সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা - ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water - Oceanography Geography
সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা - ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water - Oceanography Geography

সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

সমুদ্রজলের লবণতা | Ocean Salinity Of Ocean Water – Oceanography (Geography) Question and Answer in Bengali

সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography) : সমুদ্রবিদ্যা – Oceanography (ভূগোল – Geography) সমুদ্রজলের লবণতা – Ocean Salinity Of Ocean Water প্রশ্ন ও উত্তর  নিচে দেওয়া হল। এই (সমুদ্রজলের লবণতা – Ocean Salinity Of Ocean Water – সমুদ্রবিদ্যা Oceanography – ভূগোল Geography) প্রশ্নোত্তর গুলি স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। তোমরা যারা সমুদ্রজলের লবণতা – Ocean Salinity Of Ocean Water – সমুদ্রবিদ্যা – Oceanography (ভূগোল – Geography) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (Short Question and Answer) খুঁজে চলেছো, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্নউত্তর ভালো করে পড়তে পারো। 

সমুদ্রজলের লবণতা (Ocean Salinity Of Ocean Water) সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

1. সমুদ্রজলের লবণতা বলতে কী বোঝেন ?

Ans সমুদ্রজলের লবণতা = জলে দ্রবীভূত পদার্থের ওজন / সমুদ্রজলের ওজন ।

 1902 সালের আন্তর্জাতিক কমিশনের অভিমত অনুসারে লবণতা বলতে 1 কিলোগ্রাম সমুদ্রজলে যত গ্রাম দ্রবীভূত কঠিন উপাদান থাকে তার পরিমাণকে বোঝায় । 

এই অনুযায়ী দেখা গেছে প্রতি কিলোগ্রাম সমুদ্রজলে 35 গ্রামের মতো লবণ থাকে । তাই সমুদ্রজলের গড় লবণতা 35 % । সাধারণত টাইট্রেশান , বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা প্রভৃতি পদ্ধতির মাধ্যমে সমুদ্রজলের বাষ্পীভবনের লবণতা নির্ণয় করা হয় । 

2. সমুদ্রজলে লবণতার উৎসগুলি লিখুন ?

Ans

  1. i) সমুদ্রস্থিত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত : সমুদ্রস্থিত আহোয়াপারর অগ্ন্যুৎপাতের সময় আগ্নেয় ভস্ম ও পাইরোক্লাসটিক উপাদানের সঙ্গে পর্যাপ্ত ক্লোরিন , সালফার , আয়োডিন ইত্যাদি নির্গত হয় ও জলে মিশ্রিত হয় ।
  2. ii) স্থলবিধৌত লবণ : ভূত্বকের ক্ষয়জাত ও দ্রবীভূত লবণ কণা নদীনালা বা বৃষ্টির দ্বারা ধৌত হয়ে সমুদ্রে পড়ে । 
  3. iii) বায়ুপ্রবাহ : ভূপৃষ্ঠস্থ ও বায়ুমণ্ডলস্থিত লবণ কণা বায়ুতাড়িত হয়ে সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত হয় ।
  4. iv) জীবদেহ : সামুদ্রিক জীবের দেহস্থ লবণ সমুদ্র জলকে লবণাক্ত করে ।

3. সমুদ্রজলে লবণতার তারতম্যের কারণগুলি লিখুন ( Factors of Difference of Saltinity in Ocean Water ) ?

Ans লবণতার তারতম্যের কারণগুলি হল –

  1. i) বাষ্পীভবন : বাষ্পীভবনের পরিমাণ বেশি হলে সমুদ্রজলে লবণতার পরিমাণ বেশি হয় ।
  2. ii) অধঃক্ষেপণ : অধঃক্ষেপণের পরিমাণ বাড়লে সমুদ্রজলে লবণতা কমে ।
  3. iii) নদীর মিশ্রণ : সমুদ্রে নদীর জলের মিশ্রণ বেশি হলে লবণতা কমে । 
  4. iv) বায়ুচাপ ও বায়ুপ্রবাহ : সাধারণত উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চলে লবণতা কম থাকে । বায়ু যেদিকে প্রবাহিত হয় , লবণতাও সেইদিকে বাড়তে থাকে । 
  5. v) সমুদ্র জলের অবাধ মিশ্রণ : সমুদ্রস্রোত , জোয়ারভাটা ইত্যাদির কারণে সমুদ্রজলের অবাধ মিশ্রণ ঘটে , যা লবণতার তারতম্য ঘটায় ।

4. সমুদ্রজলের লবণতা কীভাবে নির্ণয় করা হয় ? 

Ans সমুদ্রজলের লবণতা = এক কিলোগ্রাম সমুদ্রজলে যত গ্রাম দ্রবীভূত কঠিন উপাদান থাকে তাকে বোঝায় । দেখা গেছে প্রতি কিলোগ্রাম সমুদ্রজলে গড়ে 35 গ্রাম লবণ থাকে । 

টাইট্রেশান পদ্ধতি : দ্রবীভূত পদার্থের মিশ্রণের ধ্রুবক থেকে লবণতা নির্ণয় করা হয় । হাইড্রোমিটারের সাহায্যে : সমুদ্রজলের নমুনার ঘনত্ব নিরূপণ করে লবণতা নির্ণয় করা হয় । বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা : কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় সমুদ্রজলের বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা থেকে সমুদ্রজলের লবণতা নির্ণয় করা যায় । 

5. কর্কটক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা মকরক্রান্তীয় অঞ্চলে সমুদ্র জলে লবণতা বেশি কেন ? 

Ans নদী বিধৌত জল : উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগ বেশি থাকায় নদীবাহিত অগাধ মিষ্টি জল সমুদ্রে মেশে এবং লবণকে দ্রবীভূত করে লবণতার পরিমাণ কমিয়ে দেয় । অপরপক্ষে , দক্ষিণ গোলার্ধে নদীর সংখ্যা কম হওয়ায় নদীবাহিত জলের অভাবে লবণ বিশেষ দ্রবীভূত হয় না । 

সমুদ্রের উন্মুক্ততা : দক্ষিণ গোলার্ধের সমুদ্র বেশি উন্মুক্ত বলে নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে লবনাক্ত জল বাধাহীনভাবে মকরক্রান্তীয় অঞ্চলে মেশে , ফলে এখানে লবণতা তুলনামূলকভাবে বেশি । 

অধঃক্ষেপণ : উত্তর গোলার্ধের কর্কটক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা মকরক্রান্তীয় অঞ্চলে অধঃক্ষেপণের মাত্রা কম । 

হিমশৈলের উপস্থিতি : কর্কটক্রান্তীয় অঞ্চলে হিমশৈলের উপস্থিতি সমুদ্র জলে লবণতার পরিমাণ কমিয়ে দেয় , যা মকরক্রান্তীয় অঞ্চলে প্রায় দেখা যায় না ।

6. নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বাধিক বাষ্পীভবন হওয়া সত্ত্বেও কেন ক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা লবণতা এখানে কম ? অথবা ক্রান্তীয় অঞ্চলে সমুদ্রের জল কেন অধিক লবনাক্ত ?

Ans :

i) পরিচলন বৃষ্টিপাত : নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ার কারণে সর্বাধিক উষ্ণতা লক্ষিত হলেও প্রতিদিন বিকেল বেলার পরিচলন বৃষ্টিপাত লবণতা কমাতে সাহায্য করে । 

ii) নদীবিধৌত জল : আমাজন , কঙ্গো , নাইজার প্রভৃতি নদীবিধৌত জল লবণকে দ্রবীভূত করে । 

iii) আপেক্ষিক আর্দ্রতা : আপেক্ষিক আর্দ্রতা সংম্পৃক্ত অবস্থায় থাকায় বাষ্পীভবন কমে যায় । 

iv) নিরক্ষীয় শান্তবলয়ের অবস্থান : নিরক্ষীয় শান্ত বলয়ের অবস্থানের জন্য এখানে উষ্ণ সমুদ্রস্রোত পৃষ্ঠ প্রবাহরূপে প্রবাহিত হয়, ফলে লবনাক্ত জলের অবাধ মিশ্রণ হয় না।

v) স্থলবেষ্টিত : এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত।

7. মেরু সাগরের জলে লবণতা কম কেন ?

Ans i) বাষ্পীভবন : সূর্যরশ্মির সারাবছর তির্যক পতন ও শৈত্যতার কারণে এখানে বাষ্পীভবনের হার কম ।

ii) অধঃক্ষেপণ : তুষারপাত , বরফপাত প্রভৃতি অধঃক্ষেপণজনিত ঘটনা এই অঞ্চলে প্রায়শই ঘটে । 

iii) উন্মুক্ততা : মেরু অঞ্চলে সমুদ্র খুব উন্মুক্ত হওয়ায় , জলের অবাধ মিশ্রণ ঘটে । 

iv) বরফ গলন : গ্রীষ্মকালে বরফ গলে গিয়ে নদী ও সমুদ্রে জলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় ।

v) হিমশৈল : মেরু সাগরে ভাসমান বিশালায়তন বরফের চাঁই গলে গিয়ে লবণতা কমিয়ে দেয় । 

8. উন্মুক্ত সমুদ্র অপেক্ষা আবদ্ধ সমুদ্রজলে লবণতা বেশি কেন ? 

Ans জলের সঞ্চালন : উন্মুক্ত সমুদ্রের ওপর দিয়ে বায়ু অবাধে প্রবাহিত হতে পারে ফলে সমুদ্রজলের অবাধ সঞ্চালন হয় , তাই অধিক লবণাক্ত ও স্বল্প লবণাক্ত জলের মিশ্রণ ঘটে ও লবণতা কমে । আবদ্ধ সমুদ্রে জলের এই অবাধ সঞ্চালনের অভাব লবণতাকে বাড়ায় । 

স্থলভাগ : আবদ্ধ সমুদ্রে স্থলবিধৌত লবণের পরিমাণ খুব বেশি কিন্তু উন্মুক্ত সমুদ্রে স্থলবিধৌত লবণের পরিমাণ কম , তাই লবণতার হেরফের হয় ।

উদাহরণ : স্থলভাগ দ্বারা আবদ্ধ হওয়ায় ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরের লবণতা খুব বেশি । আবার বাল্টিক সাগর আংশিক আবদ্ধ বলে লবণতা তুলনামূলকভাবে কম । 

9. আটলান্টিক মহাসাগরের শৈবাল সাগর অঞ্চলে সর্বাধিক লবণতা দেখা যায় কেন ?

Ans i) জলাবর্ত : যেখানে জলপ্রবাহ নেই সেখানে উপসাগরীয় স্রোত , ক্যানারি স্রোত ও উত্তর নিরক্ষীয়  স্রোত পরস্পর মিলিত হয়ে জলাবর্ত তৈরি করে । 

ii) উষ্ণতা ও বাষ্পীভবন : এই অঞ্চলে সর্বাধিক উষ্ণতা ও সর্বাধিক বাষ্পীভবন হেতু লবণতা বৃদ্ধি পায় । 

iii) শান্তবলয় ও বায়ুপ্রবাহ : এটি কর্কটীয় শান্তবলয়ে অবস্থিত হওয়ায় এখানে উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমাবায়ু পরস্পরের বিপরীতে প্রবাহিত হয়ে মাঝে প্রায় বায়ুপ্রবাহহীন অবস্থা সৃষ্টি করে । 

iv) অবাধ মিশ্রণ : সমুদ্রজলের অবাধ মিশ্রণ এখানে হয় না । 

10. বাল্টিক সাগর আংশিকভাবে আবদ্ধ হলেও এর লবণতার পরিমাণ কম কেন ?

i) বাষ্পীভবন : উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়ার কারণে এখানে তির্যকভাবে সূর্যরশ্মি পড়ে , ফলে বাষ্পীভবনের মাত্রা কম । 

ii) অধঃক্ষেপণ : পশ্চিমাবায়ু ও মধ্য অক্ষাংশীয় ঘূর্ণবাতের অবস্থিতির কারণে এখানে অধঃক্ষেপণের মাত্রা বেশি । 

iii) বরফগলা নদী : ওডার , ভিশ্চুলা প্রভৃতি বরফগলা জলে পুষ্ট নদীর পতন , লবণতা কমিয়ে দেয় । 

iv) হিমশৈল : হিমশৈলের উপস্থিতি এবং তুষারপাত লবনতা কমিয়ে দেয়।

11. মরুসাগরকে ‘ মৃতের সাগর ‘ বলা হয় কেন ? 

Ans  ইজরায়েল ও জর্ডনের মধ্যবর্তী লবণ হ্রদকে মরুসাগর বলে । প্রায় 42 কি.মি.দীর্ঘ, 18 কি.মি. বিস্তৃত এবং সাগরপৃষ্ঠ থেকে 390.6 মিটার নিম্নে অবস্থিত এই হ্রদে অধিক বাষ্পীভবন , বৃষ্টিহীনতা, আবদ্ধতা ইত্যাদি কারণে জল অত্যধিক লবণাক্ত হয় । এই সাগরে প্রাণীকূল বাঁচতে পারে না । কারণ –

i) গভীরতা : পৃথিবীর স্থলবেষ্টিত সর্বনিম্ন অংশের  নাম মরুসাগর । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এটি 396 মিটার গভীরতায় অবস্থিত , যা জীবের বাঁচার পক্ষে প্রতিকূল । 

ii) লবণতা : মরু সাগরের লবণতা প্রায় 237 % … । জলে খাদ্যলবণ , পটাশিয়াম , চুন , আয়োডিন ইত্যাদি পরিপূর্ণ থাকে।

iii) প্লবতা : দ্রবণের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় জলের প্লবতা বেশি , ফলে কোনো বস্তু ডুবে যায় না । 

iv) অক্সিজেনের পরিমাণ : জলে লবণের পরিমাণ বেশি হওয়ায় জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কম । 

v) বাষ্পীভবন : বাষ্পীভবনের পরিমাণ বেশি হওয়ায় , জলে বিদ্যমান লবণ দ্রবীভূত হতে পারে না ।

 তাই এখানে খাদ্যশৃঙ্খল , প্রাণের অস্তিত্ব বা বাস্তুতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে ওঠে না ।

কাজেই মরু সাগরের জলের তলায় প্রাণের স্পন্দন দেখা যায় না । তাই মরুসাগরকে  ‘ মৃতের সাগর ‘ বলা হয় । 

12. বিভিন্ন অক্ষাংশে লবণতার তারতম্যের কারণ কী ?

Ans নিরক্ষীয় অঞ্চল : নিরক্ষীয় অঞ্চলে ক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা লবণতা কম , কিন্তু মেরু অঞ্চল অপেক্ষা বেশি । 

কারণ :  পরিচলন বৃষ্টিপাত , আপেক্ষিক আর্দ্রতার সম্পৃক্ততা ,  নদী জলের অবাধ মিশ্রণ । 

ক্রান্তীয় অঞ্চল : সর্বাধিক লবণতা দেখা যায় । কর্কটক্রান্তি অপেক্ষা মকরক্রান্তি অঞ্চলে বেশি লবণতা দেখা যায় ।

কারণ : অধিক উষ্ণতা ও শুষ্ক আয়ন বায়ু , স্বল্প বৃষ্টিপাত , মরুভূমির অবস্থান । 

মেরু অঞ্চল : সর্বনিম্ন লবণতা দেখা যায় । 

কারণ : বাষ্পীভবনের হার কম ও অধঃক্ষেপণের হার বেশি , হিমশৈলের উপস্থিতি , বরফগলা জলের উপস্থিতি ।

13. সমুদ্রজলের উষ্ণতা লবণতাকে প্রভাবিত করে উক্তিটি ব্যাখ্যা কর । 

Ans i) বৃষ্টিপাত ও বাষ্পীভবন : সমুদ্রবিজ্ঞানী Wust এর মতে সমুদ্রপৃষ্ঠের লবণতা , বাষ্পীভবন ও বৃষ্টিপাতের পার্থক্যের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কযুক্ত । যেমন 20 ° দক্ষিণ অক্ষরেখায় এর পার্থক্য সবচেয়ে বেশি , লবণতাও সবচেয়ে বেশি । এই দুটি আবার উষ্ণতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । 

ii) বায়ুপ্রবাহ : শুষ্ক আয়নবায়ু প্রভাবিত সমুদ্র অঞ্চলে লবণতা বেশি , কিন্তু আর্দ্র পশ্চিমা বায়ু প্রভাবিত অঞ্চলে সমুদ্রজলে লবণতা কম ।

iii) লবণতা উষ্ণতাকে প্রভাবিত করে : অধিক লবণ মিশ্রিত জলের তাপশোষণ করার ক্ষমতা বেশি । ফলে উষ্ণতা বাড়ে । 

iv) আপেক্ষিক আর্দ্রতা : বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা সম্পৃক্ত পর্যায়ের কাছাকাছি থাকলে বাষ্পীভবন বাধাপ্রাপ্ত হয় ।

14. সমুদ্রজলে লবণতার আঞ্চলিক বণ্টন সম্পর্কে লিখুন?

Ans সাধারণত সমলবণতা রেখার মাধ্যমে লবণতার আঞ্চলিক বণ্টন দেখানো হয় । সমুদ্র বিজ্ঞানী জেনকিন্স লবণতার ভিত্তিতে বিভিন্ন সমুদ্রকে চারটি আঞ্চলিক বিভাগে বিভক্ত করেছেন।

i) অস্বাভাবিক লবণতা ( 37-41 % ) : লোহিত সাগর , ভূমধ্যসাগর , পারস্য উপসাগর । 

ii) স্বাভাবিক লবণতা ( 30-33 % ) : ক্যারিবিয়ান সাগর , মেক্সিকো উপসাগর । 

iii) স্বল্প লবনতা ( 20-30 % ) : চিন সাগর, বঙ্গোপসাগর , ইংলিশ চ্যানেল ।

iv)  অতল্প লবণতা ( 3-15m ) : বাল্টিক সাগর , হাডসন উপসাগর । 

15. ভারত মহাসাগরের জল লোহিত সাগরের তুলনায় কম লবণাত্ত কেন ? 

Ans নদী মিশ্রণ : লোহিত সাগরের তুলনায় ভারত মহাসাগরে অনেক বেশি সংখ্যক নদী এসে মিশেছে তাই এই মহাসাগরে মিষ্টি জলের জোগান অপেক্ষাকৃত বেশি । 

বৃষ্টিপাত : ভারত মহাসাগরের নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারা বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয় । কিন্তু লোহিত সাগরের পূর্বে আরব মরুভূমি এবং পশ্চিমে সাহারা মরুভূমি থাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম । 

সমুদ্রজলের সঞ্চালন : লোহিত সাগর প্রায় স্থলবেষ্ঠিত হওয়ায় স্থলবিধৌত লবণের পরিমাণ বেশি । ও সমুদ্রজলের অবাধ মিশ্রণ কম । অপরপক্ষে , ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ দিক উন্মুক্ত হওয়ায় এখানে সমুদ্রজলের সঞ্চালন বেশি । 

ভারত মহাসাগরের গড় লবণতা 35%

লোহিত সাগরের গড় লবণতা 40 % 

16. বাল্টিক সাগরের জলের লবণতা উত্তর সাগরের তুলনায় কম কেন ? 

Ans বাষ্পীভবনের স্বল্পতা : বাল্টিক সাগর উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়ায় এখানে সূর্যরশ্মি তিকভাবে পড়ে ফলে বাষ্পীভবনের হার কম , যা লবণতা কমায় । 

অধঃক্ষেপন : পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে বাল্টিক সাগরে অধঃক্ষেপণের পরিমাণ বেশি , কিন্তু উত্তর সাগরে অধঃক্ষেপণের পরিমাণ কম ।

নদীবাহিত জল : উত্তর সাগরের তুলনায় বাল্টিক সাগরে বেশি বরফ গলা জলে পুষ্ট নদী মিলিত হয়েছে, তাই নদিবাহিত মিষ্টিজলের পরিমাণ অনেক বেশি।

17. সমলবণতা রেখা ( Isohaline ) কাকে বলে ? 

Ans সমুদ্রজলে সমান লবণতাযুক্ত জায়গাগুলিকে যে কাল্পনিক রেখার দ্বারা যুক্ত করা হয় , তাকে সমলবণতা রেখা বলে । এর মাধ্যমে সমুদ্রজলের লবণতার অনুভূমিক বণ্টন দেখানো হয় । উন্মুক্ত সমুদ্রে এই রেখাগুলি কিছুটা সরল প্রকৃতির , কিন্তু আবদ্ধ সমুদ্রে এই রেখাগুলি অনেক বেশি বক্র । 

18. সমুদ্রজলের লবণতার অনুভূমিক বণ্টন বা অক্ষাংশ অনুযায়ী বণ্টন কাকে বলে ? 

Ans সমুদ্রজলে লবণতার অনুভূমিক বণ্টন বলতে অক্ষাংশ অনুযায়ী লবণতার বণ্টনকে বোঝায় । সাধারণত বাষ্পীভবন ও অধঃক্ষেপণের পরিমাণ দ্বারা এই বণ্টন পরিচালিত হয় । বৃষ্টিপাত অপেক্ষা বাষ্পীভবনের পরিমাণ বাড়লে লবণতার পরিমাণ বাড়ে । 

19. সমুদ্রজলে লবণতার উল্লম্ব বণ্টন বলতে কী বোঝায় ?

Ans লবণতার উল্লম্ব বণ্টন বলতে গভীরতা অনুযায়ী লবণতার বণ্টনকে বোঝায় । সমুদ্রবিজ্ঞানীদের মতে সমুদ্রজলে লবণতার উল্লম্ব বণ্টনে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে । উচ্চ অক্ষাংশে সমুদ্রের গভীরতা বাড়লে লবণতা বাড়ে । ও মধ্য অক্ষাংশে 360 মিটার গভীরতা পর্যন্ত লবণতা বাড়ে , কিন্তু তারপর কমে । নিরক্ষীয় অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠ অপেক্ষা 200 মিটার গভীরতা পর্যন্ত লবণতা বাড়ে এবং তারপর কমে । 

20. ভূমধ্যসাগর অপেক্ষা কৃষ্ণ সাগরের জল কম লবণাক্ত — ব্যাখ্যা করো । 

Ans ভূমধ্যসাগরের জলের লবণতা যেখানে 39 % সেখানে কৃষ্ণসাগর সাগরের জলের লবণতার পরিমাণ 13%। কৃষ্ণসাগর সাগরের জলে স্বল্প লবণতার কারণ হল –

( A ) অধিক শৈত্য : অধিক শৈত্যের কারণে এখানে বাষ্পীভবনের পরিমাণ খুবই কম বলে লবণতাও কম ।

( B ) বৃহৎ নদী : দানিয়ুব , ডন , নিপার , নিস্টার – এর মতো বৃহৎ নদী এই সাগরে প্রচুর জল এনে লবণতা কমিয়ে দেয় ।

( C ) বরফগলা জল : প্রচুর বরফগলা জলের প্রাচুর্য্যের জন্য লবণতার পরিমাণ কম হয় । 

( D ) বাষ্পীভবন : ভূমধ্যসাগরে বাষ্পীভবন বেশি ( ক্রান্তীয় অঞ্চল ) বলে লবণতা বেশি ।

 

FILE INFO : সমুদ্রজলের লবণতা – Ocean Salinity Of Ocean Water | সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল প্রশ্নোত্তর (Oceanography – Geography)

File Details:

PDF Name : সমুদ্রজলের লবণতা – Ocean Salinity Of Ocean Water | সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল প্রশ্নোত্তর (Oceanography – Geography)

Price : FREE

Download Link : Click Here To Download

INFO : Geography – Oceanography – Question and Answer | ভূগোল – সমুদ্রবিদ্যা – সমুদ্রজলের লবণতা (Ocean Salinity Of Ocean Water) প্রশ্নোত্তর

 ” ভূগোল (Geography) – সমুদ্রবিদ্যা (Oceanography) – সমুদ্রজলের লবণতা – Ocean Salinity Of Ocean Water “ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক বিভিন্ন শ্রেনীর পরীক্ষা (Class 5, 6, 7, 8, 9,  Madhyamik, Class 11, Higher Secondary – HS, College & University Exam) এবং বিভিন্ন চাকরির (WBCS, WBSSC) পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে BhugolShiksha.com এর পক্ষ থেকে ভূগোল পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নো ও উত্তর উপস্থাপনের প্রচেষ্টা করা হলাে। ছাত্রছাত্রী, পরীক্ষার্থীদের উপকারে লাগলে, আমাদের প্রয়াস  ভূগোল (Geography) সমুদ্রবিদ্যা (Oceanography) – সমুদ্রজলের লবণতা – Ocean Salinity Of Ocean Water / সমুদ্রজলের লবণতা সংক্ষিপ্ত ছোট প্রশ্ন ও উত্তর / সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography)  SAQ / Short Question and Answer / সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography) Quiz / সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography) QNA / সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography) Question and Answer FREE PDF Download ) পরীক্ষা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নোত্তর সফল হবে।

সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography) Question and Answer in Bengali

  আশা করি এই ” সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water – Oceanography Geography ”  পোস্টটি থেকে উপকৃত হয়েছেন। স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ডিজিটাল মাধ্যম BhugolShiksha.com । এর প্রধান উদ্দেশ্য পঞ্চম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী, মাধ্যমিকউচ্চ মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় এবং গ্রাজুয়েশনের শুধুমাত্র ভূগোল বিষয়কে  সহজ বাংলা ভাষায় আলোচনার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে সহজ করে তোলা। 

সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography)

        আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই ” সমুদ্রজলের লবণতা (সমুদ্রবিদ্যা – ভূগোল) প্রশ্ন ও উত্তর | Ocean Salinity Of Ocean Water (Oceanography – Geography) ” পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই আমাদের ভূগোল শিক্ষা – Bhugol Shiksha – BhugolShiksha.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। ভূগোল বিষয়ে যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইটটি ফলাে করুন এবং নিজেকে ভৌগোলিক  তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন , ধন্যবাদ।