাহ জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ । E ) যৌথ পরিবার প্রথার ফলে পরিবারই সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার দরুণ জনবৃদ্ধি ঘটে । F ) দারিদ্র্যতা , অশিক্ষা পরোক্ষভাবে জনবৃদ্ধি ঘটে ।

G ) অনুন্নত জীবন – যাপন , পুত্রসন্তানের প্রতি আকাঙ্ক্ষাও জনবৃদ্ধির অন্যতম কারণ ।

38. Cultural realm কী ? 

Ans: সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলোর সমধর্মীতা বা পারস্পরিক আদান – প্রদানের ভিত্তিতে চিহ্নিত হয় সাংস্কৃতিক অঞ্চল । যেকোন একটি বা একাধিক সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য যখন এক অঞ্চলে সমানভাবে দেখতে পাওয়া যায় , তখন তাকে বাহ্যিক সাংস্কৃতিক অঞ্চল বলে । আবার সমধর্মীতা ছাড়াও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলির সমধর্মিতার ভিত্তিতে একটি ক্রিয়ামূলক সাংস্কৃতিক অঞ্চল গঠিত হতে পারে । সাংস্কৃতিক অঞ্চল কথাটি সাংস্কৃতিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত ।

39. Sub – Culture কী ?

Ans: মানব সমাজ হল স্তর বিন্যস্ত । স্তর বিন্যস্ত সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের বসবাস । এদের জীবন ধারার মধ্যে তারতম্য ও স্বাতন্ত্র্য বর্তমান । জীবনধারার মধ্যে এই স্বাতন্ত্র্যকে বলা হয় উপসংস্কৃতি । উপসংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য , বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয় । যেমন — আচার – অনুষ্ঠান , খাদ্যভ্যাস ইত্যাদি ।

40. Rural urban continum কী ?

Ans: পৌর ও গ্রামীণ — এগুলি কোন ধরণের বসতি ? সম্ভবত এই প্রশ্নের কোন সহজ উত্তর নেই । পৌর ও গ্রামীণ বসতি চিহ্নিত করতে গিয়ে সংজ্ঞায় যত জটিল রূপ নিয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে মতপার্থক্য তত বেড়েছে । বস্তুতপক্ষে গ্রাম – শহরকে সুস্পষ্ট বিভাজন হিসাবে না দেখে continum হিসাবে দেখা হচ্ছে , যা Rural urban continum নামে পরিচিত ।

41. ভারতে জনবৃদ্ধির কারণ কী ? 

Ans: ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ । ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি হল ( a ) অধিক জন্মহার ( 26 জন / 1000 ) ; ( b ) মৃত্যুহার হ্রাস ( 9 জন / 1000 ) ; ( c ) স্বল্প শিক্ষার হার ( 33 শতাংশ এখনো নিরক্ষর ) ; ( d ) অল্প বয়সে বিবাহ ( সর্বভারতীয় গড় 15 ) ; ( e ) প্রজননক্ষম তরুণ জনসমষ্টি ( 57 % এর বয়স 15-59 বৎসর ) ; ( f ) অধিক অনুপ্রবেশ ( পাকিস্তান , তিব্বত , বাংলাদেশ থেকে ) ; ( g ) মেয়েদের স্বল্প সামাজিক মূল্য ; ( h ) সর্বোপরি দারিদ্র্যতা ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ ।

FILE INFO : জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন – Population Growth & Distribution | মানবীয় ভূগোল – ভূগোল প্রশ্নোত্তর (Human Geography – Geography)

File Details:

PDF Name : জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন – Population Growth & Distribution | মানবীয় ভূগোল – ভূগোল প্রশ্নোত্তর (Human Geography – Geography)

Price : FREE

Download Link : Click Here To Download

INFO : Geography – Human Geography – Question and Answer | ভূগোল – মানবীয় ভূগোল – জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (Population Growth & Distribution) প্রশ্নোত্তর

” ভূগোল (Geography) – মানবীয় ভূগোল (Human Geography) – জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন – Population Growth & Distribution “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক বিভিন্ন শ্রেনীর পরীক্ষা (Class 5, 6, 7, 8, 9,  Madhyamik, Class 11, Higher Secondary – HS, College & University Exam) এবং বিভিন্ন চাকরির (WBCS, WBSSC) পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে BhugolShiksha.com এর পক্ষ থেকে ভূগোল পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নো ও উত্তর উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস  ভূগোল (Geography) মানবীয় ভূগোল (Human Geography) – জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন – Population Growth & Distribution / জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন সংক্ষিপ্ত ছোট প্রশ্ন ও উত্তর / জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography)  SAQ / Short Question and Answer / জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography) Quiz / জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography) QNA / জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography) Question and Answer FREE PDF Download ) পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নোত্তর সফল হবে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography) Question and Answer in Bengali

স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ডিজিটাল মাধ্যম BhugolShiksha.com । এর প্রধান উদ্দেশ্য পঞ্চম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী, মাধ্যমিকউচ্চ মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় এবং গ্রাজুয়েশনের শুধুমাত্র ভূগোল বিষয়কে  সহজ বাংলা ভাষায় আলোচনার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে সহজ করে তোলা।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography)

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বন্টন (মানবীয় ভূগোল – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Population Growth & Distribution (Human Geography – Geography) ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই আমাদের ভূগোল শিক্ষা – Bhugol Shiksha – BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। ভূগোল বিষয়ে যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইটটি ফলাে করুন এবং নিজেকে ভৌগোলিক  তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন , ধন্যবাদ।